অভ্যুত্থান
ক্ষমতায় গেলে স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনে হওয়া সব হত্যার বিচার করবে বিএনপি: তারেক রহমান
আগামী দিনে দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ওই নির্বাচনে বিএনপি যদি সরকার গঠন করে, তাহলে বিগত স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত ও শহিদ হয়েছেন, তাদের প্রতি হওয়া অন্যায়ের বিচার করা হবে।
রবিবার (১৬ মার্চ) বিকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’–এর আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধার আন্দোলনে গুম ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সম্মানে এই আয়োজন করা হয়। এতে বিগত দিনে গুম, খুন এবং জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের বেশ কয়েকটি পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও বিএনপি ও দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণের যে প্রত্যাশা, একজন রাজনৈতিক দলের সদস্য হিসেবে আমাদেরও প্রত্যাশা, সামনে একটি সুস্থ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং কারা সরকার গঠন করবে—বাংলাদেশের জনগণ এই নির্বাচনে তাদের সিদ্ধান্ত দেবেন।’
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন না হলে কোনো সংস্কারই কাজ আসবে না: আমীর খসরু
তিনি বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আগামীতে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব যে রাজনৈতিক দলই পাক না কেন, তাদের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে অবশ্যই একটি কর্মসূচি থাকতে হবে; সেটি হলো—যারা নির্যাতন ও অন্যায়ের শিকার হয়েছে, তাদের প্রতি হওয়া অন্যায়ের বিচার করতে হবে।’
‘যেকোনো মূল্যে সুষ্ঠুভাবে এই বিচার করতে হবে। কারণ আমরা যদি আগামী দিনে অন্যায়ের বিচারগুলো করতে না পারি এবং অন্যায়ের সঠিক ও সুষ্ঠু বিচার যদি না হয়, তাহলে হয়তো-বা দেশে আবারও অন্যায় সংগঠিত হবে।’
বিএনপির এই সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘আমাদের দলের অবস্থান থেকে আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে পারি, বিএনপিকে বাংলাদেশের মানুষ যদি আগামীতে দেশ পরিচালনার সুযোগ দেয়, তাহলে অব্যশই রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে যে, বিগত স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনে জুলাই-আগস্ট মাসে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন এবং যারা শহিদ হয়েছেন, যাদের বিভিন্নভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেসব হত্যাগুলোর বিচার অবশ্যই আমরা করব।’
আরও পড়ুন: নারী-শিশু নির্যাতনে আইনি ও স্বাস্থ্য সহায়তায় বিএনপির ৮৪ সেল গঠন
‘আশা রাখবেন, আগামীতে আপনারা হতাশ হবেন না।... আমরা যদি সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকি, তাহলে এই বাংলায় (নিপীড়নকারীদের) বিচার করতে অবশ্যই আমরা সক্ষম হব।’
বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পক্ষে যতগুলো রাজনৈতিক দল আছে, তারা তার এই প্রস্তাবে দ্বিমত করবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
১ দিন আগে
‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর অনেক ধরনের অনুভূতির জন্ম হয়েছে’
‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমাদের অনেক ধরনের অনুভূতির জন্ম হয়েছে। এই অনুভূতিগুলো বিশেষ করে সংস্কার কার্যক্রম ও আমরা যে ধরনের আশা-আকাঙ্ক্ষার জন্য জীবন বাজি রেখেছিলাম, সেগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে সেটা সেভাবে পূরণ হচ্ছে না। এসব আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে মাঠপর্যায়ে যে ধরনের কার্যক্রম প্রয়োজন, সেটাও আমরা যথেষ্ট পরিমাণে করছি না।’
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা ভবনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সম্মুখ ভূমিকা নিয়ে ‘জুলাইয়ের বীরকন্যা’ শিরোনামে ছবি ও তথ্যচিত্রের আর্কাইভ প্রদর্শনী হয়। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এই প্রদর্শনীতে একটি সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে অভ্যুত্থানে নির্যাতিত নারীরা তাদের বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘যখন একটা বিচার হয়, তখন ভাবি বাকি সমস্যাগুলো কমে আসবে। যখন একটা বিচার হয় না, তখন পরপর অনেকগুলো বিচার হয় না। আমরা আগেও দেখেছি, যখন নির্বাচনের সময় এসেছে, শুধুমাত্র ধানের শীষে ভোট দেওয়ায় কীভাবে নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে, যেন একটা নির্দিষ্ট এলাকায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে যে, ধানের শীষে ভোট দিলে একজন নারীকে কীভাবে শাস্তি পেতে হবে। এটারও বিচার হয়নি।’
আরও পড়ুন: জুলাই অভ্যুত্থানে শিশুমৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ, সুরক্ষা ও জবাবদিহি চায় ইউনিসেফ
তিনি বলেন, ‘১৫ বছর যে জুলুমের মধ্যে দিয়ে আমাদের যেতে হয়েছে, সে জুলুমের বিচার আমরা কীভাবে পাব? আমরা মনে করি, এখানে বিচারহীনতার সংস্কৃতি, জবাবদিহিহীনতার সংস্কৃতিই একমাত্র ফ্যাসিস্ট তৈরি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আর কোনো উপায় নেই। আমাদের প্রয়োজন একজন নারী ব্রিগ্রেড। এই রেভ্যুলেশনের সমস্ত এসেন্স (নির্যাস) যারা ধারণ করবে, তারাই ব্রিগ্রেডের অংশ হয়ে উঠবে।’
‘তার জন্য নারীদের একটা সেপারেট (আলাদা) মনোযোগ প্রয়োজন। কারণ তাদের সমস্যাগুলোর একটা আলাদা মাত্রা আছে। আমাদের নারীদের যে স্পিরিটটা (চেতনা) আছে, সেটা কাজে লাগাতে হবে। কারণ আমাদের সামনে অনেক বড় লড়াই আছে।’
২৩ দিন আগে
জুলাই অভ্যুত্থানে শিশুমৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ, সুরক্ষা ও জবাবদিহি চায় ইউনিসেফ
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের পর এটিকে হৃদয়বিদারক উল্লেখ করে উদ্বেগ জানিয়েছে ইউনিসেফ।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক অফিসের প্রতিবেদনটির বরাত দিয়ে তিনি জানান, ১ জুলাই থেকে ১৫ই আগস্টের মধ্যে যে ১ হাজার ৪০০ ব্যাক্তি নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে শতাধিক শিশু ছিল। ইউনিসেফ এইসব মৃত্যুর অনেকের বিষয়ে ইতোমধ্যে রিপোর্ট করেছে এবং মোট কত শিশু নিহত বা আহত হয়েছে—তা স্পষ্ট করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাদের প্রত্যেকের জন্য শোক প্রকাশ করছি।
অভ্যুত্থানে নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার চিত্রও তুলে ধরেন তিনি। তা ভাষ্যে, ‘এ সময় নারীদের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার জন্য শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের হুমকিসহ নানাপ্রকার জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতার ঘটনার নথি পাওয়া গেছে।’
‘শিশুরাও এই সহিংসতা থেকে রেহাই পায়নি; তাদের অনেককে হত্যা করা হয়, পঙ্গু করে দেওয়া হয়, নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হয়, অমানবিক অবস্থায় আটক করে রাখা হয় এবং নির্যাতন করা হয়।’
বিবৃতিতে শিশুদের ওপর সহিংসতার তিনটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন ফ্লাওয়ার্স। বলেছেন, ‘একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে ধানমণ্ডিতে, যেখানে ২০০টি ধাতব গুলি ছোড়ার কারণে ১২ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের ফলে মারা যায়। আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে নারায়ণগঞ্জে; সেখানে ছয় বছর বয়সী এক কন্যাশিশু তার বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে সংঘর্ষ প্রত্যক্ষ করার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। এই বিক্ষোভের সবচেয়ে ভয়ংকর দিন ৫ আগস্ট পুলিশের গুলি চালানোর বর্ণনা দিয়ে আজমপুরের ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে বলে— সব জায়গায় বৃষ্টিপাতের মতো গুলি চলছিল। সে অন্তত এক ডজন মৃতদেহ দেখতে পেয়েছিল সেদিন।’
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাগুলো অবশ্যই আমাদের সবাইকে আতঙ্কিত করে তুলছে।’
বাংলাদেশের শিশুদের সঙ্গে আর কখনোই যেন এমনটি না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে দেশের সকল মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভে ৩২ শিশু নিহতের বিষয়ে ইউনিসেফের বিবৃতির জবাব দিল সরকার
প্রাপ্ত এসব ফলাফলের আলোকে এবং এই মর্মান্তিক ঘটনা-বিষয়ক ইউনিসেফের আগের বিবৃতিগুলোর জের ধরে বাংলাদেশের সমস্ত নীতিনির্ধারক, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও কর্মকর্তাদের বাংলাদেশের শিশু, যুবসমাজ ও পরিবারগুলোকে শারীরিক ও মানসিক ক্ষত সারিয়ে ওঠার পাশাপাশি আশা সঞ্চার করে তাদের এগিয়ে যেতে সহায়তা করতে আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।
এজন্য তিনটি বিশেষ ক্ষেত্রে জরুরিভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে জাতিসংঘের শিশু-বিষয়ক এই সংস্থাটি:
প্রথমত, যেসব শিশু প্রাণ হারিয়েছে, তাদের ও তাদের শোকাহত পরিবারের জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
দ্বিতীয়ত, যারা এখনও আটক অবস্থায় আছে এবং যাদের জীবন কোনো না কোনোভাবে এই ঘটনাগুলির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, তাদের সবার জন্য পুনর্বাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একজোট হওয়া।
তৃতীয়ত ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এই সময়টাকে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য সার্বিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। সব রাজনৈতিক নেতা, দল ও নীতিনির্ধারকদের পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একজোট হতে হবে, যাতে বাংলাদেশের কোনো শিশুকে আর কখনও এমন বিচার-বহির্ভূতভাবে ও যথাযথ প্রক্রিয়ার অভাবে আটক থাকতে না হয়। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে গিয়ে, যা তাদের অধিকার, তাদের যেন নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হতে না হয়। আর এভাবে বাংলাদেশের শিশুদের সুরক্ষা, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের অধিকার সমুন্নত রাখা সম্ভব।
জবাবদিহি ও সংস্কারের এই আহ্বানে ইউনিসেফ যেসব কাজে সহায়তা দিতে চায় তার মধ্যে রয়েছে—
১. শিশুদের প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন ও বেআইনিভাবে আটকে রাখার ক্ষেত্রে স্বাধীন তদন্ত নিশ্চিত করা।
২. বিচার খাতের সংস্কার নিশ্চিত করার মাধ্যমে শিশু সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের আদলে বাংলাদেশের আইনি কাঠামোকে সাজিয়ে তোলা।
৩. ভবিষ্যতে শিশু অধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধের জন্য স্বাধীন পর্যবেক্ষণ ও নীরিক্ষণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাসহ শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
৪. আমরা সবাই শিশুদের উপযুক্ত এমন বিচার ব্যবস্থা চাই, যেটি শিশুদের অপরাধী হিসেবে দেখবে না, শিশুদের হুমকি হিসাবে বিবেচনার পরিবর্তে তাদের কথা ও ব্যাখ্যা বুঝবে; তাদের যত্ন, সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে সে মোতাবেক কাজ করবে।
আরও পড়ুন: জুলাই বিপ্লব চলাকালে পরিকল্পিত দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে: জাতিসংঘ
৫. যেসব শিশু অপরাধ করেছে বলে আদালতে সাব্যস্ত হয়েছে, তাদের আটক করে না রেখে এর বিকল্প ব্যবস্থা বের করতে হবে। শাস্তি যা শিশুর স্থায়ী ক্ষতি করে, তার পরিবর্তে বিভিন্ন ডাইভারশন প্রোগ্রাম, প্রবেশন ও পুনর্বাসনমুখী বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।
৬. শিশু-সংবেদনশীল আইনি প্রক্রিয়াগুলি নিশ্চিত করবে; যেখানে শিশুদের জন্য বিশেষ আদালত, আইনি সহায়তা এবং শিশু-সংবেদনশীল তদন্ত ব্যবস্থা থাকবে।
৭. শিশু ভুক্তভোগীদের রক্ষা করবে; ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে জবাবদিহির ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে, যাতে ভবিষ্যতে শিশুদের অধিকার এমন লঙ্ঘন না হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ এখন বড় এক পরিবর্তন, প্রত্যাশা ও রূপান্তরের দ্বারপ্রান্তে। সংস্কার কমিশনগুলো বর্তমানে পুলিশ, আদালত ও বিচার ব্যবস্থার পুনর্নির্মাণে কার্যকর উপায় খুঁজে বের করতে যেভাবে কাজ করছে, তাতে তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও আরও ন্যায়সঙ্গত পরিবেশ তৈরির সুযোগ রয়েছে।
৩২ দিন আগে
অভ্যুত্থানে আহতদের আজীবন চিকিৎসাসহ ভাতা দেওয়ার চিন্তায় সরকার
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহতদের আজীবন চিকিৎসাসহ ভাতা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয় অভ্যুত্থানে হতাহতদের সহায়তা নিয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত ও নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অতি বেশি সহানুভূতিপ্রবণ। তাদের বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার ।’
তিনি বলেন, ‘শহীদদের ব্যাপারেও সরকার অতি দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। তাদের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সেটা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। আহতদের ব্যাপারে ক্যাটাগরি অনুযায়ী তালিকা হচ্ছে। এই সপ্তাহের মধ্যে সেই তালিকা সম্পন্ন করতে পারব।’
এ সপ্তাহের মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘অধিদপ্তরের অধীনে একটা নীতিমালা হচ্ছে। এই নীতিমালার অধীনে হতাহতদের যাবতীয় সহায়তা দেবে সরকার।’
‘সরকার এ কাজগুলো যতটা দ্রুততার সঙ্গে সম্ভব সম্পন্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’
আরও পড়ুন: উপদেষ্টা ফারুক ই আজমের সঙ্গে জাতিসংঘের গোয়েন লুইসের সাক্ষাৎ
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি তাদের এ ত্যাগ ইতিহাসে অমোচনীয় এবং এই গৌরব জাতি সমভাবে তাদের সঙ্গে ধারণ করে। তাদের আত্মত্যাগের গৌরব আমরা অমলিন করে রাখতে চাই—এটা যেন অনাগতকালেও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে।’
চলতি অর্থবছরে নিহতদের পরিবারকে এককালীন ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনে দেওয়া হবে এবং আহতদের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সহায়তা দেওয়া হবে। আহত-নিহতদের সহায়তায় চলতি অর্থবছরে ২৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ফারুক-ই আজম।
তিনি আরও বলেন, ‘আহতদের সারা জীবনের জন্য চিকিৎসা এবং অন্যান্য ভাতা দিয়ে দেওয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় আছে।’
বৈঠকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ও সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ উপস্থিত ছিলেন।
৪৩ দিন আগে
ফখরুলের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আরেকটা ১/১১ সরকার গঠনের ইঙ্গিত: নাহিদ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মূলত আরেকটা ১/১১ সরকার গঠনের ইঙ্গিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এ ধরনের পরিকল্পনা গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থের বিরোধী—এমন পরিকল্পনা হলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) এক ফেসবুক পোস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিবের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মূলত আরেকটা ১/১১ সরকার গঠনের ইঙ্গিত বহন করে। ১/১১ এর বন্দোবস্ত থেকেই আওয়ামী ফ্যাসিজমের উত্থান ঘটেছিল। বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যে সামনে আরেকটা ১/১১ সরকার, সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিকতা এবং গুম-খুন ও জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ার আলামত রয়েছে।’
এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনায় ফখরুল বলেন, ‘কোনো কোনো ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। যদি অন্তবর্তীকালীন সরকার পক্ষপাতমুক্ত থাকতে না পারে, তাহলে নির্বাচনের সময় একটি নিরপেক্ষ সরকার দরকার। আমাদের পর্যবেক্ষণ বলছে, বেশ কিছু বিষয়ে অন্তবর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পারছে না।’
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ফখরুলের
সেই প্রসঙ্গ টেনে নাহিদ বলেন, রাষ্ট্রপতির পরিবর্তন, সংস্কার, নতুন সংবিধান, জুলাই ঘোষণা—সব ইস্যুতেই বিএনপি বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। অথচ এগুলোর কোনোটিই ছাত্রদের দলীয় কোনো দাবি ছিল না। দেশের স্থিতিশীলতা, বৃহত্তর স্বার্থ ও জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার জন্য ছাত্ররা বারবার তাদের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। কিন্তু এর মানে এই না যে গণতন্ত্র ও অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাবিরোধী কোনো পরিকল্পনা হলে সেখানে আমরা বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেব।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ বিষয়ে ভারতের প্রধান দলগুলোর মধ্যে ঐক্য সম্ভব হয়েছে, অথচ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ বিষয়ে আমরা ঐক্য করতে পারিনি এত হত্যা ও অপরাধের পরেও। হায় এই ‘জাতীয় ঐক্য’ লইয়া আমরা কী রাষ্ট্র বানাব!”
“বাংলাদেশকে দুর্বল করা সহজ, কারণ বাংলাদেশকে সহজেই বিভাজিত করা যায়। এ দেশের বড় বড় লোকেরা অল্পমূল্যে বিক্রি হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে।”
৫ আগস্ট থেকে ছাত্রদের ‘মাইনাস’ করার পরিকল্পনা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা যেদিন ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যান, সেই ৫ আগস্ট থেকেই ছাত্র ও অভ্যুত্থানকারীদের মাইনাস করার পরিকল্পনা হয়েছে বলে দাবি করেছেন নাহিদ।
এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘ছাত্র ও অভ্যুত্থানের নেতৃত্বকে মাইনাস করার পরিকল্পনা ৫ আগস্ট থেকেই শুরু হয়েছে। ৫ আগস্ট যখন ছাত্র-জনতা রাজপথে লড়াই করছে, পুলিশের গুলি অব্যাহত রয়েছে, তখন আমাদের আপোষকামী অনেক জাতীয় নেতা ক্যান্টনমেন্টে জনগণকে বাদ দিয়ে নতুন সরকার করার পরিকল্পনায় ব্যস্ত ছিলেন (অনেকে ছাত্রদের কথাও বলেছেন সেখানে)।’
‘৩ আগস্ট থেকে বলে আসছি, আমরা কোনোপ্রকারের সেনাশাসন বা জরুরি অবস্থা মেনে নেব না। আমাদেরকে বারবার ক্যান্টেন্টমেন্টে যেতে বলা হলেও আমরা যেতে অস্বীকার করি। শেষ পর্যন্ত বঙ্গভবনে আলোচনা ও বার্গেনিংয়ের (তর্ক-বিতর্ক) মাধ্যমে ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।’
জুলাই আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ও নাগরিক সমাজের সমন্বয়ে একটা জাতীয় সরকার। জাতীয় সরকার হলে ছাত্রদের হয়তো সরকারে আসার প্রয়োজন হতো না। জাতীয় সরকার অনেকদিন স্থায়ী হবে—এই বিবেচনায় বিএনপি জাতীয় সরকারে রাজি হয়নি।’
‘কিন্তু অভ্যুত্থানের পরেই দেশে জাতীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি ছিল। অথচ বিএনপি জাতীয় সরকারের কথা বলতেছে সামনের নির্বাচনের পরে।’
নাহিদ বলেন, ‘ছাত্ররাই এই সরকারের এবং বিদ্যমান বাস্তবতার একমাত্র ফ্যাক্টর; যেটা ১/১১ এর সরকার থেকে বর্তমান সরকারকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা করে। বিএনপি কয়েকদিন আগে মাইনাস টু-এর আলোচনা করলেও এখন ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সুগম করার জন্য নিরপেক্ষ সরকারের নামে আরেকটি ১/১১ সরকারের প্রস্তাবনা করছে।’
‘এ ধরনের পরিকল্পনা গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে এবং ছাত্র-জনতা কোনোভাবেই এটা মেনে নেবে না। এবং আমি মনে করি এটা বিএনপির বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র।’
‘আর এই সরকার জাতীয় সরকার না হলেও সরকারে আন্দোলনের সব পক্ষেরই অংশীদারত্ব রয়েছে এবং সবপক্ষই নানা সুবিধা ভোগ করছে। সরকার গঠনের আগেই ৬ আগস্ট অ্যাটর্নি জেনারেল ও পুলিশের আগের আইজির নিয়োগ হয়েছিল, যারা মূলত বিএনপির লোক। এরকমভাবে সরকারের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত নানান স্তরে বিএনপিপন্থী লোকজন রয়েছে। নির্বাচনের নিরপেক্ষতার কথা বললে এই বাস্তবতাও মাথায় রাখতে হবে’, বলেন তথ্য উপদেষ্টা।
৫৩ দিন আগে
নির্বাচনের আগেই গণহত্যার বিচারের আশা আসিফ নজরুলের
নির্বাচনের আগেই জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচনের আগে কি শুধু সংস্কার কাজ প্রাধান্য পাবে? জুলাইয়ের গণহত্যার বিচারের যে দাবি ছিল, সেটি কতটুকু প্রাধান্য পাবে?— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি নিশ্চিতভাবে বলতে চাই, বিচারের কার্যক্রম অত্যন্ত সাবলীলভাবে চলছে। আমরা বিচারের ক্ষেত্রে মূলত গুরুত্ব দিচ্ছি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইবুনালের ওপর। এখানে রাষ্ট্রপক্ষের অংশগ্রহণ বেশি। ফলে আমরা এটাকে খুব বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। যে গতিতে এই মামলার তদন্ত কাজ এগোচ্ছে, আশা করছি মার্চ থেকে শুনানি শুরু হতে পারে।’
আরও পড়ুন: চার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন দাখিল
তিনি বলেন, ‘যদিও এটা বিচারালয়ের বিষয়, আমাদের আশা আছে, বিশ্বাস আছে— আগামী নির্বাচনের আগেই আমরা অন্তত ট্রায়াল কোর্টের বিচারকাজ সম্পন্ন করতে পারব। এখানে কারও কোনোরকম গাফিলতি করার সুযোগ নাই।’
‘আপনাদের কাছে আমাদের প্রতিজ্ঞা— বাংলাদেশে যে নির্মম, অমানবিক গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে, অবশ্যই আমাদের সরকার তার বিচার করবে।’
এ সময় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ , প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
৬১ দিন আগে
অভ্যুত্থান নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণকাজ জুনের মধ্যে শেষ করার আহ্বান
আগামী জুন মাসের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে বলে জানিয়েছেন সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেছেন, চলচ্চিত্র নির্মাণে সম্পূর্ণ আর্থিক সহযোগিতা দেবে সরকার। এক্ষেত্রে চলচ্চিত্রগুলোর খরচ পরিচালক ও সার্চ কমিটি ঠিক করবে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ‘রিমেম্বারিং মনসুন রেভ্যুলেশন’ এর আওতায় চলচ্চিত্র নির্মাণ শীর্ষক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উপদেষ্টা এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেছেন, পরিচালকদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা দেখছি যে উনারা ৫০টি কাজ করেছেন কি না। এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পরিচালকরা একটি কাজ করেছে কি না, যেটিকে আমি উল্লেখ করতে পারি। এছাড়া আমরা দেখার চেষ্টা করেছি তাদের মধ্যে আগুনটি আছে কিনা।
এদিকে, ৮টি বিভাগে ৮টি মাঝারি দৈর্ঘ্যের কনটেন্ট বা ফিল্ম নির্মাণে ওয়ার্কশপ পরিচালনায় ৮ জন চলচ্চিত্র পরিচালককে নির্বাচন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিনিয়োগ আনতে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেছেন, এই ৮ জনই জানেন তাদের দিকে বাংলাদেশ তাকিয়ে আছে। তারা যে কাজটি করবেন, সেই কাজের দিকেই সবাই তাকিয়ে আছেন। তারা এটার ওজন জানেন এবং তারা সেটি রক্ষা করবেন। তারা কী নির্মাণ করবেন, সে বিষয়ে আমরা তাদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছি। এটি যেন আর একটা সরকারি কাজ হয়ে ব্যর্থতায় পর্যবসিত না হয়। আমরা চাই এই ৮টি ছবি এনগেজিং হোক। ছবিগুলো আগামী দিনের চলচ্চিত্রের পথ দেখাবে। সেই বিষয়গুলো নিশ্চয়ই তাদের গল্পের মধ্যে থাকবে।
সচিবালয়ে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে গঠিত সার্চ কমিটির সদস্য সুমন রহমান পরিচালকদের নাম ঘোষণা করেন।
তারা হলেন— অনম বিশ্বাস, হুমায়রা বিলকিস, শঙ্খ দাশগুপ্ত, শাহীন দিল রিয়াজ, রবিউল আলম রবি, তাসমিয়াহ আফরিন মৌ ও মো. তাওকীর ইসলাম।
সুমন বলেন, ‘সার্চ কমিটির লক্ষ্য ৮ জন চলচ্চিত্রকার নির্বাচন করা, যারা ২০২৫ সালে দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরে চলচ্চিত্র-বিষয়ক কর্মশালা করে পরিচালনা করবেন ও প্রশিক্ষিত জনবল নিয়ে ৮টি চলচ্চিত্র তৈরি করবেন।’
এছাড়া, এই উদ্যোগের মাধ্যমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় দুটি লক্ষ্য অর্জন করতে চাইছে বলে জানান সার্চ কমিটির এই সদস্য। তার একটি হচ্ছে, শিল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে ঢাকা ও এর বাইরের আগ্রহী তরুণ জনগোষ্ঠীর যোগাযোগ তৈরি করা এবং তাদের কর্মদক্ষতা তৈরি ও প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দেওয়া।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগানোর জন্য প্রশিক্ষকদের সঙ্গেই চলচ্চিত্র নির্মাণে অংশগ্রহণ করা।
সুমন বলেন, ‘এসব কর্মশালা ও চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য কোনো ছক বেঁধে দেওয়া হয়নি। এতে করে শিল্পীরা তাদের নিজস্ব কর্মপদ্ধতি ও সৃজনশীলতার সর্বোচ্চ প্রয়োগ ঘটাতে সমর্থ হবেন এবং শৈল্পিক, রাজনীতিমনস্ক, বৈপ্লবিক ও তারুণ্যমণ্ডিত শিল্পভাষা তৈরি করতে আরও স্বাচ্ছন্দ্য হবেন।’
আরও পড়ুন: গণঅভ্যুত্থানের ওপর প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণে সহযোগিতা করবে সরকার: তথ্য উপদেষ্টা
তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ করে যে দীর্ঘ দুঃসময় আর রক্তস্নাত জুলাই বিপ্লব পার হয়ে বাংলাদেশের মানুষ এখন স্বাধীনভাবে নিঃশ্বাস ফেলছে, তার একটি শৈল্পিক ভাষ্য এসব চলচ্চিত্রে দেখতে পাব।’
‘এসব কর্মশালা ও চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রক্রিয়া ঢাকার বাইরের একটি বিরাট জনগোষ্ঠীকে এর সঙ্গে যুক্ত করবে। এই বিপ্লবোত্তর সময়ে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শিল্পসংস্কৃতির একটি নতুন ভাষ্যের সন্ধান দেবে।’
তিনি জানান, প্রতিটি বিভাগে কর্মশালার জন্য একটি গুগল ফর্ম তৈরি করা হবে, সেটির মাধ্যমে আবেদনকারীদের আবেদন করতে বলা হবে। নির্দিষ্ট বিভাগের পরিচালকরা প্রার্থীদের নির্বাচন করবেন।
৬৯ দিন আগে
সেনাবাহিনী দখল নেয়ার পর মিয়ানমারের অস্ত্র শিল্পের প্রসার ঘটেছে: রিপোর্ট
অন্তত ১৩টি দেশের কোম্পানি মিয়ানমারকে অস্ত্র তৈরি করতে তার সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেছে। যা ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির শান্তিকামী জনগণের ওপর নৃশংসতায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
স্বাধীন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য খুঁজে পেয়েছেন।
মিয়ানমারের জন্য বিশেষ উপদেষ্টা পরিষদের সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশের ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটি কীভাবে অস্ত্র উৎপাদন বাড়িয়েছে এবং একটি গণ ও জনবিরোধী আন্দোলনকে প্ররোচিত করে তার বিবরণ দেয়া হয়েছে।
৫০ বছরের সামরিক শাসনের পরে গণতন্ত্রের পথে প্রায় এক দশকের অগ্রগতির পর দেশটির জান্তা বাহিনী ফের নির্বাচিত বেসামরিক নেতাদের আটক করে ক্ষমতা দখল করে।
এরপর নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে। যার জেরে সেনাশাসন বিরোধীরাও হাতে অস্ত্র তুলে নেয়।
জাতিসংঘের কিছু বিশেষজ্ঞ এই পরিস্থিতিকে গৃহযুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
রাজনৈতিক বন্দিদের সহায়তা সমিতি, সহিংসতায় দুই হাজার ৭০০টিরও বেশি বেসামরিক মৃত্যুর কথা নথিভুক্ত করেছে। যার মধ্যে ২৭৭টি শিশু রয়েছে এবং ১৩ হাজারেরও বেশি লোককে আটক করা হয়েছে।
যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের কোম্পানিগুলো মিয়ানমারের সামরিক সরবরাহ শৃঙ্খলকে সমর্থন করছে।
আরও পড়ুন: ‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
প্রতিবেদনে এই ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যে তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুবিধা দিচ্ছে না, তা যেন তারা নিশ্চিত করে।
মিয়ানমারের দেশীয় অস্ত্র শিল্পের বিস্তার ঘটেছে। অন্যদিকে, কিছু দেশ অস্ত্র ব্যবসায় বা অস্ত্র উৎপাদনে জড়িত ব্যক্তি ও কোম্পানির বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
গত অক্টোবরে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ একজন ব্যবসায়ী অং মো মিন্টের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
ট্রেজারি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, অং মো মিন্টে মিয়ানমারের হয়ে অস্ত্র চুক্তির কাজ সহজতর করে।
তার ভাই হ্লেইং মো মিন্ট এবং তাদের প্রতিষ্ঠিত ট্রেডিং কোম্পানি ডাইনাস্টি ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেডকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। এর একজন পরিচালক মায়ো থিটসারকেও নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত করা হয়েছিল।
নভেম্বরে মার্কিন বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মারাত্মক বিমান হামলার কথা উল্লেখ করে সামরিক বাহিনীতে বিমান সরবরাহকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের কোনো ব্যক্তিগত অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নেই। তাই এই ধরনের কোনো কোম্পানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা শিল্প অধিদপ্তর দ্বারা পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে স্কুলে হেলিকপ্টার হামলা, ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ১৩
এতে আরও বলা হয়েছে, স্থানীয় কারখানাগুলো এখনও লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রযুক্তি ও বিদেশি সাপ্লাই চেইন, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং আপগ্রেড ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে সরঞ্জাম পাঠানোর ওপর নির্ভর করে।
একটি বিবৃতিতে কাউন্সিল বিশেষজ্ঞ ক্রিস সিডোটি অনুরোধ করেছেন, সরকার তদন্ত করবে এবং যেসব সংস্থা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ‘বেসামরিকদের ওপর নির্বিচারে আক্রমণ’ এ ব্যবহৃত অস্ত্র তৈরিতে সহায়তা করে সেসব সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
মানবাধিকার আইনজীবী এবং ২০১৭-২০১৯ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্য সিডোতি বলেছেন, ‘মিয়ানমারের জনগণের দুর্ভোগ থেকে লাভবান হওয়া বিদেশি কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
গত বছর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অফিসের একটি প্রতিবেদনে রাশিয়া, চীন, ইউক্রেন, ইসরায়েল, সিঙ্গাপুর ও ফিলিপাইনে কোম্পানির নামকরণের কিছু লিঙ্কের রূপরেখা দেয়া হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ অস্ত্র তৈরির শিল্পের বিকাশের একটি প্রধান কারণ হল অস্ত্র, সামরিক বিমান এবং অন্যান্য অস্ত্র আমদানি নিষেধাজ্ঞা বা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এখন ছোট অস্ত্র ও হালকা অস্ত্র তৈরিতে স্বাবলম্বী।
এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের অস্ত্র তৈরির ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে- অ্যাসল্ট রাইফেল এবং মেশিনগান থেকে শুরু করে মর্টার, অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ও অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট অস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার এবং আর্টিলারি ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন আইটেম।
আরও পড়ুন: সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের
৭৯১ দিন আগে
মিয়ানমারে জান্তা অভ্যুত্থানের বছরপূর্তিতে আটক অর্ধশতাধিক
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) দেশব্যাপী বিক্ষোভ আয়োজনের পরিকল্পনা করে বিক্ষোভকারীরা। অন্যদিকে বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তাবাহিনী কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
সেনা শাসনবিরোধীরা বিক্ষোভের অংশ হিসাবে অসহযোগ কর্মসূচি পালন করে। এসময় তারা শহরগুলোর রাস্তাঘাট ফাঁকা রাখতে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করে এবং সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে তারা ‘নীরব ধর্মঘট’ পালন করে।
পরবর্তীতে গণতন্ত্রপন্থীদের সমর্থকরা হাড়ি-পাতিল বাজিয়ে ও হর্ন বাজিয়ে প্রতিবাদ করার পরিকল্পনা করে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে সেনা অভুত্থানের ১ বছর: সেনাবাহিনীর ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘের
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অং সাং সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। ২০২০ সালে নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় লাভের পর সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দ্বিতীয়বারের মতো পাঁচ বছর দেশশাসন করার ম্যান্ডেট পায়।
দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠা বন্ধ করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দেয়ার পর কমপক্ষে ৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জান্তা অভুত্থানের এক বছর পূর্ণ হওয়ার বিষয়ে বলেন, মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক শাসন ফিরিয়ে আনতে ও অং সান সু চি ও অন্যান্য বন্দিদেরকে মুক্তি দিতে এবং সকল দলের অংশগ্রহণে কার্যকর সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সু চির আরও ৪ বছরের কারাদণ্ড
সু চির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলার রায় স্থগিত
১১৪০ দিন আগে
সুদানে অভ্যুত্থান: গণতন্ত্রপন্থী ৩ নেতা আটক
অভ্যুত্থানের পর অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে সুদানের নিরাপত্তা বাহিনী বুধবার গণতন্ত্রপন্থী তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আটক করেছে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত সোমবার দেশটির ক্ষমতা দখল করার পরই রাজধানী খার্তুমসহ অন্যান্য শহরে অভ্যুত্থান বিরোধীরা টানা বিক্ষোভ করতে থাকে। উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে অভ্যুত্থান গণতন্ত্রের জন্য এক বড় ধাক্কা। বছর দুয়েক আগে দেশটির দীর্ঘদিনের শাসক ওমর-আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়।
আরও পড়ুন: অগ্নি-৫ এর সফল পরীক্ষা ভারতের
বিক্ষোভকারীরা প্রধান প্রধান সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে প্রতিবাদ করতে থাকে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং ব্যারিকেড সরিয়ে দেয়। এতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অনেক বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়।
সুদানের ডক্টরস কমিটির তথ্য অনুযায়ী, সোমবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ছয়জন নিহত এবং ১৪০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে, যাদের অনেকের অবস্থা গুরুতর।
গত মাসে দেশটির দীর্ঘদিনের শাসক ওমর-আল-বশিরের সমর্থকরা অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। এরপর থেকেই দেশটিতে বেসামরিক ও সামরিক নেতাদের মধ্যে উত্তেজনা মধ্যে এই অভ্যুত্থান ঘটে।
আরও পড়ুন: সুদানে অভ্যুত্থান, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত ৩
১২৩৭ দিন আগে