বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত
বাহামাসের গভর্নর জেনারেলের কাছে প্রথম বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ
কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান অনাবাসিক হাইকমিশনার হিসেবে বাহামাসের রাজধানী নাসাউ-এর গভর্নর জেনারেল স্যার কর্নেলিয়াস অ্যালভিন স্মিথ-এর কাছে ১৮ মে (বৃহস্পতিবার) তার পরিচয়পত্র পেশ করেন।
পরিচয়পত্র প্রদানের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাহামাসের গভর্নর জেনারেল ও নবনিযুক্ত হাইকমিশনার দুই দেশের পারস্পারিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন।
এ সময় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্মানেন্ট সেক্রেটারি, মহাপরিচালক ও গভর্নর জেনারেলের কার্যালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন।
বাহামাসের গভর্নর জেনারেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কর্তৃক প্রণীত রূপকল্প ২০৪১ সহ অন্যান্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
গভর্নর জেনারেল জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলসহ অন্যান্য বহুপক্ষীয় প্ল্যাটফর্মে পরস্পরকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং বাহামাসের দৃষ্টান্তমূলক সহযোগিতার ইতিহাসও তুলে ধরেন।
নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে গভর্নর জেনারেল আগামী আগস্ট ২০২৩-এ নাসাউ-এ অনুষ্ঠিতব্য কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর ওয়েমেন মিনিস্টেরিয়াল বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি প্রেরণের জন্য অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদূতদের জন্য বিকল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে: পররাষ্ট্র সচিব
এছাড়া তিনি আগামী ১০ জুলাই বাহামাসের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠানে হাইকমিশনারকে আমন্ত্রণ জানান। গভর্নর জেনারেলের বক্তব্যের জবাবে হাইকমিশনার বলেন, বাহামাসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার ও সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে প্রথমবারের মত দেশটিতে হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়। বিশেষ করে, তিনি আর্থিক পরিষেবা ও পর্যটনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার অপার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।
পরিচয়পত্র পেশের পর হাইকমিশনার বাহামাসের প্রধানমন্ত্রী এইচ. ই. ফিলিপ এডওয়ার্ড ডেভিস এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী এইচ. ই. চেস্টার কুপার-এর সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সম্ভাব্য বিষয় নিয়ে পৃথক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
বাহামাসের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বৈশ্বিক প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
নবনিযুক্ত হাইকমিশনার জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি কমনওয়েলথ ফোরামে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেন।
উভয়পক্ষ প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী উন্নত দেশগুলোর দ্বারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত ও শারম আল শেখে অনুষ্ঠিত কপ-২৭ সম্মেলনে ঘোষিত ‘লস এন্ড ড্যামেজ' তহবিল দ্রুত চালু করতে অন্যান্য জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
হাইকমিশনার জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশে আশ্রিত ১৩ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য বাহামাসের সমর্থন কামনা করেন।
হাইকমিশনার পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো অন্বেষণ এবং চিহ্নিত করার পাশাপাশি বাণিজ্য ও আর্থিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য দুই দেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়া বাহামাসের প্রধানমন্ত্রীকে হস্তান্তর করলে তিনি দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সমঝোতা স্মারকটি দ্রুত স্বাক্ষরের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন।
এছাড়া, হাইকমিশনার জুলাই ২০২৩-এ অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থার কাউন্সিল নির্বাচনে মহাসচিব পদে বাংলাদেশের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে বাহামাসকে অনুরোধ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে হাইকমিশনারকে আশস্থ করেন ।
উল্লেখ্য, বাহামাসের প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে দেশটির অর্থ মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন।
আরও পড়ুন: বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা চাইলে বাড়তি নিরাপত্তা ফেরত দিতে পারেন, তার জন্য অর্থ দিতে হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
১ বছর আগে
সৌদির বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে সহযোগিতা করতে আগ্রহী বাংলাদেশ
সৌদি আরবের সবুজায়ন উদ্যোগের আওতায় ১০ বিলিয়ন বৃক্ষরোপণ প্রকল্পে বাংলাদেশ সহযোগিতা করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।
বুধবার (০৩ নভেম্বর) রাষ্ট্রদূত হাইলের গভর্নর প্রিন্স আবদুল আজিজ বিন সাদের সাথে বৈঠককালে এই আগ্রহের কথা জানান।
এ সময় রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সৌদি আরবের সবুজায়ন উদ্যোগের আওতায় ১০ বিলিয়ন বৃক্ষরোপণ কর্মসুচিতে বাংলাদেশ তাঁদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দিয়ে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক। মরুভূমির জন্য উপযোগী ও সহনশীল বৃক্ষের চারা সরবরাহ করার বিষয়ে ও আগ্রহ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত।
হাইলের গভর্নর সৌদি আরবে বৃক্ষরোপণ ও মরুভূমিতে বিলুপ্ত বৃক্ষগুলো পূনরুদ্ধারে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ গবেষণার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের ভিত্তিতে সৌদি আরবের সাথে কারিগরি ও বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা করলে দুই দেশ সবুজায়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে পারে বলে গভর্নর জানান।
আরও পড়ুন: সৌদি খেজুর চাষে সফল চাঁপাইনবাবগঞ্জের রুবেল
এ বিষয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সৌদি আরবের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণার ও প্রস্তাব দেন তিনি। এছাড়া, হাইল গভর্নর বাংলাদেশের সাথে পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে যৌথ গবেষণার প্রস্তাব দেন যার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্জিত জ্ঞান ব্যবহারের মাধ্যমে দুই দেশ উপকৃত হতে পারে।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী হাইলের জেলখানায় বিভিন্ন কারণে বন্দি বাংলাদেশি অভিবাসীদের মুক্তির ব্যাপারে গভর্নরের সহযোগিতা কামনা করেন।
হাইলের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সুন্দরবন, কক্সবাজার ও বিভিন্ন পর্যটন স্থানের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে পর্যটক বৃদ্ধির বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া দুই দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিনিময়ের কথা ও রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত করোনা আক্রান্ত অভিবাসীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়ায় সৌদি সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
আরও পড়ুন: ১৮ মাস পর পর্যটক প্রবেশের অনুমতি দিল সৌদি আরব
বুধবার সকালে রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী হাইলের পুলিশ প্রধান মেজর জেনারেল ড. কিতাব আল ওতাইবির সাথে বৈঠক করেন। এ সময় হাইলের পুলিশ প্রধান অভিবাসী বাংলাদেশিদের প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত নারী গৃহকর্মীসহ বাংলাদেশি অভিবাসীদের যেকোন জরুরি সমস্যা সমাধানে পুলিশ প্রধানের সহযোগিতা কামনা করেন। হাইলের পুলিশ প্রধান এ সময় বাংলাদেশিদের ভাই সম্বোধন করে যে কোন প্রয়োজনে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
রাষ্ট্রদূত এদিন বিকালে হাইলে বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার বাংলাদেশি অভিবাসীদের সাথে মতবিনিময় করেন। তিনি প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শোনেন ও সমাধানের আশ্বাস দেন। তিনি প্রবাসীদের সৌদি আরবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধির বিষয়ে আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ২৯ মে সৌদি আরবে বিমান ফ্লাইট শুরু
৩ বছর আগে