সুগন্ধা
সুগন্ধায় জাহাজ দুর্ঘটনা: ২৩ ঘন্টা পর ইঞ্জিনরুম থেকে ১ জনের লাশ উদ্ধার
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে তেলবাহী জাহাজ ওটি সাগর নন্দিনী-২ বিস্ফোরণের ঘটনায় ২৩ ঘন্টা পর ৪ জনের মধ্যে ইঞ্জিনরুম থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড।
বাকি ৩ জনের সন্ধান এখনও মেলেনি। রবিবার (২ জুলাই) দুপুর ৩টার দিকে জাহাজের ২য় ইঞ্জিনরুমের কর্নার থেকে তার দগ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া আব্দুস সালম হৃদয় (২৭) জাহাজের গ্রিজারম্যান (ইঞ্জিন রুমে ইঞ্জিনিয়ারের সহকারী)।
আরও পড়ুন: পতেঙ্গা উপকূলে ৮৫০ টন ডালসহ জাহাজ দুর্ঘটনা
দুঘর্টনাকবলিত জাহাজ সাগর নন্দিনী-২ এর কর্তৃপক্ষ মাহাবুবুর রহমান জানান, জাহাজটিতে ১৩জন স্টাফ কর্মরত ছিল। ঈদের কারণে কয়েকজন ছুটিতে ছিলো। ছুটির দিন থাকার কারণে জানা সম্ভব হয়নি কে কে ছুটিতে ছিল।
তিনি জানান, এই ঘটনার পর থেকে এক পর্যায়ে জাহাজে ইঞ্জিন রুমে পানি প্রবেশ করে ১১ লাখ লিটার পেট্টোল ও ডিজেল বহনকারী জাহাজটি ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়। পদ্মা পেট্টোলিয়াম করপোরেশন অন্য দুটো জ্বালানিবাহী জাহাজ দিয়ে জ্বালানি অপসারণ করে ডিপোতে নিয়ে আসে এবং জ্বালানির কোনো ক্ষতি হয়নি।
তিনি আরও জানান, এই ঘটনা তদন্তে জিএম আব্দুস সোবাহানের নেতৃত্বে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট সাফায়েত আরবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নিখোঁজদের সন্ধ্যানে ফায়ার সার্ভিস, নৌ-পুলিশ, ঝালকাঠি জেলা পুলিশ সার্বিক সহযোগীতা করছে।
তিনি আরও জানান, ইঞ্জিনরুম থেকে এক জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় তিনি ইঞ্জিন রুমের দায়িত্বে ছিলেন।
বরিশাল বিভাগীয় পর্যায়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এ এইচএম রাশেদুল জানান, শঙ্কা থাকলেও জাহাজ থেকে কোনো তেল নির্গত হয় নি। সে কারণে এক্ষেত্রে পরিবেশের জন্য কোনো হুমকি নেই।
জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল এই ঘটনার পর থেকে সার্বক্ষনিকভাবে পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং এবং প্রয়োজনীয় বিষয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা: ডাটা বক্স ফ্রান্সে পাঠানো হয়েছে
নেপাল-ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি: বাংলাদেশে ভারতীয় সহযোগিতা 'দৃশ্যমান', বললেন নসরুল
১ বছর আগে
ঝালকাঠিতে লঞ্চে আগুন: নিহত ৩৯, আহত অর্ধশতাধিক
ঢাকা থেকে বরগুনাগামী প্রায় ৮০০ যাত্রী নিয়ে একটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ৩৯ জন নিহত ও ৭২ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার গভীর রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার উপকূলে সুগন্ধা নদীর মাঝখানে ‘অভিযান-১০’ লঞ্চে এ আগুনের সূত্রপাত হয়।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ফজলুল হক ইউএনবিকে বলেন, আমাদেরকে রাত ৩টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা জানানো হয়। তবে ঘন কুয়াশার কারণে প্রথম দিকে ফায়ার সার্ভিসের জাহাজগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে কিছুটা সময় নেয়।
ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মইনুল হক ইউএনবিকে বলেন, ‘লঞ্চ থেকে ৩৭টি লাশ এবং ৭২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: লঞ্চের আগুনে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা
৩৭টি লাশের মধ্যে চারটি শনাক্ত করা হয়েছে এবং বাকি ৩৩টি লাশ ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এএসপি।
আহত ৭২ জনের মধ্যে গুরুতর দগ্ধ ৬৬ জনকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
শেবাচিমের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, ৫০ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে যাওয়া ৬৬ জনের মধ্যে ১৮ জন নারী। আমাদের কাছে কোনো ডেডিকেটেড বার্ন ইউনিট না থাকায় তিনজন নারী ও চারজন পুরুষকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
তবে ইউএনবি বরিশাল প্রতিনিধি জানান, আহতদের মধ্যে দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা গেছেন।
এরই মধ্যে দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চটিকে তীরে আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ৭ সদস্যের কমিটি গঠন
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক (বরিশাল বিভাগ) কামাল উদ্দিন বলেন, ঝালকাঠির স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রথমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে এবং পরে বরিশাল ফায়ার সার্ভিস তাদের সাথে যোগ দেয়।
তিনি জানান, প্রায় দুই ঘণ্টা সময় নেয়ার পর ১৫টি ফায়ার টেন্ডার ভোর ৫টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
কামাল বলেন, বৃহস্পতিবার থাকায় লঞ্চটিতে ৮০০ যাত্রী ছিল। জাহাজে আগুন লাগার পর তাদের অধিকাংশই জাহাজ থেকে লাফিয়ে পড়ে এবং সাঁতরে তীরে চলে যায়।
অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ পৃথক দুটি কমিটি গঠন করেছে। তিন দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: লঞ্চে আগুন: হতাহতের ঘটনায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর শোক
২ বছর আগে