খালেদা জিয়া
বিকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হাসপাতালে যাবেন খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে সোমবার বিকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, আজ বেলা ৩টার দিকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হবেন।
আরও পড়ুন: অনুকূল পরিবেশ থাকলে রাজনীতি করবেন খালেদা জিয়া: বিএনপি
৭৭ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
গত বছরের ১০ জুন বিএনপি চেয়ারপারসনের বাম ধমনীতে ৯৫ শতাংশ ব্লক থাকায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং পরদিন একই হাসপাতালে ওই ব্লক অপসারণ করে সেখানে স্টেন্ট বসানো হয়।
ডাক্তাররা তার রক্তনালীতে আরও দুটি ব্লক খুঁজে পেয়েছেন, কিন্তু তার স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণে তারা সেগুলো অপসারণ করতে পারেনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের 8 ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করায় খালেদাকে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে, একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তার সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। মুক্তির শর্তে উল্লেখ করা হয়েছে যে তিনি তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ ছেড়ে যাবেন না।
আরও পড়ুন: বিডিআর বিদ্রোহের আগের রাতে খালেদা জিয়াকে ৪৫ বার ফোন করেছিলেন তারেক: সজীব ওয়াজেদ
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সচিব মাহবুব আল আমিন মারা গেছেন
বিডিআর বিদ্রোহের আগের রাতে খালেদা জিয়াকে ৪৫ বার ফোন করেছিলেন তারেক: সজীব ওয়াজেদ
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে জানিয়েছেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহের আগের দিন রাত ১টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে তারেক রহমান খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে ৪৫ বার ফোন করেছিলেন এবং তাকে সকাল ৬টার মধ্যে তার বাসভবন ত্যাগ করতে বলেন।’
শনিবার তার ভেরিফাইড ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট করা ভিডিওটিতে আরও বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরে সংসদে কল রেকর্ড উপস্থাপন করেন। ‘প্রধানমন্ত্রী প্রমাণ ছাড়া জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য দেন না। বিএনপি এ বিষয়ে কখনো সাড়া দেয়নি।’
২০০৯ সালের পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৪তম বার্ষিকীতে, এই ভিডিওটিতে বিডিআর বিদ্রোহের পটভূমি সম্পর্কে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উত্থাপন করে।
ট্র্যাজেডিতে তাদের নিকটাত্মীয়দের হারিয়েছে এমন পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে সজীব ওয়াজেদ লিখেছেন যে বার্ষিকীকে কেন্দ্র করে, ‘একটি রাজনৈতিক দল’ সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিমূলক গুজব সেল চালু করেছে।
তিনি আরও বলেছেন, তার প্রোফাইলে পোস্ট করা এই ভিডিওটিতে সেই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য রয়েছে।
ভিডিওটিতে বিডিআর বিদ্রোহের আগে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের তৎকালীন বিশেষ দূত জিয়া ইস্পাহানীর বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ রয়েছে। জিয়া ইস্পাহানী বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করেন একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু না করার জন্য। ২০০৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার প্রস্তাব দেন, প্রধানমন্ত্রী যা প্রত্যাখ্যান করেন।
২০ ফেব্রুয়ারি জিয়া ইস্পাহানী খালেদা জিয়ার সঙ্গেও বৈঠক করেন। ভিডিওটিতে বৈঠকের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, ‘কার বা কাদের আহ্বানে জিয়া ইস্পাহানী বাংলাদেশে এসেছিলেন?’
আরও পড়ুন: ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
ভিডিওতে বলা হয়েছে, ‘বিডিআর বিদ্রোহের মাত্র চার দিন আগে জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ দেশ ত্যাগ করার চেষ্টা করেছিলেন।’ তবে বিমানবন্দর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে ফিরিয়ে দেন। ‘তার দেশ ছাড়ার উদ্দেশ্য কি ছিল?’- এটাও প্রশ্ন।
ভিডিওতে আরও বলা হয়েছে, বিডিআর বিদ্রোহে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করা আসামিদের অনেকেই বিএনপি সরকারের আমলে নিয়োগ পেয়েছিলেন। ‘২২ জন পলাতক বিডিআর সদস্যকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৪ জনের চাকরির সুপারিশ করে ডিও লেটার ইস্যু করেছিলেন ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম পিন্টু।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট ২০০৬ সালে ক্ষমতায় আঁকড়ে ধরার জন্য একটি মরিয়া চেষ্টা করেছিল। মঈন ইউ আহমেদ এবং সাদিক হাসান রুমিসহ সশস্ত্র বাহিনীর মুষ্টিমেয় উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা বিএনপি-জামায়াত সরকারের অন্ধকার দিকটি প্রকাশ করেছিলেন।’
বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ এবং কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদসহ নিহতদের অধিকাংশই ২০০৮ সালের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন।
ভিডিওতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরপরই পিলখানা গণহত্যা সংঘটিত হয় এবং সশস্ত্র বাহিনীর ৫৭ জন অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ মোট ৭৮ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ‘এই অপূরণীয় ক্ষতি শুধু সশস্ত্র বাহিনীরই নয়, সমগ্র জাতিরও হয়েছে। নবগঠিত আওয়ামী লীগ সরকার সবচেয়ে বড় আঘাতের সম্মুখীন হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিডিআর বিদ্রোহে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা ষড়যন্ত্রের ফল: বিএনপি
পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের এক যুগ: নানা কর্মসূচিতে শহীদদের স্মরণ
জামিন পেলেন বিএনপি নেতা শিমুল বিশ্বাস
পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে সোমবার জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নুরুদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: ১/১১-এর পর কারা দেশ থেকে পালিয়েছিল তা জনগণ জানে: ফখরুল
শিমুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, আদালতের আদেশে তাকে মুক্তি দিতে কোনো বাধা নেই।
গত বছরের ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হন।
সংঘর্ষের ঘটনায় শিমুলসহ বিএনপির ৪৭০ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: যাত্রাবাড়ী থেকে জুরাইন পর্যন্ত বিএনপির ২য় পদযাত্রা শুরু
শাহজাদপুর থেকে মালিবাগ বিএনপির পদযাত্রা শুরু
জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করবো: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অপশক্তি যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, জাতি এগিয়ে যাবে, আমরা জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করব।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ভোট কারচুপির মাধ্যমে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন। ‘কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ কখনোই কোনো ভোট কারচুপিকে মেনে নেয়নি। এদেশের মানুষ সেটা (নির্বাচন) মেনে নেয়নি। সে সময় গণঅভ্যুত্থান ও আন্দোলন হয়। ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।’
শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ক্ষমতায়ন করেছে এবং তারা সরাসরি বাজেট থেকে তাদের অর্থ পেয়েছে; যাতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে।
নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার বিভিন্ন উদ্যোগের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যদি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার মতো নির্বাচন করার অসৎ উদ্দেশ্য থাকত, তাহলে তারা আজিজের মতো নির্বাচন কমিশন গঠন করতে পারত (এমএ আজিজ কমিশন)।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমরা তা করিনি। জনগণের ওপর আমাদের আস্থা আছে। আমরা সেই বিশ্বাস এবং আস্থার ওপর ভিত্তি করে কাজ করি।’
আরও পড়ুন: ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে আ.লীগ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছে, যা একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকারও।তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশন নিয়োগের জন্য আইন প্রণয়ন করেছি। আমরা পুরো প্রক্রিয়াটিকে স্বচ্ছ করেছি।’
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে ভোটে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই।
পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, রাজনীতিতে এসেছেন দেশের সেবা করতে, জনগণকে কিছু দিতে, কিছু নিতে নয়।
তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে তিনি বেঁচে থাকতে দেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন হতে দেবেন না বা দেশের স্বার্থের সামান্য অংশও কারও হাতে তুলে দেবেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল আক্রমণ ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে আওয়ামী লীগ এগিয়ে যাবে এবং কেউ দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস সংগ্রামের ইতিহাস এবং একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।
জাতির পিতার ভাষণের উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সংগ্রাম সেদিনই শেষ হবে যেদিন সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারবে।
আরও পড়ুন: বিজয়ের মাসে ১০০ মহাসড়ক জাতির জন্য উপহার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর তার দল ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বছরে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে, ই-ডিভাইস ব্যবহারের উপযোগী দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা ব্যবহারের মাধ্যমে ই-ইকোনমি, ই-এডুকেশন এবং ই-হেলথ কেয়ারের মতো অনলাইন সেবা ব্যবস্থা চালু করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই উদ্দেশ্যে আইটি ভিত্তিক দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে এবং তাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য দেশে আইটি পার্ক এবং আইটি ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
ই-ডিভাইস ব্যবহারের উপযোগী নতুন প্রজন্মের বিকাশের পদক্ষেপের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, তারা খুব দ্রুত নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে।
তিনি গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবহারে মিতব্যয়ীতা বজায় রাখার জন্য তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করার পাশাপাশি ভবিষ্যতের সংকট মোকাবিলায় খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিলে সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ প্রস্তুত রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে তিনি তার সাম্প্রতিক সিগনেচার শব্দ ‘খেলা হবে’ উল্লেখ করেন।
সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অগ্নিসংযোগ, ভোট কারচুপি, দুর্নীতি ও হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে শিগগিরই খেলা শুরু হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে টিকে থাকতে হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সমস্যা সমাধানকারী এবং তার বিকল্প নেই।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী গত ৪৭ বছরে সবচেয়ে জনপ্রিয়, সাহসী ও দক্ষ প্রশাসক ও কূটনীতিক।
আরও পড়ুন: সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: বিজিবির প্রতি প্রধানমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার জনসভায় যাওয়ার চিন্তা অলীক ও উদ্ভট: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া বিএনপির জনসভায় যাওয়া না যাওয়ার আলোচনা অবাস্তব ও এটি উদ্ভট অলীক চিন্তা।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি, আদালত থেকে কোনো জামিন পাননি। তিনি নিজের জন্মের তারিখ বদলে দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে যেদিন হত্যা করা হয় সেই দিনটিতে জন্মদিনের কেক কাটেন। এরপরও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতায় তিনি কারাগারের বাইরে আছেন। এখন যদি তারা এ রকম চিন্তা করে থাকে তাহলে সরকার তাকে কারাগারে পাঠাতে বাধ্য হবে।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের নেভি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত সরকারি হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজের পুণর্মিলনী উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে তিনি ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে বেগম জিয়ার অংশ নেয়া নিয়ে বিএনপি নেতাদের আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি শীতের পাখি: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বাদ দিয়ে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাচ্ছে কেন-এ প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, প্রথমত: নয়া পল্টনের সামনে বড় জোর পঞ্চাশ হাজার মানুষ ধরে। অর্থাৎ তাদের জনসভায় যে পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষ হবে না এটি তারা নিশ্চিত হয়েছেন। আর দ্বিতীয়ত: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, কার্যত স্বাধীনতাই ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং সেখানেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। বিএনপি তো পাকিস্তানের দোসর, তাদের মহাসচিব বলেছেন পাকিস্তানই ভালো ছিল। সেই কারণে এই উদ্যান তাদের পছন্দ নয়।
কিন্তু বড় জনসভার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই হচ্ছে উত্তম এবং তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছিল, তাদের চাওয়া অনুযায়ী উদ্যান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করেন ড. হাছান মাহমুদ।
বিএনপি বিশৃঙ্খলা করলে কি ব্যবস্থা-এ প্রশ্নে তিনি বলেন, বিএনপি তো বিশৃঙ্খলাই করতে চায়। সে কারণেই তারা নয়াপল্টনের সামনে সমাবেশ করতে চায়। কিন্তু সেই সুযোগ তাদের দেয়া হবে না। জনগণই তাদের প্রতিহত করবে।
চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার প্রস্তুতি বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষে পুরো চট্টগ্রামে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। ইতোমধ্যেই সাধারণ মানুষের মাঝে যে উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, এতে আমরা নিশ্চিত যে এটা স্মরণকালের বৃহত্তম এবং লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে ইনশাল্লাহ।
এর আগে মহসিন কলেজের প্রাক্তনীদের পুণর্মিলনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, কোনো বিদ্যাপীঠের কার্যক্রম শুধুমাত্র পাঠদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সেখানে একজন ছাত্র অনেক কিছু শেখে, তার বহুমুখী প্রতিভার বিকাশ ঘটে।
তিনি বলেন, আমার স্কুলই আমার জীবনের ভিত রচনা করে দিয়েছে। একইভাবে কলেজেও সুমঙ্গল মুৎসুদ্দি স্যারসহ আরও অনেক শিক্ষক ছিলেন যাদের সান্নিধ্য না পেলে আমি আজকের এই জায়গায় দাঁড়াতে পারতাম না। চট্টগ্রামের অন্যতম সেরা এই কলেজের অ্যলামনাই এসোসিয়েশন আরও সমাজহিতৈষী কর্মসূচি নেবে যেগুলো সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেবে, আশাপ্রকাশ করেন ড. হাছান।
মহসিন কলেজ অ্যলামনাই এসোসিয়েশন ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক।
আরও পড়ুন: এদেশের জঙ্গিদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
অপতৎপরতার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা: তথ্যমন্ত্রী
১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে খালেদা জিয়ার যোগদানের প্রশ্নই আসে না: বিএনপি
১০ ডিসেম্বর রাজধানীর বহুল আলোচিত সমাবেশে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের বিষয়ে কিছু বিরোধী নেতার উগ্র মন্তব্যে দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও, বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলছেন, প্রোগ্রামে তাকে নিয়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের।
তারা আরও বলেন, রাজধানীতে তাদের ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ বিএনপির অন্যান্য ৯টি বিভাগীয় কর্মসূচির মতো যেখানে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিবেন এবং দলের পরবর্তী কর্মপন্থা ঘোষণা করবেন।
তবে দলের নেতারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে বদ্ধপরিকর।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলেছেন, তারা যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চান। কারণ তারা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার এবং ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচির পর সরকারের পদত্যাগের দাবি আদায়ে আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু করবেন।
আরও পড়ুন: আইজিপির কাছে ‘গায়েবী’ মামলার প্রতিকার চাইল বিএনপি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আমাদের ঢাকার সমাবেশ নিয়ে আলাদা কোনো পরিকল্পনা নেই। এটি অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের মতো। আমি জানি না কেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এবং কিছু মিডিয়া আমাদের চেয়ারপার্সনের সমাবেশে অংশগ্রহণের কথা বলছে। আমাদের স্থায়ী কমিটি কখনই এই বিষয়ে আলোচনা করেনি এবং আমাদের এমন কোনো পরিকল্পনাও ছিল না।’
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, তারা তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন।
তিনি বলেন, কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করে তাদের আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে মোড় নেয়ার কোনো সুযোগ তারা দেবেন না। আমরা আওয়ামী লীগের ফাঁদে পা দেব না, কোনো বিবেকহীন পদক্ষেপ নেব না।গত ৮ অক্টোবর ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ১০ ডিসেম্বরের পর খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশ পরিচালনার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে।
দুই দিন পর বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক বলেন, খালেদা জিয়া ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে যোগ দেবেন এবং পরে দলের আরও কিছু নিম্ন-স্তরের নেতা আমান ও ফারুকের মতোই কথা বলেন।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা অবশ্য বলেছেন, খালেদাকে নিয়ে আমান ও ফারুকের বক্তব্য তাদের ব্যক্তিগত মতামত।এমন জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, শর্তসাপেক্ষে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া খালেদা ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে যোগ দিলে আদালত ব্যবস্থা নেবে।
বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে মুক্ত করা হয়েছে। কারণ তার পরিবার একটি আবেদন জমা দিয়েছে যে তিনি খুব অসুস্থ ছিলেন বলে তিনি চলাচল করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখন যদি ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশে যোগ দেন, তাহলে প্রমাণ হবে যে তার পরিবারের আবেদনে যা লেখা ছিল তা মিথ্যা ছিল।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে, সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদাকে ছয় মাসের জন্য কারাগার থেকে মুক্তি দেয়।
দুর্নীতির দুই মামলায় জেল থেকে তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির মেয়াদ কয়েকবার বাড়িয়েছে সরকার। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন ৭৬ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপার্সন।
২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি। ইতোমধ্যে আটটি বিভাগীয় সমাবেশ করেছে এবং নবম সমাবেশ শনিবার রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে বিশাল জনসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।
দলটি নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি চাইলেও ২৬ শর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে সরকার।জানতে চাইলে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ঢাকার জনসভায় খালেদার অংশগ্রহণ গণমাধ্যম ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের জল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। ‘আমাদের দায়িত্বশীল নেতাদের কেউ এ বিষয়ে কথা বলেননি।’
লাখো মানুষের অংশগ্রহণে সমাবেশ সফল করতে তারা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। ‘এটি অবশ্যই একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হবে। আমাদের কর্মসূচি বানচাল করার জন্য সব ধরনের চক্রান্ত ও উসকানি সম্পর্কে সতর্ক থাকব আমরা।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের অংশ হিসেবে জনসভায় খালেদা জিয়াকে সম্পৃক্ত করে মন্তব্য করছেন।
‘ম্যাডাম (খালেদা) গৃহবন্দি এবং তিনি খুব অসুস্থ। আমরা কখনই বলিনি যে সে আমাদের প্রোগ্রামে অংশ নেবে। কিন্তু সরকার এই ইস্যুতে খারাপ খেলা খেলছে।’
‘আমরাও রাজধানীতে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করব এবং তারপর বাড়ি ফিরব। আমাদের অন্য কোনো পরিকল্পনা নেই।’বৃহস্পতিবার পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি নেতা বলেন, নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে তারা তাকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। ‘আমরা নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে বদ্ধপরিকর। কোনো ভেন্যু নিয়ে আমাদের অন্য কোনো পরিকল্পনা নেই।’
আরও পড়ুন: খোলা মাঠ থাকতেও কেন সড়কে সমাবেশ: বিএনপিকে জয়ের প্রশ্ন
না’গঞ্জে বিএনপি-জামাত-গণঅধিকারের ১৯৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
খালেদা জিয়া ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে যোগ দিলে আদালত ব্যবস্থা নিবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া যদি ঢাকায় দলের ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে যোগ দেন, তাহলে আদালত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) ঢাকার রাজারবাগ এলাকায় বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের বার্ষিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় মন্ত্রী এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া শর্তসাপেক্ষে কারাগারের বাইরে আছেন এবং তিনি জনসভায় যোগ দিলে আদালত ব্যবস্থা নিবে।’
বিএনপি ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে এবং সরকার তাদের সুষ্ঠুভাবে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যদি কোনো ধরনের সহিংসতার সূচনা করে তাহলে সেটা হবে বড় ভুল।’
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচনে খালেদার অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত আইনগতভাবে নেয়া হবে: সিইসি
প্রথমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা মানিক মিয়া এভিনিউতে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিল বিএনপি। তিনি বলেন, মানিক মিয়া এভিনিউ, যেখানে জাতীয় সংসদ অবস্থিত, একটি সীমাবদ্ধ এলাকা হওয়ায় তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠান করার অনুমতি পেয়েছে।
আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, ‘আমরা তাদের বলেছি যে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে কারণ এটি তাদের রাজনৈতিক অধিকার, তবে সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে আর কারাগারে পাঠাবে না সরকার: আইনমন্ত্রী
খালেদা জিয়া ও তারেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার: শিল্পমন্ত্রী
বিএনপি নেতাদের কারাগারে রেখে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্র করছে সরকার: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার 'মিথ্যা' মামলায় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মতো তাদের দলের সিনিয়র নেতাদের কারাগারে রেখে আগামী নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা সহজেই দূর করার ষড়যন্ত্র করছে।
শনিবার এক বিশাল জনসভায় বক্তৃতাকালে তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, যতদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করবেন না, ততদিন বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই শাসন কিছুই অক্ষত রাখে নি। আমরা এখন বিচার পাচ্ছি না। তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক মামলা দায়ের করে আমাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে। আমাদের সকল সিনিয়র নেতাদের নামে ১০-৬০টি মামলা রয়েছে।’
ফখরুল বলেন, সরকার এখন বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা’ মামলার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার চেষ্টা করছে। ‘এর মানে এই যে, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে যেভাবে কারাগারে বন্দী করা হয়েছিল, সেভাবে তারা (সরকার) আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের কারাগারে নিক্ষেপ করে সহজেই নির্বাচনের বাধা অতিক্রম করতে চায়।’
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দেশের জনগণ এবার সরকারকে আর কোনো একতরফা জাতীয় নির্বাচন করতে দেবে না।
বিএনপির বিভাগীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে সমাবেশের আয়োজন করে দলটির কুমিল্লা মহানগর শাখা।
এবারের সমাবেশে পরিবহন ধর্মঘট ছাড়া কিছুটা স্বস্তির মধ্যে কুমিল্লায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেন।
মানুষ আর নৌকায় চড়ে না
ফখরুল বলেন, ‘অবৈধ’ প্রধানমন্ত্রী তার অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের দুটি নির্বাচন জোর করে ক্ষমতা দখল করেছেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ ও রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার যশোরে জনসভা করেছেন শেখ হাসিনা। ‘সেই জনসভায়, তিনি (তার অধীনে) আবার নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং নৌকা (আ.লীগের) নির্বাচনী প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন…কিন্তু সারা বাংলাদেশের মানুষ এখন গান গাইছে, যদি তারা পরিণতি জানত তাহলে তারা নৌকায় চড়ত না। ’
তিনি বলেন, তাই সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ার আগে মর্যাদার সঙ্গে ক্ষমতা ছেড়ে দিন, কারণ মানুষ এখন চায় আপনি চলে যান।’
ফখরুল আক্ষেপ করে বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও জনগণকে তাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করতে হবে, জীবন উৎসর্গ করতে হবে।
জামানতের টাকা হারাবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা
বিএনপি বলেছে, সরকার এর অধীনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে একটি মঞ্চ-পরিচালিত নির্বাচন করার জন্য আবারও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। কারণ একটি নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা তাদের জামানতের অর্থ হারাবেন।
তিনি বলেন, সরকার দল ও এর কর্মসূচি দমন করতে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে কাল্পনিক মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করছে। ‘এটা একটা নির্লজ্জ শাসন। এদের চামড়া গন্ডারের মতো পুরু।’
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ হবে
ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ১০ ডিসেম্বরের জনসভা ঠেকাতে সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও রাজধানীতে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি শুরু করেছে। ‘আপনারা কুমিল্লাসহ কোথাও আমাদের সমাবেশ থামাতে পারেননি। আপনিও ১০ ডিসেম্বর ঢাকায়ও এটি করতে পারবেন না।’
ঢাকা মহানগরীতে বিএনপিকে সমাবেশ করতে না দেয়ার বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা নানা মন্তব্য করলেও ফখরুল বলেন, তারা এখন বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে এসে নয়াপল্টনে সমাবেশ হবে।
তিনি বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র, ভোট ও জনগণের অন্যান্য অধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেমেছে কিন্তু সরকার একে অন্য দিকে মোড় নেয়ার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: আপেক্ষিক স্বস্তির মধ্যেই কুমিল্লায় বিএনপির অষ্টম বিভাগীয় সমাবেশ শুরু
বরিশালে বিএনপির সমাবেশ শুরু
দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে বরিশাল নগরীতে বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিয়েছেন বিএনপির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী। শনিবার সকাল ১১টার দিকে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে সমাবেশ শুরু হয় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশে যোগ দেবেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সমাবেশস্থল থেকে দেড় কিলেমিটার রাস্তা জুড়ে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে।
যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে মানুষ সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও ইউনিট থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পায়ে হেঁটে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন।
আরও পড়ুন: বরিশালের পথে ইশরাক হোসেনের গাড়িবহরে হামলা
আইন বলে দিবে খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি-না: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আইন বলে দিবে খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি-না।
তিনি বলেছেন, আইন যা বলে, তাই হবে। আইনে যদি বলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন, তাহলে তিনি করবেন। আর আইন যদি বলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না, তাহলে তিনি তা করতে পারবেন না। আপতত যে আইন আছে তাতে মনে হয় না যে, তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ করতে পারবেন।
সোমবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি-না-এমন প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হবে: আইনমন্ত্রী
ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজদের ৪৭ তম বিশেষ বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আইনমন্ত্রী কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, যদি কোন ব্যক্তি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে নূন্যতম দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছরকাল অতিবাহিত না হয়ে থাকে তাহলে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করতে পারবেন না।
তিনি (খালেদা জিয়া) তো আদালতের মাধ্যমে দণ্ডপ্রাপ্ত।
বিএনপির আইনজীবীরা খালেদা জিয়ার পক্ষে আপিল করে তা শুনানির উদ্যোগ নিচ্ছেন না। এর ফল কি হবে-এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, তারা কি করবেন, আর কি করবেন না, আমি কি সে জন্য তাদের উপদেশ (এডভাইস) দিবো?
তারা আপিল শুনানির উদ্যোগ নিচ্ছেন না, তার কৈফিয়ত যদি আমাকে দিতে হয়, তাহলে তো সেটা অযৌক্তিক হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, এ আইন নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কারণ এ আইন করাই হয়েছে শুধু সাইবার অপরাধ দমন করার জন্য।
বাক স্বাধীনতা বা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য এ আইন করা হয়নি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় যে ২৯টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামোর নাম ঘোষণা দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কয়েক দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিবেন বলে জানান আইনমন্ত্রী।
প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।
আরও পড়ুন: খেলাপি ঋণ এর পরিমাণ কমিয়ে আনতে চায় সরকার: আইনমন্ত্রী
আবেদন করলেই শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হবে: আইনমন্ত্রী