লামা
বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণ: ঘুরে আসুন দ্বিতীয় সাজেক
পর্বত, অরণ্য ও সমুদ্রপ্রেমী এই তিন শ্রেণির পরিব্রাজকদের জন্য সেরা গন্তব্য হচ্ছে বান্দরবান। অতিকায় উচ্চতার নিঃসীম শূন্যতা উপভোগ করতে করতে সবুজ বনে ঢাকা পাহাড়ি রাস্তা ট্রেকিং করা নিঃসন্দেহে কষ্টসাধ্য। এরই মাঝে দু-একটি সুদৃশ্য ঝর্ণা যেন বিস্ময়ের অববাহিকায় দিয়ে যায় রোমাঞ্চকর পরশ। চূড়ায় ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই সেই অনন্ত শূন্যতার সঙ্গে আলিঙ্গনটা যেন এত কষ্টের স্বার্থকতা এনে দেয়। এর সঙ্গে দৃষ্টিসীমানায় ফেনিল সাগরের দৃশ্য জুড়ে দিলেই তা মিলে যাবে মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণ অভিজ্ঞতার সঙ্গে। দ্বিতীয় সাজেক নামে পরিচিত এই জায়গাটি ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক দর্শনীয় স্থানটির বৃত্তান্ত।
মিরিঞ্জা ভ্যালির অবস্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলা বান্দরবানের অন্তর্গত লামা উপজেলা। অপরদিকে,কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে আলীকদম সড়কে লামার অবস্থান। এই উপজেলারই অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর মিরিঞ্জা ভ্যালি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভ্যালির অবস্থান প্রায় ১ হাজার ৫০০ ফুট উঁচুতে।
মিরিঞ্জা ভ্যালির ইতিহাস ও বিশেষত্ব
সরাসরি ভ্যালির ইতিহাস বা এর নামকরণের উৎপত্তি নিয়ে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্সের গোড়াপত্তন হয়েছিল ২০০৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রায় ১৬ একর পাহাড়ি ভূমিকে ঘিরে। এর আগেও কতিপয় ট্রেকারদের আনাগোনা থাকলেও এই কমপ্লেক্সই মূলত স্থানটির জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করে। মিরিঞ্জা পাহাড়ের দক্ষিণ প্রান্তের চূড়ায় ইট পাথরে নির্মাণ করা হয় বিখ্যাত টাইটানিক জাহাজের ভাস্কর্য,যার উদ্বোধন হয় ২০০৫ সালের ১৯ এপ্রিল।
এখানকার প্রধান আকর্ষণ হলো পাহাড় ও মেঘের অসাধারণ মিথস্ক্রিয়া। এই কারণে পর্যটনকেন্দ্রটিকে বর্তমানে দ্বিতীয় সাজেক ভ্যালি হিসেবে অভিহিত করা হয়।
আরো পড়ুন: হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ঢাকা থেকে বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালি যাওয়ার উপায়
মিরিঞ্জা যাওয়ার জন্য প্রথমত রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ,ফকিরাপুল বা সায়েদাবাদ থেকে কক্সবাজারের বাস ধরতে হবে। অতঃপর গন্তব্যের আগেই নেমে যেতে হবে চকরিয়া বা চিরিঙ্গা বাস টার্মিনালে।
এছাড়া কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রেলপথে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যাওয়া যায়। অতঃপর বাসে করে সরাসরি চকরিয়া বাস টার্মিনাল।
দ্রুত সময়ে যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজারের ফ্লাইট ব্যবহার করা যেতে পারে। তারপর কক্সবাজার থেকে বাসে করে চকরিয়া পৌঁছাতে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগে।
চকরিয়া থেকে লামা-আলীকদম সড়ক ধরে মিরিঞ্জা ভ্যালিতে যাওয়ার সিএনজি, জিপগাড়ি বা লোকাল বাস পাওয়া যায়। এই পরিবহনগুলো লামা-আলীকদম পথে মিরিঞ্জা পাহাড়ের পাশে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে ১০ মিনিট হাঁটার দূরত্বে ভ্যালির অবস্থান।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের ফুকেট ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
যারা ট্রেকিং করতে ইচ্ছুক তাদের চকরিয়া থেকে চান্দের গাড়িতে করে মুরুম পাড়া পর্যন্ত আসতে হবে। এখান থেকে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে ভ্যালি পর্যন্ত ২০ মিনিটের একটি সহজ ট্রেকিং পথ আছে।
চান্দের গাড়িগুলো মিরিঞ্জা পাড়া পর্যন্তও যায়, যেখানে মেইন রোড থেকে ভ্যালি মাত্র ১০ মিনিট হাঁটা পথ।
মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণে কী কী দেখবেন
পাহাড়ি রাস্তা বা ঝিরিপথ পেরিয়ে চূড়ায় আরহণের পর দূরে দেখা যায় মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স এবং সাঙ্গু নদীসহ বিশাল পাহাড়জুড়ে বিস্তীর্ণ সবুজ বনভূমি। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য এই চূড়া উপযুক্ত একটি স্থান। এখান থেকে দিগন্তরেখায় কক্সবাজার অংশের বঙ্গোপসাগরের উত্তাল জলরাশি চোখে পড়ে। সেই সঙ্গে দৃশ্যমান হয় লাইট হাউস,যার ক্ষীণ আলোয় সরু রেখায় আলোকিত হয়ে ওঠে পৃথিবীর দীর্ঘতম সৈকত।
মুগ্ধতার পরিসর আরও একটু বাড়িয়ে দিয়ে কখনো কখনো সেই রেখায় ভেসে ওঠে একটি দুটি জাহাজ। পাহাড়ের দক্ষিণ প্রান্তের টাইটানিক জাহাজের কাঠামোটিও এখানকার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। পর্যটনকেন্দ্রের কাছেই উপজেলা শহরে ম্রো, ত্রিপুরা, ও মারমাসহ মোট ১১ জনগোষ্ঠির বসবাস।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের চিয়াং মাই ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণের সেরা সময়
বর্ষাকালের শেষ থেকে শরৎকাল পর্যন্ত প্রায় সারাদিনই পরিষ্কার আকাশে শুভ্র মেঘের খেলা দেখা যায়। পাহাড়ের চূড়া থেকে এই দৃশ্য দেখার অনুভূতির কোনো বিকল্প হয় না। তবে এ সময়টাতে পাহাড়ি পথ বেশ পিচ্ছিল থাকে। ট্রেকিং পথ খুব একটা দুর্গম না হলেও উষ্ণ মৌসুমের ফলে পুরো যাত্রাটা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই এখানে আসার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে শীতের শুরু, তথা নভেম্বর মাস। এ সময় কুয়াশার ঘনঘটা তেমন থাকে না, বিধায় পাহাড়ের উপরের দৃশ্যগুলো ভালোভাবে দেখা যায়।
১ মাস আগে
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় নতুন অতিথি ৬ ক্যাঙ্গারু, ৬ লামা
সাদা বাঘের জন্য ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছিল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। এবার এই চিড়িয়াখানায় যুক্ত হলো হল্যান্ড থেকে আনা ছয়টি ক্যাঙ্গারু ও ছয়টি লামা।
শুক্রবার (২১শে অক্টোবর) ভোর ৫টায় এসব নতুন প্রাণী চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় পৌঁছে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বর্তমানে শতাধিক প্রজাতির অর্ধসহস্রাধিক পশু ও পাখি আছে।
২ বছর আগে
লামায় যুবককে ‘গুলি’ করে হত্যা
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বান্দরবানের লামা উপজেলায় এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
উপজেলারা রূপসীপাড়া ইউনিয়নের অংহ্লাপাড়ায় সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত মংক্যচিং মার্মা (৩৫) রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালীয়া এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ কর্মীকে গুলি করে হত্যা
লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, মংক্যচিং সোমাবার অংহ্লা পাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান। রাত দেড়টার দিকে ছয় জন অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসী বাড়িটিকে ঘিরে ফেলে। পরে তারা ঘরের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ও বেড়াতে আসা জামাইকে গুলি করে হত্যা করে। এসময় সন্ত্রাসীরা তিন/চার রাউন্ড ফাকা গুলি করে পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে যুবককে গুলি করে হত্যা
ওসি জানান, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
২ বছর আগে
বান্দরবানে প্রবাসীর গর্ভবতী স্ত্রীকে ধর্ষণ, ভাসুরের বিরুদ্ধে মামলা
বান্দরবানের লামায় বেঁধে মারধর করে ধর্ষণের অভিযোগে এক প্রবাসীর গর্ভবতী স্ত্রী তার ভাসুরসহ দুই জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের বৈদ্যভিটা এলাকায় ওই নারী বাথরুমের উদ্দেশ্যে বাইরে বের হলে এ ঘটনা ঘটে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, হামলাকারীরা তাকে জোর করে বাড়ির পেছনে নিয়ে যায় এবং তার দুই সন্তানকে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে রাখে। স্বামী প্রবাসী হওয়ায় বাড়িতে শুধু সন্তানদের নিয়ে থাকতেন ওই নারী।
ভুক্তভোগী জানান, ঘরে তালা লাগানোর আগে দুর্বৃত্তরা বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারও নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ফরিদগঞ্জে শিশু ধষর্ণ মামলায় যুবকের ৫ বছরের কারাদণ্ড
বৃহস্পতিবার সকালে তার দুই সন্তানের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা তাকে অচেতন অবস্থায় একটি গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় দেখতে পায়। এরপর তারা পুলিশে খবর দেন।
লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ওই নারী তার স্বামীর সৎ ভাই জয়নাল আবেদীন ও অপর এক অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে লামা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বৃহস্পতিবার মামলা করেছেন।
তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: হিলিতে শিশু ধষর্ণের অভিযোগ কিশোর আটক
২ বছর আগে
বান্দরবানে বজ্রপাতে চাচা-ভাতিজার মৃত্যু
বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের বজ্রপাতে চাচা-ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে ইউনিয়নের বাঙালিপাড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার লইক্ষ্যাচর ইউনিয়নের জিদ্দাবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. ইছাকের ছেলে মো. এনাম (৪৫) ও নবী হোসেনের ছেলে মো. শহীদ (১৮)। তারা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা হন।
আরও পড়ুন: ১০ বছরে বজ্রপাতে দুই হাজার ৮০০ মৃত্যু: মো. এনামুর
ফাইতং ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন জানান, মো. এনাম ও তার ভতিজা মো. শহীদ ফাইতং ইউনিয়নের বাঙালিপাড়ায় ধানের চাষ করে। ধান পাহারা দেয়ার জন্য গাছের উপরে তৈরি করা মাচাং ঘরে রাতে অবস্থান করে ফসল পাহারা দিতে যায় তারা। সোমবার রাত ১১টার দিকে আচমকা প্রবল বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত হলে এনাম ও শহীদ ঘটনাস্থালে মারা যান।
আরও পড়ুন: জামালপুরে বজ্রপাতে নিহত ৩
এদিকে, একই সময় বজ্রপাতে উপজেলার লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা হিন্দুপাড়ার বাসিন্দা বাসুকুমার দের তিনটি ও মেরাখোলা মুসলিমপাড়ার বাসিন্দা আব্দুর রহমানের একটি গরু মারা যায় বলে জানান চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন।
লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মোহাম্মদ আলমগীর জানান, নিহতদের লাশ উদ্ধার করে দাফনের জন্য স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাওরে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে জেলে নিহত
৩ বছর আগে