কৃষি খাত
কৃষি খাতে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন: পরিবেশ উপদেষ্টা
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, কৃষি খাতে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
এজন্য কৃষি, পানিসম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিএআরএফের আয়োজনে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘কৃষিখাতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
খরা, অতিবৃষ্টি, লবণাক্ততা ও বন্যায় কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমস্যা সমাধানে গবেষণা ও প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স গঠন করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
তিনি আরও বলেন, কৃষি উৎপাদন টেকসই রাখতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হবে। এছাড়া নিরাপদ ও অরগানিক খাদ্য উৎপাদনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব।
এজন্য নিরাপদ খাদ্যের মেলা আয়োজন জরুরি, একইসঙ্গে কীটনাশক ব্যবহারে সবাইকে সচেতন হতে হবে বলে জানান রিজওয়ানা হাসান।
বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সবুজের সভাপতিত্বে বৈঠকটি পরিচালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক কাওসার আজম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। প্রধান আলোচক এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সিড অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব কৃষিবিদ ড. আলী আফজাল।
কৃষি ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। তারা টেকসই কৃষি উৎপাদন, জলবায়ু সহনশীল ফসল এবং ক্ষুদ্র কৃষকদের সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। কৃষি বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদ, নীতিনির্ধারক ও সাংবাদিকরা এতে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: পানি-ভূমি, খাদ্য ও পরিবেশের আইনি স্বীকৃতি দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
২ সপ্তাহ আগে
বন্যায় কুড়িগ্রামে কৃষি খাতে ক্ষতি ১২৭.৫৪ কোটি টাকা
কুড়িগ্রামে সাম্প্রতিক বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় জেলার কৃষকেরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বন্যার কারণে কুড়িগ্রামে কৃষি খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১২৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
বন্যায় জেলার মোট ৮০ হাজার ৩৫ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং ১৫ হাজার ৮৫১ হেক্টর ফসলি জমি আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে তলিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আরেক দফা বন্যার আশঙ্কা
চলতি মৌসুমে জেলার কৃষকরা ৩৪ হাজার ৩১০ হেক্টর কৃষি জমি আবাদ করেছেন। কিন্তু আকস্মিক বন্যা ও ভারী বৃষ্টির কারণে প্রায় ১৫ হাজার ৮৫১ হেক্টর জমি প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ দিনের বন্যায় ৭ হাজার ৩৫১ হেক্টর জমি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া বন্যার পানিতে প্রায় ৮ হাজার ৪২৭ হেক্টর ফসলি জমির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে মোট ৩৫ হাজার ৫৫ মেট্রিক টন ফসলের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা মোট ফসলের ২৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আউশ ধান ও পাট চাষে। এরপরই রয়েছে সবজি।
কুড়িগ্রামে বন্যার পানিতে পাটের ১৬ হাজার ৫৭৭ হেক্টর জমির মধ্যে ৯ হাজার ৫২১ হেক্টর; আউশ ধানের ৮ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমির মধ্যে ৩ হাজার ৫৮০ হেক্টর এবং সবজির ৪ হাজার ৩৪ হেক্টর জমির মধ্যে এক হাজার ১৬১ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে কমিটি গঠনের সুপারিশ
এছাড়া জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মধ্যে রয়েছে আমন বীজতলা, পাট, আউশ ধান, তিল, সবজি, চিনাবাদাম, কলা, ভুট্টা, মরিচ, আদা, হলুদ, পেঁয়াজ, আখ ও মসুর ডাল।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ছড়ারপাড় গ্রামের সবজি চাষি শামসুল আলম বলেন, ‘আমি আট বিঘা জমিতে পটল চাষ করেছি। আমার ক্যাশ ছিল ৫০ হাজার টাকা, এনজিও থেকে (ঋণ) নিছি ৩০ হাজার টাকা এবং সুদের পর নিছি ২০ হাজার টাকা। এবার আমি বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।’
একই গ্রামের আরেক কৃষক জব্বার আলী বলেন, ‘এ বছর আমরা মোটা অঙ্কের লাভ হবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু আকস্মিক বন্যায় আমাদের স্বপ্ন ভেসে গেছে।’
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা সম্ভাব্য ক্ষতি নিরুপণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে সাত হাজার কৃষককে প্রণোদনার আওতায় আনার জন্য একটি বরাদ্দ পেয়েছি যা তাদের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে সাহায্য করবে।’
২ বছর আগে
কৃষি খাতের লাভজনক বাণিজ্যিকীকরণের চেষ্টা চলছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
দেশের গরীব কৃষকদের জন্য কৃষি খাতের লাভজনক বাণিজ্যিকীকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা নিশ্চিত করতে, নিরাপদ এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।’
বুধবার ঢাকায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার এর আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশি পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি, সংরক্ষণ, বিশ্ববাজারে প্রবেশ সহায়তা, আমদানি ব্যয় ও সময় কমাতে সহায়তা প্রদানের জন্য ‘বাংলাদেশ ট্রেড ফেসিলিটেশন প্রজেক্ট’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ই-কমার্সে প্রতারিত গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়া সম্ভব: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশের কৃষি খাতে সহায়তায় প্রকল্প গ্রহণের জন্য মার্কিন সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশি কৃষি পণ্যের শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করতে সরকার এ খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। কৃষি পণ্যের বাণিজ্য পদ্ধতির আইনি ও কাঠামোগত সংস্কার, পণ্যের গুণগতমান নিশ্চিত করণের জন্য পরীক্ষা পদ্ধতির উন্নয়ন, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত পণ্য সংরক্ষণে অবকাঠামো তৈরি ও উন্নয়নে বাংলাদেশ ট্রেড ফেসিলিটেশন প্রজেক্ট সহায়ক হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশি কৃষি পণ্যের শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হবে।
আরও পড়ুন: মেডিকেল পণ্য উৎপাদনে সহায়তা দেবে সরকার: বাণিজ্যমন্ত্রীউল্লেখ্য, প্রায় ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারকে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার ট্রেড ফেসিরিটেশন এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। এতে করে বাংলাদেশি পণ্যের বিশ্ববাজারে প্রবেশে সহায়তা প্রদান এবং আমদানি ব্যয় ও সময় হ্রাস করতে সহায়ক হবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে এ প্রকল্প আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজতর, স্বয়ংক্রিয়করণ, ঝুঁকিভিত্তিক পণ্য ছাড় করণ প্রক্রিয়া শক্তিশালী করণ, আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া ও পণ্য প্রবেশ সংশ্লিষ্ট নিয়ম-কানুন অবহিতকরণ ও প্রক্রিয়ার উন্নয়ন, পরীক্ষাগারগুলোর পণ্য পরীক্ষার প্রক্রিয়া ও সক্ষমতা উন্নয়ন এবং পচনশীল পণ্যের বাণিজ্যিকীকরণ সহজ করার জন্য কোল্ড-চেইন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: ই-কমার্স বন্ধ নয়, শৃঙ্খলা আনতে রেগুলেটরি অথরিটি হচ্ছে: বাণিজ্যমন্ত্রীঢাকাস্থ ইউএস এ্যাম্বাসির ইউএসডিএ এগ্রিকালচারাল এটাসি মিজ মেগান ফ্রানসিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কার্ল আর মিলার, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং এফবিসিসিআই এর পরিচালক আবুল কাশেম খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ট্রেড ফেসিলিটেশন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মিকায়েল।
৩ বছর আগে