প্লাস্টিক
প্লাস্টিক ও নদী দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ: পরিবেশ উপদেষ্টা
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বায়ু, শব্দ, প্লাস্টিক এবং নদী দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার উদাহরণ স্থাপন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, জনগণের জন্য একটি পরিচ্ছন্ন এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সচিবালয়ে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইর্মা ভ্যান ডুরেন তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: কপ-২৯ সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
পলিথিন নিষিদ্ধের পদক্ষেপ বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনাও হালনাগাদ করা হতে পারে।
সাক্ষাতে পরিবেশ সংরক্ষণ, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে সহযোগিতা শক্তিশালী করার ওপর আলোচনা হয়।
উভয় পক্ষ জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত অবনতি মোকাবিলায় চলমান উদ্যোগ এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।
এসময় পরিবেশ উপদেষ্টা পরিবেশ সংরক্ষণ বিশেষ করে নদী রক্ষায় স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, নদীগুলো আমাদের জীববৈচিত্র্যের মূলভিত্তি। যেকোনো টেকসই পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগে স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য।
রাষ্ট্রদূত ইর্মা ভ্যান ডুরেন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে সহায়তায় নেদারল্যান্ডসের প্রস্তুতির কথা জানান।
উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ সচিব, পানি সম্পদ সচিব, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক এবং দূতাবাসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে পরিবেশ সংরক্ষণ ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতার আশাবাদ ব্যক্ত করে বৈঠক শেষ করেন।
পানি ব্যবস্থাপনায় নেদারল্যান্ডসের অভিজ্ঞতা ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি অঙ্গীকারকে সহযোগিতার শক্তিশালী ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি দমনে ডিজিটাইজেশনকে গুরুত্ব দিতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
১ মাস আগে
পলিথিন বা প্লাস্টিক শপিং ব্যাগ কেন নিষিদ্ধ করা উচিত
শহুরে এলাকার বর্জ্য পদার্থের একটা বিরাট অংশ হচ্ছে পলিথিন বা প্লাস্টিক। উপাদানগত দিক থেকে এই পলিব্যাগগুলো মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী, পরিবেশ ও আবহাওয়ার জন্য ক্ষতিকর। তাই পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে যাবতীয় প্লাস্টিক শপিং ব্যাগ ও পলিথিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এর আগে সুপারশপগুলোতে পলিথিন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কাঁচাবাজারগুলোতে এই নিয়ম শুরু হবে নভেম্বর থেকে। এই নিষেধাজ্ঞা কেন জরুরি, পলিথিন নিষিদ্ধ হলে এর বিকল্প কি, বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার উপযোগিতাই বা কতটুকু, চলুন, তা নিয়ে বিশ্লেষণ করা যাক।
প্লাস্টিকের ব্যাগ বা পলিথিন নিষিদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা
.
জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি
পরিত্যক্ত প্লাস্টিক মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়ে বাতাস, পানি ও খাবারের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে। এই অনুপ্রবেশের ফলে দীর্ঘমেয়াদে ফুসফুস ও কিডনিজনিত রোগের উপক্রম ঘটে।
প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির উপকরণগুলোর মধ্যে বিসফেনল এ (বিপিএ) ও ফ্যালেট্সের মতো রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এগুলো হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, শ্বাসকষ্ট, প্রজনন সমস্যা ও ক্যান্সারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্য জটিলতার সৃষ্টি করে।
এই ব্যাগগুলো যখন পোড়ানো হয় তখন ডাইঅক্সিন ও ফুরানের মতো অত্যন্ত বিষাক্ত ধোঁয়া নির্গত হয়। এগুলো বায়ু দূষণের মধ্য দিয়ে শ্বাসযন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
ফেনীতে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে তেল উৎপাদন!
অন্যান্য প্রাণীদের জন্য হুমকি
মাইক্রোপ্লাস্টিক যে কোনো উভচর প্রাণীর পরিপাকতন্ত্রকে বিনষ্ট করে দেয়, যার ফলে অপুষ্টি, অনাহার ও শেষ পর্যন্ত মৃত্যুও ঘটতে পারে।
বিশেষত সামুদ্রিক কচ্ছপগুলো প্রায়ই ভাসমান প্লাস্টিকের ব্যাগগুলোকে জেলিফিশ ভেবে ভুল করে, যেটি তাদের প্রধান খাদ্যগুলোর একটি। গরু ও হাতির মতো বড় বড় প্রাণীদের পাকস্থলীও প্লাস্টিকের কারণে কার্যকারিতা হারায়।
সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের বিনাশ
বেশিরভাগ প্লাস্টিক বর্জ্যের চূড়ান্ত গন্তব্য সাগর। প্লাস্টিক ব্যাগের ক্ষয়ে যাওয়া অংশগুলো পানিতে দীর্ঘদিন ধরে ভাসমান অবস্থায় থাকে। এভাবে সময় যত যায় জলাশয়ের ওপর আবর্জনাযুক্ত বিশাল এলাকা সৃষ্টি করে। এই আবর্জনা স্রোতের সঙ্গে সাগরের খাদ্য-শৃঙ্খলে প্রবেশ করে ক্ষুদ্রতম প্লাঙ্কটন থেকে শুরু করে বৃহাদাকার তিমিরও মৃত্যুর কারণ হয়।
মাছ, সামুদ্রিক পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীসহ গোটা সামুদ্রিক প্রজাতি প্লাস্টিক দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য প্রয়োজনীয় প্রবাল প্রাচীরগুলোকে ঢেকে দেয়। ফলে সেগুলোতে সূর্যালোক পৌঁছাতে পারে না ও সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।
জলবায়ুর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব
প্লাস্টিক ব্যাগ পেট্রোলিয়ামভিত্তিক পণ্য থেকে তৈরি করা হয়, আর এই উৎপাদনে প্রয়োজন হয় প্রচুর পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানি। অপরদিকে, নির্গত হয় কার্বন ডাই অক্সাইড ও মিথেনের মতো গ্রিনহাউস গ্যাস। এছাড়া উৎপাদনের উদ্বৃত্ত অংশগুলো যেখানে ফেলে দেওয়া হয়, সেখান থেকেও এ ধরনের বিষাক্ত গ্যাসগুলো বায়ুমণ্ডলে উন্মুক্ত হয়।
পুনর্ব্যবহারের অযোগ্য বলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যবহারের পর পলিব্যাগগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়। তখনও ধোঁয়ার মাধ্যমে নির্গত হয় ক্ষতিকারক গ্যাস। এভাবে সামগ্রিকভাবে পুরো বায়ুমণ্ডলকে বিষাক্ত করে ফেলে প্লাস্টিক।
'রিকশা বিন': ঢাকাকে প্লাস্টিক বর্জ্যের ঝুঁকিমুক্ত করতে বিদ্যানন্দের নতুন পদক্ষেপ
প্লাস্টিক ব্যাগ বা পলিথিনের কয়েকটি উৎকৃষ্ট বিকল্প
.
সোনালী ব্যাগসহ অন্যান্য পাটের তৈরি ব্যাগ
বাংলাদেশে উদ্ভাবিত পাটের সেলুলোজ থেকে তৈরি সোনালী ব্যাগ। এগুলো শুধুমাত্র বায়োডিগ্রেডেবল নয় বরং টেকসই ও জল-প্রতিরোধীও। প্লাস্টিক বা পলিব্যাগের তুলনায় এগুলো ভারী বোঝা বহন করতে সক্ষম। এই ব্যাগ ফেলে দেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে এর উপাদানগুলো সম্পূর্ণরূপে ভেঙে যায়। কোনো কিছুই আর অবশিষ্ট থাকে না।
এরকম পাটজাত ব্যাগগুলো পলিথিনের একটি সেরা বিকল্প। পাটের ব্যাগের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এগুলোকে বছরের পর বছর ধরে বারবার ব্যবহার করা যায়। তাছাড়া পাট চাষে ঝামেলাও কম, পানি ও সার ও কীটনাশকও অল্প প্রয়োজন হয়।
তুলার ব্যাগ
দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য আরও একটি দারুণ বিকল্প হচ্ছে তুলার ব্যাগ। এই ব্যাগগুলো হালকা ওজনের, ধোয়া যায় ও সহজেই ভাঁজ করা যায়। তবে চাষের ক্ষেত্রে তুলা বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট পরিমাণে পানির প্রয়োজন হয়। জৈব তুলার ব্যাগ সিন্থেটিক কীটনাশক বা সার ছাড়াই জন্মায়। এগুলো বায়োডিগ্রেডেবল ও অপরসারণ করা হলে দ্রুত সম্পূর্ণরূপে ক্ষয়ে যায়।
অবৈধ ইটভাটা বন্ধ: সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে ডিসিদের নির্দেশ
কাগজের ব্যাগ
উপাদানগত দিক থেকে কাগজের ব্যাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য ও প্রাকৃতিকভাবে দ্রুত নিঃশেষযোগ্য। এই ব্যাগগুলোর সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করা হলে তা মাটির পুষ্টি ফিরিয়ে দিতে পারে। পাট বা তুলার মতো শক্তিশালী না হলেও, কাগজের ব্যাগ হালকা ওজনের জিনিস বহন করার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য বিকল্প।
কাপড়ের তৈরি ব্যাগ
লিনেন, মসলিন বা অন্যান্য ফেব্রিক মিশ্রণের উপাদান থেকে তৈরি কাপড়ের ব্যাগ যথেষ্ট টেকসই হয়ে থাকে। এগুলো পানিতে ধুয়ে নিয়ে অসংখ্যবার ব্যবহার করা যেতে পারে। ইতোমধ্যে সুপরিচিতি পেয়েছে ক্যানভাস ব্যাগগুলো, যেগুলো মূলত তুলা বা লিনেন থেকে তৈরি।
বৈশিষ্ট্যগত ভাবেই এগুলো হালকা ওজনের ও ভাঁজ করা সহজ। উপকরণের একদম শেষ অংশগুলো চূড়ান্তভাবে প্রকৃতিতে মিশে যেতে খুব সময় নেয় না। তাই পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলার আশঙ্কা থাকে না।
উলের ব্যাগ
এই প্রাকৃতিক ফাইবার যথেষ্ট মজবুত, পুনর্ব্যবহারযোগ্য ও বায়োডিগ্রেডেবল। উল প্রাকৃতিকভাবে জলপ্রতিরোধী হওয়ার যে কোনো আবহাওয়াতেই এগুলো ব্যবহারের উপযোগী। ওপরন্তু, উলের উৎপাদনে প্রয়োজনীয় উপকরণ পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না। উলের ব্যাগ বছরের পর বছর স্থায়ী হওয়ার কারণে এগুলোর ঘন ঘন প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে না। প্রাকৃতিকভাবে নিঃশেষ হওয়ার সময় মাটিকে দূষিত করার পরিবর্তে সমৃদ্ধ করে।
বাংলাদেশে ১৫ বছরে প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েছে ৫ গুণ: বিশ্বব্যাংক
বেতের ব্যাগ
দ্রুত বর্ধনশীল ও রিনিউয়েবল হওয়ায় ব্যাগের জন্য উৎকৃষ্ট একটি উপকরণ হতে পারে বেত। ভারী জিনিস বহনের জন্য বেতের ব্যাগ সেরা। স্থায়িত্বের দিক থেকে প্রসিদ্ধ হওয়ায় বেত অল্প ব্যবহারেই অপসারণের প্রয়োজন হয় না। তাই ঘন ঘন বর্জ্য সামলানোর ঝামেলা নেই।
শণের ব্যাগ
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে টেকসই ফাইবারগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে শণ। এর চাষের জন্য অল্প পরিমাণে পানি প্রয়োজন হয়। দ্রুত বেড়ে উঠার জন্য কোনো কীটনাশকের দরকার পড়ে না। শণের ব্যাগ তুলা বা পাটের থেকেও অনেক শক্তিশালী ও পর্যাপ্ত ভারী ওজন নিতে পারে। এছাড়া শণের মধ্যে দূষিত মাটি পরিষ্কার করার গুণ রয়েছে।
কচুরিপানা থেকে তৈরি ব্যাগ
পলিব্যাগের সৃজনশীল বিকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কচুরিপানার ব্যাগ। দ্রুত বর্ধনশীল এই জলজ উদ্ভিদকে ব্যাগের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বায়োডিগ্রেডেবল বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা যেতে পারে। এই ব্যাগগুলোর ঘন ঘন উৎপাদন বিভিন্ন জলাধারগুলোতে কচুরিপানার ঘনত্ব কমাবে। এতে করে স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র ব্যাহত হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
মাইক্রো প্লাস্টিক কী? কীভাবে এটি মানবদেহে প্রবেশ করে? কী কী প্রভাব ফেলে?
পলিথিনের বিকল্পগুলোর প্রসারে সীমাবদ্ধতা
.
উচ্চ ক্রয়মূল্য
তুলা বা পাটের ব্যাগের মতো পরিবেশ-বান্ধব বিকল্পগুলো পলিথিনের চেয়ে বেশি দামি হতে পারে। এই উচ্চ মূল্য ভোক্তাদের নিরুৎসাহিত করতে পারে। এখানে উৎপাদন মূল্যের কারণে চূড়ান্ত বিক্রয়মূল্য কমানোটা কঠিন হবে। ওপরন্তু, এই ব্যাগগুলো নিয়ে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক বিনিয়োগটিও একটি আর্থিক বোঝা হতে পারে।
সাপ্লাই চেইন ও প্রাপ্যতা সমস্যা
বিভিন্ন সাপ্লাই চেইন অতিক্রম করে বিক্রয়যোগ্য পণ্যের পর্যায় পর্যন্ত আসার প্রক্রিয়াটা জটিল হতে পারে। এতে শুধু যে খরচই বাড়বে তা নয়, সঠিক আউটলেটটি পর্যন্ত আসতে অতিরিক্ত সময়েরও প্রয়োজন হতে পারে। যেমন যে অঞ্চলগুলোতে পাট বা তুলা চাষ হয় না সে জায়গাগুলোতে বেশি পরিমাণে ব্যাগ সরবরাহ করাটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। ওপরন্তু, দোকানে পর্যাপ্ত পরিমাণে পণ্য আসতে কাল বিলম্ব হলে তা ভোক্তাদের আবার পলিব্যাগ ব্যবহারের দিকে ধাবিত করতে পারে।
পরিবেশগত প্রভাব
চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদনের স্বার্থে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এই সতর্কতাটি তুলার ব্যাগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কচুরিপানা ব্যাগ ব্যবহারের পর তার সঠিক নিষ্কাশন না করা হলে তা জলজ বাস্তুসংস্থানকে বিনষ্ট করবে। তাই প্রতিটি বিকল্পের জীবনচক্র বিশ্লেষণ করে একটি ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রয়োজন। বৃহৎ পরিসরে উৎপাদন, পরিবহন ও নিষ্পত্তিতে প্লাস্টিকের মতোই কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে কিনা তা যাচাই করা অতীব জরুরি।
শেষাংশ
পলিথিন বা প্লাস্টিক শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হলে পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য, বন্যপ্রাণী ও আবহাওয়া সুরক্ষিত হবে। তাই বিগত কয়েক দশক ধরে প্রলম্বিত হওয়া এই নিষেধাজ্ঞার অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি। এই পরিপ্রেক্ষিতে সদাই বহনের জন্য পাট, তুলা, উল, শণ, বেত, কাগজ, ও কাপড়ের মতো পরিবেশ-বান্ধব ব্যাগগুলো হতে পারে উৎকৃষ্ট বিকল্প। তবে এই পরিবর্তন রাতারাতি সম্ভব নয়। কেননা নতুন ব্যাগগুলো প্রসারের পূর্বে এর শিল্প, অর্থনৈতিক, ও পরিবেশগত প্রভাবগুলো বিবেচনায় আনতে হবে। এর জন্য ভোক্তা স্তরের পাশাপাশি প্রস্তুতকারক পর্যায়েও ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রয়োজন।
প্লাস্টিক ও নদী দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ: পরিবেশ উপদেষ্টা
১ মাস আগে
প্লাস্টিক পণ্য বর্জনের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক পদ্ধতি অনুসরণের আহ্বান সংশ্লিষ্টদের
রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের বাসিন্দা গোলাম রাব্বি তার এলাকায় স্বপ্ন সুপার শপের আউটলেটে কেনাকাটা করতে যান। প্রয়োজনীয় পণ্য নেওয়ার পর সেগুলোর মূল্য পরিশোধ করতে গিয়ে পণ্য বহনের পাটের ব্যাগের জন্য বাড়তি ১১ টাকা দেওয়া নিয়ে ক্যাশ কাউন্টারে দায়িত্বরত কর্মীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে যান তিনি।
গত ১ অক্টোবর থেকে সরকার সুপার শপে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করার পর থেকে এ ধরনের বিবাদ প্রায়ই দেখা যাচ্ছে।
শেষ পর্যন্ত ১১ টাকা দিয়ে পাটের ব্যাগ কেনা নিয়ে বিরক্ত হয়ে প্রায় ১৩০০ টাকা মূল্যের সামগ্রী না কিনেই আউটলেট ছেড়ে চলে যান রাব্বি।
বিক্রয়কর্মীরা সুপার শপগুলোতে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী পলিথিনের ব্যাগ নিষিদ্ধ করার বিষয়টি তাকে বুঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি এ ব্যাখ্যা মানতে রাজি হননি।
সরকারি নিষেধাজ্ঞার পর থেকে সুপার শপগুলোয় পলিব্যাগের পরিবর্তে কাগজের ব্যাগে মাছ, মাংস ও অন্যান্য হিমায়িত পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। যা নিয়ে ক্রেতা-বিক্রয়কর্মীদের মধ্যে এমন ভুল বুঝাবুঝির ঘটনা অহরহ ঘটছে।
আরও পড়ুন: মাইক্রো প্লাস্টিক কী? কীভাবে এটি মানবদেহে প্রবেশ করে? কী কী প্রভাব ফেলে?
বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৮৭ হাজার টন একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়, যার বেশিরভাগই বর্জ্যে পরিণত হয়। এ কারণে সরকার মুদি ব্যাগ থেকে শুরু করে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার কমানোর চেষ্টার অংশ হিসেবে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্লাস্টিক দূষণ বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ সমস্যায় পরিণত হচ্ছে। দেশের দ্রুত শিল্পায়ন ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কারণে প্লাস্টিক পণ্যের চাহিদা বেড়েছে।
এছাড়াও অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অবকাঠামোও এর জন্য দায়ী। বিশেষ করে শহরাঞ্চল ও নৌপথে ব্যাপক প্লাস্টিক দূষণের কারণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ঠিকমতো না হওয়া।
এই সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক আদেশ অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১৭টি খাতে 'সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক' (এসইউপি) অর্থাৎ এক বার ব্যবহার ব্যবহারের প্লাস্টিক পণ্য পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার জন্য গত ২৭ আগস্ট একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপনে পরিবেশ সুরক্ষা ও দূষণ কমাতে অবিলম্বে এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যা ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা
বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) সভাপতি শামীম আহমেদ ইউএনবিকে বলেন, ১৭টি খাতে এসইউপি নিষিদ্ধ করার আদেশ জারির আগে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা প্রয়োজন। না হলে প্রায় ৬ হাজার শিল্প ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে।
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, 'সরকারি কর্মকর্তারা এর আগেও এ ধরনের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন কিন্তু কোনো মাঠ পর্যায়ের গবেষণা ছাড়াই। ফলে তারা (কর্মকর্তারা) বুঝতে পারছেন না এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তটি ফলপ্রসূ হবে এবং প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প হিসেবে কি ব্যবহার করা যায়।’
সম্প্রতি জাপানে প্লাস্টিক পণ্যের একটি কর্মশালায় যোগ দিয়ে সিঙ্গাপুর সফর করেন শামীম আহমেদ।
তিনি বলেন, এশিয়ার উন্নত দেশগুলোও বাংলাদেশের মতো প্রতিটি ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের ব্যবহার করছে। কিন্তু তারা (জাপান ও সিঙ্গাপুর) শতভাগ প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে তা পুনর্ব্যবহার করে।
শামীম আহমেদ বলেন, অপর্যাপ্ত সরবরাহ, উচ্চমূল্য এবং প্লাস্টিকের বিকল্প উৎস পাওয়ার সক্ষমতার অভাবে জাপান ও সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত দেশগুলোও এখন পর্যন্ত প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহারে সফল হতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ প্লাস্টিক বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দিকে মনোনিবেশ করছে, যা এখন পর্যন্ত একটি ভালো বিকল্প।
আরও পড়ুন: সরকারি অফিসে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহারের নির্দেশনা
রপ্তানিমুখী ও দেশীয় ভোগ্যপণ্যে প্লাস্টিক প্যাকেজিংয়ের উদাহরণ দিয়ে শামীম আহমেদ বলেন, আয়োডিনযুক্ত লবণ, ভোজ্যতেল ও তরল দুধের প্যাকেজিং প্লাস্টিক ছাড়া করা অসম্ভব।
২০২২ সালের ২ মার্চ জাতিসংঘের পরিবেশ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবে বিশ্বব্যাপী সার্কুলার ইকোনমিতে প্লাস্টিকের অনুপাত বিবেচনায় কার্যকর পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থা তৈরির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ
প্লাস্টিক পণ্যের উপযুক্ত বিকল্প উদ্ভাবনের আগে পরিবেশ ও শিল্পকারখানা রক্ষায় প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ)। সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার মাধ্যমে প্লাস্টিক বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
এছাড়াও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে যুক্ত করা, বাস-রেল স্টেশন, পার্ক, ওয়াকওয়েসহ বিভিন্ন স্থানে প্লাস্টিক বর্জ্যের জন্য পর্যাপ্ত 'বিন' স্থাপনসহ একটি নির্দিষ্ট স্থানে প্লাস্টিক ফেলার বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে পরামর্শ দিয়েছে বিপিজিএমইএ।
শহরাঞ্চলে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট স্থাপনের বিষয়ে জানতে এবং ভর্তুকি হারে সরঞ্জাম পেতে স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটে (এলজিআই) যোগাযোগের কথা বলা হয়েছে।
টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্লাস্টিক সার্কুলারিটি চালু করা হবে যার মাধ্যমে অন্যান্য উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও পরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা হবে। এর জন্য সরকারকে প্রযুক্তি সরবরাহ এবং কম হারে সুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে।
প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয় এমন শিল্পখাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্লাস্টিক উৎপাদন নিষিদ্ধ করা কোনো সমাধান নয়। তাই বাংলাদেশকে এই পদ্ধতিই অনুসরণ করতে হবে, নাহলে শিল্প ব্যবস্থা পরিচালনা করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়বে। যেমন- খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ফার্মাসিউটিক্যালস প্যাকেজ, হাসপাতালের সরঞ্জাম, কৃষি আধুনিকায়ন ও রপ্তানি প্যাকেজিং খাতগুলো প্লাস্টিক পণ্য ছাড়া চলবে না। প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করলে এসব শিল্পে ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
প্লাস্টিকসংশ্লিষ্ট শিল্পের পরিসংখ্যান
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী,
সিরিয়াল নং
শিল্পের ধরন
শিল্পের সংখ্যা
উৎপাদন মূল্য (টাকা)
১
খাদ্যপণ্য
৯৩৯৭
১২৬৩৭৪৭ মিলিয়ন টাকা
২
পানীয়
৩৭
১২৩৩৩০ মিলিয়ন টাকা
৩
তামাকজাত দ্রব্য
১৮১
২৮৬১৭১ মিলিয়ন টাকা
৪
রাসায়নিক ও রাসায়নিক পণ্য
২৫১
১২১৫২৬ মিলিয়ন টাকা
৫
ফার্মাসিউটিক্যালস, ঔষধি রাসায়নিক ও বোটানিক্যাল পণ্য
১৪৯
২৬৮৬২৪ মিলিয়ন টাকা
৬
রাবার ও প্লাস্টিক পণ্য
৯৪৩
৬৬১৪৬৯ মিলিয়ন টাকা
যা বলছেন পলিথিন বা প্লাস্টিক পণ্যের গ্রাহকরা
শীর্ষস্থানীয় ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশ এসইউপি পণ্যের বড় ক্রেতা। কোম্পানিটি বাংলাদেশে ও বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমেই পণ্য বাজারজাত করে থাকে।
ইউনিলিভার প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি না হলেও তাদের পণ্যগুলো একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের প্যাকেট বা বোতলে বাজারজাতকরণ করে থাকে তারা।
ইউনিলিভারের ডিরেক্টর অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স শামীমা আক্তার ইউএনবিকে বলেন, প্লাস্টিক পণ্য বর্জনের প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
আরও পড়ুন: পলিথিন নিষিদ্ধের পক্ষে ক্রেতারা, বিকল্প নিয়ে শঙ্কা
এই ফেজ-আউট পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পণ্যের সচেতনতা ও অগ্রাধিকারের জন্য এ খাতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপের ওপর জোর দেন তিনি।
শামীমা আক্তার বলেন, ইউনিলিভার বাংলাদেশে প্রায় ১৩ লাখ দোকান মালিকের কাছে পণ্য বিক্রয় করে থাকে। পণ্যের গুণমান নিশ্চিত করার কথা বিবেচনা করে প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করে তাদের বিপুল সংখ্যক পণ্য বাজারজাত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে সাশ্রয়ী ভালো মানের কোনো প্যাকেজিং সিস্টেম তৈরি করা হয় তাহলে ইউনিলিভার সেটি ব্যবহার করতে আগ্রহী। সে পর্যন্ত প্লাস্টিক প্যাকেজিংয়ের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে গবেষণার ওপর জোর দিয়ে শামীমা আক্তার বলেন, এর কোনো বিকল্প বিবেচনা করার বদলে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলার ওপর মনোনিবেশ করা উচিত।
আরও পড়ুন: পরিবেশ রক্ষায় পলিথিন ও এসইউপির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সরে আসা সময়ের দাবি: উপদেষ্টা
১ মাস আগে
মাইক্রো প্লাস্টিক কী? কীভাবে এটি মানবদেহে প্রবেশ করে? কী কী প্রভাব ফেলে?
সমুদ্র তলদেশ থেকে শুরু করে অতিকায় পাহাড়ের সুউচ্চ চূড়া সর্বত্র পাওয়া গেছে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা। জলবায়ু ও পরিবেশকে গ্রাস করে ফেলায় প্রাণীজগতের জন্য রীতিমতো হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এই নগণ্য কণাগুলো। এই আশঙ্কা থেকে মানুষও মুক্ত নয়, বরং সাম্প্রতিক বছরগুলোর গবেষণায় মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও টিস্যুতে এই কণাগুলোর উপস্থিতি টের পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণেই মানব স্বাস্থ্যের ওপর এই ক্ষুদ্র কণাগুলোর প্রভাব সম্পর্কে আরও গভীরভাবে জানা জরুরি। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক, কী এই মাইক্রো প্লাস্টিক, মানবদেহে কীভাবে এর অনুপ্রবেশ ঘটে, আর এর ক্ষতিকর প্রভাবগুলোই বা কী?
মাইক্রো প্লাস্টিক কী
প্লাস্টিকের যেসব কণার আকার ৫ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের কম, সেগুলোকে মাইক্রো প্লাস্টিক বলা হয়। এগুলো পাওয়া যায় পোশাক, প্রসাধনী, খাদ্যের মোড়ক এবং শিল্প কারখানায় নানা ধরনের প্রক্রিয়ার উৎপাদ হিসেবে। মূলত উচ্ছিষ্ট হিসেবে উদ্বৃত্ত হয়ে প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রে প্রবেশ করে এগুলো পরিবেশকে দূষিত করে থাকে।
মাইক্রো প্লাস্টিক প্রধানত প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি- এ দুই শ্রেণিতে বিভক্ত। প্রাইমারি পর্যায়ের টুকরোগুলো পরিবেশে প্রবেশের আগে থেকেই ৫ মিলিমিটার বা তার কম আকারের হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে পোশাকের ক্ষুদ্র সুতা, ক্ষুদ্র গুটিকা, প্লাস্টিকের গ্লিটার ও প্লাস্টিকের প্যালেট বা নার্ডল্স।
আরো পড়ুন: এমপক্সের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
অন্যদিকে, সেকেন্ডারি মাইক্রো প্লাস্টিকগুলো পরিবেশে প্রবেশের পর প্রাকৃতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে বড় প্লাস্টিক পণ্যগুলোর ভাঙন থেকে সৃষ্টি হয়। যেমন পানি ও সোডার বোতল, মাছ ধরার জাল, প্লাস্টিকের ব্যাগ, মাইক্রোওয়েভ পাত্র, টি-ব্যাগ ও টায়ারের আবরণ।
উভয় ধরনের কণাই যেকোনো বাস্তুতন্ত্রের উচ্চ স্তরে টিকে থাকতে পারে। বিশেষ করে জলজ ও সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে এগুলো পানি দূষণের কারণ হয়। মহাসাগরীয় মাইক্রো প্লাস্টিকের ৩৫ শতাংশ আসে টেক্সটাইল বা পোশাক শিল্প থেকে। এই আগ্রাসনটি প্রাথমিকভাবে পলিয়েস্টার, এক্রিলিক বা নাইলন-ভিত্তিক পোশাকের ক্ষয়জনিত কারণে হয়ে থাকে। এছাড়া বায়ু ও ভূমিক বাস্তুতন্ত্রেও এই আগ্রাসন লক্ষণীয়।
প্লাস্টিকের ক্ষয় প্রক্রিয়া বেশ ধীর গতির; অধিকাংশ ক্ষেত্রে হাজার বছর লেগে যায়। তাই এগুলোর উচ্ছিষ্ট কণাগুলো কোনো জীবের দেহে একবার প্রবেশ করলে দীর্ঘদিন ধরে সেখানেই থেকে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এরকম আরও প্লাস্টিক কণার অনুপ্রবেশের কারণে দেহের অভ্যন্তরে জমা হতে থাকে। বিষাক্ত রাসায়নিকগুলো নদী বা সমুদ্র যেকোনো জলাধার থেকে খাদ্য শৃঙ্খলে ঢুকে পড়ে, যার বিস্তৃতি ঘটে প্রাণীদেহ পর্যন্ত।
আরো পড়ুন: রক্তের গ্রুপ: কে কাকে রক্ত দিতে পারবে?
মাইক্রো প্লাস্টিক মানবদেহে কীভাবে প্রবেশ করে
.
আহার বা পানের মাধ্যমে
অন্যান্য জীবাণুর মতো এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণাও যেকোনো খাবার খাওয়া বা পানীয় পানের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে। যেমন দীর্ঘ দিন ধরে প্লাস্টিকের পাত্রে সঞ্চিত খাবার কিংবা তাতে গরম করা খাবারে মাইক্রো প্লাস্টিক থাকতে পারে। পুরোনো প্লাস্টিকের গ্লাস এবং নিত্য ব্যবহৃত টুথপেস্ট বা টুথব্রাশও এই কণাগুলোর সহায়ক উৎস।
মোটা দাগে এ ধরনের কণা ধারণকারী মাটিতে শস্য চাষ করা হলে তা থেকে উৎপাদিত ফসল স্বাভাবিকভাবেই দূষিত থাকবে। সেই সূত্রে অধিকাংশ শস্য খাদ্যই মাইক্রোপ্লাস্টিক দ্বারা দূষিত। গম ও লেটুসে যথেষ্ট পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা পাওয়া গেছে।
আরো পড়ুন: মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
প্লাস্টিকের বোতলের খাবার পানি যে পরিমাণ প্লাস্টিক কণা থাকে, তা সরাসরি ট্যাপ বা কলের পানির তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বেশি। এমনকি বিভিন্ন মোড়কে বিক্রি করা কোমল পানীয়তেও এসব ক্ষুদ্র কণার উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
এছাড়া সেঁচের পানি এবং জমিতে সার ছিটানোর সরঞ্জামেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি বিদ্যমান। এতে করে সংশ্লিষ্ট জমি থেকে উৎপন্ন ফসল এবং তার খাবার পশুপাখি ও মানুষ উভয়েরই জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
খাদ্য, পানি, ও বাতাসে মাধ্যমে গবাদি পশুর দেহেও প্লাস্টিকের কণা প্রবেশ করে। মাছের ভেতরেও মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা পাওয়া গেছে যথেষ্ট পরিমাণে। তাই স্বভাবতই মাংস বা মাছ খাওয়ার মধ্য দিয়ে মানুষের দেহে অনায়াসেই ঢুকে পড়ে এই ক্ষতিকর কণাগুলো।
আরো পড়ুন: সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
মা থেকে শিশুতে
মাইক্রো প্লাস্টিক প্লাসেন্টার মাধ্যমে ভ্রূণে প্রবেশ করতে পারে। মাতৃত্বকালে মায়ের শরীরে এই কণা স্বল্প পরিমাণে থাকলেও বুকের দুধ পান করার সময় শিশুর দেহেও তা প্রবেশ করার আশঙ্কা থাকে। তবে প্লাস্টিক-জাত ফিডিং বোতল এবং চুষনীতে মাইক্রো প্লাস্টিক থাকার আশঙ্কা বেশি।
যে শিশুদের সাকশন কাপের মাধ্যমে বুকের দুধ খাওয়ানো হয়, সেই শিশুরা মাইক্রো প্লাস্টিক আক্রান্ত হতে পারে। প্রোপিলিন ফিডিং বোতলে তৈরি ফর্মুলা খাওয়ার মাধ্যমে শিশু উচ্চ মাত্রার মাইক্রোপ্লাস্টিকের সংস্পর্শে আসতে পারে।
দুধ পাম্প করে প্লাস্টিকের পাত্রে জমানো, তারপর তা গরম করার ফলে দুধে মাইক্রোপ্লাস্টিকের দূষণ বাড়ে। অনুরূপ ফলাফল পাওয়া যায় ওভেনে প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার গরম করার ক্ষেত্রেও। এখানে কেবল মাইক্রোপ্লাস্টিক-ই নয়, সেই সঙ্গে ন্যানোপ্লাস্টিকেরও (১ মাইক্রো মিটার বা তারচেয়েও ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা) ব্যাপন ঘটে।
আরো পড়ুন: মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
নিঃশ্বাসের মাধ্যমে
আহারের তুলনায় শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে অনেক বেশি পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দেহে প্রবেশ করে। গৃহস্থালির ধুলাবালি এই কণাগুলো ছড়ানোর একটি বড় উৎস। প্লাস্টিক কণাযুক্ত পরিবেশ বিপদের কারণ বাড়িয়ে দেয়। কেননা খাবার জীবাণু মুক্ত হলেও দূষিত পরিবেশে সেই খাবার খাওয়ার সময় অনায়াসেই মাইক্রোপ্লাস্টিক ফাইবার দেহের ভেতরে ঢুকে যেতে পারে।
ত্বক বা স্পর্শের মাধ্যমে
স্বাস্থ্যবান ত্বকে সাধারণত এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণাগুলো প্রবেশ করতে পারে না। তবে ক্ষতিগ্রস্ত বা নষ্ট ত্বক মাইক্রো প্লাস্টিকের ক্ষেত্রে একদম উন্মুক্ত হয়ে থাকে। ত্বকে এসব ফাইবারের অনুপ্রবেশ ঘটে মূলত ঘাম এবং চুলের ফলিকলের মতো ক্ষত কিংবা ছিদ্রগুলোর মাধ্যমে। এছাড়া মুখে ব্যবহার করা নানা ধরনের প্রসাধনীর মাধ্যমেও এগুলোর ত্বকের প্রাচীর ভেদ করতে পারে।
ঘরের ভেতর থাকা ময়লা কার্পেট এবং সিন্থেটিক ফাইবার থেকে খুব কম সময়েই বাতাসে প্লাস্টিক কণার ঘনত্ব বেড়ে যায়। এতে করে বসবাসরত প্রতিটি মানুষের ত্বক মাইক্রো প্লাস্টিকের সান্নিধ্যে আসে। এই দূষিত ধূলিকণার সংস্পর্শে বিশেষ করে বয়স্ক এবং শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
আরো পড়ুন: অটিজম কী? অটিজম সচেতনতা ও সহমর্মিতা কেন জরুরি?
শিল্প কারখানার উৎপন্ন বস্তু থেকে
পরিবেশে প্লাস্টিক কণার ছড়ানোর ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখে বিভিন্ন কল-কারখানার বর্জ্য পানি এবং নির্মানাধীন আবাসনের ভারী বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি। এভাবে দূষিত পরিবেশের ভেতর দিয়ে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ মাইক্রো প্লাস্টিকের আগ্রাসনের শিকার হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে কল-কারখানা ও সেই নির্মানাধীন স্থানের কর্মীরা।
এসব উৎস ত্বক বা স্পর্শ ও নিঃশ্বাস উভয়ের মাধ্যমেই মানুষের আভ্যন্তরীণ শরীর ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে। এখানে উৎপাদনকারী যন্ত্রাদির অপারেটরদের দেহে ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার পরিমাণ থাকে সর্বাধিক। কারখানার ভেতরে যারা যন্ত্রগুলো থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকে তারা আক্রান্ত হয় নিঃশ্বাসের মাধ্যমে। কেননা গোটা কারখানার পরিবেশে সার্বক্ষণিক প্রতিকূলতা বিরাজ করে। এক্ষেত্রে বিপজ্জনক স্থানগুলো হলো টেক্সটাইল শিল্প, ফ্লকিং শিল্প ও প্লাস্টিক শিল্প।
মানবদেহে মাইক্রো প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব
আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ক্ষুদ্র কণাগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব বিভিন্ন পরিস্থিতির ভিত্তিতে ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। এগুলো হলো- আক্রান্ত আসার সময় ও স্থায়ীত্ব, কণার রাসায়নিক গঠন (ভারী ধাতু দ্বারা সমৃদ্ধ কি না) এবং একই সঙ্গে অন্যান্য দূষকের উপস্থিতি। ।
আরো পড়ুন: সার্কেডিয়ান রিদম বা দেহ ঘড়ি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
সামগ্রিকভাবে যেসব স্বাস্থ্য জটিলতার উপক্রম ঘটে সেগুলো হলো:
• ফুসফুসে প্রদাহ
• অক্সিডেটিভ স্ট্রেস
• কার্ডিওভাসকুলার ব্যাধি
• রক্তনালী-সংক্রান্ত রোগ
• শ্বাসযন্ত্রের জটিলতা
• জ্বিনগত সমস্যা
• হরমোনজনিত সমস্যা
• কোষের ধ্বংস বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে নতুন কোষ তৈরিতে ব্যাঘাত ঘটা
• ওজন বৃদ্ধি
• অ্যালার্জি সমস্যা
• দীর্ঘস্থায়ী মানসিক সমস্যা
• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধ্বংস হয়ে ক্যান্সারের দিকে পরিচালিত হওয়া
• প্রজনন জটিলতা
• শিশুদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ক্রমবিকাশে ব্যাঘাত ঘটা
• সাধারণ কোষের ক্যান্সার কোষে রূপান্তর
• বিপাকীয় জটিলতা
আরো পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
শেষাংশ
খালি চোখে দেখতে না পাওয়াটাই আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে মাইক্রো প্লাস্টিকগুলোকে। পরিবেশের সর্বত্রে বিরাজ করায় আহার বা পান, নিঃশ্বাস এবং ত্বক বা স্পর্শের মাধ্যমে অগোচরেই মানবদেহে এগুলোর অনুপ্রবেশ ঘটছে। মাতৃত্বকালে মায়ের দেহ থেকে স্থানান্তরিত হচ্ছে শিশুর দেহে। শিল্প কারখানার ক্ষতিকর প্রক্রিয়াকরণের সান্নিধ্যে থাকায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকছেন কর্মীরা। এমন নিয়ন্ত্রণহীনতার পুনরাবৃত্তির পরিণতি হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্নায়ু, শ্বসন, হৃদপিন্ড, এবং প্রজননসহ শরীরের আভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাগুলো। এ অবস্থায় মাইক্রো প্লাস্টিক প্রতিরোধের নিমিত্ত্বে পরিবেশ তদুপরি মানবদেহের আগ্রাসনের মাধ্যমগুলোকে জনসম্মুখে নিয়ে আসা উচিত।
আরো পড়ুন: অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়
২ মাস আগে
সুস্থভাবে বাঁচতে ক্ষতিকর প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে ক্ষতিকর প্লাস্টিক ও পলিথিনের পণ্যের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, পলিথিন ব্যাগের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব পাটের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুন: সবুজ ভবিষ্যৎ নির্মাণে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ ও নর্ডিক দেশগুলো: পরিবেশমন্ত্রী
বুধবার (২০ মার্চ) পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে প্রায় পাঁচ হাজার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে ঈদ উপহার বিতরণের পর পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বায়ুদূষণের উৎসগুলো চিহ্নিত করেছে সরকার। বায়ুদূষণে এককভাবে নয় যৌথভাবে কাজ করা হলে আগামী বছর কিছুটা উন্নতি দেখতে পাওয়া যাবে।
ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে পরিবেশবান্ধব আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান পরিবেশমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় জনগণের পাশে দাঁড়ায়।
তিনি আরও বলেন, ঈদ উল ফিতর একটি আনন্দের উৎসব। এই সময়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।
আরও পড়ুন: বর্জ্য থেকে সার উৎপাদনে কর্মসূচি গ্রহণ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
৮ মাস আগে
ঢাকা ও রংপুরের কিছু অংশ থেকে ১৫৮ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ
দেশের দুটি প্রধান শহর ঢাকা ও রংপুর থেকে একদিনে প্রায় ১৫৮ কেজি একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করেছেন পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার (ইএসডিও) পরিচালিত ব্র্যান্ড অডিটের সময় স্বেচ্ছাসেবকরা।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্লাস্টিক দূষণকারী শনাক্ত করতে ৩০ সেপ্টেম্বর স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী এবং গার্লস গাইড ও বয়েজ স্কাউটদের সঙ্গে ব্র্যান্ড অডিট পরিচালনা করে ইএসডিও।
ব্র্যান্ড অডিট হলো একটি অংশগ্রহণমূলক বিজ্ঞান উদ্যোগের অংশ। যেখানে প্লাস্টিক বর্জ্যে আবিষ্কৃত ব্র্যান্ডগুলোকে গণনা করা হয় এবং রেকর্ড করা হয়; যাতে প্লাস্টিক দূষণের জন্য দায়ী কোম্পানিগুলোকে চিহ্নিত করা যায়।
২০১৮ সাল থেকে প্লাস্টিকের আবর্জনা দেখা যেতে পারে এমন বিভিন্ন ব্র্যান্ড চিহ্নিত করার প্রয়াসের অংশ হিসেবে ইএসডিও প্রতি বছর এই ব্র্যান্ড অডিট করে।
ব্রেক ফ্রি ফ্রম প্লাস্টিক (বিএফএফপি), প্লাস্টিক দূষণ থেকে মুক্ত ভবিষ্যতের লক্ষ্যে কাজ করা একটি বৈশ্বিক আন্দোলনের সহযোগিতায় ইএসডিও ষষ্ঠবারের মতো ব্র্যান্ড অডিট পরিচালনা করেছে।
ঢাকায় প্রায় ৮৯ কেজি এবং রংপুরে প্রায় ৬৭ কেজি এককবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্লাস্টিকের একক ব্যবহার নিষিদ্ধে আইন প্রয়োগের আহ্বান বিশেষজ্ঞদের
এ বছর ঢাকা শহরের লালমাটিয়ায় অডিট শুরু হয় এবং আসাদ গেট, আড়ং সার্কেল, সংসদ ভবন, ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজ স্কুল, ধানমন্ডি ২৭, লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুলে গিয়ে শেষ হয়।
আবার একই দিনে রংপুরে ডিসি মোড়, কাচারি বাজার, ডিসি অফিস, শিখা অফিস, টাউনহল ও সুরভি উদ্যান ব্র্যান্ড অডিট করা হয়।
এতে প্রায় ১০০ স্বেচ্ছাসেবক সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। ঢাকার ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক অডিটে অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল, লালমাটিয়া গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং বাংলাদেশ গার্লস গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এ ছাড়াও রংপুরের ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক অডিটে অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে রংপুর জিলা স্কুল এবং রংপুর গার্লস হাই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে প্রতিটি স্কুলের গার্লস গাইড ও বয়েজ স্কাউট অন্তর্ভুক্ত ছিল।
স্বেচ্ছাসেবক ও ইএসডিও সদস্যরা নির্বাচিত এলাকা জুড়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে একক-ব্যবহারের প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করেছে।
বর্জ্যের মধ্যে ইএসডিও প্রধানত কোকা-কোলা, পেপসিকো, নেসলে, ইউনিলিভার, মন্ডেলেজ, পারফেটি ভ্যান মেলে, বোম্বে সুইটস, বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড, প্রাণ আরএফএল লিমিটেড, স্কয়ার ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড, আকিজ গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, এসিআই ফুডস লিমিটেড এবং একমি গ্রুপসহ প্রায় ৭২টি জাতীয় ও বহুজাতিক ব্র্যান্ড উৎপাদনকারী ৬টি আন্তর্জাতিক এবং ১৪টি স্থানীয় মূল কোম্পানিকে চিহ্নিত করেছে।
বিএফএফপি গ্লোবাল ক্যাম্পেইন এই ব্র্যান্ড অডিট টুল তৈরি করেছে, যা প্রাথমিকভাবে জনসচেতনতা বাড়াতে ও প্রযোজকদের একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব থেকে পরিবেশকে কীভাবে রক্ষা করা যায় সে সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করার জন্য পরিচালিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: প্লাস্টিক দূষণ রোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশদূষণ রোধে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
১ বছর আগে
এবার কক্সবাজার প্লাস্টিক মুক্ত করার ঘোষণা স্পিকারের
সেন্টমার্টিনের পর এবার কক্সবাজার প্লাস্টিক মুক্ত করার উদ্যোগ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বুধবার(২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চার দিনব্যাপী বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের (বিটিবি) আয়োজনে বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালের এ মেলা ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
আরও পড়ুন: প্লাস্টিকের একক ব্যবহার নিষিদ্ধে আইন প্রয়োগের আহ্বান বিশেষজ্ঞদের
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিনকে প্লাস্টিকমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি। আগামীতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকেও প্লাস্টিকমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সরকারের সব পরিকল্পনা যথাযথ বাস্তবায়ন করা হবে। এর জন্য আমরা সবাই নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করব। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে এর একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেন, যদি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো পরিবেশ তৈরি করা যায় তবে বিদেশি পর্যটকরা আরও বেশি পরিমাণে আগ্রহী হবে।
স্পিকার বলেন, শ্রীলঙ্কা শুধু পর্যটনের আয়ে চলছে। তাদের মতো করতে পারলে আমাদেরও আয় বাড়বে। এজন্য আমরা ঢাকায় ট্যুরিস্ট বাসের ব্যবস্থা করতে পারি। এতে বিদেশি পর্যটকরা একটি ট্যুরের মাধ্যমে ঢাকা শহরের ঐতিহ্যগুলো দেখতে পারবে। পুরান ঢাকার জন্য একটি রুট, নতুন ঢাকার জন্য একটি রুট, নদী পথেও একটি ট্যুরের আয়োজন করা যেতে পারে। আমি মনে করি এটি আমাদের জন্য অনেক কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: কৃষকই শেখ হাসিনার উন্নয়নের মূল কারিগর : ডেপুটি স্পিকার
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. রাহাত আনোয়ার।
চার দিনব্যাপী বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালে ২০টি হোটেল রিসোর্ট, অঞ্চলভিত্তিক খাবারের স্টল ৭০টি, ডিস্ট্রিক্ট ব্রান্ডিং এর আওতায় ২৯টি জেলা, ক্রাফট স্যুভিনিউর ২৬টি, এয়ারলাইনস দুইটিসহ বিনোদন পার্ক, ট্রাভেল এজেন্ট, ট্যুর অপারেটর, ট্যুর গাইড, বিদেশি দূতাবাসসহ ১৬০টিরও অধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত পীরগঞ্জ: স্পিকার
১ বছর আগে
প্লাস্টিক দূষণ রোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে করণীয় নির্ধারণ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় মন্ত্রী বলেন, সরকার প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে 'মাল্টিসেক্টোরাল অ্যাকশন প্লান ফর সাসটেইন্যাবল প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, অবৈধ পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, পরিবহন, বিক্রয়, মজুদদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সরকারের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, এনজিও, বেসরকারি খাত, পরিবেশবাদী সংগঠন এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের ১২ জেলার ৪০টি উপজেলায় সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে তিন বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। সমুদ্র সৈকত ও তৎসংলগ্ন হোটেল-মোটেলে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের বিভিন্ন আইটেম পর্যায়ক্রমে বন্ধের বিষয়ে কার্যক্রম চলমান।
আরও পড়ুন: জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পকে নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব করতে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি বলেন, ২০৩০ সাল নাগাদ ৫০ শতাংশ ‘ভার্জিন ম্যাটেরিয়াল’ ব্যবহার হ্রাস করা, ২০২৬ সালের মধ্যে ৯০ শতাংশ সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করা, ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য পুনঃচক্রায়ন নিশ্চিতকরা, ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হ্রাস করার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ ছাড়াও, এক্সেন্ডেড প্রডিউসার রেসপনসিবিলিটি বাস্তবায়নে গাইডলাইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সকলে একসঙ্গে কাজ করলে প্লাস্টিক দূষণ রোধে সফল হওয়া যাবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণায় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।
আরও পড়ুন: পরিবেশদূষণ রোধে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস-এর বৃক্ষরোপণ ও পরিবেশ সচেতনতা কর্মসূচি আয়োজন
১ বছর আগে
পরিবেশদূষণ রোধে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে। পুনঃব্যবহার সম্ভব না হলে বর্জন করার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে স্কাউটদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
শুক্রবার (২১ জুলাই) বিকেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ স্কাউটসের সমাজ উন্নয়ন অ্যাওয়ার্ড বিতরণ এবং প্লাস্টিক টাইড টার্নার ব্যাজ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শাহাব উদ্দিন জানান, স্কাউট ও রোভার স্কাউটদের ভালো কাজের স্বীকৃতির স্বীকৃতি হিসেবে ‘প্লাস্টিক টাইড টার্নারস চ্যালেঞ্জ ব্যাজ’ প্রদান করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা অনুসরণে দেশে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, স্কাউটদের অনুকরণে সবাই প্লাস্টিক ব্যবহার কমানো ও পুনঃব্যবহার বিষয়ে কাজ করলে দেশে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্কাউটস এই মৌসুমে ৫০ লাখ গাছের চারা রোপণ করার উদ্যোগ নিয়েছে যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। স্কাউটদের এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে। স্কাউট আগামী বছর ১ কোটি চারা রোপণ করবে বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, পানিদূষণ রোধ করে ও জলবায়ুর পরিবর্তনের রাশ টেনে ধরতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় কমিশনার (সমাজ উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য) কাজী নাজমূল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রধান জাতীয় কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, কোষাধ্যক্ষ ড. মো. শাহ কামাল এবং প্লাস্টিক টাইড টার্নার প্রোগ্রামের সমন্বয়ক জামাল উদ্দিন সিকদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে পরিবেশমন্ত্রী ২৪১ জনকে সমাজ উন্নয়ন অ্যাওয়ার্ড দেন। এ ছাড়াও, সারাদেশে প্লাস্টিক দূষণ রোধে কাজ করা ‘প্লাস্টিক টাইড টার্নারস চ্যালেঞ্জ ব্যাজ’ অর্জনকারী ৫ হাজার ৬৪২ জনের মধ্যে ২৪ জনকে ব্যাজ পরিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ জলবায়ু অভিযোজন কার্যক্রমে অনুদানভিত্তিক অর্থায়ন চায়: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্রিটেনের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ: পরিবেশমন্ত্রী
১ বছর আগে
বাংলাদেশে ১৫ বছরে প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েছে ৫ গুণ: বিশ্বব্যাংক
২০০৫ সাল পরবর্তী ১৫ বছরে প্লাস্টিকের ব্যবহার ৫ গুণ বেড়েছে। শুধু ২০২০ সালে বাংলাদেশে ৯ লাখ ৭৭ হাজার টন প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এসব প্লাস্টিকের মাত্র ৩১ শতাংশ পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৫ বছরে দেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার তিনগুণ বেড়েছে: বিশ্বব্যাংক
পৌরসভার ডাম্পিং ও পর্যটকদের প্লাস্টিক উচ্ছিস্টের কারণে বন ও জলাভূমিতে দুষণ বাড়ছে বলে জানানো হয়।
প্রতিবছর বঙ্গোপসাগরে ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য পড়ছে।
প্রবন্ধে বলা হয়, প্লাস্টিক দুষণ রোধে আন্তর্জাতিক চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এই চুক্তি সই করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই সময়ের আগেই প্লাস্টিক দূষণ রোধের ব্যাপারে করণীয় বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জোরালো করার তাগিদ দেয়া হয় প্রবন্ধে।
প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার এবং পর্যটন অনুরাগী ও উদ্যোক্তা অপু নজরুল।
প্লাস্টিক দূষণ রোধে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করা, এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ট্যুর অপারেটরদের সংযুক্ত করা ও সার্কুলার ইকোনমির প্রচলনের ব্যাপারে মত দেন তারা।
সেমিনারে সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: অবৈধ ইটভাটা বন্ধ: সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে ডিসিদের নির্দেশ
জীবিকার উন্নয়নে বাংলাদেশকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
১ বছর আগে