পরিকল্পনাবিদ
বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ৬ স্থানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে: শামসুল আলম
পরিকল্পনাবিদ ও সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ছয়টি স্থানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অঞ্চলভেদে আর্থ-সামাজিক বৈষম্য এবং এর সাধারণ ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।
অঞ্চলগুলো হলো- উপকূলীয় অঞ্চল, বরেন্দ্র ও খরাপ্রবণ অঞ্চল, হাওর ও আকস্মিক বন্যাপ্রবণ এলাকা, পার্বত্যাঞ্চল ও নগর এলাকা।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর দারুস সালাম জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ বাস্তবায়নে’- গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডসের ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দ্বিতীয় পর্যায়ের সমঝোতা স্মারক
১০ মাস আগে
কেমন হবে আমাদের মেট্রোরেল?
দেশ আজ উন্নতির হাইওয়েতে। অনেক স্বপ্নিল প্রকল্পের মাঝে মেট্রো রেলও একটি। কাজ শুরু হয়ে গেছে। ধুলাবালি, কাদা, রাস্তা কাটাকাটির দুঃসহ ট্রাফিক জ্যামের মাঝে ও আশায় বুক বেঁধে আছি কবে এক নিমেষে ফার্মগেট,মতিঝিল চলে যাবো। পরিপাটি পরিচ্ছন, ধুমপান ও খাওয়া দাওয়া বিহীন ট্রেনের কামরায় বসে গন্তব্যে যাচ্ছি। মিষ্টি সুরে বলবে “পরবর্তী ষ্টেশন আগারগাঁও, দরজা বাম দিকে খুলবে, দরজা বন্ধ হচ্ছে ইত্যাদি”। স্মার্ট কার্ড, স্মার্ট টিকেট সিস্টেম কত কিছুই না দেখবে এদেশের জনগন। আহ সেদিন আসিবে কবে?
সুদিন আসছে। রেল গাড়ির ট্রায়াল রান শুরু হয়ে গেছে। পূর্ণাঙ্গ চালু হতে বছর দুয়েক সময় লাগবে।
দুই দশকের ও কম সময়ের আগে যখন দিল্লি যাই তখন দেখি মেট্রো রেলের কাজ চলছে। দিল্লির লোকদের স্বপ্ন পর্ব চলছিলো। কিন্তু কলকাতা এদিকে এক ধাপ এগিয়ে ছিল। কলকাতায় পুরোদমে মেট্রো রেল চালু ছিল। লক্ষ্য করলাম কলকাতার কোচ গুলো চেন্নাই এর তৈরি আর দিল্লির জন্য জাপানি কোচের অর্ডার দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় রাজধানী ও প্রাদেশিক রাজধানীর একটা পার্থক্য থাকবেনা? যাক তা দেখা আমার বিষয় নয়।
২০১৭ সালে দিল্লি গিয়েছিলাম। বিমান বন্দর থেকে নিউ দিল্লি ষ্টেশন পর্যন্ত যথাযথ সুন্দর পরিপাটি মেট্রো রেলের দেখা পেলাম। পরবর্তী গন্তব্য গুলোতে যেতে টের পেলাম এটা কোন রেল। লোকজনের ভিড়, ধাক্কা ধাক্কি, মাথায় মালপত্র নিয়ে গায়ের উপর পড়ে যাওয়া কি এক বিচ্ছিরি কারবার। নাভিশ্বাস উঠার অবস্থা। যাত্রীদের পোশাক আশাক, ঘামের গন্ধ, পান ও জর্দার সুবাস সব মিলিয়ে মেট্রো রেলের স্বপ্ন ভঙ্গ হলো। এতো লোক সংখ্যার শহরে আদর্শ মেট্রো রেল কিভাবে কাজ করবে। কোচ গুলির অনেক সিস্টেম কাজ করে না। মিষ্টি গলায় যাত্রীদের জন্য ঘোষণা আসে না।
কর্তৃপক্ষকে দোষ দেবার সুযোগ কই? মেট্রো রেলের সব কিছুই তারা ঠিক মত করেছে। কিন্তু পরিকল্পনাবিদরা ভাবেননি যে ভবিষ্যতে লোক সংখ্যা কি দাড়াবে? অশিক্ষিত জনগনের জন্য আধুনিক সিস্টেম নির্ভর মেট্রো রেল কতটুকু সুবিধাজনক ভাবে কাজ করবে। দিল্লি পৃথিবীর এক নম্বর নোংরা শহর। পরিচ্ছন্ন মেট্রো রেল এর সাথে সাথে এর আরোহীদের সাফ সুতরা করার কোন পরিকল্পনা ছিল কি? নিরাপত্তার নামে ষ্টেশন গুলোতে চেকিং ও মালপত্র স্ক্যানিং এর দীর্ঘ লাইন বিরক্তিকর ও বিব্রতকর। অনেক লাগেজের সাইজ এতো বড় যে স্ক্যানিং মেশিনে ঢোকে না। কলকাতা যাওয়া হয়নি। সেখানকার মেট্রো রেল দিল্লির মত কিনা জানি না।
আমরা সব কিছুতেই বিশ্বের এক নম্বর। আমাদের পরিকল্পনাবিদরা নিশ্চয় এসব দিক বিবেচনায় রেখেছেন যে আগামী দিনের জনসংখা ও আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে আমাদের কি রকম মেট্রো রেল হওয়া উচিৎ। এটা কি সিঙ্গাপুর জাপানের আদলে আদর্শিক কিছু নাকি মস্কোর মেট্রো রেলের ন্যায় শক্তিশালী ও কার্যকর একটা মেট্রো রেল হবে তা দেখার অপেক্ষায় আছি। তবে নির্মাণকালীন সময়ের দুর্ভোগ (যা শুরু হয়ে গেছে) কাটিয়ে যদি বেঁচে থাকি তাহলেই মেট্রো রেল দেখতে পাবো। অপেক্ষায় থাকলাম।
লেখক: কলামিস্ট ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা
(প্রকাশিত মতামতের দায় লেখকের, ইউএনবির নয়)
আরও পড়ুন: পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ
নয়া তালেবান, পুরান তালেবান: তফাৎ কী?
৩ বছর আগে