শিশু রোগী
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডায়রিয়ার প্রকোপ, বাড়ছে শিশু রোগীর চাপ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত কয়েকদিন ধরে শিশুদের ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ বেড়েছে। রোটা ভাইরাসের প্রভাবে শীতের হিমেল হাওয়ার কারণে ডায়রিয়া বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাই অভিভাবকদের বাড়তি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, বেডের তুলনায় সাত গুণ রোগী হওয়ায় হাসপাতালের বারান্দায় রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে শীতকালীন রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন অন্তত ৬০ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। শীতের তীব্রতা ও ঠান্ডা বাতাস থেকে রক্ষা পেতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে বারান্দার চারদিকে কাপড় দিয়ে ঘিরে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুর স্বজনরা ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগ করছেন। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে ডায়রিয়া আক্রান্ত ৩ শতাধিক রোগী হাসপাতালে
সদর উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের তাসলিমা বেগম আড়াই বছরের নাতনী তাইয়েবাকে নিয়ে দুইদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ওয়ার্ডের ভেতরে তো দূরের কথা বারান্দাতেই জায়গা পাওয়া যায় না। পাটি বিছিয়ে গত সোমবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি। বাইরে থেকে সবকিছু কিনতে হচ্ছে। ওষুধ, এমনকি খাবার স্যালাইনও কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।
২ বছর আগে
শীতে রোটা ভাইরাসের প্রকোপ: মতলব হাপাতালে শিশু রোগীর ভিড়
শীত যত বাড়ছে একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রোটা ভাইরাসের প্রকোপও বেড়েছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুর মৃত্যুরও কারণ হতে পারে। তবে বড়দের সেক্ষেত্রে ততটা মারাত্মক হয় না।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) চাঁদপুরের মতলব হাসপাতালে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত শিশু রোগীদের ভিড় বাড়ছে। গত ১০ দিনে আইসিডিডিআরবি চাঁদপুরের মতলব হাসপাতালে প্রায় দুই হাজার ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৮৬ ভাগ শিশু।
আরও পড়ুন: বরগুনায় বেড়েই চলছে ডায়রিয়ার প্রকোপ
জানা গেছে, গত ১ ডিসেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর শনিবার বিকাল পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী ১০ দিনে গড়ে ১৮০ জন করে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে ৮০ জন রোগী ভর্তি হয়।
আইসিডিডিআরবি’র মতলব হাসপাতালের কার্যালয় সূত্র জানায়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে এক হাজার ৫৫২ জন শিশু। বয়স শূন্য থেকে ৫ বছরের মধ্যে। শনিবার বেলা ১টা পর্যন্ত আরও ১০০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে শিশু আছে ৮০ জন। বাকিরা বয়স্ক।
সূত্র জানায়, ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে চাঁদপুর সদরের ৯৯, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭০, হাজীগঞ্জের ৫৪, কচুয়ার ৭৫, মতলব উত্তরের ৫১, মতলব দক্ষিণের ৫৩ ও শাহরাস্তির ৪৫ জন রয়েছে। কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসেছে ৬৮৬ জন।
এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর সদর থেকে ১০২ জন, রায়পুরের ৫৫, রামগঞ্জের ৪২ ও নোয়াখালীর চাটখিল থেকে ২৩ জন রোগী এসেছে। বাকিরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও শরীয়তপুরের বাসিন্দা।
হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিটি ওয়ার্ড ডায়রিয়া রোগী। বারান্দায়ও চলছে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা। রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে ডাক্তার ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার নওগাঁও গ্রামের শিখা বেগম বলেন, তার ছয় মাসের মেয়ে হুমায়রা আক্তারকে গত শুক্রবার এখানে ভর্তি করিয়েছেন। চিকিৎসকেরা খাবার স্যালাইন ও বেবি জিংক ট্যাবলেট খেতে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভোলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ, একদিনে হাসপাতালে ভর্তি ৩২৫
ফরিদগঞ্জের এক বছরের বয়সের আফিয়া ও মতলব উত্তরের দুর্গাপুরের আট বছরের মিথিলা রোটা ভাইরাসের আক্রান্ত। তাদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তাদের অবস্থা উন্নতির দিকে।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. চন্দ্র শেখর জানান, শীতের সময়ে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা একটু বৃদ্ধি পায়। এ থেকে আমাদের সকলকে বিশেষ করে শিশুদের বেশ সতর্কে রাখতে হবে।
৩ বছর আগে