ঘনকুয়াশা
কুড়িগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত
কুড়িগ্রাম গত তিন দিন ধরে শীত জেঁকে বসেছে। মাঝরাত থেকে ঘনকুয়াশায় ঢাকা পড়ছে চারদিক। সকালে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
শীতের কারণে ছিন্নমূল ও শ্রমজীবী মানুষ পড়েছে বিপাকে। ঠান্ডার কারণে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।
আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশা আর শীতে বিপর্যস্ত লালমনিরহাটের জনজীবন
মঙ্গলবার (১২ ডিসম্বর) কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজারহাট উপজলার ছিনাই ইউনিয়নর মীরেরবাড়ী এলাকার কৃষক সমশের আলী ফুলকপি তুলছিলেন। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করি ঠান্ডা নামি গেইল। কামলারা আইসে নাই। নিজে কাম করবার নাগছি। কাজ-কাম করতে আঙুল অসাড় হয়া যায়।’
সদরের হলাখানা ইউনিয়নের কৃষক আমজাদ আলী তার বোরো বীজতলা নিয়ে চিন্তায় আছেন।
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বীজতলা ভালাই আছে। যে হারে কুয়াশা আর বাতাস বইছ তাতে বীজতলার ক্ষতিও হতে পারে।’
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আতিকুর রহমান জানান, দুপুর পর্যন্ত হাসপাতাল মোট ৩৬৪ জন রাগী ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রাগীও রয়েছে। এছাড়াও ডায়রিয়া আইসোলেশনে ৪৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছে।
জলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, শীত মোকাবিলায় ৪৫ হাজার কম্বল ইউনিয়ন পর্যায় উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পাঁচ হাজার শুকনা প্যাকেট ও সাত লাখ টাকা প্রস্তত রয়েছে।
আরও পড়ুন: শীতের শুরুতে ঢাকায় বেড়েছে গরম কাপড়ের বিক্রি
নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করলেন মাহি
১ বছর আগে
পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস
হিমালয়ের কূলঘেষা সীমান্তবর্তী উত্তরের পঞ্চগড় জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে এখানে ৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। বিকাল থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঘনকুয়াশার পাশাপাশি উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা মৃদু হিমেল বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ জানান, রবিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এটিই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গতকাল শনিবারও এখানে একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এখানে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ থেকে এখানে শীতের প্রকোপ আরও বাড়বে এবং ঘনকুয়াশার পাশাপাশি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: শীতে রোটা ভাইরাসের প্রকোপ: মতলব হাসপাতালে শিশু রোগীর ভিড়
তিনি জানান, দিনের বেলায় রোদের তেজ বেশি থাকায় রবিবার ২৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি, শনিবার ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি, শুক্রবার ২৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি ও বৃহস্পতিবার ২৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আদ্রতা এই জেলায় ৯৩ থেকে ১০০ শতাংশ এবং ২ থেকে ৫ নটিকেল মাইল বেগে প্রতিঘণ্টায় বাতাস বয়ে যাচ্ছে।
এদিকে এবার পঞ্চগড়ে একটানা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করলেও দিন ও রাতের তাপমাত্রার বেশ পার্থক্য থাকছে। রাতে ও সকালে তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে আবার দিনের মধ্য ভাগে রোদের প্রচণ্ড তাপে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। জেলা শহরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে
অপরদিকে, জেলা প্রশাসন জেলার পাঁচ উপজেলায় এবছরও ২২ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণকৃত শীতবস্ত্রের সংখ্যা চাহিদার তুলনায় নগন্য।
পঞ্চগড় শহরের ডোকরোপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. মজিরুল ইসলাম জানান, অন্যান্য বছরগুলোতে এই সময়ে সারাদিন সূর্য্যের মুখ দেখা যেত না, মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারতো না। উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হতো। কিন্তু এবার শীতের পরিস্থিতিটা একটু ব্যতিক্রম। সকাল রাতের শীত থাকলেও দিনে তেজদীপ্ত রোদ উষ্ণতা ছাড়ায়।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্যোদয়
পঞ্চগড় জেলা পরিবেশ পরিষদের সভাপতি ও পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের ভুগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তৌহিদুল বারী বাবু জানান, দ্রুত সূর্য্যউদয় হওয়ায় তাপমাত্রা প্রখর হওয়ায় কুয়াশা ফরমেশন হয় না। এজন্য দিনের বেলা তাপমাত্রা গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার মতই। আবার বিকাল বেলা র্যাপিডলি তাপমত্রা কমে যাওয়ায় রাতে ও সকালে তাপমাত্রা কম হচ্ছে। ভূগোলের ভাষায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে পঞ্চগড়ে সান রাইজ টু সানসেট আবহাওয়ার তারতম্যের সৃষ্টি হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, শীতবস্ত্রের চাহিদা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির আরও শীতবস্ত্র বরাদ্দ পাওয়া যাবে। জেলা প্রশাসক সরকারের পাশাপাশি সকল বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সামর্থ্যবানদের শীতার্তদের রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
৩ বছর আগে