সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ ঢাকা ও লন্ডনের
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গুরুত্ব, জবাবদিহিমূলক শাসন ব্যবস্থার উন্নয়নে সুশীল সমাজের উপস্থিতি, মতপ্রকাশ এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য।
শুক্রবার ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশন জানিয়েছে, এফসিডিও এর বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে উঠে আসা বাংলাদেশের মানবাধিকার সম্পর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রভাব, বিধিবহির্ভূত আটক, বিধিবহির্ভূত বিচারপ্রক্রিয়া, এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাজ্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেন কমনওয়েলথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসে (এফসিডিও) চতুর্থ বারের মত বার্ষিক যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে কৌশলগত সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ কৌশলগত সংলাপের নেতৃত্বে ছিলেন ব্রিটিশ ফরেন কমনওয়েলথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি স্যার ফিলিপ বার্টন কেসিএমজি ওবিই ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
ফরেন কমনওয়েলথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) দক্ষিণ এশিয়া ও কমনওয়েলথ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, উইম্বলডনের লর্ড তারেক আহমেদ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনকে স্বাগত জানান।
লর্ড আহমদ বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও আমি যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যেকার দৃঢ় সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছি। আমরা উভয়েই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভবিষ্যতে আমাদের দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্যকে আরও শক্তিশালী করার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেছি।’
রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতার শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদানে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে। রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সাথে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্য নিয়ে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিবেশমন্ত্রীর মতবিনিময়
যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশে কোভিড-১৯ চলাকালীন যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন এই সংলাপে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা। দেশব্যাপী কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি বিশেষ করে কোভেক্স থেকে প্রাপ্ত টিকার মাধ্যমে পরিচালনার জন্য যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানায়।
সংলাপে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ইস্যু, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাসহ যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।
যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ উভয় পক্ষ ২০১৯ সালের পর প্রথমবারের মতো সশরীরে সাক্ষাতের সুযোগকে স্বাগত জানিয়ে সংলাপ শুরু করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির বছরে অনুষ্ঠিত এবারের কৌশলগত সংলাপ যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে। উভয় দেশের প্রতিনিধিরা যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং প্রবাসী সংযোগ ও কমনওয়েলথের সদস্যপদের কারণে মানুষের সাথে মানুষের সুদৃঢ় সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: ভারত সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ: তথ্যমন্ত্রী
সংঘাত প্রতিরোধ, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা, নিয়ম ভিত্তিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা সমর্থনসহ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একে অপরকে সহযোগিতা করতে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে উভয় দেশই প্রশিক্ষণ, পেশাগত সামরিক শিক্ষা ও ইন্সট্রাকশনাল এক্সচেঞ্জসহ যৌথ সহযোগিতাকে স্বাগত জানায় এবং এই বছরের শেষের দিকে একটি প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংলাপ উদ্বোধনের আশা ব্যক্ত করেন।
৩ বছর আগে