ওয়াই সেতু নির্মাণ
ওয়াই সেতু নির্মাণে রাঙ্গামাটির বিচ্ছিন্ন দুই দ্বীপবাসীর স্বপ্নপূরণ
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে রাঙ্গামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারে বিচ্ছিন্ন দুটি দ্বীপে বসবাসকারী তিন হাজারের অধিক মানুষের স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে।
২০২২ সালের জুন থেকেই আর নৌকায় পারাপার হতে হবে না দুই দ্বীপের বাসিন্দাদের। দীর্ঘ পাঁচ যুগ পর সাড়ে ১৭ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত ওয়াই সেতু তাদের ভোগান্তি দূর করবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জুগলিক্যা পাহাড় ও পুরাতনবস্তী দু’টি আলাদা দ্বীপ। দ্বীপ দু’টি কাছাকাছি হওয়ায় নির্মিত সেতু দু’টি দেখে মনে হয়ে যেন-ওয়াই। কাপ্তাই হ্রদের বুকে সেতুটির উভয়পাশ যেনো অপরূপ সৌন্দর্য্যের দৃশ্য।
একদিকে সুভলং ভ্যালি, অন্যদিকে ফুরোমন ভ্যালির নয়নাভিরাম সৌন্দর্য সেতুটিকে দিয়েছে যেন ভিন্ন একমাত্রা। সম্ভবত আসছে দিনগুলোতে আসামবস্তি সেতুর চেয়েও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে চলেছে পুরানপাড়া সেতুটি!
আরও পড়ুন: সেতু আছে, ওঠা-নামার সংযোগ সড়ক নেই!
স্থানীয়রা জানান, ১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধ তৈরির পর বাঁধের বাসিন্দাদের পুরাতনবস্তী ও জুগলিক্যা পাহাড় এলাকায় পুনর্বাসিত করা হয়। তখন থেকেই তাদের দীর্ঘদিনের সেতুর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাঙ্গামাটির এমপি দীপংকর তালুকদার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরে আনেন।
এরপর ২০১৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাঙ্গামাটি সফরে গিয়ে ব্রিজ দু’টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অবশেষে বাস্তবে তা রূপ নিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ব্রিজ না থাকায় শিক্ষার্থী ও রোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ নৌকার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতো। ব্রিজ দুটি চালু হলে এত বছরের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা বলেন, ‘সেতুর কাজ একেবারেই চূড়ান্ত পর্যায়ে। এখন কিছু মাটি ভরাট ও বারপোল নির্মাণের কাজ চলছে। এক মাসের মধ্যেই শেষ হবে আশা করছি। তারপরই সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।’
রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজারের সাথে জুগলিক্যা পাহাড় ও পুরাতনবস্তীর সংযোগের জন্য পিসি গার্ডার ফুট ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পটিতে মোট ব্যয় ১৭ কোটি ৬৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: লাঙ্গলবন্দ সেতু মেরামত, বিকল্প রুট ব্যবহারের অনুরোধ
তিনি আরও বলেন, এটি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের দ্বিতীয় বৃহৎ সেতু। ২০১৩ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে শুরু হয় সেই স্বপ্নের সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে ব্রিজ দুটি চালু করা হবে। সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় ৪২০ মিটার, প্রস্থ ৪.৫ মিটার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। আর তাই রাঙ্গামাটির মূল অংশের সাথে যুক্ত হতে যাচ্ছে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ জুগলিক্যা পাহাড় ও পুরাতনবস্তী। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন ও উদ্বোধনের পর ব্রিজ দু‘টি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
৩ বছর আগে