প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ
একদিনের সুইডিশ রাষ্ট্রদূত রুনা !
সকল স্তরের কিশোরী ও যুবনারীদের জন্য সমান সুযোগ চান একদিনের সুইডিশ রাষ্ট্রদূত রুনা। সোমবার একদিনের জন্য প্রতীকীভাবে বাংলাদেশে সুইডেনের রাষ্ট্রদূতের পদ দেয়া হয়েছে তাকে। কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবক রুনা ধলপুরে শিশু ও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করেছে।
রাষ্ট্রদূতের পদ নেয়ার সময় কিশোরী রুনা বলেন, দেশের সকল স্তরের সকল কিশোরী ও যুব নারী যেন পায় সমান অধিকার,সমান সুযোগ।
আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস ২০২১ উপলক্ষ্যে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ আয়োজিত এই পদ গ্রহণ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাটির ‘গার্লস টেকওভার’ নামক এক বিশেষ বৈশ্বিক কর্মসূচির অংশ। প্রতিবছর বাংলাদেশসহ সাড়া বিশ্বজুড়ে ‘মেয়ে আমি সমানে সমান’ ক্যাম্পেইনের আওতায় এই আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: একদিনের মেয়র বৈশাখী!
এই আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো কিশোরী ও যুব নারীদের সক্ষমতা তৈরি ও নেতৃত্ব বিকাশে বিশ্বব্যাপী আওয়াজ তোলা। এই বছর প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ পুরো মাস জুড়েই প্রায় ৭০টি টেকওভারের আয়োজন করেছে যেখানে রুনার মত দেশের নানা প্রান্তের মেয়েরা দেশের রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক,কূটনৈতিক,সরকারি-নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদ এক দিনের জন্য প্রতীকীভাবে গ্রহণ করবে।
সর্বত্র কিশোরী ও যুবনারীদের স্বাধীনতা,সমতা এবং সমান উপস্থাপন নিশ্চিতে জোরালো আওয়াজ তোলার লক্ষ্যে এই আয়োজন।
একদিনের জন্য সুইডিশ রাষ্ট্রদূত পদে প্রতীকী দায়িত্ব পালন করে রুনা তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে জানায়, ‘আমাদের কমিউনিটিতে মেয়েরা অধিকাংশ সময়ই বুঝতে পারেনা তাদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বিকাশের মাধ্যমে তারা কতদূর পৌঁছাতে সক্ষম। তারাও পারে নেতৃত্ব পর্যায়ে পৌঁছে সমাজে পরিবর্তন আনতে। আজ একজন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমার মধ্যে এমন আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে যে আমি নেতৃত্বের দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম এবং আমার মত অন্যান্য কিশোরীদেরও ক্ষমতায়নে অনুপ্রেরণা প্রদান করতে পারবো,তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে,বিশেষ করে এই বছরের প্রতিপাদ্য অনুযায়ী প্রযুক্তিগত শিক্ষা নিশ্চিতে কাজ করতে পারবো।’ রুনা তার কমিউনিটির যুবদলেরও একজন সদস্য। এই দলের সাথে সে তার কমিউনিটির শিশুদের শিক্ষা এবং কিশোরী ও যুব নারীদের অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধেও কাজ করে। জেন্ডার সমতা,নারী ও মানবাধিকার প্রচারের লক্ষ্যে সুইডেনের নারীবাদী কূটনৈতিক নীতিমালা অনুযায়ী দেশটির বাংলাদেশে অবস্থিত দূতাবাস এই গার্লস টেকওভার কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
আরও পড়ুন: ‘প্লানেট ৫০-৫০’ অর্জনে নারীর ক্ষমতায়নের পূর্ণ বাস্তবায়ন অপরিহার্য: স্পিকার
বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স বার্গ ফন লিন্ডে বলেন,এই আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবসে আমরা মেয়েদের ক্ষমতা ও যোগ্যতাকে উদযাপন করছি,সেই সাথে সকল বাধা ভেঙ্গে চ্যালেঞ্জ করছি সমাজে প্রচলিত সকল চিরাচরিত প্রথাকে,দাবি জানাচ্ছি পরিবর্তনের। কিন্তু আমাদের বিদ্যমান সংকটকেও চিহ্নিত করতে হবে। বাস্তবে এবং অনলাইনে- মানবাধিকার লংঘনের যেকোন ঘটনার প্রথম শিকার হয় মেয়েরাই। বয়স এবং জেন্ডারের কারণে তারা দ্বিগুণ বৈষম্যের শিকার হয়। একদিনের জন্য রাষ্ট্রদূতের এই প্রতীকী দায়িত্ব গ্রহণ,মেয়েদের কণ্ঠ আজ ও আগামীতে সর্বত্র পৌঁছে দেয়ার প্রয়োজনীয়তা প্রকাশের অন্যতম উপায়। এই বছর, আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবসে আমরা কাজ করছি অনলাইনে স্বাধীনতা এবং মিথ্যা ও গুজব নিয়ে যা মেয়ে ও যুবনারীদের প্রতিনিয়ত ডিজিটাল মাধ্যমে প্রভাবিত করছে। বিশ্বজুড়ে মেয়েরা ইন্টারনেটে অধিকহারে অংশ নিলেও প্রতিনিয়ত তারা মিথ্যা তথ্যের শিকার হচ্ছে যা তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এটি মেয়েদের নেতৃত্বের ভূমিকায় এসে জেন্ডার সমতা নিশ্চিতের বৃহত্তর আন্দোলনে অংশ নিতে বাধা দেয়। মেয়েদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিতের আন্দোলনে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের ‘গার্লস টেকওভার’ ক্যাম্পেইন একটি অন্যতম শক্তিশালী উদ্যোগ। সমান সুযোগ পেলে মেয়েরাও তাদের জীবনে এবং সমাজে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। এই টেকওভার কর্মসূচি শুধু মেয়েদের সক্ষমতাকে দৃঢ় করে তাই নয় বরং জেন্ডার সমতা সমর্থনকারী প্রত্যেকের নিবেদিত চেষ্টাকে জোরালো করারও সুযোগ।
এই মাসব্যাপী কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে যেসব পদ প্রতীকীভাবে গ্রহণ করা হবে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো- রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের পদ, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল, চট্রগ্রাম বিভাগের রাঙামাটি,টেকনাফ এবং কক্সবাজারের ইউপি চেয়ারম্যান এবং সিলেটের সমাজসেবা দপ্তরের উপ-পরিচালক।
পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন: পরিকল্পনামন্ত্রী
৩ বছর আগে