বাউল
কুষ্টিয়ায় বাউলের আস্তানায় ভাঙচুর
কুষ্টিয়ার মিরপুরে নিশান আলী নামে এক বাউলের আস্তানায় ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার দিবাগত রাতের দিকে কোনো একসময় বাউলের আস্তানায় ভাঙচুর চালায় তারা।
বাউল নিশান আলী বাড়ি মিরপুর উপজেলার আহমদপুর গ্রামে।
আরও পড়ুন: ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
স্থানীয়রা জানায়, গত ৬ তারিখ নিশান ও তার চাচাতো ভাইয়েরা মিলে রোহেল শেখ নামে এক রঙ মিস্ত্রিকে মারধর করেন। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নিশানও আসামি। তার জের ধরেও ভাঙচুর চালানো হতে পারে।
নিশান আলী বলেন, কেন আমার ধামে ভাঙচুর হলো আমি জানি না।
রোহেলের সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়ে এই বাউল বলেন, আমার চাচাতো ভাইদের সঙ্গে পাওনা টাকা নিয়ে রোহেলের দ্বন্দ্ব ছিল। তারা টাকা উদ্ধার করতে গেলে সেখানে মারামারির ঘটনা ঘটে। এখন চাচাতো ভাইদের সমস্যা আমার উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার মিরপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবদুল খালেক ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, কে বা কারা, কেন এটা ভাঙলো তা খতিয়ে দেখছি।
হামলার সত্যতা পেলে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান কুষ্টিয়ার মিরপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার।
তিনি আরও বলেন, গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) প্রকল্পের ক্যানাল পাড়ে অবস্থিত ধামটি জনপদ থেকে অনেক দূরে হওয়ায় এলাকাবাসীও কিছু জানাতে পারেননি।
তবে সবার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই ধামে সন্ধ্যার পর গানের আসর বসাতেন বাউলরা।
আরও পড়ুন: দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন শেখ হাসিনা: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
৬ মাস আগে
কুষ্টিয়ায় বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন!
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের লাউবাড়িয়াতে সাধুসঙ্গে বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সকালে বাউল সম্রাট লালন ভক্তবৃন্দের আয়োজনে কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়া লালন অ্যাকাডেমির সামনের সড়কে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া লালন একাডেমির এডহক কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা তাইজাল আলী খান ও মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর। এছাড়া লালন ভক্তদের মধ্যে সুফি সাজেদুল ইসলাম ডালিম, ফকির ফজল সাই, ফকির সফি সাই, ফকির মইনুদ্দিন সাই প্রমুখ।
মানববন্ধন চলাকালীন পুলিশ প্রশাসন বাউলদের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: রাণীশংকৈলে শিক্ষক হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,'লালন অনুসারী ভক্তবৃন্দ সাধুরা খুবই শান্তশিষ্ট প্রকৃতির মানুষ। তারা কোন প্রকার অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত হয়না। সাধুদের উপর এমন হামলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ’
এই হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানান বক্তারা।
পুলিশ ও সাধুসঙ্গ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লাউবাড়িয়া এলাকায় পলান ফকিরের বাড়িতে সমবেত হয়েছিলেন সাধুরা। সেখানে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালান দুর্বৃত্তরা। হামলায় গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন পাঁচ নারী-পুরুষ লালন ভক্ত। সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ গুরুতর আহত হয়েছেন বৃদ্ধ ফজল ফকির। যার বয়স নব্বইয়ের কোটায়। পিটিয়ে জখম করা হয়েছে ফকিরানীদেরও। এসময় কয়েকটি ঘরবাড়িও ভাঙচুর করা হয় বলে জানান পুলিশ।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার দৌলতপুর থানায় ১৯ জনেকে আসামি করে থানায় মামলা করেন পলান ফকির। তবে পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, 'বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।'
আরও পড়ুন: পিএসসির সামনে ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের মানববন্ধন
আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে হামলা: বিচারের দাবিতে ঢাবিতে মানববন্ধন
২ বছর আগে
বাউল সম্রাট আব্দুল করিমের প্রয়াণ দিবস
বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১৩ তম প্রয়াণ দিবস সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর)। ২০০৯ সালের এই দিনে পরপারে পারি জমান এই সুর সাধক।
প্রতিবছর নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হলেও, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যাপরবর্তী নানা কারণে এবার আর পূর্বের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি।
বাউল করিমের প্রয়াণ দিবসে স্থানীয় শিল্পকলা একাডেমি বা উপজেলা প্রশাসনের কোনো কর্মসূচি নেই। বলাচলে পারিবারিক ও ঘরোয়া আয়োজনের মধ্য দিয়ে সংগীত এই মহাজনকে স্মরণ করছেন তার ভক্ত-অনুরাগীরা।
আরও পড়ুন: বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম: ভাটি বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতির এক কীর্তিমান শিল্পী
১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার উজান দল গ্রামে জন্ম নেন শাহ আব্দুল করিম। পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে পড়ালেখার সুযোগ হয়নি আব্দুল করিমের।
তবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হয়েও করিম ছিলেন স্বশিক্ষিত। প্রতিদিনের জীবন জাগতিক সুখ দুঃখ প্রেম ভালোবাসাকে আপন মহিমীয় তুলে ধরেছেন তার বাউল গানে। গানে গানে স্মরণ করেছেন স্রষ্টা ও তার সৃষ্টিকুলকে।
ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন স্বাধীকার আন্দোলনে বাউল সম্রাটের গান বাঙালীকে অনুপ্রেরণা জাগিয়েছে।
মরমী গান আর হৃদয় ছোয়া সুর তাকে হাওরের রাখাল বালক থেকে বাউল সম্রাটের আসনে আসীন করেছে। তিনি পেয়েছেন একুশে পদক।
এছাড়া সাম্প্রতিককালের ভয়াবহ বন্যায় বাউল সম্রাটের স্মৃতি যাদুঘরের ভবন ও সংগ্রহশালার বিভিন্ন উপকরণের ক্ষতি হয়েছে। বন্যা পরবর্তী নানা কারণে বাউল সম্রাটের মৃত্যু বার্ষিকীতে তার গ্রামের বাড়িতে তেমন কোনো আয়োজন নেই। পারিবারিক আয়োজন ও স্থানীয় শিল্পীদের ঘরোয়া আয়োজনে পালিত হচ্ছে ভাটির এই মহাজনের প্রয়াণ দিবস।
আরও পড়ুন: তিন দশক গান গেয়েই চলছে অন্ধ বাউলের সংসার
বাউল করিমের নিজ বসতভিটায় রেখে যাওয়া সংগীত বিদ্যালয়ের সংস্কার এবং প্রস্তাবিত বাউল একাডেমি নির্মাণে সরকার সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সংগীত অনুরাগীরা।
সরকারি পৃষ্টপোষকতা বাউল সম্রাটের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী পালনের দাবি জানিয়েছেন বাউল পুত্র বাউল শাহ নূর জালালের।
তিনি বলেন, আমার বাবা তার জীবদ্দশায় মানুষের জন্য গান লিখেছেন। দেশের বিভিন্ন স্বাধীকার আন্দোলনে তাঁর রচিত গান মানুষকে উৎসাহ দিয়েছে। তার অসংখ্য গান লোক সংগীতকে সমৃদ্ধ করেছে।
তাছাড়া ইচ্ছে থাকলেও বাবার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে তেমন কিছু করতে পারিনা। সরকারি পৃষ্টপোষকতা জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালনের পাশাপাশি তার স্মৃতি রক্ষায় বাউল একাডেমি স্থাপনের দাবি করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুন জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাউলের স্মৃতি জাদুঘরের সংস্কার ও প্রস্তাবিত বাউল একাডেমি নির্মাণে কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: অর্ধশত বছর ধরে বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের জমি প্রভাবশালীদের দখলে
২ বছর আগে
বাউল বেশে ৭ বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল ‘সিরিয়াল কিলার’ হেলাল
কখনো বাউল, কখনো ফকিরের ছদ্মবেশে সাত বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল ‘সিরিয়াল কিলার’ হেলাল। অবশেষে তাকে বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা।
গ্রেপ্তার মো. হেলাল হোসেন ওরফে বাউল সেলিম ওরফে সেলিম ফকির ওরফে খুনি হেলালের (৪৫) বাড়ি বগুড়া জেলায়।
আরও পড়ুন: পাওনা টাকার জন্য নির্যাতনে আহত যুবকের মৃত্যু, নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২
র্যাব সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব-৩ এর একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে ‘ভাঙা তরী ছেঁড়া পাল’ গানের বাউল মডেল হেলাল জানান, তিনি বগুড়ায় একটি হত্যা মামলাসহ একাধিক হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তিনি সাজা থেকে বাঁচতে গত সাত বছর ধরে বিভিন্ন রেলস্টেশন ও মাজারে অবস্থান করে আসছিলেন। রেলস্টেশনে লোকগান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে গ্রেপ্তার ১,গাঁজা জব্দ
আসামির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
২ বছর আগে
তিন দশক গান গেয়েই চলছে অন্ধ বাউলের সংসার
দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে পথে পথে গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন অন্ধ বাউল। গান গেয়ে পথচারীদের মন জয় করেই বেঁচে আছে পরিবারের তিন অন্ধ ভাইসহ আট সদস্যের একটি বড় পরিবার।
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার বরাতিয়া গ্রামের পরিমল দাসের ছেলে অন্ধ বাউল শিল্পী শংকর দাস জন্ম সূত্রে অন্ধ। সংসারের ঘানি টানতে টানতে পার হয়ে গেছে জীবনের ৪০ বছর।
জানা গেছে, শংকর দাসের ছোট দুই ভাই দিপংঙ্কর দাস (২০) ও শুভংঙ্কর দাসও (১৪) জন্ম সূত্রে অন্ধ। তিন অন্ধ ভাইয়ের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তাদের বৃদ্ধ বাবা। বাবার উপার্জনে তাদের সংসার চলে না। অন্য কোন কাজ করার সক্ষমতা না থাকায় ১০ বছর বয়স থেকে গান গেয়ে টাকা উপার্জনের পথ বেছে নেন শংকর দাস।
আরও পড়ুন: দু’হাত হারিয়ে জীবন যুদ্ধে লড়ছে ফরিদগঞ্জের জাহাঙ্গীর
এদিকে, ২১ বছর বয়সে তিনি বিয়ে করেন। পল্লব দাস (৬) ও পার্থ দাস (৪) নামে তার দুই ছেলে রয়েছে।
জানা গেছে, ৩০ বছর ধরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে উপজেলার চুকনগর, আঁঠারোমাইল, কাঁঠালতলা ও খর্ণিয়া বাজারসহ কয়েকটি বাজারের রাস্তার উপর বসে গান গেয়ে পথচারীদের মন জয় করার চেষ্টা করেন শংকর। গান শুনে অনেকে খুশি হয়ে তাকে দুই, এক টাকা করে দেয়। তাতে প্রতিদিন প্রায় দুইশ টাকার মতো উপার্জন হয়।
সেই টাকা দিয়ে স্ত্রী, দুই ছেলে, বাবা-মা ও অন্ধ দুই ভাই নিয়ে মোট আট সদেস্যের সংসার কোনভাবে চলে যায়। কিন্ত বর্তমানে তিনি গান গাইতে গাইতে অনেকটাই ক্লান্ত হয়ে গেছেন। তারপরও অভাবের এই সংসারে একদিন পথে বসে গান না গাইলে পুরো পরিবারকে না খেয়ে থাকতে হয়। তাই নিরূপায় প্রায় প্রতিদিনই পথচারীদের মনোরঞ্জনের জন্য গান গেয়ে চলেছেন।
আরও পড়ুন: রমাকান্তরা আবার স্কুলে যেতে চায়
অন্ধ গায়ক শংকর দাস জানান, আজ তিনি বড়ই ক্লান্ত। অসুস্থতাসহ নানা কারণে আর হয়তো বেশিদিন তিনি গান গাইতে পারবেন না। তখন তার পরিবারের কী অবস্থা হবে, কে নেবে তাদের দায়িত্ব। কথাগুলো বলতে বলতেই এক সময় তিনি কাঁন্নায় ভেঙে পড়েন।
আটলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট প্রতাপ কুমার রায় বলেন, ‘অন্ধ বাউল শিল্পী শংকর দাসের ঘর বাড়িরও বেহাল দশা। তাই আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেষ্টায় কাঁঠালতলা আশ্রয়ন প্রকল্পে তার পরিবার নিয়ে থাকার জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করেছি। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন। তবে তার জন্য আরও কিছু আমাদের করা প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: সৌদি খেজুর চাষে সফল চাঁপাইনবাবগঞ্জের রুবেল
৩ বছর আগে