অটিজম
অটিজম সচেতনতায় দক্ষিণ এশিয়ায় অগ্রগামী বাংলাদেশ: মিয়ানমারে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত
মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের বর্তমান আঞ্চলিক পরিচালক এবং নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার ও অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় অটিজম বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ইয়াঙ্গুনে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, সায়মা ওয়াজেদের নিরলস প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ২০১১ সালে ঢাকায় অটিজম বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে। এরপর ২০১৭ সালে থিম্পুতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সম্মেলন আয়োজনে সহযোগিতা করে।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার দেশে অটিজম ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে। তিনি গত এক দশকে জাতিসংঘসহ সারা বিশ্বে অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সায়মা ওয়াজেদের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন।
দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘বেঁচে থাকা থেকে সমৃদ্ধির পথে যাত্রা’ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত প্রাসঙ্গিক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাগুলো যথা, স্বাস্থ্য ও সুস্থতা (লক্ষ্য ৩), মানসম্মত শিক্ষা (লক্ষ্য ৪), অন্তর্ভুক্তিমূলক চাকরির সুযোগ (লক্ষ্য ৮) এবং অটিজমসহ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিকাশের ক্ষেত্রে অসমতা হ্রাস (লক্ষ্য ১০) করার আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে সুইডেন দূতাবাস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, মায়ানমার স্পেশাল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন এবং একজন অভিভাবকের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
প্রাথমিক পর্যায়ে অটিজম শনাক্তকরণ এবং ত্বরিত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা, বৈষম্য প্রতিরোধ এবং চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় যত্নশীল থাকা এবং সংশ্লিষ্ট শিশুর পিতামাতাকে সমর্থনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোচনা করেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে কূটনীতিক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের প্রতিনিধিরা, শিক্ষাবিদ, ইউনিভার্সিটি অব পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব এডুকেশনের রেক্টর, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মিয়ানমার অটিজম অ্যাসোসিয়েশন, বিশেষ শিশু গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত বেসরকারি সংস্থাসমূহ, দূতাবাসের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রতিনিধি, প্রতিবন্ধী শিশু ও তাদের অভিভাবকরা ছিলেন।
দিবসটির অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস ২০২৪: ‘বেঁচে থাকা থেকে সমৃদ্ধির পথে যাত্রা’ বিষয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের উপস্থাপনা, ভিডিও ডকুমেন্টারি পরিবেশন এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব।
এ উপলক্ষে গতকাল রাতে দূতাবাস নীল আলোয় আলোকিত করা হয়।
৭ মাস আগে
অটিজম কী? অটিজম সচেতনতা ও সহমর্মিতা কেন জরুরি?
বিশ্বজুড়ে অটিজম নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিকল্পে জাতিসংঘে প্রস্তাব গৃহীত হয় ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর। এ সময় ২ এপ্রিল তারিখকে অটিজমের জন্য একটি স্বতন্ত্র দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। অতঃপর ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছর এই দিনে আন্তর্জাতিকভাবে শুরু হয় বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উদযাপন।
এই সচেতনতার রূপরেখায় রয়েছে প্রতিটি অটিস্টিক মানুষের সামাজিক অধিকারের নিশ্চয়তা। এর মাঝে প্রত্যক্ত ও পরোক্ষভাবে নিহিত থাকে তাদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা। এই সার্বিক সুস্থতার বিকাশে অটিজম সচেতনতা ও সহমর্মিতা কেন জরুরি চলুন, তা জেনে নেওয়া যাক।
অটিজম কী
বিস্তৃত পরিসরে পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ, অস্পষ্ট উচ্চারণ, মৌখিক ও আচরণগত যোগাযোগের সমস্যাকে সামষ্টিকভাবে অটিজম বলা হয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে এই অবস্থার নাম অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার বা এএসডি। অটিজম বা আত্মসংবৃতি অথবা আত্মলীনতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের অটিস্টিক বা আত্মসংবৃত কিংবা আত্মলীন বলা হয়ে থাকে।
এই বিকাশগত মানসিক অবস্থা মস্তিষ্ক জনিত বিচ্যুতি বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে জেনেটিক কারণে ঘটে থাকে। আপাতদৃষ্টে এএসডি আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণ সামাজিক যোগাযোগে অদক্ষ বটে। কিন্তু তাদের শেখার, মনের ভাব আদান-প্রদান, এবং কোনো কিছু বোঝানোর ক্ষেত্রে ভিন্ন উপায় থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
অটিজম সচেতনতা কেন জরুরি
অটিজম সম্পর্কে সঠিক ধারণা
আত্মসংবৃত ব্যক্তিদের নিয়ে সমাজে নানা ধরনের ভুল ধারণা প্রচলিত, যেগুলোর মূলত কোনো ভিত্তি নেই। এএসডির ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান বিতরণ সম্ভব হলে এমন তথাকথিত ধারণাগুলোর অবসান ঘটবে। এই চিরাচরিত অনুমান কিংবা মন্তব্যগুলো কোনো কিছুর ব্যাপারে ভালোভাবে না জেনে তার বিচার করার শামিল। অজ্ঞতা থেকে উদ্ভূত এই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আত্মলীন ব্যক্তি ও তার পরিবারের জন্য অসম্মানজনক।
বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে মা-বাবাদের প্রায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। তাই বৃহত্তর পরিসরে সচেতনতা সৃষ্টি হলে সবাই এ ব্যাপারে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে। কেননা সম্যক ধারণা থাকা যে কোনো ব্যক্তি জানবেন যে, এটি কোনো দুর্বল নিয়মানুবর্তিতা বা শিক্ষাদানের পরিণতি নয়। অর্থাৎ এই অবস্থার জন্য সেই শিশুটি বা তার মা-বাবা কেউই দায়ী নন।
আশু শনাক্তকরণ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ
এএসডি সম্পর্কে যত বেশি জানা যাবে, তত দ্রুতই এর উপসর্গগুলো শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এই প্রাথমিক শনাক্তকরণ অটিস্টিক শিশুদের পূর্ণ বিকাশের সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য অপরিহার্য। বৃহৎ পরিসরে অটিজমের উপসর্গগুলোর ব্যাপারে জানানো হলে বাবা-মা এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলগণ এ ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নিতে পারবেন।
এখানে শিশু ও মা-বাবার মধ্যকার পারস্পরিক বুঝের বিষয় আছে। সন্তানের কোন আচরণ কী অর্থ বোঝাচ্ছে, মা-বাবার কোনো আচরণটি সন্তান কিভাবে গ্রহণ করছে- এ বিষয়গুলোতে নিশ্চিত হওয়া অতীব জরুরি। এর উপর ভিত্তি করে তাদের পরবর্তী সামাজিক এবং যোগাযোগ দক্ষতাগুলো নির্ধারিত হয়।
আরও পড়ুন: জিমে অনুশীলনের সময় সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানোর উপায়
এছাড়া গুরুতর স্বাস্থ্যজনিত অবস্থাগুলোতে দ্রুত শনাক্তকরণের কোনো বিকল্প নেই। যেমন অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার বা গ্লোবাল ডেভেলপমেন্টাল ডেলের মতো মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে থেরাপি দরকার হয়।
সামগ্রিকভাবে নির্ভরযোগ্য তথ্যের যোগান থাকলে তা অনুসরণ করে অদূর ভবিষ্যতে বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। নিদেনপক্ষে যত তাড়াতাড়ি আত্মলীন শিশুরা সহায়তা পায়, প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠার আগে তাদের সুষ্ঠু বিকাশের সম্ভাবনাটাও ততটাই বাড়ে।
সামাজিক প্রতিবন্ধকতা নির্মূল
অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিরা শিক্ষা, কর্মসংস্থানসহ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। সমাজের সর্বত্র এটি রীতিমতো একটি অক্ষমতা হয়ে দাড়িয়েছে, যার জন্য তারা সামাজিক অন্তর্ভুক্তিও হারায়। বৃহত্তর সচেতনতা ও বোঝাপড়া বৃদ্ধি এই ধ্বংসাত্মক ব্যুহ ভাঙতে মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে।
অন্যান্যদের প্রতি তাদের ভিন্ন প্রতিক্রিয়া ও অভিব্যক্তি কখনই সমাজে তাদের কার্যকর অবদান রাখতে বড় বাধা নয়। বরং পর্যাপ্ত পরিবেশ ও সুযোগ পেলে তারাও মূল্যবান হয়ে উঠতে পারে। এমনকি অনেক আগে থেকেই এই বিষয়টি প্রমাণিত। অনেক আত্মসংবৃত ব্যক্তি সাধারণ কর্মকর্তাদের থেকেও বেশি উৎপাদনশীল কাজ করেছে।
আরও পড়ুন: সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
তাই নিছক কুসংস্কারে প্রভাবিত না হয়ে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ক্লাব এবং অফিস সবখানে তাদের অবাধে বিচরণ নিশ্চিত করা উচিৎ। আর এ জন্যে প্রয়োজন জনসমাগম জায়গাগুলোতে অটিজম নিয়ে সৃজনশীল আলোচনা। সবার থেকে আলাদা হওয়া মানেই সক্ষমতা থেকে পিছিয়ে যাওয়া নয়। বরং বৈচিত্র্যপূর্ণ সৃজনশীল মানসিকতা উন্নত কর্মযজ্ঞ গড়ে তুলতে পারে।
এরকম বিশ্লেষণী আলোচনার বদৌলতে যে কোনো মঞ্চে আত্মলীন ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ সম্ভব হতে পারে। সেই সঙ্গে সুযোগ তৈরি হবে তাদের প্রতিভা প্রমাণের।
৭ মাস আগে
বিশেষ শিশুদের জন্য সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অটিজম ও নিউরো-ডেভেলপমেন্ট প্রতিবন্ধী (এনডিডি) বিশেষ শিশুদের মেধা ও সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়তার জন্য শিক্ষার সমন্বিত পরিবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ শিশুদের মেধা ও সৃজনশীলতা বিকাশের জন্য সমন্বিত শিক্ষার পরিবেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
বুধবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ‘ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ডিসঅ্যাবিলিটিস (এনএএএনডি) কমপ্লেক্স’-এর স্থাপত্য নকশা প্রত্যক্ষ করার সময় এসব কথা বলেন।
অটিজম ও এনডিডি শিশুদের ন্যায্য ও সমান শিক্ষা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক মানের কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, অটিজম ও এনডিডি আক্রান্ত শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে উন্মুক্ত ও প্রাকৃতিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: কঠিন সময়ে বিদ্যুৎ ভর্তুকি কমাতে জনগণের সমর্থন কামনা প্রধানমন্ত্রীর
তিনি শহরগুলোতে যে কোনও নতুন আবাসিক ভবন নির্মাণে ক্রস ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি অটিজম ও এনডিডি শিশুদের জন্য বিদ্যমান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ আপগ্রেড করার পাশাপাশি নতুন প্রশিক্ষক ও শিক্ষক তৈরির ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী সূর্যের আলো ব্যবহার করা, খোলা বাতাস বা অক্সিজেনের ব্যবহার নিশ্চিত করা, প্রয়োজনীয় জলাধার সংরক্ষণ, উপযুক্ত অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ও এনএএএনডি কমপ্লেক্স ডিজাইন করার জন্য পর্যাপ্ত খোলা জায়গার আহ্বান জানান।
বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের প্রথম বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বেড়ে উঠুক অটিজম শিশুরা: প্রধানমন্ত্রী
সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করার সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে অটিজমে আক্রান্ত শিশুসহ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সব শিশুকে সমাজের মূল ধারায় নিয়ে আসার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং আমাদের (সরকারের) বহুমুখী প্রচেষ্টায় আমরা অটিজম সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জাতীয় জীবনের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হব।’
শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ১৫তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস- ২০২২ এর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো-‘এমন বিশ্ব গড়ি অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তির প্রতিভা বিকশিত করি’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অটিজম সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুদের বিভিন্ন ধরনের সুপ্ত প্রতিভা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস শনিবার
তিনি বলেন, তাদের সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে সেই প্রতিভাগুলো বিকশিত করতে হবে।
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সহযোগিতা করতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান যাতে তারা তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করতে পারে এবং সমাজে অবদান রাখতে পারে।
বাবা-মা ও অভিভাবকদের মৃত্যুর পর অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য প্রশিক্ষণ সুবিধাসহ বাসস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার তা করবে।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা বিভাগীয় সদরদপ্তরে প্রশিক্ষণ সুবিধাসহ আবাসনের ব্যবস্থা করবো এবং ধীরে ধীরে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টের মাধ্যমে তা সব জেলায় করা হবে।’
তিনি এ লক্ষ্যে সমাজকল্যাণমন্ত্রীকে একটি প্রকল্প নিতে বলেছেন।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু ও সচিব মাহফুজা আক্তার এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: অটিজমবান্ধব সমাজ বিনির্মাণে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অটিজম সিনড্রোমে আক্রান্ত বিশেষ শিশুদের পক্ষে বিশেষ শিশু ইসাবা হাফিজ সুষমি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়।
পরে প্রধানমন্ত্রী শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুদের পরিবেশিত বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ সফল অটিজম আক্রান্ত শিশুদের এবং এ ধরনের শিশুদের উন্নয়নে কাজ করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে অটিজমের ওপর একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
শেখ হাসিনা ‘বলতে চাই’ ও ‘স্মার্ট অটিজম বার্তা’ নামে দুটি অ্যাপসেরও উদ্বোধন করেন।
২ বছর আগে
বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস শনিবার
সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশে আগামীকাল (শনিবার) উদযাপিত হবে ১৫তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘এমন বিশ্ব গড়ি, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তির প্রতিভা বিকশিত করি।’
অটিজমে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্কদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০০৭ সালের ২ এপ্রিলকে ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ হিসেবে পালনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর থেকে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত থাকবেন।
এ বছর বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশব্যাপী দিবসটি উদযাপন করা হবে।
দিবসটি উপলক্ষে দৈনিক পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে।
অটিজম বৈশিষ্টসম্পন্ন ব্যক্তিদের সম্মানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ভবনে নীল রংয়ের আলোকসজ্জা করা হবে।
এছাড়া অটিজম বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে রোড-ব্র্যান্ডিং, বিশেষ স্মরণিকা ও লিফলেট ছাপানো হয়েছে।
এদিকে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
পড়ুন: নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে প্রয়োজন সচেতনতা ও সদিচ্ছা: খাদ্যমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় বৈশ্বিক সচেতনতা জরুরি: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
২ বছর আগে
অটিজমবান্ধব সমাজ বিনির্মাণে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষকে সমাজের মূল স্রোতে অন্তর্ভুক্ত করতে বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন।এসময় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের জন্য বাসযোগ্য এক সমাজ বিনির্মাণে সবাইকে মানবিক হবার আহ্বান জানান তিনি।
শুক্রবার স্বনামধন্য চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান আপাসেন-এর লন্ডনস্থ প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন কালে তিনি এই আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, অটিজম কোন রোগ নয়, বরং এটি একটি বিশেষ অবস্থা। এই ভিন্নতাকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গ্রহণ করার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকা-প্যারিস সম্পর্ক উন্নয়নে ফ্রান্স সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আপাসেন ডে সেন্টার পরিদর্শন শেষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি আপাসেন ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে সিলেটে প্রতিষ্ঠিত বিশেষায়িত স্কুল ও মডেল ডে সেন্টার কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। এ সময় আপাসেন ও আপাসেন ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী মাহমুদ হাসান এমবিই পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে আপাসেন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন।
অনুষ্ঠানে আপাসেনের ট্রাস্টি, কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ উপস্থিত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, পররাষ্ট্র মন্ত্রীর অফিসের পরিচালক এমদাদ চৌধুরী ও বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডনের কাউন্সেলর (রাজনীতি বিষয়ক) দেওয়ান মাহমুদ।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস আপাসেনের ৩৭ বছরের পথচলাকে 'গৌরবময়' অভিহিত করে সংগঠনের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।
আরও পড়ুন: কপ-২৬ এ বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আপাসেন ও আপাসেন ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী মাহমুদ হাসান এমবিই বলেন, বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের বিশেষায়িত চাহিদা পূরণে আপাসেন ইন্টারন্যাশনাল শিগগিরই আরও বিস্তৃত পরিসরে কাজ শুরু করতে যাচ্ছে।
এ সময় বোর্ড অব ট্রাস্টির পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে আপাসেন ইন্টারন্যাশনালের প্রধান পৃষ্ঠপোষক উল্লেখ করে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন মাহমুদ হাসান এমবিই।
২ বছর আগে