লুৎফুজ্জামান বাবর
গ্রেনেড হামলা: তারেকসহ সব আসামির খালাসের রায় আপিলেও বহাল
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হওয়া মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস করে হাইকোটের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে তারেক রহমান-বাবরের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এ সময় বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।
গত বছরের ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে ১৯ মার্চ এ মামলায় সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। দীর্ঘদিন শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য ছিল। আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: সব আসামি খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হয়। নিহত হন আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতা-কর্মী।
ভয়াবহ এ হামলার তদন্তে নামে বিএনপি–জামায়াত জোট সরকার। হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সে সময় অভিযুক্ত হন ২৮ জন। অভিযোগপত্র দেয় সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। শুরু হয় বিচার।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ নতুন করে তদন্ত শুরু করে। টানা ৪১০ দিন টিএফআই সেলে নিয়ে পুনরায় স্বীকারোক্তি আদায় করা হয় মুফতি হান্নানের। সম্পূরক চার্জশিটে যুক্ত করা হয় তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদসহ আরও অনেককে।
আলোচিত এ মামলায় ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত ফাঁসির দণ্ড দেন বাবরসহ ১৯ জনকে। যাবজ্জীবন হয় তারেক রহমানসহ আরও ১৯ জনের।
তবে ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর ওই রায় বাতিল করে দেন হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়, সম্পূরক চার্জশিট এবং বিচারের পুরো প্রক্রিয়াই ছিল বেআইনি।
বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে এই বিচারপ্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পরিসমাপ্তি হলো। ফলে মুক্তি মিলেছে তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সবার।
৯২ দিন আগে
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি ফের ২৪ জুলাই
বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) প্রথম দিনের শুনানি আগামী ২৪ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ শুনানি নিয়ে এই মূলতবির আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ সকালে শুনানির শুরুতে মামলার পেপারবুক থেকে পাঠ করা শুরু করেন।
আদালতে বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, গত ১৫ জুলাই আপিল বিভাগ এ মামলার আপিল শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।
গত ১ জুন এই গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন (লিভ টু আপিল) মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। পরে রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করে।
গত বছরের ১ ডিসেম্বর এই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও কয়েকশ’ মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে।
দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন। ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন—আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজির সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, ‘কাশ্মীরি জঙ্গি’ আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জ্বল, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ।
বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন—খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।
এছাড়া, বিচারিক আদালতের রায়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগনে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আমিন, ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপকমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বখশ চৌধুরী, সিআইডির সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এই মামলার আরেকটি ধারায় খোদা বখশ চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেয় আদালত।
বিচারিক আদালতের এই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলছিল। তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামিকে খালাস দেন।
আরও পড়ুন: একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি বৃহস্পতিবার
১৪০ দিন আগে
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি বৃহস্পতিবার
বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম মুকুলসহ অনেকে।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এর আগে গত ১ জুন এই গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন (লিভ টু আপিল) মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। পরে রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করেন।
এর আগে গত বছরের ১ ডিসেম্বর এই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও কয়েক শ মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার।
তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে।
দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন। আলোচিত ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন— আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজির সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, ‘কাশ্মীরি জঙ্গি’ আব্দুল মাজেদ ভাট, আব্দুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জ্বল, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ।
বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
সে রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন— খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।
এছাড়া, বিচারিক আদালতের রায়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগনে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আমিন, ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপকমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বখশ চৌধুরী, সিআইডির সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এই মামলার আরেকটি ধারায় খোদা বখশ চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
বিচারিক আদালতের এই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে।
২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলছিল।
তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামিকে খালাস দেন।
১৪২ দিন আগে
অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের দণ্ড থেকে খালাস পেলেন বাবর
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বাসা থেকে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৭ বছরের দণ্ড থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১৯ মার্চ) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে বাবরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৮ মে বাবরের গুলশানের বাসার শোয়ার ঘর থেকে অবৈধ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করার অভিযোগে একই বছরের ৩ জুন রাজধানীর গুলশান থানায় এ মামলা হয়।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান
বিচার শেষে একই বছরের ৩০ অক্টোবর ঢাকার মহানগর নয় নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালত বাবরকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে ২০০৭ সালেই আপিল করেন। এ মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত ছিল। একই সঙ্গে রুল জারি করেন। এই রুল নিষ্পত্তি করে আজ হাইকোর্ট তার সাজা বাতিল করে রায় দেন।
২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। সেই থেকে প্রায় ১৭ বছর কারাবন্দি ছিলেন বিএনপির এই নেতা।
এরপর বিভিন্ন মামলায় তার দণ্ড হয়। সেসব মামলা থেকে খালাস ও জামিনের পর চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন তিনি।
২৬০ দিন আগে
বাবরের ৮ বছরের কারাদণ্ড
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপন মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম এ রায় দেন।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি বাবরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। জরিমানার টাকা না দিলে আরও তিন মাস সাজা ভোগ করতে হবে বাবরকে।
পড়ুন: খুলনায় কোকেনের মামলায় একজনকে মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা
২০০৭ সালের ২৬ জুলাই থেকে বাবর এ মামলায় কারাগারে আছেন। ফলে অনেক আগেই সাজার ওই সময় পার করে ফেলেছেন তিনি। যদিও ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলা এবং ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় রয়েছে বাবরের ওপর।
এর আগে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৮ সালের ১৩ জানুয়ারি বাবরের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
একই বছরের ১৬ জুলাই দুদকের উপ সহকারী সচিব রূপক কুমার সাহা বাবরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
বিএনপি জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে ২০০৭ সালের ২৮ মে গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পড়ুন: খুলনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে পুলিশ সদস্য স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
চট্টগ্রাম আদালতে বোমা হামলা: ‘বোমা’ মিজানের মৃত্যুদণ্ড
১৫১৪ দিন আগে