গ্লাসগো
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি পোষাতে উন্নত দেশগুলোর গড়িমসি কাম্য নয়: তথ্যমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি পোষাতে প্রতিশ্রুত অর্থায়নে উন্নত দেশসমূহের গড়িমসি কাম্য নয়। এ ক্ষেত্রে তাদের স্বচ্ছতা, সদিচ্ছা এবং আন্তরিকতার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের শুধু সামর্থ্যের অভাবই নয়, তহবিল দাতারও অভাব রয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলার সক্ষমতা রয়েছে এবং কার্যকর অভিযোজন কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সরকার তার সক্ষমতা দেখিয়েছে। কিন্তু জলবায়ু অর্থের অর্ধেক সবচেয়ে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলিতে অভিযোজনে দেয়া উচিত। কিন্তু তাও দিচ্ছে না তারা।
বুধবার স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ২৬ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে এক সাইড ইভেন্টে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সংকট এখনই মোকাবিলা করতে হবে: মার্কিন রাষ্ট্রদূত
হাছান মাহমুদ বলেন, জলবায়ু অর্থায়নে নানা বাহানায়, দীর্ঘসূত্রিতায় বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর বড় প্রমাণ বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ইননোসেন্ট ভিক্টিম। এ জন্য আমাদের দায় একেবারেই নগণ্য।
তিনি বলেন, শিল্প উন্নত ও ধনী দেশসমূহ এ জন্য দায়ী হলেও তারা এর দায় নিচ্ছেনা। বরং দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাই বলে, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির কাছে অসহায় ভাবে আত্মসমর্পণ করেনি। বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও সময় উপযোগী পদক্ষেপের কারণে নিজস্ব অর্থায়নে কাজ করে যাচ্ছে। যা ইতোমধ্যে বিশ্ব সমাদৃত ও রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ, উদ্যোগ, বিজ্ঞানীও গবেষকদের গবেষণায় জলবায়ু সহিঞ্চু বিভিন্ন জাতের ধান উৎপাদন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। বিশেষ করে খরাসহিঞ্চু, বন্যাসহিঞ্চু, জলমগ্নসহিঞ্চু, বনসহিঞ্চু জাতের ধান উৎপাদন করছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি নিরসনে উন্নত বিশ্বের উচিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহকে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তার পাশাপশি প্রযুক্তি সহায়তা দেয়া। একই সাথে তা প্রতিশ্রুতি, আশ্বাস, আর কথামালার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবে কার্যকর ও দৃশ্যমান করা।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন ‘ব্যর্থ’: গ্রেটা থুনবার্গ
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের এনডিসি প্রতিশ্রুতি কেবল কার্বন নি:সরণ কমাতেই নয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং গুণমান উন্নত করবে। জীবনের জন্য আমাদের বিনিয়োগ, গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সবুজ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ প্রয়োজন।
ক্লাইমেট চেঞ্জ সংক্রান্ত সংসদীয় দলের প্রতিনিধি ও সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় বলেন, বাংলাদেশের জন্য অভিযোজন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু প্রকল্পগুলি দেশীয় ও ঐতিহ্যগত জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে স্থানীয় সম্প্রদায়ের পরামর্শ এবং অংশগ্রহণের মাধ্যমে তৈরি করা উচিত। আমাদের এটাকে স্বচ্ছ, যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত করতে হবে। এটি স্থানীয়ভাবে নেতৃত্বে ও বটম আপ অ্যাপ্রোচ হতে হবে।
আরও পড়ুন: শক্তিশালী রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে জলবায়ু কর্মকাণ্ড কার্যকর হচ্ছে না: প্রধানমন্ত্রী
ব্রিটিশ কাউন্সিলের টিম লিডার জেরি ফক্স বলেছেন, স্থানীয় অভিযোজন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ভবিষ্যতের চাবিকাঠি হবে। বাংলাদেশে আমরা একটি ক্লাইমেট ফাইন্যান্স ইকোসিস্টেম তৈরি করছি যা স্থানীয়, জাতীয় এবং বিশ্বব্যাপী কাজ করা প্রধান সংস্থাগুলিকে একত্রিত করে, সম্প্রদায়ের প্রয়োজনে সাড়া দেয় এমন অভিযোজন সমাধানগুলিকে শক্তিশালী করার জন্য একটি সদগুণ বৃত্ত তৈরি করে। এবং বৈশ্বিক তহবিলকে উৎসাহিত করার জন্য প্রয়োজনীয় এমআরভি প্রদান করে।
পানি ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত এই ইভেন্টে সভাপতিত্ব করেন।
২ বছর আগে
২০৪১ সালের মধ্যে ৪০% নবায়নযোগ্য জালানি ব্যবহারে রোড ম্যাপ তৈরির আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
সরকারি টার্গেট অনুযায়ী, আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে ৪০% নবায়নযোগ্য জালানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে এখন থেকে রোড ম্যাপ প্রণয়ন করতে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় স্কটল্যান্ডের রাজধানী গ্লাসগোয় কপ২৬ সম্মেলনের বাইরে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বিদ্যুৎ বিভাগ আয়োজিত ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিদেশি বিনিয়োগ’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টে তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সরকারি টার্গেট অনুযায়ী আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে ৪০% নবায়নযোগ্য জালানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে এখন থেকে রোড ম্যাপ প্রণয়ন করলে এগুলো অবশ্যই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে নবায়নযোগ্য জালানি তথা সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারের টার্গেট পূরণে আধুনিক প্রযুক্তি ও অর্থসহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।
তিনি বলেন, দেশের সিটি কর্পোরেশনগুলোর ময়লা আবর্জনাকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি পরিণত করা এবং স্থানীয় মানুষকে সম্পৃক্ত করে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো গেলে একদিকে পরিবেশ রক্ষা পাবে। অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে দেশ লাভবান হবে। পাশাপাশি গ্রিন টেকনোলজির ব্যবহার বৃদ্ধি, মিটিগেশনে বৈশ্বিক উদ্যোগ ও প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক সহায়তার বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: কৃষিতে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সহায়তার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারী নেতৃত্বে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিষ্ময়কর উন্নয়ন সাধিত হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছরের শেষ নাগাদ দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসছে। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার সময় দেশে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ নিয়ে সরকার পরিচালনা শুরু করে গত ১২ বছরে তা বেড়ে বর্তমানে ২৪ হাজার মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে বাংলাদেশ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধিত হওয়ায় দেশের উন্নয়ন, মাথা পিছু আয়, গড় আয়ু বেড়েছে। মানুষের জীবন মানের উন্নতি হয়েছে। এখন দেশের প্রত্যন্ত এলাকার সর্বত্র মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়ায় তাদের আয়ও বেড়েছে। তিনি বলেন, একই কারণে এ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। এখন মাথা পিছু জিডিপি ২২৫০ ডলার।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর অব্যাহত কার্বন নিঃসরণের কারণে বাংলাদেশ ইনোসেন্ট ক্লাইমেট ভিক্টিম। অথচ এ জন্য আমরা মোটেও দায়ী নই, দায়ী উন্নত বিশ্ব দেশগুলো। অথচ তারা এ জন্য কোন ক্ষতিপূরণ বা প্রযুক্তিগত সহয়তাও দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন: কপ-২৬: তাপমাত্রা হ্রাস ও ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে আশাবাদী বাংলাদেশ
তিনি বলেন, জিডিপিসহ করোনাকালে দেশের মানুষের জীবন রক্ষা ও জীবিকার চাকা সচল রাখাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজই মূলতঃ অর্থনীতির সকল সূচকে বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তানকে পিছনে ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ধারাবাহিকতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ছিলেন নবায়নযোগ্য জালানি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিদ্যুৎ সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন। বক্তব্য দেন পিকেএসএফ’র উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদিক।
আরও পড়ুন: কপ-২৬ সম্মেলনে ‘লস ও ড্যামেজ’ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি
২ বছর আগে
কৃষিতে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সহায়তার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশের কৃষিতে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তায় বিশ্ব ব্যাংকসহ বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ।
সেচ কাজে ডিজেল চালিত পাম্পের পরিবর্তে সোলার প্যানেল ব্যবহার বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু সহিঞ্চু, ব্যয় সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি হিসেবে দেশে বিদেশে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বেড়েছে। প্রতি বছর দেশে সেচের জন্য এক লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল চালিত পাম্প ব্যবহার হচ্ছে । এতে বছরে ডিজেল চালিত সেচ পাম্পে এক লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি ডিজেল ব্যবহার হচ্ছে। ডিজেল চালিত সেচ পাম্পকে সোলার প্যানেলে পরিণত করা গেলে বছরে সাশ্রয় হবে এক লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল।
গতকাল গ্লাসগো সময় বিকালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ‘ডায়ালগ অন প্রসপেক্ট অব সোলার পাওয়ার্ড ইরিগেশন টু ইনহেন্স ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ইন দ্য এগ্রিকালচার সেক্টর অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, ডিজেল চালিত পাম্পের পরিবর্তে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়ানো গেলে একদিকে পরিবেশ রক্ষার পাবে। অন্যদিকে দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে এবং কার্বন নিঃসরণ কমবে। তিনি বলেন, ডিজেল চালিত পাম্প মাঝে মাঝে নষ্ট হয়, এ জন্য কৃষককে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে তা মেরামত করতে হয়। কিন্তু একটি সোলার প্যানেল নিরবিচ্ছিন্নভাবে ২০ বছর ব্যবহার করা যাবে।
আরও পড়ুন: কপ-২৬ সম্মেলনে ‘লস ও ড্যামেজ’ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি কমানোর প্রক্রিয়ার মতোই ডিজেল চালিত সেচ পাম্পের পরিবর্তে সোলার প্যানেল ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেচের পাম্পে ডিজেলের পরিবর্তে সোলার প্যানেল ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়ে এর ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইটকল সেচে সোলার প্যানেল স্থাপনের কাজ করে আসছে। সরকারি নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল থেকে ৪৪৩ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ৭৮৯টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি নিরসনে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্রেটিজিক এন্ড এ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন করে কাজ করে আসছে। এখন পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি নিরসনে এই একশন প্ল্যান বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই জলবায়ু ঝুঁকি নিরসনে বাংলাদেশ বিশ্ব রোল মডেল।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারি বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর অনুদান, সহজ ঋণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে সফলভাবে ১৫১৫টি সৌরচালিত পাম্প স্থাপন করেছে ইটকল। ইটকলের এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
আরও পড়ুন: বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে কপ-২৬ শুরু
তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো দেশে সৌর সেচ কর্মসূচি বাড়ানোর জন্য অর্থ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবেন। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জ্বালানির দক্ষতার উন্নয়নে ইটকলের অর্জন বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি দিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতিশ্রুতি অর্জনে একটি সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্যমাত্র পূরণে সক্ষম হবে। আমাদের এনডিসি প্রতিশ্রুতি কেবল কার্বন নিঃসরণ কমাতেই নয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং গুণমান উন্নত করবে। জীবনের জন্য আমাদের বিনিয়োগ, গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সবুজ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ প্রয়োজন।
ইটকল এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল। আরো বক্তব্য দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার ছাড়াও বিশ্বব্যাংক, জ্যাইকা, এডিবি, ইউএসএআইডি, ইউএনডিপি, জিইএফসহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: কপ-২৬: তাপমাত্রা হ্রাস ও ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে আশাবাদী বাংলাদেশ
২ বছর আগে
কপ-২৬ সম্মেলনে ‘লস ও ড্যামেজ’ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ সম্মেলনে ‘লস ও ড্যামেজ’ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এই কপ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত আসবেও না। পরবর্তী কপ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল ও পরিবেশ বিশেজ্ঞরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দলের সদস্য মির্জা শওকত আলী ইউএনবিকে বলেন, লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। এই কপ সম্মেলনে এটি নিয়ে সিদ্ধান্ত আসবে না। পরবর্তী কপে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
শওকত বলেন, বাংলাদেশসহ যে সকল দেশ জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টার ফসল প্যারিস চুক্তিতে লস অ্যান্ড ড্যামেজ এর স্বতন্ত্র অন্তর্ভুক্তি। উন্নত দেশগুলো যদিও খুব বেশি স্বদিচ্ছায় লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী থাকে না। কিন্তু বাংলাদেশ ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের নেতৃত্বে থাকায় এই ক্ষেত্রে জোরদার ভূমিকা নিতে পারে।
তিনি বলেন,আজকে আর্টিকেল ৬ নিয়ে আলোচনা চলছে ট্যাকনিকেল পর্যায়ে। কার্বন নিঃসরণে নতুন ম্যাকানিজম শুরু হয়েছ। দীর্ঘ মেয়াদী তহবিল ও ১০০ বিলিয়ন নিয়ে আলোচনা শেষ হয়েছে। এডাপটেশন নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে কথা হচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদী তহবিল কীভাবে শুরু হবে সেটিও চূড়ান্ত হবে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু তহবিল পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ
জলবায়ু সম্মেলন বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আতিকুর রহমান বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণ উন্নত দেশগুলোর চেয়ে কম; অতীতে বিপুল পরিমাণ কার্বন নিঃসরণের দায়ভারও উন্নত দেশগুলোর। অথচ উন্নয়নশীল দেশগুলোকেই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে সাইক্লোন, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, নদী ও পাহাড় ভাঙন অনেক বেড়ে গেছে। এখন প্রতি বছরই ঘূর্ণিঝড় সাইক্লোন হচ্ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে পারলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়কর প্রভাব থেকে বাঁচা যাবে।
তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে লবাণাক্ত তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমুদ্র উচ্চতা বেড়ে গেছে। গোপালগঞ্জে লবণাক্ত পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, দুর্যোগে ও জলবায়ু পরিবর্তনের পেক্ষাপটে স্থানচ্যুতি ও দেশান্তর বাংলাদেশে একটা প্রকট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে ক্ষেত্রে অভিবাসন, স্থানচ্যুতির ইস্যুগুলোকে বিভিন্ন প্লাটফর্ম বা নেগোসিয়েশনের টেবিলে জোর আলোচনা চলছে।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতায় আঘাত আনতে পারে। সেজন্য আমাদের মোকাবিলার প্রস্তুতি থাকতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন সহজে চলে যাবে না, বাড়তেই থাকবে। এখান থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে হবে এবং অর্থনীতিকে বাঁচাতে হবে। এ সব বিষয়ে আমরা বিভিন্ন পলিসিতে আমরা আমাদের কথা তুলে ধরছি। এলডিসি থেকে আমরা বের হওয়ার কথা কিন্তু আমরা বের হতে পারছি না। ২০২৬ সাল লাগবে বের হতে। আমরা কীভাবে এলডিসি থেকে বের হব তার পথ বের করতে হবে।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দলের সদস্য ও এলডিসি গ্রুপের সমন্বয়ক জিয়াউল হক ইউএনবিকে বলেছেন, অনেক বিষয়ে পজেটিভ থাকলেও লস অ্যান্ড ডেমেজ বিষয়ে আলোচনা ধীর গতির।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক নিয়ে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ২০২০ সালে থেকে ১০০ বিলিয়ন দেয়ার কথা ছিল উন্নত দেশগুলোর। ২০ সাল শেষ। এখন ২০২১ সালও শেষ হয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যেই যেন ১০০ বিলিয়ন দেয়া শুরু করে সেটি আলোচনা হচ্ছে ট্যাকনিকাল পর্যায়ে। ইতিমধ্যে আলোচনায় ১০০ বিলিয়নের মধ্যে ৮০ বিলিয়ন প্রস্তুত প্রায়। ১০০ বিলিয়ন ডলার ২০২০, ২০২১, ২০২২, ২৩, ২৪ ও ২৫ সালের পর্যন্ত দিবে। এই বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে মন্ত্রী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত আসবে। তবে ডলার দেয়া শুরু হবে হয়তো ২০২২ সালে।
তিনি আরও বলেন, তারপর আবার ২০২৫ সাল থেকে নতুন করে শুরু হবে। সেটি হতে পারে ১৫০ থেকে ৩০০ বিলিয়ন। তবে এটি ঠিক হয়নি। যত বেশি হবে সেটিই আলোচনায় থাকবে।
তিনি বলেন, নীতিগভাবে অধিক কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলো আপত্তিও জানায়নি। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে তা দিতে একমত না অনেক দেশের নেতারা। তবে এতো দিন আলোচনার পর এবার এজেন্ডাতে যুক্ত করা হয়েছে। যে টাকা দেয়ার জন্য আশ্বাস দেয়া হচ্ছে তার জন্যও দেয়া হচ্ছে নানা শর্ত।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংসদীয় কমটির সভাপতি সাহের হোসেন চৌধুরী ইউএনবিকে বলেন, আলোচনা ইতিবাচকভাবে চলছে। আশা করছি এবার অগ্রগতি হবে। এবারও আলোচনায় ছিল ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল নিশ্চিত হবে কি না। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস উঠে আসে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের আলোচনাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সহনশীলতা বাড়াতে সহায়তা দিতে আগ্রহী অস্ট্রেলিয়া
২ বছর আগে
কপ-২৬: তাপমাত্রা হ্রাস ও ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে আশাবাদী বাংলাদেশ
বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে কমিয়ে আনা এবং ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের ব্যাপারে এবারের কপ-২৬ সম্মেলনে ঐক্যমতে পৌঁছানোর আশা প্রকাশ করছে সম্মেলনে অংশ নেয়া বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার কপ-২৬ সম্মেলনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন ইউএনবিকে বলেন, আমি মনে করছি এবারের কপ-২৬ সম্মেলনে কিছুটা হলেও সফলতা অর্জন করতে পারবো।
মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলো বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা ও প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের অর্থায়নের বিষয়ে মোটামুটি একমত। যদিও দুই একটি দেশ বিষয়টি চাচ্ছে না, তবে আলোচনা পজেটিবলি এগুচ্ছে। আশা করছি শেষ পর্যন্ত এটিও ঠিক হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামে (সিভিএফ) এ আমরা আমাদের লক্ষ্য তুলে ধরেছি। আশা করছি আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করতে পারব। আমাদের সাথে আরও ১৩টি দেশ যুক্ত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় শীর্ষে থাকা বাংলাদেশ। দূষণকারী দেশগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ এবং সিভিএফের নেতৃত্বে থাকায় কপ-২৬ সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ শূণ্যে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে শক্ত অবস্থানে আছে।
আরও পড়ুন:বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে কপ-২৬ শুরু
তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের জোর দাবি-তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি অথবা ২ ডিগ্রিকে (সর্বোচ্চ) টার্গেট করে এনডিসি হালনাগাদকরণ, উন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণের হার কমানো, সকল দেশের জলবায়ু পরিকল্পনা (এনডিসি, ন্যাপ, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা) অনুযায়ী গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন কার্যক্রমকে তরান্বিত করা।
শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশসহ যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফসল প্যারিস চুক্তিতে ‘লস এন্ড ড্যামেজ’ এর স্বতন্ত্র অন্তর্ভুক্তি। উন্নত দেশগুলো যদিও খুব বেশি সদিচ্ছায় লস এন্ড ড্যামেজ নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী না। কিন্তু বাংলাদেশ ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের নেতৃত্বে থাকায় এই ক্ষেত্রে আমরা জোরদার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে কার্বন নির্গমন কমানোর কাজে ব্যবহারের জন্য বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল তৈরি করার প্রতিশ্রুতি এসেছিল প্যারিস সম্মেলনে। কিন্তু এখনও এটি ফাইনাল হয়নি। ২০২০-২৪ সাল পর্যন্ত ৫০০ বিলিয়ন ডলারের রূপরেখা প্রণয়ন হবে (কোন দেশ কত পরিমাণ টাকা দেবে, কখন, কিভাবে দেবে)।২০২৫ সাল পরবর্তী অর্থায়ন লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা ও রূপরেখা প্রণয়ন হবে।
এদিকে শুক্রবার গ্লাসগোর স্থানীয় সময় বিকালে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে একটি সাইড ইভেন্টে মন্ত্রী বলেন, গত ২৬ আগস্ট বাংলাদেশ আপডেট এনডিসি ইউএনএফসিসিসিতে দাখিল করেছে। উক্ত এনডিসিতে ২০১২ সালকে বেস ইয়ার ধরা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের এনডিসি বাস্তবায়নে ২০৩০ সাল নাগাদ আনকন্ডিশনাল কন্ট্রিবিউশানে ৩২ বিলিয়ন এবং কন্ডিশনাল কন্ট্রিবিউশানের জন্য ১৪৩ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে,বাংলাদেশ নিজস্ব তহবিল থেকে আনকন্ডিশনাল কন্ট্রিবিউশান এবং উন্নত বিশ্ব থেকে কারিগরি এবং আর্থিক সহায়তা পেলে কন্ডিশনাল কন্ট্রিবিউশান বাস্তবায়ন করা হবে।
আরও পড়ুন:কপ-২৬ এ বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জলবায়ু সম্মেলন বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আতিকুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম ইস্যু হলো:ক্ষয় ও ক্ষতি বা লস এন্ড ডেমেজ, ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে টেম্পারেচার এবং ১০০ বিলিয়ন অর্থায়ন। এসব বিষয়ে পজেটিভ আলোচনা চলছে। সম্মেলনে শেষ পর্যায়ে এ বিষয়ে অগ্রগতি হবে বলে আশা করছি।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দলের সদস্য ও এলডিসি গ্রুপের কো-অর্ডিনেটর জিয়াউল হক ইউএনবিকে বলেছেন, উন্নত দেশগুলো ২০২০ সাল থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার মোবিলাইজ এবং ডিস্টিবিউশন করার কথা ছিল। কিন্তু তারা বলছে, গত বছর করোনার জন্য দিতে পারেনি। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। আশা করছি ২০২১ সালের মধ্যেই ১০০ বিলিয়ন টাকা দেয়া শুরু হবে।
২০২০ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত মোট ৫০০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা রয়েছে। ২০২৬ সাল থেকে নতুন করে আরও বেশি ৩০০/৫০০ বিলিয়ন দেয়ার দাবি থাকতে পারে। এ বিষয়ে পরে আলোচনা হবে, আগে বকেয়া ১০০ বিলিয়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
জলবায়ু সম্মেলনে গ্লাসগোতে অবস্থানরত বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার ইউএনবিকে বলেন,ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য জলবায়ু সম্মেলনের পরও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে আন্তঃযোগাযোগের মাধ্যমে দায়ী রাষ্ট্রগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ করে যেতে হবে।
আরও পড়ুন:গ্লাসগো থেকে লন্ডন পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন ‘ব্যর্থ’: গ্রেটা থুনবার্গ
বিশ্ব নেতারা সক্রিয়ভাবে নিয়মের মধ্যে ফাঁক তৈরি করছেন এবং তাদের দেশের নিঃসরণ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনকে এখন পর্যন্ত ‘ব্যর্থ’ বলে উল্লেখ করেছেন গ্রেটা থুনবার্গ।
সম্মেলনের ভেন্যুর বাইরে এক র্যালিতে থুনবার্গ দূষণকারীদের শক্ত হাতে দমনে কঠোর আইনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব নেতারা নিশ্চিতভাবে সত্যকে ভয় পাচ্ছে। এটা তারা এড়িয়ে যেতে পারবে না। তারা বৈজ্ঞানিক মতামত উপেক্ষা করতে পারবে না। সর্বোপরি তারা আমাদের, জনগণকে, উপেক্ষা করতে পারবে না।’
এদিকে শুক্রবার মার্কিন জলবায়ু দূত জন কেরি বলেছেন, আগামী বছর উন্নত দেশগুলো তাদের যৌথ অঙ্গীকার হিসেবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বার্ষিক জলবায়ু সহযোগিতা হিসেবে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের বিষয়ে ভালো কাজ শুরু করবে।
২০১৫ সালে হওয়া প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলো এ তহবিলের ব্যাপারে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
স্বল্প উন্নত দেশগুলো বলছে, টেকসই বিদেশি সহায়তা ছাড়া তারা ক্লিন অর্থনীতিতে স্থানান্তরিত হতে পারবে না এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ার ফলে প্রাকৃতিক বিভিন্ন বিপর্যয় থেকে তাদের জনগণকে রক্ষা করতে পারবে না বলে জানায়।
আরও পড়ুন: টাইম ম্যাগাজিনের ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ গ্রেটা থানবার্গ
‘বিকল্প নোবেল’ পুরস্কার জিতলেন সুইডেনের গ্রেটা থানবার্গ
২ বছর আগে
জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬তম জাতিসংঘ ক্লাইমেট চেঞ্জ কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস (কপ-২৬) এবং অন্য কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুই সপ্তাহের সফরে রবিবার সকালে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
ফ্লাইটটি দুপুর পৌনে ৩টায় (স্থানীয় সময়) স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।
সফরকালে শেখ হাসিনা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ প্রিন্স চার্লসের সাথেও বৈঠক করবেন।
১ নভেম্বর গ্লাসগোতে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী কপ ২৬-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং ভাষণ দেবেন।
একই দিনে প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ ইভেন্ট ক্যাম্পাসের কমনওয়েলথ প্যাভিলিয়নে ‘সিএফভি- কমনওয়েলথ হাই লেভেল প্যানেল ডিসকাশন অন ক্লাইমেট প্রসপারিটি পার্টনারশিপ’ শীর্ষক একটি সাইড ইভেন্টে যোগ দেবেন।
তিনি কমনওয়েলথ মহাসচিব পার্টিসিয়া স্কটল্যান্ড, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে এবং বিল গেটসের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সন্ধ্যায় স্কটল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ২ সপ্তাহের সফরে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ প্যাভিলিয়নে ‘ওমেন এন্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ এবং ফরজিং এ সিভিএফ সিওপি ২৬ ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি ফ্যাক্ট’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন।
তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এছাড়া যুক্তরাজ্যের প্রিন্স চার্লস, স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন, স্কটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার অ্যালিসন জনস্টোনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ পার্লামেন্টে ‘এ বাংলাদেশ ভিশন ফর গ্লোবাল ক্লাইমেট প্রসপারিটি’ শীর্ষক ভাষণ দেবেন।
৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে লন্ডনের উদ্দেশে স্কটল্যান্ড ত্যাগ করবেন।
একই দিনে তিনি ওয়েস্টমিনস্টার যাবেন। সেখানে রুশনারা আলী এমপি ও লর্ড গাধিয়া তাকে স্বাগত জানাবেন। পরে তিনি ব্রিটিশ স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোইলের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১: বিল্ডিং সাসটেইনেবল গ্রোথ পার্টনারশিপ’ উদ্বোধন করবেন। লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের নাগরিক সংবর্ধনাসহ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
৯ নভেম্বর সকালে বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে প্যারিসের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, ফ্রান্স সফরকালে প্রধানমন্ত্রী দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেবেন। এছাড়াও ফ্রান্সের অন্যান্য মন্ত্রী ও ফ্রান্সের দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের সদস্যদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
তিনি জানান, সফরকালে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সাথে বৈঠকালে বিভিন্ন বিষয়ে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক ও লেটার অফ ইনটেন্ট স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তার নামে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তনের প্রস্তাব জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো’র নির্বাহী বোর্ডের ২১০তম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। এটা সমগ্র জাতির জন্য একটি গর্বের বিষয়। আগামী ১১ নভেম্বর প্যারিসে ইউনেস্কো সদর দপ্তরে ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর দ্য ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক এই আন্তর্জাতিক পুরস্কারটি বিজয়ী ব্যক্তি ও সংস্থাকে দেয়া হবে।
পড়ুন: ঢাকা-প্যারিস সম্পর্ক উন্নয়নে ফ্রান্স সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতীয় প্রয়োজনে সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিতব্য এ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সশরীরে যোগ দিয়ে বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা তুলে দিতে পারেন বলে আশা করা যাচ্ছে। একই দিনে সাবেক ফরাসি বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক প্যাসকেল ল্যামির আমন্ত্রণে প্যারিস পিস ফোরামের উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশনে যোগ দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ১২ নভেম্বর ইউনেস্কোর ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে অংশগ্রহণের জন্য ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই উচ্চ পর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বজনীন আদর্শ তুলে ধরার পাশাপাশি জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সর্বজনীন, মানসম্মত ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা এবং সুস্থ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্বের বিষয়ে তার নিজস্ব চিন্তা ও এ বিষয়ে বাংলাদেশের অর্জনগুলো বিশ্বের সামনে তুলে ধরবেন।
৩ বছর আগে