সন্তানকে বাঁচাতে
সন্তানকে বাঁচাতে অসহায় পরিবারের আকুতি
ফরিদপুর সদর উপজেলার শিবরামপুর এলাকায় শুক্রবার রাতে রিকশাচালক শাকিল হাসান ও আমেনা বেগমের ঘরে জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে শিশু। কিন্তু জন্মের পর দেখা যায় নবজাতকে দুটি পা বাঁকা এবং প্রসাব পায়খানা রাস্তা নেই।
পরদিন শনিবার শিশুটিকে ফরিদপুর শিশু হাসপাতালে আনা হলে ভর্তি না নিয়ে পাঠানো হয় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে একদিন রেখে শিশুটির যথাযত চিকিৎসা সেখানে নেই জানিয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় সেখানকার চিকিৎসকরা। অর্থাভাবে ঢাকা নিতে না পেরে শিশুটির চিকিৎসার জন্য দেশবাসীর কাছে আকুতি জানিয়েছে অসহায় পরিবারটি।
সোমবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন তারা।
আরও পড়ুন: পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টারের সাহায্যে করোনার টিকা পৌঁছে দিল সেনাবাহিনী
চিকিৎসক শিশুটিকে পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, বাচ্চাটির প্রসাব পায়খানার রাস্তা নেই, পিঠে একটা টিউমারের মত আছে। নাভী দিয়ে মাঝে মাঝে রক্ত ঝড়ছে। দুটি পা বাঁকা।
এব্যাপারে ফরিদপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুর রহমান ভুলু বলেন, ‘সব শুনে মনে হচ্ছে শিশুটির অনেকগুলো সমস্যা আছে, সেক্ষেত্রে বিশেষায়িত কোন হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দিতে হবে। এধরনের চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি) ও ঢাকা শিশুতে হয়ে থাকে। শিশু সার্জারি চিকিৎসকরা ভালো বলতে পারবেন, তবে আমার জানা মতে প্রসাব পায়খানার রাস্তা না থাকলে বেশ কয়েকটি সার্জারি করতে হবে, এই চিকিৎসা বেশ ব্যয় বহুলও বটে।’
শিশুটির নানা আবু তালেব বলেন, ‘তার মেয়ের জামাই রিকশা চালায়। এই দিয়ে যা আয় হয় তাতে কোন রকম সংসার চলে। আমিও দরিদ্র মানুষ। ঠিকমত খাওয়া দাওয়াই চলে না এই শিশুর চিকিৎসা করাবো কিভাবে? আমাদের পক্ষে এই শিশুর চিকিৎসা করানো সম্ভব না। দেশের দশ জন যদি সাহায্য করে তাহলে হয়ত আমার নাতিটার চিকিৎসা হবে। আমি দেশের মানুষের কাছে নাতিটাকে বাঁচানোর জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: ৩৩৩-তে সাহায্য চেয়ে রিকশাভ্যান পেলেন হাটহাজারীর প্রদীপ
শিশুটির মা কান্নজাড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আপনাদের দুয়ারে আসছি, বাঁচা মরা আল্লাহর হাতে, আমার বাচ্চাটার চিকিৎসা যাতে করাতে পারি সেই ব্যবস্থাটা আপানারা দশ জনে করে দেন।’
বিষয়টি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারকে জানান, তিনি তাৎক্ষণিক ৫ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা করেছেন। পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে জেলা প্রশাসন থেকে আরও সহায়তা করা হবে।
৩ বছর আগে