হৈচৈ
অপূর্ব’র ওয়েব সিরিজ ‘বুকের মধ্যে আগুন’ হইচই-এ আসছে ফেব্রুয়ারিতে
ছোট পর্দার শীর্ষস্থানীয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বকে এবার দেখা যাবে দক্ষিণ এশিয়ার স্বনামধন্য ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই-এ। কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহ’র রহস্যময় মৃত্যুর ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত ওয়েব সিরিজ ‘বুকের মধ্যে আগুন’ শিরোনামে মুক্তি পেতে যাচ্ছে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি।
একদিকে নাট্যজগতের চিরচেনা মুখ অপূর্ব’র আলবত ভিন্ন চরিত্র, অন্যদিকে রূপালি পর্দার কালজয়ী অভিনেতা চির সমালোচিত প্রয়াণ- সব মিলিয়ে পুরো বিষয়টি বিনোদনকর্মী ও দর্শক, দুই মহলকেই উদ্বেলিত করছে হাজারো কৌতূহলে। গত ২৩ জানুয়ারি ঘোষণার পর থেকেই দেশীয় নাটক ও চলচ্চিত্রপ্রেমিদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বাংলা কন্টেন্টটি। চলুন, জেনে নেয়া যাক ওয়েব সিরিজটির বিস্তারিত।
‘বুকের মধ্যে আগুন’-এর নেপথ্যে প্রিয় নায়ক সালমান শাহ
নাম-চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন; জন্মস্থান-সিলেটের দরিয়া পাড়া। ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির পর পরই এই ইমন হয়ে যান সকলের প্রিয় সালমান শাহ। তার স্কুল জীবন শুরু হয়েছিল খুলনা জেলার বয়রা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে, যেখানে চিত্রনায়িকা মৌসুমীও পড়াশোনা করতেন। ঢাকার ধানমন্ডি আরব মিশন স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট শেষ করেন। অতঃপর ডক্টর মালেকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে বিএ’র মাধ্যমে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ফেলেন। ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট সামিরা হকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সালমান।
আরও পড়ুন: পাঠান মুভি রিভিউ: বলিউড কিং শাহরুখ খানের অভিজাত প্রত্যাবর্তন
'কথার কথা' নামের একটি ম্যাগাজিন শো’তে হানিফ সংকেতের গাওয়া 'নামটি ছিল তার অপূর্ব' গানের মিউজিক ভিডিওতে মডেলিংয়ের মাধ্যমে টিভি পর্দায় প্রথম হাজির হন সালমান। প্রথম অভিনয় ১৯৮৫ সালের টিভি নাটক 'আকাশ ছোঁয়া'। এরপর বড় পর্দায় প্রথম ছবি 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' দিয়েই একদম বাজিমাত করে দেন। তারপর থেকে ৪ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি মোট ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন, যার সবগুলোই ব্যবসা-সফল।
এই তারকা ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছর বয়সে ঢাকার ইস্কাটনে নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন। জনপ্রিয়তা তুঙ্গে থাকা তারকার রহস্যময় মৃত্যুতে সারা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি সালমান শাহকে এশিয়ান জার্নালিস্ট হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন আয়োজিত মরণোত্তর পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৬'-এ সম্মানিত করা হয়।
সালমানের মৃত্যুর প্রায় ২৫ বছর পর ২০২০ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশ তদন্তে অবশেষে আত্মহত্যাকে তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু পরিবারসহ তার গুণমুগ্ধ ভক্তরা তা মানতে নারাজ। এই রহস্যময় ঘটনার ছায়ায় কি ঘটেছিল তারই একটা কাল্পনিক পরিবেশনা হবে ‘বুকের মধ্যে আগুন’ ওয়েব সিরিজে।
আরও পড়ুন: ভিকি জাহেদের প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘দ্য সাইলেন্স’ বিঞ্জের পর্দায় দেখা যাবে ফেব্রুয়ারিতে
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই-এর পঞ্চায়েত শুভাগমন
আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৫ বছর আগে ২০১৭-এর ২০ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করেছিল এই ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। কোনো ওয়েব সিরিজ না থাকলেও তখন এর কন্টেন্ট ছিল প্রতিষ্ঠাতা সংস্থা এসভিএফের নিজস্ব ২০টি সহ ৪০০ টির বেশি বাংলা সিনেমা, ২০টি অরিজিনাল শো, এবং এক হাজারেরও বেশি গান। সব মিলিয়ে গ্রাহকদের জন্য উন্মুক্ত হয়েছিল প্রায় এক হাজার ৪০০ ঘন্টার কন্টেন্ট।
হৈচৈ বাংলা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম: বিশ্বজুড়ে বাঙালির কোটি প্রাণের স্পন্দন
প্রযুক্তির উৎকর্ষে স্যাটেলাইট ও কেবল টিভির প্রভাবকে অতিক্রম করে ক্রমেই বিশ্ববাসীর মনে জায়গা করে নিচ্ছে ওভার দ্যা টপ বা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। ওটিটি মুলত ইন্টারনেটের মাধ্যমে দর্শকদেরকে মিডিয়া সেবা সরবরাহ করে। বিশ্বায়নের এই স্পন্দন ইতোমধ্যে বাংলা ভাষাভাষি লোকদের মাঝেও ছড়িয়ে গেছে। ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিশ্বের প্রথম বাংলা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ভারতে এর অফিসিয়াল কার্যক্রম শুরু করে হৈচৈ। নিরবচ্ছিন্ন অনলাইন বাংলা বিনোদন স্লোগান নিয়ে হৈচৈ সর্বশেষ বাংলা সিনেমা, ওয়েব সিরিজ, মিউজিক ভিডিও পৌছে দিচ্ছে বিশ্ব বাঙালির কাছে। হৈচৈ-এর ভিডিও স্ট্রিমিং সাইটটি নিয়েই সাজানো হয়েছে এবারের বিনোদনধর্মী ফিচারটি।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হৈচৈ: বিনোদনের নতুন দিগন্তে বাংলার সূর্যোদয়
নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম ও হুলুর মহরতে বাঙালিরা বেশ ভালো ভাবেই বিনোদনের নতুন পরিভাষাগুলোতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলো। সেই সূত্রে, ঘরের টিভিতে আর হাতের মুঠোয় স্মার্টফোনটিতে সবাই পরিচিত ভাষায় কথোপকথোন দেখার চাহিদা অনুভব করছিলো। ২০১৬ এর শরতে ঠিক এই সম্ভাবনাটি আবিষ্কার করে পূর্ব ভারতের বৃহত্তম বিনোদন উৎপাদন ও বিতরণ স্টুডিও শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস প্রাইভেট লিমিটেড (এসভিএফ)-এর সৃজনশীল টীম। সে সময় থ্রিজি থেকে ফোরজিতে উত্তরণের তোড়োজাড় চলছিলো।
আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডাটা অনুযায়ী, ২০১৬ সালে দক্ষিণ এশিয়ার ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সংখ্যা ৪৬৮ মিলিয়ন যা সে সময় থেকে বিগত পাঁচ বছর পূর্বের তুলনায় ৩১২.৮৪ মিলিয়ন বেশি। তাই ফোরজি সহজলভ্যতার যুগপৎ অগ্রযাত্রায় এসভিএফ সামাজিক মাধ্যমগুলোর গন্ডি পেরিয়ে বাঙালি কম্যুনিটির সামনে বাংলার নেটফ্লিক্স উপস্থাপন করতে চাচ্ছিলো।
আর এই চিন্তাপ্রসূত ফলাফল অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিস- হৈচৈ। অবশেষে, ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ২০টি অরিজিনাল শো, এসভিএফের নিজস্ব ২০টি সহ ৪০০ টির বেশি বাংলা সিনেমা এবং ১০০০এরও বেশি গান নিয়ে যাত্রা শুরু করে হৈচৈ। সব মিলিয়ে প্রায় ১৪০০ ঘন্টার কন্টেন্ট গ্রাহকদের জন্য উন্মুক্ত ছিলো এই শুভ মহরতে।
আরও পড়ুন: মানসপটে সালমান শাহ ও কিছু বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি বনে যাওয়া
অনলাইন স্ট্রিমিং সার্ভিস হৈচৈ এর নেপথ্যের মানুষেরা
হৈচৈ-এর থিঙ্কট্যাঙ্ক শ্রীকান্ত মোহতা, মাহেন্দ্র সোনি এবং বিষ্ণু মোহতা। চেয়ারপার্সন হিসেবে কর্তব্যরত আছেন বিষ্ণু মোহতা। এসভিএফ-এর এই পরিচালকত্রয়ই হৈচৈ এর মাধ্যমে বাংলা কন্টেন্টের প্রচার ও প্রসার সম্ভব করছেন।
হৈচৈ-এর জন্ম লগ্নেই এসভিএফ ছিলো প্রায় দুই দশক ধরে পূর্ব ভারতে হলিউড ও বলিউড চলচ্চিত্র বন্টনের প্রোফাইল সমৃদ্ধ প্রযোজনা সংস্থা। পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতা সদর দপ্তর থেকে বিশ্বব্যাপী ২৫০ মিলিয়ন বাঙালির জন্য ৩৬০-ডিগ্রি বিনোদন সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে হৈচৈ।
২০১৬ এর অক্টোবর থেকে অংশীদার হিসেবে ওটিটি সার্ভিসটির টেকনিক্যাল বিষয়গুলো তদারক করে আসছে ভিউলিফ্ট কোম্পানি। ভিউলিফট-এর দায়িত্বের মধ্যে হৈচৈ এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ বানানো ও পরিচালনা সহ বিনোদন ও মিডিয়া খরচ, বিতরণ, এবং নগদীকরণও অন্তর্ভূক্ত।
হৈচৈ-এর কন্টেন্টের দৃশ্যায়ন ও বিজ্ঞাপন প্রচারণার নেপথ্যে সৃষ্টিশীল কাজগুলোর দায়িত্বে নিয়োজিত রেডিফিউশন ওয়াই এ্যান্ড আর। এমনকি, হৈচৈ নামটিও এই সৃজনশীল এজেন্সিটির দেয়া।
আরও পড়ুন: ওয়েব সিরিজ ‘বলি’: অভিনব চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরী
বর্তমানে হৈচৈ-এর সাথে অংশীদারিত্বে থাকা টেলিকম পরিষেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছে ভারতের জিওফাইবার, এয়ারটেল এক্সস্ট্রীম, অ্যালায়েন্স, উইশনেট ও মেঘবেলা, বাংলাদেশের লিঙ্ক-থ্রি ও গ্রামীণফোণ এবং মালয়েশিয়ার সহজ।
হৈচৈ ভিডিও স্ট্রিমিং: বাংলা বিনোদনের ভবিষ্যতে পদার্পণ
নিয়ত বিনোদনের নতুনত্ব চর্চার ফলে এক সময় যা সম্ভাবনা ছিলো এখন তার ভেতরেই বসবাস করছে বিশ্ববাসী। এই পরশপাথরের স্পর্শের বাইরে নেই বাঙালিরাও। নেটফ্লিক্সের মত হৈচৈও শোভা পাচ্ছে হাতের মুঠোফোন ও টেবলেটের পাশাপাশি অ্যাপল টিভি, অ্যামাজন ফায়ার টিভি, রোকু টিভি, ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, এবং ক্রোমকাস্ট থাকা ডিভাইসগুলোতে।
৫০০এর বেশি বাংলা সিনেমা, এক্সক্লুসিভ অরিজিনাল শো, শর্টফিল্ম, মিউজিক ভিডিওর পাশাপাশি গ্রাহকরা উপভোগ করতে পারছে প্রতি মাসে নতুন কন্টেন্ট। অর্থাৎ পুরো বিশ্বটা ছোট্ট একটি গ্রামের ভাবনাটা এখন রীতিমত চাক্ষুষ করা যাচ্ছে। যে কোন জায়গা ইচ্ছে ঘুরে বেড়িয়ে অথবা ঘরে বসে কম খরচে বিপুল পরিমাণের কন্টেন্টের মাধ্যমে আপ-টু-ডেট থাকা যাচ্ছে নিমেষেই।
সর্বসাকুল্যে, টিভি চ্যানেলগুলোর করুণায় থেকে প্রতি সপ্তাহের সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলোর ওপর নির্ভর করার দিন শেষ। ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট হৈচৈ গ্রাহকদেরকে অভ্যস্ত করে তুলছে খুঁজুন এবং উপভোগ করুন তত্ত্বে। এছাড়া ফ্রিমিয়াম, অফলাইন ডাউনলোড প্রভৃতি আকর্ষণীয় সুযোগগুলোর কারণে ওটিটি প্ল্যাটফর্মটিতে গ্রাহকদের আনাগোনা থাকছে দীর্ঘক্ষণ ধরে।
আরও পড়ুন: ঢাকার কাছে কাশফুলের খোঁজে: গন্তব্য যখন শরতের শ্বেতশুভ্র স্বর্গ
ওয়েব সিরিজ ‘বলি’: অভিনব চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরী
‘বলি???? না থাক….বলবো না….’ ঠিক এরকমই একটা পোস্ট করে সম্প্রতি নিজের নেটিজেন ফ্যানদের বেশ চমকে দেন বহুমুখী চরিত্রের সফল অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। পোস্টটির বিশেষত্ব ছিল চঞ্চল চৌধুরীর ন্যাড়া মাথার ছবি। হতবাক করে দেয়া এই ছবিটির নেপথ্যে রয়েছে হৈচৈ প্লাটফর্মের জন্য নির্মিত নতুন ওয়েব সিরিজ ‘বলি’। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ওয়েব সিরিজ ‘বলি’ এর শ্যুটিং শুরু হয়। আগামী ডিসেম্বর থেকে হৈচৈ এর দর্শকরা উপভোগ করতে পারবেন এই ওয়েব কন্টেন্টটি।
চলুন, এখনো পর্দার অন্তরালে থাকা এই ওয়েব সিরিজটির ব্যাপারে কিছু জেনে নেয়া যাক।
ওয়েব সিরিজ ‘বলি’ এর নেপথ্যের গল্প ও কলাকুশলী
মিডিয়া পাড়ায় বিজ্ঞাপন নির্মাতা হিসেবে সুপরিচিত শঙ্খ দাশ গুপ্ত চট্টগ্রামের বলিখেলার উপর কেন্দ্র করে ‘বলি’ এর কাজ শুরু করেছেন। এছাড়া সিরিজটির চিত্রপট নিয়ে ‘বলি’ টীম সবাইকে বেশ কৌতূহলের মধ্যে রেখেছে।
চঞ্চল চৌধুরী ছাড়াও ‘বলি’তে থাকছেন সোহানা সাবা, সাফা কবির, মৌসুমি মৌ, জিয়াউল হক পলাশ এবং সোহেল মন্ডল রানা। রঙের মানুষ খ্যাত পরিচালক ও অভিনেতা সালাউদ্দিন লাভলু ‘বলি’ এর মাধ্যমে ওয়েব প্ল্যাটফর্মে তার যাত্রা শুরু করছেন।
সিরিজটিতে পর্ব সংখ্যা কত হবে সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি। ‘বলি’ এর প্রযোজনায় আছে গুড কোম্পানি। দুই সপ্তাহের মধ্যেই শ্যুটিং শেষ করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে শঙ্খ দাশের টীম। কলাকুশলীরা এখন শ্যুটিং এর কাজে কুয়াকাটায় অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন: চরিত্রের প্রয়োজনে নতুন লুকে চঞ্চল চৌধুরী
আরও একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ চরিত্র রূপায়নে চঞ্চল চৌধুরী
হৈচৈতে ‘তকদীর’ এ ব্যাপক সাফল্যের পর একই প্ল্যাটফর্মে চঞ্চল চৌধুরীর এটি দ্বিতীয় কাজ। নতুন ওয়েব সিরিজ নির্মাতা শঙ্খ দাশ গুপ্তের সাথে চঞ্চল চৌধুরীর এটা প্রথম কাজ হলেও তিনি ‘বলি’ নিয়ে বেশ আশাবাদী।
তার সমসাময়িক অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও এক বাক্যে তার অভিনয়ের বহুমুখীতার কথা স্বীকার করে। ‘মনপুরা’র সোনাই, ‘আয়নাবাজি’র আয়না এবং ‘দেবী’র মিসির আলী চরিত্রগুলোর মাধ্যমে দর্শকদের পাশাপাশি বিনোদন জগতের প্রতিটি মহলে তিনি নিজের নামটি সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন।
এখন পর্যন্ত চঞ্চল চৌধুরীর অর্জনে আছে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও দর্শকদের পাশাপাশি সমালোচক জরিপে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার এবং শ্রেষ্ঠ কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনেতা বিভাগে আরটিভি তারকা পুরস্কার।
এর বাইরেও অভিনয়ের প্রতি তার নিষ্ঠার প্রমাণ মেলে প্রতিটি কাজের সময় তার মেকাপ-গেটাপে। মঞ্চাভিনয় থেকে উঠে আসা এই অভিনেতা শুধু পরচুলা ও নকল দাড়িতেই সীমাবদ্ধ থাকেন না। চারুকলার ছাত্র হওয়ায় মেকাপের ব্যাপারে চঞ্চল চৌধুরীর শিল্পজ্ঞান সুস্পষ্ট। তাই চরিত্র রূপায়নে মেকাপের ক্ষেত্রে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করেন এই স্বভাব-অভিনেতা।
আরও পড়ুন: মুক্তি পেলেন পরীমণি
ঈদুল আজহার শীর্ষ ১০ জনপ্রিয় বাংলা নাটক
ওয়েব মিডিয়ায় চঞ্চল চৌধুরীর সাবলীল বিচরণ
যদিও ‘মনের মানুষ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চঞ্চল চৌধুরী ওপার বাংলায় পরিচিত পান, তবে ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হৈচৈ-এ ‘তকদীর’ মুক্তি পাবার পর তার সুখ্যাতি আরও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে ওয়েব কন্টেন্টে তিনি নিয়মিত হতে থাকেন। ইতোমধ্যে তিনি দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন গিয়াসউদ্দিন সেলিমের ‘যাত্রী’, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় ও তানিম নূরের ‘কন্ট্রাক্ট’, রবিউল আলম রবির ‘ঊনলৌকিক’ এ কাজ করে। তার অভিনীত জনপ্রিয় পরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরীর অভিষেককৃত ওয়েব সিরিজ ‘মুন্সিগিরি’ পর্দা উন্মোচনের পথে।
প্রথমবারের মত বাংলাদেশি ওয়েব সিরিয়াল ফিচার করছে ভারতের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভ। গোলাম সোহরাব দোদুল পরিচালিত সিরিয়ালটির নাম ‘রূপকথা নয়’ এবং এতে মূল চরিত্রে আছেন চঞ্চল চৌধুরী।
সম্প্রতি দুই বাংলার বিখ্যাত গায়ক, নির্মাতা ও অভিনেতা অঞ্জন চৌধুরীর সাথে একটা ওয়েব সিরিজের কথা চলছে। কোভিড পরিস্থিতিসহ চিত্রনাট্য, চরিত্র সব ঠিক থাকলে অক্টোবরেই শ্যুটিং শুরুর পরিকল্পনা আছে।
পরিশিষ্ট
বৈচিত্র্যময় চরিত্র ফুটিয়ে তোলার ধারাবাহিকতায় ওয়েব সিরিজ ‘বলি’ তেও নিজের নামের সুবিচার করতে পারবেন বলে বিশ্বাস চঞ্চল চৌধুরীর ভক্তদের। ‘বলি’র হাত ধরে হৈচৈ-এর মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও চঞ্চল চৌধুরীর আইকনিক চরিত্র সৃষ্টি হতে পারে। সর্বসাকুল্যে, দক্ষিণ এশিয়ার ওয়েব ধারাবাহিকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশি কন্টেন্টগুলোর আড়ম্বরপূর্ণ অবস্থানপ্রাপ্তির সম্ভাবনা তো থাকছেই।