সবুজায়ন
বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ঢাকার সবুজায়ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পৌঁছাবে: মেয়র তাপস
বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ঢাকার সবুজায়ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পৌঁছাবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি বলেন, রাজধানীর শ্যামপুর, জিরানি, মান্ডা ও কালুনগর খালের উভয় পাড়ে মোট ৩৯ দশমিক ৬ কি.মি. দৈর্ঘ্য ব্যাপক বৃক্ষরোপণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
বুধবার (৮ মে) সকালে মুগদা এলাকার শাপলা ব্রিজ সংলগ্ন ‘মান্ডা খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি’ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মত বিনিময়কালে মেয়র এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: ইসলামপুর পৌর মেয়রকে বরখাস্তের আদেশ হাইকোর্টে স্থগিত
মেয়র বলেন, ‘আমরা জানি, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ঢাকা শহরের জন্য যে সবুজায়ন বা বনায়নের প্রয়োজন সেই মানদণ্ড পর্যন্ত আমরা পূরণ করতে পারিনি। এই মান্ডা খালের পাড় দিয়ে আমাদের প্রকল্পের আওতায় আমরা প্রায় ৩৫ হাজার গাছ রোপণ করব। যার মাধ্যমে এই এলাকায় একটি সুন্দর ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শহরের জন্য সবুজায়ন ও বনায়নের যে কার্যক্রম সেটা আরও বেগবান হবে, ত্বরান্বিত হবে। কিন্তু এই খালগুলো (প্রকল্পভুক্ত শ্যামপুর, জিরানি, মান্ডা ও খালুনগর খাল) এবং আদি বুড়িগঙ্গার পাড় ঘেঁষে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ আমরা সবুজায়নের সেই আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত হতে পারব।’
আগামী বছরের জুনের মধ্যে খালগুলোর দৃশ্যমান পরিবর্তনের আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘খালগুলো নিয়ে যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তার মধ্যে মান্ডা খাল সবচেয়ে বড় ৮ দশমিক ৭ কিলোমিটার। এরপরে শ্যামপুর ৪ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার, জিরানি ৩ দশমিক ৯ কিলোমিটার এবং কালুনগর ২ দশমিক ৪ কিলোমিটার খাল। সেই প্রেক্ষিতে বুধবার থেকে মান্ডা খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির কাজ শুরু হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রকল্পের সবগুলো কাজ শুরু হয়ে যাবে। ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকাবাসী একটি দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্য করবে এবং আগামী বছরের জুনে একটি আমূল পরিবর্তন আসবে। সেভাবেই আমাদের সকল পরামর্শক, ঠিকাদার ও কর্মকর্তারা কাজ করছে। আমরা আশাবাদী, আগামী এক বছরের মধ্যে (খালগুলোর) দৃশ্যমান ও নান্দনিক পরিবর্তন আমরা নিয়ে আসতে পারব।’
উল্লেখ্য, ৮৯৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে শ্যামপুর, জিরানি, মান্ডা ও কালুনগর খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে ৮ দশমিক ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মান্ডা খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টিতে ব্যয় হবে ৩৯৭ কোটি টাকা। মান্ডা খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির আওতায় ভূমি উন্নয়ন, খালের বর্জ্য ও পলি অপসারণ, বাই সাইকেল লেন ও এপ্রোচ রোড নির্মাণ, ৩টি এম্পিথিয়েটার নির্মাণ, ব্যায়াম করার সেড-ফোয়ারা-ওয়াকওয়ে-ঘাট নির্মাণ, ৩২টি পথচারী পারাপার সেতু ও ৬টি গাড়ি চলাচল সেতু নির্মাণ, বসার বেঞ্চ নির্মাণ, বাচ্চাদের খেলার জায়গা-ফুডকোর্ট ও কফিশপ নির্মাণ, আর. সি. সি. রিটেনিং ওয়াল ও ঢাল সুরক্ষা নির্মাণ, দৃষ্টিনন্দন সুরক্ষা বেষ্টনী ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ইত্যাদি অনুষঙ্গ রয়েছে।
আরও পড়ুন: ৫৪টি ওয়ার্ডে মাসব্যাপী জনসচেতনতামূলক প্রচার শুরু: ডিএনসিসি মেয়র
ডিএসসিসির কর্মচারীদের আবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: ডিএসসিসি মেয়র
সৌদির বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে সহযোগিতা করতে আগ্রহী বাংলাদেশ
সৌদি আরবের সবুজায়ন উদ্যোগের আওতায় ১০ বিলিয়ন বৃক্ষরোপণ প্রকল্পে বাংলাদেশ সহযোগিতা করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।
বুধবার (০৩ নভেম্বর) রাষ্ট্রদূত হাইলের গভর্নর প্রিন্স আবদুল আজিজ বিন সাদের সাথে বৈঠককালে এই আগ্রহের কথা জানান।
এ সময় রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সৌদি আরবের সবুজায়ন উদ্যোগের আওতায় ১০ বিলিয়ন বৃক্ষরোপণ কর্মসুচিতে বাংলাদেশ তাঁদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দিয়ে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক। মরুভূমির জন্য উপযোগী ও সহনশীল বৃক্ষের চারা সরবরাহ করার বিষয়ে ও আগ্রহ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত।
হাইলের গভর্নর সৌদি আরবে বৃক্ষরোপণ ও মরুভূমিতে বিলুপ্ত বৃক্ষগুলো পূনরুদ্ধারে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ গবেষণার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের ভিত্তিতে সৌদি আরবের সাথে কারিগরি ও বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা করলে দুই দেশ সবুজায়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে পারে বলে গভর্নর জানান।
আরও পড়ুন: সৌদি খেজুর চাষে সফল চাঁপাইনবাবগঞ্জের রুবেল
এ বিষয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সৌদি আরবের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণার ও প্রস্তাব দেন তিনি। এছাড়া, হাইল গভর্নর বাংলাদেশের সাথে পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে যৌথ গবেষণার প্রস্তাব দেন যার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্জিত জ্ঞান ব্যবহারের মাধ্যমে দুই দেশ উপকৃত হতে পারে।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী হাইলের জেলখানায় বিভিন্ন কারণে বন্দি বাংলাদেশি অভিবাসীদের মুক্তির ব্যাপারে গভর্নরের সহযোগিতা কামনা করেন।
হাইলের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সুন্দরবন, কক্সবাজার ও বিভিন্ন পর্যটন স্থানের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে পর্যটক বৃদ্ধির বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া দুই দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিনিময়ের কথা ও রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত করোনা আক্রান্ত অভিবাসীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়ায় সৌদি সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
আরও পড়ুন: ১৮ মাস পর পর্যটক প্রবেশের অনুমতি দিল সৌদি আরব
বুধবার সকালে রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী হাইলের পুলিশ প্রধান মেজর জেনারেল ড. কিতাব আল ওতাইবির সাথে বৈঠক করেন। এ সময় হাইলের পুলিশ প্রধান অভিবাসী বাংলাদেশিদের প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত নারী গৃহকর্মীসহ বাংলাদেশি অভিবাসীদের যেকোন জরুরি সমস্যা সমাধানে পুলিশ প্রধানের সহযোগিতা কামনা করেন। হাইলের পুলিশ প্রধান এ সময় বাংলাদেশিদের ভাই সম্বোধন করে যে কোন প্রয়োজনে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
রাষ্ট্রদূত এদিন বিকালে হাইলে বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার বাংলাদেশি অভিবাসীদের সাথে মতবিনিময় করেন। তিনি প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শোনেন ও সমাধানের আশ্বাস দেন। তিনি প্রবাসীদের সৌদি আরবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধির বিষয়ে আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ২৯ মে সৌদি আরবে বিমান ফ্লাইট শুরু