আইনজীবী
বিচারপতিকে ডিম ছুঁড়ে মারলেন আইনজীবীরা
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করার জেরে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে তার নিজ এজলাস কক্ষে ডিম ছুঁড়ে মেরেছেন একদল আইনজীবী। এক পর্যায়ে ওই বিচারপতি এজলাস ছেড়ে নেমে যেতে বাধ্য হন।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীরা জানান, দুপুরের পর ওই বেঞ্চে বিচারকাজ চলছিল। এ সময় একদল আইনজীবী এজলাস কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা ডায়াসের সামনে গিয়ে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে উদ্দেশ্য করে বলেন- আপনি একজন বিচারপতি হয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। আপনি এখনও যদি ওই চিন্তাভাবনা পোষণ করেন, তাহলে আপনার বিচারকাজ পরিচালনার অধিকার নাই। এক পর্যায়ে আইনজীবীদের মধ্যে কেউ একজন বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে লক্ষ্য করে ডিম ছুঁড়ে মারেন। তবে ছুঁড়ে মারা ডিম বিচারপতির আসনের সামনে থাকা ডেস্কে লাগে। এ সময় কয়েকজন আইনজীবী হইচই করতে থাকেন। এ অবস্থায় বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম এজলাস ছেড়ে নেমে খাস কামরায় চলে যান।
২০১৬ সালে বিচারপতি অসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিয়ে করা ষোড়শ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের ওপর হাইকোর্টের একটি বৃহত্তর বেঞ্চ রায় প্রদান করেন। বেঞ্চের অপর দুই বিচারপতি ষোড়শ সংশোদনী বাতিল করলেও বিচারপতি আশরাফুল কামাল ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট খারিজ করে রায় দেন।
রায়ে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল তার পর্যবেক্ষণের একাংশে বলেন, ‘মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাকবাকুম করে ক্ষমতা নিয়ে নিলেন, তথা রাষ্ট্রপতির পদ দখল করলেন। একবারও ভাবলেন না, তিনি একজন সরকারি কর্মচারী। সরকারি কর্মচারী হয়ে কীভাবে তিনি রুলস ভঙ্গ করেন?’
‘ভাবলেন না তার শপথের কথা। ভাবলেন না- তিনি দেশকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে মৃত্যুকে বরণ করার শপথ নিয়েছিলেন। ভাবলেন না- তিনি ও তারা ব্যর্থ হয়েছিলেন দেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে রক্ষা করতে। ভাবলেন না- তিনি ও তারা ব্যর্থ হয়েছেন জাতীয় চার নেতাকে রক্ষা করতে।’
আরও পড়ুন: বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি মামলা থেকে খালেদা জিয়াসহ তিনজনকে অব্যাহতি
তিনি বলেন, ‘জনগণ আশ্চর্য হয়ে দেখল, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান দেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী এবং জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদের দোসর হয়ে তাদের রক্তাক্ত হাতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতির পদ দখল করল। যাকে এক কথায় বলা যায়, বন্দুক ঠেকিয়ে জনগণের প্রতিষ্ঠান দখল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি ডাকাতরা সংঘবদ্ধভাবে ডাকাতি করে। ডাকাতদের যে নেতৃত্ব দেয় তাকে ডাকাত সর্দার বলে। ডাকাতি করার সময়ে ডাকাতরা বাড়িটি বা ঘরটি কিছু সময়ের জন্য অস্ত্রের মুখে দখল করে এবং মূল্যবান দ্রব্যাদি লুণ্ঠন করে। বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান গংরা দেশে নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকা সত্ত্বেও অস্ত্র ও অবৈধ কলমের খোচায় নির্বাচিত জাতীয় সংসদকে ভেঙে ডাকাতদের মতো অবৈধভাবে জোরপূর্বক জনগণের ক্ষমতা ডাকাতি করে দখল করেন।’
‘যে বিচার বিভাগ ও এর বিচারকদের ওপর আইনগত দায়িত্ব ছিল সাংবিধানের সামান্যতম বিচ্যুতিকে রক্ষা করা, সংরক্ষণ করা ও নিরাপত্তা প্রদান করা; সেই বিচার বিভাগ ও এর তৎকালীন বিচারকরা সংবিধানকে এক কথায় হত্যা করলেন, জনগণের রায় ডাকাতি করে জনগণের নির্বাচিত সংসদকে বাতিল করলেন। অপরদিকে, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান নিয়ম একজন সরকারী কর্মচারী হয়েও আর্মি রুলস ভঙ্গ করে জনগণের রায়ে নির্বাচিত জাতীয় সংসদকে হত্যা করে দেশের সংবিধানকে হত্যা করে অস্ত্রের মুখে অন্যায়ভাবে অসৎভাবে হত্যাকারীদের দোসর হয়ে জনগণকে চরম অবজ্ঞা করে ক্ষমতা দখল করেন।’
বিচারপতি আশরাফুল বলেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী তথা স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর, আল-শামস ও জামায়াতে ইসলামীকে এদেশে পুনর্বাসন করেন। তাদের রাজনীতি করার অধিকার দেন। তাদের নাগরিকত্ব দেন (যে নাগরিকত্বকে আমাদের তথাকথিত জামায়াতি এবং স্বাধীনতাবিরোধী মানসিকতার বিচারকরা বৈধ বলেন)। তিনি স্বাধীনতাবিরোধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সংসদ সদস্য করেন এবং তাদের মন্ত্রী বানিয়ে, তাদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা দিয়ে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের সঙ্গে এবং দুই লাখ মা বোনের সম্ভ্রমের সঙ্গে বেইমানি করেন। এর পরেও কি বাংলাদেশের জনগণ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা বলতে পারে?’
তার কথায়, ‘মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান শুধু জাতির পিতা ও তার পরিবারের এবং জাতীয় চার নেতাকে হত্যাকারীদের শুধু দোসরই হননি, বরং তিনি জাতির পিতা ও তার পরিবারের হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছেন রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য ইত্যাদি বানিয়ে। তিনি আরও জঘন্য যে কাজটি করেন তা হলো, তিনি জনগণের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা ও তার পরিবারের হত্যাকারীদের হত্যার বিচার বন্ধ করে দায়মুক্তি আইন প্রণয়ন করেন। অর্থাৎ তিনি জাতির পিতা ও তার পরিবারের হত্যাকে এই দায়মুক্তি আইন দ্বারা সমর্থন দিয়ে প্রমাণ করেন তিনিও জাতির পিতা ও তার পরিবারের হত্যাকারী এবং জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদেরই একজন।’
আরও পড়ুন: জামিন নামঞ্জুর, সাবেক এমপি সুজন কারাগারে
৩ সপ্তাহ আগে
লাশের সুরতহাল-ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে ভয়ংকর তথ্য রয়েছে: মুনিয়া হত্যামামলার আইনজীবী
মোশাররাত জাহান মুনিয়া হত্যা মামলায় সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন উপেক্ষা করার অভিযোগ করেছেন তার আইনজীবী ও স্বজনরা। একই সঙ্গে আসামি পক্ষ প্রভাব খাটিয়ে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পাল্টে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
তাদের দাবি মামলার প্রধান আসামি সায়েম সোবহান আনভীরসহ অন্যদের বাাঁচাতে আসল ঘটনা ধামাচাপা দিতেই মুনিয়া হত্যার ঘটনাকে আত্মহত্যা সাজিয়ে মামলা থেকে তাদের অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে আদালতে।
সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের বেশ কিছু বিষয় উল্লেখ করে বাদীপক্ষের আইনজীবী সরোয়ার হোসেন বলেন, এ দুটি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলেই মুনিয়াকে হত্যার ঘটনার ভয়াবহ তথ্য বেরিয়ে আসে। মুনিয়ার স্বজনরাও একই দাবি করেন।
২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল গুলশানের ভাড়া বাসা থেকে ২১ বছর বয়সি মোশাররাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনভীরকে প্রধান আসামি করে গুলশান থানায় মামলা করেন মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান তানিয়া।
আরও পড়ুন: মুনিয়া হত্যা: হুইপপুত্র শারুনের সাবেক স্ত্রী সাইফা কারাগারে
ওই বছরের ১৯ জুলাই সেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার ওসি আবুল হাসান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। তাতে তিনি আনভীরকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন।
এদিকে সেই প্রতিবেদনে নারাজি দিয়ে পুনঃতদন্তের আবেদন করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী এবং আদালত সেই আপিল গ্রহণ করেন।
মামলার রিটকারী আইনজীবী সরোয়ার হোসেন জানান, মোশাররাত জাহান মুনিয়াকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ২০১৯ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বনানীর একটি বাসায় রেখেছিলেন আসামি আনভীর। এরপর ১ মার্চ থেকে খুন হওয়ার আগ পর্যন্ত গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে রাখেন। বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুলশানের বাসায় আনভীর ছাড়া অন্য কেউ ঢুকতে পারতেন না।
সরোয়ার বলেন, ‘মুনিয়া মারা যাওয়ার পর তার লাশ ঝুলন্ত থাকলেও পা খাটের সঙ্গে লাগানো ছিল। কেউ আত্মহত্যা করলে পা খাটের সঙ্গে লাগানো থাকবে না। তার মানে তাকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে। অপরাধী এটা খেয়াল করেনি। সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হত্যার আগে তাদের মধ্যে জোর-জবরদস্তি করা হয়েছে। যার জন্য তার ইনার গার্মেন্টস ছেড়া ছিল। গুলশান থানায় বাদীর বক্তব্য গ্রহণ না করে, ভুল করে পেনাল কোডের ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যা প্ররোচনা হিসেবে রেকর্ড করে। কিন্তু প্রথমেই এই মামলা ৩০২ ধারার হওয়ার কথা ছিল।’
এ আইনজীবী বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুনিয়ার শরীরে পুরুষের বীর্য পাওয়া গেছে। তার মানে তাকে মৃত্যুর আগে ধর্ষণ করা হয়েছে। সেই বীর্য আনভীরের, কারণ সিসিটিভি ফুটেজ ও দারোয়ানের কথা অনুযায়ী সেই বাসায় আনভীর ছাড়া কেউ যেতে পারতেন না। আরও ভয়ংকর তথ্য হলো, মেয়েটা তিন সপ্তাহের অন্তঃসত্তা ছিল। তার মানে এটা দুইজনকে হত্যা করা। একদিনের ভ্রুণও যদি হত্যা করা হয়, সেটাও একটা হত্যাকাণ্ড।’
সরোয়ার বলেন, ‘এসব তথ্য গুলশান থানা ও পিবিআই দুটোর তদন্তেই এসেছে। তদন্তে বেরিয়ে আসা তথ্যই বলে এই মামলা সাজানো হয়েছে। এত কিছুর পরও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আসামিদের অব্যাহিতির আবেদন মানে আসামিরা প্রভাব খাটিয়েছে।’
মামলা সম্পর্কে সরোয়ার বলেন, ‘প্রথম মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দেয় ৩০৬ ধারায়। সেখানে আসামিকে অব্যাহতির আবদেন করা হয়। তার বিরুদ্ধে আমরা নারাজি দিই এবং ফ্রেশ পিটিশন নিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমনে যাই। সেখান থেকে এই মামলা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯ (১) ধারা এবং ৩০২ ধারায় রেকর্ড করার জন্য দ্বিতীয়বার গুলশান থানাকে বলা হয়। পাশাপাশি পিবিআইকে তদন্তের ভার দেওয়া হয়। দ্বিতীয় মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধেও আমরা আপিল করেছি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২৮ ধারায়। আপিল গ্রহণের পর আমরা হাইকোর্টে শুনানির জন্য দিয়েছি।’
মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান বলেন, ‘আপনারা এখনও আমার বোনের হত্যা মামলা নিয়ে কাজ করছেন, এটা আমাদের জন্য আশীর্বাদ। তখন বিচার হয়নি। আমরা শুনানির জন্য অপেক্ষা করছি। আমরা আসামির ফাঁসি চাই।’
নুসরাতের স্বামী মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার শ্যালিকা মুনিয়া হত্যার সঙ্গে যারা যারা জড়িত, সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এদিকে মুনিয়া হত্যাকাণ্ডের মামলায় যেসব পুলিশ সদস্য কাজ করেছেন তাদের কেউ বর্তমানে সংশ্লিষ্ট থানায় দায়িত্বে নেই। এরপরও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ইউএনবির এ প্রতিবেদক। তবে তারা কেউই এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হননি।
পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানজিনা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে। তিনি একদিন সময় নেন তথ্য দেওয়ার জন্য। তবে পরদিন যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আগে যারা ছিলেন তারা মুনিয়ায় ব্যাপারে কথা বলতে চান না।
আরও পড়ুন: মুনিয়া হত্যা মামলা: ষষ্ঠবারের মতো পেছালো তদন্ত প্রতিবেদন জমাদানের তারিখ
১ মাস আগে
আইনজীবী জেড আই খান পান্নাসহ ১৮০ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী জেড আই খান পান্না এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ ১৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
রবিবার খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাউদ হোসেন জানান, নিহত আহাদুল ইসলামের বাবা মোহাম্মদ বাকের বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে খিলগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
অভিযোগের কোনো সত্যতা আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান ওসি দাউদ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৯ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মেরাদিয়া বাজার এলাকায় আহাদুলসহ অন্যরা বিক্ষোভ করছিলেন। এ সময় পুলিশ, বিজিবি সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালালে আহাদুল গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, পিবিআইয়ের সাবেক সভাপতি বনজ কুমার মজুমদার, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুনুর রশীদকে মামলার আসামি করা হয়েছে।
২ মাস আগে
শেখ হাসিনা চাইলে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারেন: চিফ প্রসিকিউটর
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নবনিযুক্ত চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ আসামিরা বিচারের সময় লড়তে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারবেন।
তিনি আশ্বস্ত করেন যে প্রসিকিউশন দল এই বিষয়ে আপত্তি উত্থাপন করবে না। নিরপেক্ষতা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে প্রসিকিউশন টিম যা যা করা দরকার তা করবে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, 'প্রসিকিউশন টিম বেশ কয়েকটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে এবং তথ্য সংগ্রহ করছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছেও তথ্য চাওয়া হয়েছে। আরও হাসপাতাল পরিদর্শন করা হবে।’
আরও পড়ুন: ফেনীতে ৮ হত্যা মামলায় হাসিনাসহ আসামি ৩০৩৭ জন
তদন্তের স্বার্থে জেলা, গণমাধ্যম, হাসপাতাল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জেলা প্রশাসকদের কাছে ভিডিও ও ছবি চেয়ে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে যাতে কোনো সংশয় না থাকে, সেই স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত করতেই এই উদ্যোগ। ভুক্তভোগীরা গণহত্যার বিচারের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন, এবং প্রত্যক্ষদর্শীরাও আগ্রহী। সাক্ষ্য-প্রমাণ নতুন থাকা অবস্থায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার চেষ্টা চলছে।’
এই বিচারে সরকারের কোনও রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা নেই বলেও জোর দেন তিনি। উদ্দেশ্য একটাই, ছাত্র ও জনসাধারণের ওপর যে নৃশংসতা চালানো হয়েছে, তার বিচার পাওয়া, যেখানে কোনো রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ জড়িত থাকবে না।
আরও পড়ুন: তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী শাহজাহান রাজধানীতে গ্রেপ্তার
৩ মাস আগে
আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মারামারি: যুথীসহ ৪ জনের আগাম জামিন
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গণনা নিয়ে মারামারির ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথীসহ ৪ আইনজীবীর আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (২০ মার্চ) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির মামলায় ড. ইউনূসসহ ৮ জনের জামিন
এদিকে গত ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তাদের জামিনের আবেদন দায়ের করা হয়। জ্যৈষ্ঠ আইনজীবী শেখ আওসাফুর রহমান বুলু আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন।
জামিন পাওয়া অপর তিন আসামি হলেন- আইনজীবী শাকিলা রৌশন, ব্যারিস্টার চৌধুরী মৌসুমী ফাতেমা ও মারামারি ঘটনার প্রেক্ষাপটে বরখাস্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হলেন মো. জাকির হোসেন।
এর আগে সোমবার বিচারপতি মো. সেলিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চের বিচারপতি যুথীর জামিন আবেদন শুনতে বিব্রতবোধ করেন।
পরে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে গেলে তিনি বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য নির্ধারণ করে দেন।
যুথী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি।
এর আগে গত ৮ মার্চ রাতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফ হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় সমিতির নির্বাচনে সম্পাদক প্রার্থী যুথী, বিএনপি সমর্থক প্যানেলের সম্পাদক প্রর্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া মামলায় ৩০/৪০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ধারা জামিন অযোগ্য করার সুপারিশ হাইকোর্টের
নাটোরের আদালতে জামিন পেয়েছেন বিএনপি নেতা চাঁদ
৯ মাস আগে
বরিশালে দ্বিতীয় দিনের মতো বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের আদালত বর্জন
গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বিচারের নামে অবিচার বন্ধের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আদালত বর্জন করেছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে বরিশাল আইনজীবী সমিতি ও জেলা জজ কম্পাউন্ড চত্বরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন তারা।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বরিশাল জেলা ইউনিটের উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: পুনর্নির্বাচন দাবি সুপ্রিম কোর্ট বারের বিএনপিপন্থীদের
সংগঠনটির জেলা সভাপতি মহসিন মন্টুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, আলী হায়দার বাবুল, এনায়েত হোসেন বাচ্চুসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, ‘বর্তমান সরকার দেশ থেকে আইনের শাসন দূর করে দিয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ আজ দুর্বিষহ অবস্থায় রয়েছে।’
এ অবস্থান থেকে পরিত্রাণে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তারা।
উল্লেখ্য, ১ জানুয়ারি থেকে ৭ দিনের সব আদালত বর্জনের কর্মসূচি পালন করছে অঙ্গ সংগঠনটি।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ উপস্থাপন করলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
১১ মাস আগে
তারেক-জুবাইদার সাজার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন, সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে এই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।
সংবাদ সম্মেলন শুরু হওয়ার দুই-তিন মিনিটের মাথায় আওয়ামী সমর্থক আইনজীবীরা স্লোগান নিয়ে দক্ষিণ হলে প্রবেশ করে। এ সময় বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা চিৎকার শুরু করে। এসময় আ. লীগ সমর্থক আইনজীবীরা হলরুম থেকে বের হয়ে যান।
এরপর শুরু হয় সংবাদ সম্মেলন। সংবাদ সম্মেলন শেষে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা স্লোগান দিয়ে হল ত্যাগ করেন। তারা সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষের সামনে দিয়ে স্লোগান দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায় এবং তা অন্তত ১০ মিনিট চলে।
আরও পড়ুন: সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটগ্রহণ শেষ
পরে সমিতির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবদুন নূর দুলাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, কাজল ও সজলের নেতৃত্বে আমাদের আইনজীবীদের ওপর হামলা হয়েছে। তারা সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর করেছে। এ ব্যাপারে মামলা করা হবে।’
এদিকে বিএনপির ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা যখন আমাদের এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলা চালায়, তখন আমরা শান্তিপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন থেকে বের হয়ে যাচ্ছিলাম। আমরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তারা আরও আগ্রাসী আচরণ করে।’
সচিবের কক্ষ ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘তারা নিজেরাই কক্ষ ভাঙচুর করে এখন আমাদেরকে দোষারোপ করছে।’
আরও পড়ুন: দুর্নীতি: সুপ্রিমকোর্টের এফিডেভিড শাখার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একযোগে বদলি
তারেক-জুবাইদার বিচারের রায় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
১ বছর আগে
চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যায় স্ত্রীসহ ২ জনের ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন
চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী ওমর ফারুক বাপ্পী (৩৩) হত্যা মামলায় স্ত্রী রাশেদা বেগম (২৭) ও হুমায়ুন রশিদ (২৮) নামে দুইজনেক ফাঁসি এবং অপর তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ২ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার আসামি জাকির হোসেন ওরফে মোল্লা জাকিরকে (৩৫) খালাস দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্ত্রী রাশেদা বেগম কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার উত্তর লক্ষ্যারচর এলাকার মণ্ডল পাড়ার জাকির হোসেনের মেয়ে এবং হুমায়ুন রশিদ পটিয়া থানার শোভনদণ্ডী এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে।
রায় ঘোষণার আগে আসামি আল আমিন ও পারভেজকে কারাগার থেকে আদালত হাজির করানো হয়। রায় ঘোষণা শেষে তাদেরকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়। বাকি আসামিরা জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ইয়াবা জব্দ: মামলায় ট্রাকচালক ও সহকারীর যাবজ্জীবন
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত তিন আসামি হলেন- আল আমিন (২৮), আকবর হোসেন ওরফে রুবেল ওরফে সাদ্দাম (২৩) এবং মো. পারভেজ ওরফে আলী।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের বেঞ্চ সহকারী নেছার আহম্মেদ বলেন, পাঁচজন আসামির মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাশেদা বেগম, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আল আমিন ও আকবর হোসেন পলাতক রয়েছে।
রায়ের সময় আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হুমায়ুন রশিদ ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মো.পারভেজ আলী এবং খালাস পাওয়া জাকির মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।
পরে হুমায়ুন রশিদ ও মো.পারভেজ আলীকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দুলাল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, রায়ে দুই আসামিকে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। বাকি আসামি তিন আসামিকে যাবজ্জীবন দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাপ্পী ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম বারের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। তার গ্রামের বাড়ি বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলার চৌমুহনী এলাকায়। তার বাবার নাম আলী আহমেদ। মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন বাপ্পী। হত্যাকাণ্ডের আগ পর্যন্ত তিনি অবিবাহিত ছিলেন বলে জানতেন আত্মীয়-স্বজনরা।
২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর নগরের চকবাজার থানার কে বি আমান আলী রোডে বড় মিয়া মসজিদের সামনে একটি ভবনের নিচতলার বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় তার হাত-পা ও মুখ টেপ দিয়ে মোড়ানো এবং স্পর্শকাতর অঙ্গ কাটা অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘটনার পর বাপ্পীর বাবা আলী আহমেদ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা-অগ্নিসংযোগ: ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এদিকে বাপ্পী হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবীরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। আইনজীবীদের আন্দোলনের মুখে টানা অভিযান চালিয়ে ঘটনার দুদিন পর ২৭ নভেম্বর কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে রাশেদা বেগমসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একই সঙ্গে মামলাটি পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট অধিগ্রহণ করে পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমাকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে। এরপর তিনি তদন্ত করে বের করেন হত্যার নেপথ্যের কাহিনি।
যে বাড়ি থেকে বাপ্পীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে সে বাড়ির কেয়ারটেকার ওই সময়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ঘটনার কয়েকদিন আগে ওই নারী (রাশেদা) তার স্বামীসহ থাকবেন বলে বাসা ভাড়া নেন। ঘটনার রাতে ওই বাসায় থাকতে যান বাপ্পি। পরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
তদন্তকারীরা জানান, দেলোয়ার নামে এক ইয়াবা পাচারকারীর স্ত্রী ছিলেন রাশেদা বেগম। স্বামীর মামলার সূত্র ধরে আইনজীবী বাপ্পীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এক পর্যায়ে তারা গোপনে বিয়ে করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. আবদুর রশিদ বলেন, বাপ্পি হত্যা মামলায় মোট ৩২ জন সাক্ষী ছিলেন। আদালত ২৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। আদালত সাক্ষী ও প্রমাণের ভিত্তিতে দুজনের মৃত্যুদণ্ড, তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একজন আসামিকে খালাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপির কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
১ বছর আগে
আইনজীবীদের আন্দেলনের নতুন প্ল্যাটফর্ম ‘ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্টের’ আত্মপ্রকাশ
আইনের শাসন, গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, লুণ্ঠিত ভোটাধিকার ফেরানো, সার্বজনীন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং আইনজীবীদের মর্যাদা রক্ষায় দেশব্যাপি একটি বৃহৎ পরিসরে আন্দেলনের জন্য সুপ্রিমকোর্টের বিভিন্ন মতাদর্শের আইনজীবীরা মিলে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম গঠন করেছে।
সোমবার দুপুরে বিপুল সংখ্যক আইনজীবীর উপস্থিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্ট (ইউএলএফ)’ নামে এই নতুন সংগঠনের যাত্রা শুরুর ঘোষেণা দেওয়া হয়।
নতুন এই সংগঠনের আহ্বায়ক সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
আরও পড়ুন: খোকন-কায়সারসহ ২৪ আইনজীবীর আগাম জামিন
যুগ্ম আহ্বায়ক গণফোরাম নেতা সিনিয়র ও আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী।
৩৬ সদস্য বিশিষ্ট এই আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন- সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ, এ. এম. মাহবুব উদ্দীন খোকন, জগলুল হায়দার আফ্রিক, গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ, গরীব এ নেওয়াজ, ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী কায়সার কামাল, সদস্য কে. এম. জাবির, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, বদরুদ্দোজা বাদল, আব্দুল জব্বার ভূইয়া, শাহ আহম্মেদ বাদল, রুহুল কুদ্দুস কাজল, ড. গোলাম রহমান ভুইয়া, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, শফি উদ্দিন ভূইয়া, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, সমন্বয়কারী সৈয়দ মামুন মাহবুব, গাজী কামরুল ইসলাম সজল এ.বি.এম. রফিকুল হক তালুকদার রাজা প্রমুখ।
কমিটির সকল সদস্য সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আইনের শাসন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং স্বাধীন সুপ্রিম কোর্ট বারসহ সমস্ত বার সমূহকে স্বাধীন রাখার জন্য আইনজীবীদের নির্দলীয় প্লাটফর্ম প্রয়োজন।
সেই লক্ষ্যেই গঠিত হয়েছে ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্ট। সুপ্রিম কোর্ট বার ও সারা দেশের বারগুলোতে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে বারের সাবেক সভাপতি, সম্পাদক, সাবেক নির্বাচিত নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন জেলা বারে গণতন্ত্রকামী আইনজীবী সংগঠন সমূহ এবং বিশিষ্ট আইনজীবীগণ একাধিকবার পারস্পারিক মতবিনিময় করেন।
সেই মতবিনিময় সভাগুলোতে সকলেই একমত পোষণ করেন, সুপ্রিম কোর্ট বারসহ সমস্ত বার সমিতি সমূহকে সরকার সমর্থিত আইনজীবীদের সৃষ্ট অশান্ত এবং চরম নৈরাজ্য থেকে উত্তরণের জন্য আইনজীবীদের মধ্যে পারস্পারিক শ্রদ্ধা, সৌহার্দ এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের অস্তিত্ব অক্ষুন্ন রাখা।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর: ২৫ আইনজীবীর আগাম জামিন
আইনজীবীদের ঐক্যবদ্ধ মোর্চার তিন দফা লক্ষ্য সম্পর্কে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিচার অঙ্গণের দুর্নীতির মূলোৎপাটনসহ সারা দেশের সমস্ত আইনজীবী সমিতিসমূহ যেন স্বাধীন ও নির্ভীকভাবে আইনজীবিদের সম্মান ও স্বার্থসংরক্ষণের জন্য সারা দেশব্যাপী আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত করবে।
দ্বিতীয় দফায় বলা হয়েছে, দেশের আইন অঙ্গণের পরিবেশ শান্ত রাখা এবং কোনো অবস্থাতেই যাতে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনুপ্রবেশ না করতে পারে এবং দেশের সকল বারে যাতে বহিরাগতদের প্রবেশ না হয়। সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা।
তৃতীয় দফায় বলা হয়েছে, যেহেতু গত ১৫, ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট বারে কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই সাংবিধানিক সংকট পূরণের লক্ষ্যে বারের সদস্যরা গত ৩০ মার্চ সংবিধানের ১৭(৩)(এ) অনুযায়ী তলবী সাধারণ সভার মাধ্যমে একটি অন্তবর্তীকালীন কমিটি ঘোষিত হয়।
সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যারিস্টার এম. আমির-উল-ইসলাম। সংবিধান অনুযায়ী এই কমিটি হচ্ছে বারের কমিটি। ইউএলএফ এই কমিটি অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টবারের কমিটির সব ধরনের কার্যক্রমে প্রতিনিয়ত সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদান করবে।
এছাড়াও প্রত্যেক বার সমিতিতে যাতে আইনজীবীগণ সুষ্টভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সেই লক্ষ্যে প্রত্যেক বারে ধারাবাহিক আন্দোলন গড়ে তোলা।
সংবাদ সম্মেলনে জয়নুল আবেদীন বলেন, বিনা বিচারে শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিশ্বাস এবং ভিন্ন মতের জন্য শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ গণতন্ত্রকামী বহু রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদেরকে বছরের পর বছর কারাগারে অহেতুক আটক রাখা হয়েছে, যা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, আমরা সাংবিধানিক শাসন এবং সংবিধান বিরোধী এই ধরনের জুলুম-নির্যাতন এর বিরুদ্ধে আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলবো। শুধু সুপ্রিম কোর্ট বার নয়, সারা দেশে পর্যায়ক্রমে আইনজীবীদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় করা, সমস্ত জেলা বারগুলোতে সফর এবং বৈঠক যার মূল উদ্দেশ্য সমৃদ্ধ আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ যৌক্তিক গণমুখী আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তিনি আরও বলেন, আইনজীবীদের বৃহত্তর আন্দোলনের লক্ষ্যে প্রত্যেক বারে ইউএলএফের কমিটি গঠন করা হবে।
আরও পড়ুন: সুশাসন নিশ্চিত করতে আইনজীবীরা বড় ভূমিকা রাখতে পারেন: রাষ্ট্রপতি
১ বছর আগে
চট্টগ্রামে স্ত্রীর মামলায় আইনজীবী কারাগারে
চট্টগ্রামে স্ত্রীর করা যৌতুক নিরোধ আইনের মামলায় এক আইনজীবীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার (২১ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম জুয়েল দেব এর আদালত এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী এ এস এম নূরে খোদা।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে হাজতির মৃত্যু
অভিযুক্ত শুভ ধর (৩৮) চট্টগ্রামের পটিয়ার ছনহরা এলাকার অশোক কুমার ধরের ছেলে এবং চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এদিন সকালে আইনজীবী শুভ ধর স্ত্রীর করা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। দুপুরে শুনানিকালে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
বাদীর আইনজীবী পপি বিশ্বাস (লিগ্যাল এইড) জানান, ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মীয় রীতিনীতি অনুয়ায়ী বাঁশখালী উপজেলার ওই নারীর সঙ্গে বিয়ে হয় শুভ ধরের। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে শুভ তার বোনের বাসায় থাকতেন। তাদের একটি ছেলে সন্তান আছে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা ভুক্তভোগীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী লিগ্যাল এইডের সহযোগিতায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে চুরির মামলায় ইউপি সদস্য কারাগারে
সিলেটে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীসহ ৬৭ জন কারাগারে
১ বছর আগে