ড.এ কে আব্দুল মোমেন
মার্কিন কর্মকর্তাদের 'ঘন ঘন সফর' ইতিবাচক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ যেকোন দূরত্ব কমাতে ‘গঠনমূলক ও অত্যন্ত ইতিবাচক’ ভূমিকা রাখে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘আরও অনেক ভালো সম্পর্ক’ গড়ে তুলতে চায়।
মার্কিন কর্মকর্তাদের 'ঘন ঘন সফর' সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতিবাচক মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই খুশি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের গঠনমূলক সম্পৃক্ততা বাড়ছে।’
সোমবার তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, দুই দেশের মধ্যে আরও ভালো সম্পর্কের কিছু কারণ রয়েছে।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার মতো একই মূল্যবোধ ও নীতিতে বিশ্বাস করে এবং অনুসরণ করে।
তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) সংক্রান্ত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের কোথাও গ্যাপ বা দুর্বলতা থাকতে পারে। বন্ধুত্বপ্রতীম দেশটি যখন এই সম্পর্কিত সমস্যাগুলো উত্থাপন করে, আমরা তখন সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে পিইউআইসি প্রতিনিধিদলকে কাজ করার আহ্বান মোমেনের
মোমেন বলেন, তারা ডিএসএ-তে কিছু দুর্বলতার কথা জানিয়েছিলেন, তবে ব্যাপকভাবে এটির সংশোধন করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা গঠনমূলক সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং সবসময় বলেছেন যে কারও কিছু বলার থাকলে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা খুব ইতিবাচক রয়েছি। যদি কিছুর অভাব থাকে, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের জানাবে। আমরা এটি সমাধান করব।’
মোমেন জানান, তার জানা মতে গত তিন বছরে জোরপূর্বক কোনো গুমের ঘটনা ঘটেনি। যেটিকে তিনি বড় উন্নতি হিসেবে মনে করেন।
তিনি বলেন, ‘হাতের পাঁচটা আঙুল সমান না। কেউ কোনো সমস্যা সৃষ্টি করলে আমরা বষয়টি দেখি।’
মন্ত্রী বলেন, কয়েক বছর ধরে র্যাবের পক্ষ থেকে কোনো বাড়াবাড়ি করা হয়নি।
মোমেন বলেন, এলিট বাহিনী বছরের পর বছর ধরে অনেক পরিপক্কতা তৈরি করেছে এবং তাদের একটি অভ্যন্তরে জবাবদিহি ব্যবস্থা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা কোথাও কোনো অন্যায় দেখতে চাই না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট (জিএসওএমআইএ) এবং অ্যাকুইজেশন ক্রস-সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট (এসিএসএ) - দুটি প্রস্তাবিত চুক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, ‘আমাদের প্রধান ফোকাস জনগণের কল্যাণ। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন রক্ষার জন্য নিরাপত্তাও অপরিহার্য।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ বহুমুখী সম্পর্ক বজায় রাখে এবং শান্তিরক্ষা, সন্ত্রাসবাদ দমন, জলবায়ু সমস্যা এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করে।
মন্ত্রী বলেন, ‘সমুদ্রসীমা আরও সুরক্ষিত রাখতে তারা (মার্কিন) আমাদের সহায়তা করেছে।’
মোমেন ঢাকার সঙ্গে তাদের স্থায়ী অংশীদারিত্বের স্বীকৃতি এবং গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ‘একটি অসাধারণ গল্প’ বলে অভিহিত করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাম্প্রতিক বক্তব্যের উল্লেখ করেন।
হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রে নবনিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানের প্রমাণপত্র গ্রহণ করে বাইডেন বলেন, ‘আমি আশা করি আমাদের দেশগুলো গণতান্ত্রিক শাসন, জলবায়ু পরিবর্তন, শরণার্থী এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ চালিয়ে যাবে। আমরা আপনাদের সাফল্যে বিনিয়োগ করছি এবং সকল বাংলাদেশিদের স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণ এবং তাদের দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার ক্ষমতাকে সমর্থন করি।’
মার্কিন কর্মকর্তাদের ঘন ঘন সফর সম্পর্কে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, এটি একটি বরং ভালো উন্নয়ন, যে দুই দেশের মধ্যে সম্পৃক্ততা বাড়ছে এবং এটি প্রতিফলিত করে যে বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান সুযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি প্রবাসীকে হত্যা ও বর্ণ বিদ্বেষের নিন্দা জানিয়েছেন মোমেন
আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্চে বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন: মোমেন
১ বছর আগে
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে ঢাকা-প্যারিস সম্মতিপত্র স্বাক্ষর
প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করায় বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ক সম্মতিপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন ইউএনবিকে বলেছেন,‘হ্যাঁ, আমরা করেছি (সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর)। এটি প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি বিনিময়ের সাথে সম্পর্কিত।’
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সরকারি সফরে ফ্রান্সে যান। এসময় এক উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে শেখ হাসিনা ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নত করা, কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়ে পারস্পরিক স্বার্থ ও সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশই প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের প্রয়োজনীয়তা অনুভবে আহ্বান জানালে, নিজেদের সক্ষমতার ভিত্তিতে একে অপরকে সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এছাড়া একে অন্যকে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমেও সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
দুই দেশই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা স্মরণ করে এবং বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ফ্রান্স সরকার ও জনগণের সমর্থনের কথা স্বীকার করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: প্যারিসের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
এসময় উভয় পক্ষই প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করে। দুই দেশই প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে সকলের জন্য কল্যাণকর একটি মুক্ত, স্বাধীন, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশ কামনা করেন।তারা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার বজায় রাখতে এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও সমুদ্র অর্থনীতিতে সহযোগিতার সুযোগ বৃদ্ধিতে সম্মত হয়েছে।
জাতিসংঘের কনভেনশন প্রণীত ১৯৮২ সালের সমুদ্র আইন পালনের পাশাপাশি সমুদ্র নিয়ে বিভ্ন্ন বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি, হুমকি বা বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকা প্রভৃতি বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে।
৩ বছর আগে