শতবার্ষিকী উদযাপন
একাডেমিক ডিগ্রির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মান অর্জনের আহ্বান রাষ্ট্রপতির
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বুধবার প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একাডেমিক ডিগ্রির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মান অর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ১৬ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি ভার্চুয়ালি বঙ্গবন থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা সময়ের সাথে সাথে যেমন বেড়েছে, তেমনি এর অবকাঠামো ও শিক্ষা কার্যক্রমের পরিধিও বেড়েছে। আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধার জন্য প্রতিযোগিতাকেও আন্তর্জাতিকীকরণ করা হয়েছে। তাই একজন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রীর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মান অর্জন করতে হবে।
আবদুল হামিদ বলেন, কারিকুলাম ও পাঠদান নির্ধারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও বিশ্বমানের বিবেচনা করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, উচ্চ আশা ও আকাঙ্খা নিয়ে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান। এছাড়া দেশ ও জনগণ তাদের শিক্ষিত করার জন্য বিনিয়োগ করে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রদের পরিবার, দেশ ও জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
আবদুল হামিদ বলেন, অবকাঠামো, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের সম্প্রসারণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে অবদান রাখে। তবে শিক্ষা ও গবেষণার মানই প্রধান সূচক।
এসময় রাষ্ট্রপতি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদা ও যোগ্যতা বিবেচনায় রেখে শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়সহ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এ যাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: আজ শুরু হচ্ছে ঢাবির ১৬ দিনব্যাপী শতবর্ষ উদযাপন
১৯২১ সালের ১ জুলাই যাত্রা শুরু করা দেশের প্রাচীনতম এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী এই প্রতিষ্ঠান শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে।
করোনা মহামারিরর কারণে উদযাপনটি পাঁচ মাস বিলম্বিত হয়েছে। আজ বুধবার থেকে ক্যাম্পাসে শুরু হওয়া জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান চলবে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে বিশেষ বই, ফটোগ্রাফি অ্যালবাম ও ওয়েবসাইট উন্মোচন করেন।
উদযাপনের উদ্বোধনী দিনে শতবর্ষ উপলক্ষে একটি তথ্যচিত্র এবং একটি থিম গানও প্রকাশ করা হয় এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিংয়ের একটি শুভেচ্ছা বার্তাও অনুষ্ঠান উপস্থাপন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.আখতারুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আব্দুল মোমেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ বক্তব্য দেন।
৩ ডিসেম্বর জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদারের নেতৃত্বে দলছুট ব্যান্ড, বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ এবং নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করবেন।
পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে জাতীয় ঐক্যের জন্য মতভেদ দূর করুন: রাষ্ট্রপতি
৪ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. শাহাদাত আলীর সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী অংশ নেবেন।
১২ ডিসেম্বর সকালে অপরাজেয় বাংলা প্রাঙ্গণ থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে বিজয় মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৭টায় মহান বিজয় দিবসে উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করবেন। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ‘লেজার শো’ এর মধ্য দিয়ে শেষ হবে ১৬ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ বছর আগে