খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েটে) শিক্ষকের মৃত্যু
শিক্ষক সেলিমের মৃত্যুতে কুয়েট শিক্ষক সমিতির প্রতিবাদ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েটে) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে শিক্ষক সমিতি।
বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ র্যালি বের করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে কুয়েট ক্যাম্পাসের দুর্বার বাংলার পাদদেশে কালো ব্যাচ ধারণ করে প্রতিবাদ সমাবেশ করে শিক্ষকরা।
সমাবেশে শিক্ষক নেতারা বলেন, ‘উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্রের অপমান, অবরুদ্ধ ও মানসিক নির্যাতনে প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। অনতিবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার না করা পর্যন্ত শিক্ষকরা সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন। প্রচলিত বিধি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রফেসর ড. সেলিমের পরিবারকে ন্যায্য অর্থনৈতিক সুবিধাসহ অতিরিক্ত ১ কোটি টাকা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের দাবি করেন তারা।’
তারা বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়া অতিদ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালকে ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: কুয়েট, চুয়েট, রুয়েটের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা শনিবার
পরে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ন্যায় বিচার দাবি করে ভিসি, শিক্ষামন্ত্রণায় ও ইউজিসি বরাবর স্বারক লিপি দেয়া হয়।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাসের সভাপতিত্ব সমাবেসে বক্তব্য দেন, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মো সাইফুর রহমান খান, প্রফেসর ড. শিবেন্দ্র শেখর শিকদার, প্রফেসর ড. মোস্তফা সরোয়ার, পল্লব কুমার চৌধুরী, প্রফেসর ড. রাফিজুল ইসলাম, কম্পিউটার সায়েন্সের প্রফেসর ড. পিন্টু চন্দ্র শীল, ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রফেসর ড. সোবহন মিয়া, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. সজল কুমার অধিকারী, ইলেক্টিক্যাল বিভাগের ড. মোহাম্মদ আলমগীর প্রমুখ।
এদিকে শিক্ষকের মৃত্যুর পর দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে কুয়েটের ক্লাস ও পরীক্ষা।
উল্লেখ্য, গত ৩০ নভেম্বর দুপুর ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেন (৩৮) মারা যান। সম্প্রতি কুয়েটের লালনশাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য-ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে, ফজলুল হক হলের বর্ডার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার অনুগতদের ডাইনিং ম্যানেজার নির্বাচিত করার জন্য ঘটনার দিন ড. মো. সেলিম এর দাপ্তরিক কক্ষে অশালীন আচরণ ও মানসিক নির্যাতন করে। তাদের মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচন করার জন্য, সাধারণ সম্পাদকসহ উপস্থিত ছেলেরা, হলের প্রভোস্ট ড. সেলিম হোসেনকে বেশ কয়েকদিন ধরে নিয়মিত হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় ৩০ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্ররা ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে ড. সেলিম হোসেনকে জেরা করা শুরু করে। পরবর্তীতে তারা শিক্ষককে অনুসরণ করে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করে।
আরও পড়ুন: কুয়েটের হল খুলছে ২২ অক্টোবর
সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধা ঘণ্টা ওই শিক্ষকের সাথে রুদ্ধদার বৈঠক করে। পরবর্তীতে, শিক্ষক ড. সেলিম হোসেন দুপুরে খাবারের উদ্দেশ্যে বাসায় যাওয়ার পর ২টার দিকে তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
২ বছর আগে