কপ-২৬ সম্মেলন
বিশ্ব জলবায়ু কূটনীতিতে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা রাখছে: পরিবেশমন্ত্রী
বিশ্ব জলবায়ু কূটনীতিতে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কপ-২৬ সম্মেলনে বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক আলোচনায় ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) বর্তমান চেয়ার হিসেবে সদস্য ৪৮টি সর্বাপেক্ষা বিপদাপন্ন রাষ্ট্রগুলোর পক্ষে অত্যন্ত জোরালো ও কার্যকর ভূমিকা পালনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যবস্থা গ্রহণে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণে সফল হয়েছেন। তিনি ওয়ার্ল্ড লিডার্স সামিটে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের পক্ষে যুগোপযোগী কান্ট্রি স্টেটমেন্ট প্রদান করেন। তার নেতৃত্বে বিশ্ব জলবায়ু কূটনীতিতে বর্তমানে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।’
শনিবার (১১ ডিসেম্বর ২০২১) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘জলবায়ু ঝুঁকি নিরসনে কপ-২৬ আশার আলো জাগিয়েছে’ শীর্ষক ছায়া সংসদ-বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব জলবায়ু সম্মলনের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির আলোকে আমাদের ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা এখনই ঠিক করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য সকল ধরনের ঝুঁকি চিহ্নিতপূর্বক তা মোকাবিলায় আমাদেরকে কাজ শুরু করতে হবে। এক্ষেত্রে তরুণ ও যুবসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, কেবলমাত্র বৈশ্বিক জলবায়ু অর্থায়নের উপর নির্ভর না করে আমাদের সীমিত সামর্থ্য দিয়েই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। আশা করি সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে আমরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সফল হবো।
আরও পড়ুন: অভিযোজন কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর আর্থিক সহায়তা দরকার: পরিবেশমন্ত্রী
অনুষ্ঠানের সভাপতি হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ তার বক্তব্যে জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় ১০ দফা সুপারিশ উত্থাপন করলে পরিবেশমন্ত্রী তা বাস্তবায়নে সরকার উদ্যোগী হবে বলে উল্লেখ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যের পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে মন্ত্রণালয় ও বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো নিয়মিত পরিবীক্ষণ করে যাচ্ছে। সরকার এসকল প্রকল্প সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাতার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, কোনো বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
প্রতিযোগিতায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এর বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে মন্ত্রী চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দলের মধ্যে ট্রফি তুলে দেন।
পড়ুন: যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিবেশমন্ত্রীর মতবিনিময়
৩ বছর আগে
কৃষিতে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সহায়তার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশের কৃষিতে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তায় বিশ্ব ব্যাংকসহ বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ।
সেচ কাজে ডিজেল চালিত পাম্পের পরিবর্তে সোলার প্যানেল ব্যবহার বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু সহিঞ্চু, ব্যয় সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি হিসেবে দেশে বিদেশে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বেড়েছে। প্রতি বছর দেশে সেচের জন্য এক লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল চালিত পাম্প ব্যবহার হচ্ছে । এতে বছরে ডিজেল চালিত সেচ পাম্পে এক লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি ডিজেল ব্যবহার হচ্ছে। ডিজেল চালিত সেচ পাম্পকে সোলার প্যানেলে পরিণত করা গেলে বছরে সাশ্রয় হবে এক লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল।
গতকাল গ্লাসগো সময় বিকালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ‘ডায়ালগ অন প্রসপেক্ট অব সোলার পাওয়ার্ড ইরিগেশন টু ইনহেন্স ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ইন দ্য এগ্রিকালচার সেক্টর অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, ডিজেল চালিত পাম্পের পরিবর্তে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়ানো গেলে একদিকে পরিবেশ রক্ষার পাবে। অন্যদিকে দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে এবং কার্বন নিঃসরণ কমবে। তিনি বলেন, ডিজেল চালিত পাম্প মাঝে মাঝে নষ্ট হয়, এ জন্য কৃষককে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে তা মেরামত করতে হয়। কিন্তু একটি সোলার প্যানেল নিরবিচ্ছিন্নভাবে ২০ বছর ব্যবহার করা যাবে।
আরও পড়ুন: কপ-২৬ সম্মেলনে ‘লস ও ড্যামেজ’ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি কমানোর প্রক্রিয়ার মতোই ডিজেল চালিত সেচ পাম্পের পরিবর্তে সোলার প্যানেল ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেচের পাম্পে ডিজেলের পরিবর্তে সোলার প্যানেল ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়ে এর ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইটকল সেচে সোলার প্যানেল স্থাপনের কাজ করে আসছে। সরকারি নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল থেকে ৪৪৩ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ৭৮৯টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি নিরসনে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্রেটিজিক এন্ড এ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন করে কাজ করে আসছে। এখন পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি নিরসনে এই একশন প্ল্যান বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই জলবায়ু ঝুঁকি নিরসনে বাংলাদেশ বিশ্ব রোল মডেল।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারি বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর অনুদান, সহজ ঋণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে সফলভাবে ১৫১৫টি সৌরচালিত পাম্প স্থাপন করেছে ইটকল। ইটকলের এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
আরও পড়ুন: বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে কপ-২৬ শুরু
তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো দেশে সৌর সেচ কর্মসূচি বাড়ানোর জন্য অর্থ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবেন। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জ্বালানির দক্ষতার উন্নয়নে ইটকলের অর্জন বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি দিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতিশ্রুতি অর্জনে একটি সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্যমাত্র পূরণে সক্ষম হবে। আমাদের এনডিসি প্রতিশ্রুতি কেবল কার্বন নিঃসরণ কমাতেই নয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং গুণমান উন্নত করবে। জীবনের জন্য আমাদের বিনিয়োগ, গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সবুজ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ প্রয়োজন।
ইটকল এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল। আরো বক্তব্য দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার ছাড়াও বিশ্বব্যাংক, জ্যাইকা, এডিবি, ইউএসএআইডি, ইউএনডিপি, জিইএফসহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: কপ-২৬: তাপমাত্রা হ্রাস ও ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে আশাবাদী বাংলাদেশ
৩ বছর আগে