এবি ব্যাংক
এবি ব্যাংকে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
এবি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ওঠা নামসর্বস্ব কোম্পানির নামে ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া তিন মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।
বুধবার (২৪ মে) একটি জাতীয় দৈনিকে ‘খেলাপির তথ্য লুকিয়ে আরও বড় জালিয়াতি’- শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুর ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: হিন্দু নারীদের অধিকার প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
এই ঋণ অনুমোদেনের অভিযোগের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
দুদক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব, বিএফআইইউ, সিআিইডি, এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদেশের আগে স্বপ্রণোদিত রুল ও নির্দেশনার বিরোধিতা করেন উপস্থিত আইনজীবী আহসানুল করিম, মাহবুব শফিক ও মইনুল ইসলাম।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ, দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হাসান এম এস আজিম।
আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে বলেন, এ ঋণের বিষয়টি জানতে পেরে এরই মধ্যে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিএফআইইউ আটকে দিয়েছে।
যেহেতু ঋণটি আটকে দেওয়া হয়েছে, এ অবস্থায় রুল জারির প্রয়োজন দেখছি না। রুল, আদেশ হলে ব্যাংকটির আমানতকারীদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে, তাদের মধ্যে ভীতি তৈরি হবে।
আদেশ হলে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম সঙ্গে সঙ্গে পড়ে যাবে। যে কারণে বলছি, স্বপ্রণোদিত রুল-আদেশ সবসময় মঙ্গলজনক নাও হতে পারে।
আইনজীবী মাহবুব শফিক বলেন, রুলসহ আদেশ দেওয়ার আগে প্রতিবেদনটির সত্যতা যাচাই করার জন্য এক সপ্তাহ সময় নেওয়া যেতে পারে। প্রতিবেদনটির বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করা জরুরি।
দেখা যাক, এবি ব্যাংক এই প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো প্রতিবাদ দেয় কি না। আদেশের জন্য এক সপ্তাহ অপেক্ষা করা যেতে পারে।
আইনজীবী মইনুল ইসলাম বলেন, এমনিতেই ব্যাংকিং খাতের অবস্থা টালমাটাল। এ অবস্থায় রুল আদেশ দিলে এ পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। সারা বিশ্বেই ব্যাংকিং খাতে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। বিভিন্ন দেশে অনেক ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে।
এসময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ তার বক্তব্যে আপত্তি জানিয়ে আলোচ্য বিষয় অর্থাৎ ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনের বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকতে বলেন।
তবে আইন কর্মকর্তা রুল জারি বা অন্তবর্তী আদেশ দেওয়া না দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলেননি এরপর আদালত রুলসহ আদেশ দেন।
যে কোম্পানির অনুকূলে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করেছে এবি ব্যাংক তার মালিকানায় দুই জনের নাম উল্লেখ থাকলেও প্রকৃতপক্ষে এর সুবিধা নিতে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী হায়দার রতন।
যিনি কিছুদিন আগে ন্যাশনাল ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে রাতে ঋণের টাকা তুলে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন।
যদিও জালিয়াতির এই ঋণের তথ্য জানতে পেরে এরই মধ্যে তা আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ ফিইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীকে পদাধিকার বলে জামুকা'র চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ কেন বাতিল নয়: হাইকোর্ট
কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ অনুমোদনের বিষয়ে এবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ব্যাখ্যা চেয়েছে তারা।
জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলী হায়দার রতনের নামে পাঁচ ব্যাংকে বর্তমানে ৫৫৯ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। বিভিন্ন সরকারি কাজের কার্যাদেশের বিপরীতে সন্দেহজনক উপায়ে নেওয়া এসব ঋণ এখন খেলাপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্র্যান্ডশেয়ার ট্রেডিংয়ের নামে একটি নামসর্বস্ব কোম্পানির নামে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ সম্প্রতি অনুমোদন করে এবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। গত ১০ জানুয়ারি ব্যাংকটির গুলশান শাখায় ঋণের আবেদন আসে।
আবেদনে প্রতিষ্ঠানটির মালিক দেখানো হয় মোহাম্মদ আতাউর রহমান ও মো. মামুন রশিদকে। তবে এর ঠিকানা দেওয়া হয়েছে রতনের মালিকানাধীন ইনফ্রাটেক কনস্ট্রাকশনের, যার কার্যালয় ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে। আর আবেদনপত্রের প্যাডে যে ই-মেইল ও ওয়েবসাইট ব্যবহার করা হয়েছে তা-ও তারই মালিকানার ব্র্যান্ডউইন নামে আরেকটি কোম্পানির।
এ কোম্পানির নামে দ্রুত ঋণ ছাড় করতে আবেদনের দিনই এবি ব্যাংকের গুলশান শাখা ব্যবস্থাপকসহ তিন কর্মকর্তা গ্রাহকের ধানমন্ডির অফিস ও বাড়ির ঠিকানা পরিদর্শন করে একটি পরিদর্শন প্রতিবেদন দেন।
গ্রাহক প্রতিষ্ঠানের নামে কখনও কোনো আমদানি না হলেও ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রাহক প্রচুর পরিমাণে জ্বালানি, নির্মাণসামগ্রী, রাসায়নিক পদার্থ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য আমদানি করেন।
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমদানি তো দূরে থাক, কোম্পানিটির নিবন্ধন নেওয়া হয় গত বছরের জুনে। এরপর গত নভেম্বরে ১০ হাজার টাকা জমা দিয়ে এবি ব্যাংকের গুলশান শাখায় একটি হিসাব খোলা হয়।
এর বাইরে কোনো লেনদেনও নেই। অথচ ভুয়া পরিদর্শন প্রতিবেদন দিয়ে একেবারে নতুন নিবন্ধিত কোম্পানিকে বড় কোম্পানি দেখানো হয়। পরদিন ঋণপ্রস্তাবটি শাখা থেকে প্রধান কার্যালয়ের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটিতে পাঠানো হয়। আবেদনের এক মাস পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের ৭৫৫তম পর্ষদ সভায় ব্যবস্থাপনা পরিচালকের জোর চেষ্টায় তা অনুমোদন হয়।
আবার ব্র্যান্ডশেয়ার ট্রেডিংয়ের নামে ঋণ অনুমোদন হলেও সব ধরনের ব্যাংকিং রীতিনীতি অমান্য করে ইনফ্রাটেকের অনুকূলে ১৬ কোটি ১৩ লাখ টাকার গ্যারান্টি ইস্যু করে ব্যাংক।
জানা গেছে, বিভিন্ন সময়ে পাঁচ ব্যাংক থেকে নেওয়া রতনের ঋণের বেশিরভাগই এখন খেলাপি। যে কোনো খেলাপিকে নতুন করে ঋণ দিতে পারে না ব্যাংক।
যে কারণে ভিন্ন কৌশলে আলী হায়দার রতনকে ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার চেষ্টা করে এবি ব্যাংক। আগের সব ঋণই নেওয়া হয় সরকারি রাস্তার কার্যাদেশের বিপরীতে।
সরকারি কার্যাদেশের বিপরীতে নেওয়া ঋণ সরাসরি ব্যাংকের হিসাবে জমা হয়। সেখান থেকে ব্যাংক টাকা কেটে লাভের অংশ গ্রাহককে পরিশোধ করে।
তবে ন্যাশনাল, ইউসিবিএল, এসআইবিএল, জনতা ও বেসিক ব্যাংক থেকে নেওয়া ৬০৯ কোটি টাকার কোনো বিল সরাসরি ব্যাংক হিসাবে জমা হয়নি। ফলে এসব ঋণ এখন খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।
এছাড়া আদৌ কার্যাদেশ পেয়েছেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ব্যাংকগুলোতে। যদিও এ নিয়ে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন: প্লট বরাদ্দ বাতিলের নথি না দেওয়ায় রাজউক চেয়ারম্যানকে হাইকোর্টে তলব
১ বছর আগে
এবি ব্যাংকের অর্থ আত্মসাত: আসামিদের গ্রেপ্তারে পদক্ষেপ জানতে চান হাইকোর্ট
এবি ব্যাংক থেকে ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের মামলায় ব্যাংকটির ১৫ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ পালনে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৬ জুনের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও অ্যাডিশনাল এসপিকে (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এ মামলার দুই আসামির জামিন আবেদনে শুনানিকালে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর দুদক এবি ব্যাংকের ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের গত বছরের ৯ জুন একটি মামলা করে। ওই মামলায় ১৭ জনকে আসামি করা হয়। এ ১৭ জনের মধ্যে আসামি শহীদুল ইসলাম ও আব্দুর রহিম আগাম জামিনের আবেদন করেন। আগাম জামিনের পরে তারা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। নিম্ন আদালত তাদের জেলে পাঠিয়ে দেন। এরপর জেল থেকে তারা জামিন চেয়ে নিয়মিত আপিল করেন। গত ৭ ডিসেম্বর শুনানি শেষে হাইকোর্ট দুজনের জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন। একই সঙ্গে আগামী সাতদিনের মধ্যে অন্য ১৫ আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন আদালত। পাশাপাশি এ ১৫ জন যাতে বিদেশে যেতে না পারে সেজন্য নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
১৫ আসামি হলেন-এরশাদ আলী, এবিএম আব্দুস সাত্তার, আনিসুর রহমান, রুহুল আমিন, ওয়াসিকা আফরোজী, মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান, সালমা আক্তার, মোহাম্মদ এমারত হোসেন ফকির, তৌহিদুল ইসলাম, শামীম এ মোরশেদ, খন্দকার রাশেদ আনোয়ার, সিরাজুল ইসলাম, মাহফুজ উল ইসলাম, মশিউর রহমান চৌধুরী, শামীম আহমেদ চৌধুরী।
আসামি শহীদুল ইসলাম ও আব্দুর রহিমের জামিন প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানির জন্য মঙ্গলবার আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। পরে হাইকোর্ট ওই আদেশ দেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক জানান, প্রাপ্ত তথ্য মধ্যে ১৫ আসামির মধ্যে এরশাদ আলীকে সরাসরি জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া এবিএম আব্দুস সাত্তার আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর জামিন আবেদনকারী শহীদুল ইসলাম ও আব্দুর রহিম কারাগারে আছেন। বাকি ১৩ আসামি এখনও পলাতক রয়েছে।
পড়ুন: এবি ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ বহাল
ঋণ জালিয়াতি: এবি ব্যাংকের ১৫ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ
২ বছর আগে
এবি ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ বহাল
আরব বাংলাদেশ (এবি) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের এভিপি আমিনুল ইসলাম ও ব্যাংকটির সাতক্ষীরা শাখার ব্যবস্থাপককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত।
বুধবার এবি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আবেদনের শুনানি করে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
আদালতে এবি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।
তিনি জানান,আমরা হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করেছিলাম। চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টেই হাজির হতে বলেছেন। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেননি।
এর আগে আদালতের আদেশের পরও সাতক্ষীরার ব্যবসায়ী সফিউর রহমানকে ঋণ সংক্রান্ত ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রদান না করায় মঙ্গলবার হাইকোর্ট গুলশান ও সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলেন। হাইকোর্ট তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আগামী ৫ জুন হাইকোর্টে হাজির করতে বলেন।
আরও পড়ুন: ঋণ জালিয়াতি: এবি ব্যাংকের ১৫ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ
জানা যায়, সাতক্ষীরার সফি এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সফিউর রহমান এবি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণের বিপরীতে তিনি একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট চান। কিন্তু এবি ব্যাংক থেকে তাকে ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেয়া হয়নি। ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে তারা অস্বীকার করে। পরবর্তীতে সফিউর রহমান ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের শুনানির এক পর্যায়ে হাইকোর্ট মৌখিকভাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তাকে এবি ব্যাংকের হেড অফিসে ও সাতক্ষীরা শাখার ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
মঙ্গলবার আদেশের পর আইন কর্মকর্তা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়েস আল হারুনী সাংবাদিকদের বলেন, রিটের শুনানির এক পর্যায়ে গতকাল হাইকোর্ট আমাকে, এবি ব্যাংকের হেড অফিসে ও সাতক্ষীরা শাখার ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
আমি হেড অফিসের এভিপি আমিনুল ইসলাম ও সাতক্ষীরা ব্রাঞ্চের ম্যানেজারকে আদালতের আদেশের কথা জানিয়ে দিই। তাদের ব্যবসায়ী সফিউর রহমানকে ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেয়ার কথা বলি। এছাড়া এভিপি আমিনুল ইসলামকে আজ কোর্টে হাজির থাকার কথা বলেছিলাম। রিটকারী গতকালই এবি ব্যাংকের সাতক্ষীরা শাখায় গিয়েছিলেন স্টেটমেন্ট আনতে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা দেয়নি। আদালতের আদেশের পরও ব্যাংক স্টেটমেন্ট না দেয়ায় তাদের গ্রেপ্তারের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছিলেন এবি ব্যাংক কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: এবি ব্যাংকের অনলাইন ‘এ-চালান’ সেবা চালু
ঋণ জালিয়াতি: এবি ব্যাংকের সাত্তারকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
২ বছর আগে
ঋণ জালিয়াতি: এবি ব্যাংকের ১৫ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ
জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে এবি ব্যাংকের ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে করা মামলার আসামি এবি ব্যাংকের সাবেক দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মসিউর রহমান চৌধুরী ও শামীম আহমেদ চৌধুরীসহ ১৫ জনকে এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তারা যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও দুদকের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ মামলার আসামি ব্যাংকটির সাবেক এভিপি ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার আবদুর রহিম ও ব্যংকটির সাবেক ভিপি শহিদুল ইসলামের জামিন আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালত আব্দুর রহিম ও শহিদুল ইসলামকে কেন জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
আরও পড়ুন: ঋণ জালিয়াতি: এবি ব্যাংকের সাত্তারকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
যাদেরকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন-এবি ব্যাংকের সাবেক এমডি মসিউর রহমান চৌধুরী ও শামীম আহমেদ চৌধুরী, এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের মালিক ব্যবসায়ী মো. এরশাদ আলী, ব্যাংকটির সাবেক ইভিপি ও শাখা ম্যানেজার এ বি এম আবদুস সাত্তার, এসভিপি ও সাবেক রিলেশনশিপ ম্যানেজার আনিসুর রহমান, এভিপি মো. রুহুল আমিন, ইভিপি এবং হেড অব সিআরএম ওয়াসিকা আফরোজী, ভিপি, সিএমআরের সদস্য মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান, সাবেক এসইভিপি ও হেড অব সিআরএম সালমা আক্তার, এভিপি ও সিআরএম সদস্য এমারত হোসেন ফকির, সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার তৌহিদুল ইসলাম, এসভিপি ও সিআরএমের সদস্য শামীম এ মোরশেদ, ভিপি ও সিআরএমের সদস্য খন্দকার রাশেদ আনোয়ার, এভিপি ও সিআরএমের সদস্য সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ভিপি ও ক্রেডিট কমিটির সদস্য মাহফুজ-উল ইসলাম।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান ও সরকার পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
পরে খুরশীদ আলম খান জানান, আব্দুর রহিম ও শহিদুল ইসলামের জামিন আবেদনের শুনানিকালে আদালত জানতে চান, ‘এই দু’জন কারাগারে, বাকি ১৫ জন কোথায়। তখন আমি বলেছি দুদক তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরপর হাইকোর্ট পালিয়ে বেড়ানো ১৫ জনকে এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। আদেশ হাতে পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে এই গ্রেপ্তার করতে হবে। এছাড়া তারা যাতে বিদেশ যেতে না পারে সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে দুদক, ইমিগ্রেশন পুলিশ এবং আইজিপি’র প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: এবি ব্যাংকের অনলাইন ‘এ-চালান’ সেবা চালু
এর আগে গত ৯ জুন দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি হয়। দুদকের উপসহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, আসামিরা ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে একে অন্যের সহায়তায় জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে জাল কার্যাদেশ প্রস্তুত করে ছয়টি জাল কার্যাদেশের বিপরীতে ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া মামলায় উল্লিখিত এবি ব্যাংক কাকরাইল শাখার কর্মকর্তারা প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ছাড়া সাতটি অবৈধ ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে আরও ১০ কোটি টাকা ঋণ দেন, তা তুলে আত্মসাৎ করেন। সব মিলিয়ে আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
৩ বছর আগে
এবি ব্যাংকের অনলাইন ‘এ-চালান’ সেবা চালু
অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন এ চালানে যুগান্তকারী পদক্ষেপে যুক্ত হলো এবি ব্যাংক। ব্যাংকটি সম্প্রতি অনলাইন ‘এ-চালান’ সেবা চালু করেছে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই সার্ভিসের আওতায় এবি ইন্টারনেট ব্যাংকিং ‘এবি ডিরেক্ট’ এর মাধ্যমে আয়কর, পাসপোর্ট ফি এবং অন্যান্য রাজস্ব সংক্রান্ত সব পেমেন্ট অনলাইনের মাধ্যমে দেয়া যাবে।
এবি ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজাল এই সার্ভিসটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এসময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র ফাংশনাল কনসালটেন্ট এ.কে.এম. মুখলেছুর রহমান, জুনিয়র কনসালটেন্ট (নির্বাহী) মো. জোবায়ের আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম এবং মো. তরিকুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক (জেনারেল) মুহাম্মদ দ্বীন ইসলামসহ এবি ব্যাংকের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দারাজের ১১.১১ ক্যাম্পেইনে রেকর্ড
বিকাশে বিনিয়োগ করলো সফটব্যাংক ভিশন ফান্ড ২
৩ বছর আগে
ঋণ জালিয়াতি: এবি ব্যাংকের সাত্তারকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
পদ্মা বহুমুখী সেতুর ঠিকাদারির নাম করে অবৈধ ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় এবি ব্যাংকের সাবেক ইভিপি এবং ম্যানেজার এবিএম আবদুস সাত্তারকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার (১ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আসিফ হাসান।
পড়ুন: প্রতারণার মামলা: সাহেদকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক জানান, পদ্মা বহুমুখী সেতুর ঠিকাদার সিনোহাইড্রেন করপোরেশন লিমিটেড ও চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের নাম করে ৬টি ভুয়া ও জাল ওয়ার্ক অর্ডার করে ৭টি অবৈধ ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ ঋণ দেয়া নিয়ে গত ৮ জুন মামলা হয়। দুদকের উপপরিচালক পরিচালক আবুল কালাম আযাদ ১৭ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন।
এ মামলায় এবি ব্যাংকের সাবেক ইভিপি এবং ম্যানেজার এবিএম আবদুস সাত্তারকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান আমিন উদ্দিন মানিক।
পড়ুন: সাবেক এমপি আউয়ালকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
৩ বছর আগে