পিঠা তৈরী
শীত এলেই কিছুটা আয়ের মুখ দেখেন মমেনা
শীতের আগমনি বার্তা মমেনা বেওয়ায় ক্লান্ত শরীরে যেন একটু সুখের অনুভূতি নিয়ে আসে। বছরের ছয় মাস বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে ঝি’র কাজ করেন তিনি। নভেম্বর মাস এলেই সব কাজ ফেলে নেমে পরেন পিঠা তৈরীর কাজে। ফলে শীত এলেই দু’পয়সা আয় হয় তার সংসারে। এই চার মাস পিঠা তৈরী করে এক ছেলে আর দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি।
কুড়িগ্রাম শহরের কেন্দ্রীয় বাস্টস্টান্ড সংলগ্ন সিএন্ডবি মোড় এলাকায় প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পিঠা তৈরী করেন মমেনা বেওয়া। একাই দোকান সামলান তিনি। কারণ ছেলেমেয়েরা এখন দূরে থাকে। তাদের সাথে ঠিকমতো যোগাযোগ নেই তার।
মমেনা বেওয়া জানান, একমাত্র ছেলে বিয়ে করে ঢাকায় চলে গেছে। সেখানে রাজ মিস্ত্রীর কাজ করে সে। মায়ের সাথে কোন যোগাযোগ নেই। এই ভাপা পিঠা আর চিতই পিঠা বিক্রি করে টাকা জমিয়ে এক মেয়েকে সদর উপজেলার ঘোগাদহ ও অপর মেয়েকে যাত্রাপুরে বিয়ে দিয়েছেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে শহরের পৌরসভা এলাকার বাণিয়াপাড় গ্রামে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: পুষ্টিগুণ অটুট রেখে শীতকালীন সবজি খাওয়ার সঠিক উপায়
ব্যবসার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন ৭০টাকা কেজি দরে পাচঁ কেজি আতপ চাল কিনে বাড়িতে উড়–ন-গাইনের সাহায্যে নিজেই আটা বানিয়ে নেন। এরপর ভাপা পিঠা ১০ টাকা এবং চিতই পিঠা ৫ টাকায় বিক্রি করেন। এতে দিন শেষে কখনো ৪শ’ কখনো বা ৫শ’ টাকা আয় হয় তার। সেই কষ্টের টাকা জমিয়ে তিনি ভবিষ্যতের আপদ-বিপদ থেকে পরিবারকে রক্ষা করেন।
মমেনা বেওয়া অভিযোগ করেন, চালসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন লাভ কম হচ্ছে।
মমেনা বেওয়ার মত বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রিক্সা প্যাডলার মাহিন আলম শীত এলেই মহাজনের কাছে রিক্সা জমা দিয়ে চার মাস পিঠা তৈরীর কাজ করেন। প্রতিদিন মাহিন আলমের আয় হয় এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা।অপরদিকে সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলমও শীতকালে পেশা পরিবর্তন করেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় জমে উঠেছে শীতের পিঠা বিক্রি
৩ বছর আগে