মানি এক্সচেঞ্জ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতৃত্বে মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে অভিযানের পর বাজারে ডলারের সংকট
উচ্চ বিনিময় হার নিয়ে মুনাফার অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জ হাউসে অভিযান চালানোর পর খোলা বাজারে ডলারের সংকট আরও বেড়েছে।
গত দুই সপ্তাহে খোলা বাজারে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ডলারপ্রতি ১১২ টাকা থেকে ১১৭ থেকে ১১৮ টাকায় পৌঁছেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে গত সপ্তাহের শেষের দিকে এবং সপ্তাহান্তে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউসে অভিযান চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
এসব অভিযানে এক্সচেঞ্জগুলোকে আগের দরে ১১২ থেকে ১১৩ টাকা দরে ডলার বিক্রি করতে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু জানা গেছে, অভিযানের ফলে এই সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে মানি এক্সচেঞ্জগুলো বাজার থেকে ডলার সম্পূর্ণভাবে তুলে নিয়েছে।
চড়া দামে ডলার বিক্রির দায়ে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত ও সিলগালা করা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে শাস্তির ভয়ে ডলার বিক্রি প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো।
ফলে খোলা বাজারে ডলারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন খাতের সংশ্লিষ্টরা।
আজ ১২০ টাকায়ও এক ডলার কেনা যাচ্ছে না।
এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো বলেছে, তাদের কাছে বিক্রি করার মতো কোনো ডলার নেই।
আরও পড়ুন: রপ্তানি আয়ের জন্য ডলারের বিনিময় হার বেড়ে ১০৭.৫ টাকা
খোলা বাজারে ডলারের সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেসবাউল হক ইউএনবিকে বলেন, ডলার লেনদেন ঠিকই হচ্ছে, কিন্তু সবাই তা বিক্রি করছে না।
তার মতে যাদের কাছে ডলার আছে তারাই বিক্রি করছে।
মতিঝিল এলাকার মানি এক্সচেঞ্জ হাউসের মালিক জামান (ছদ্মনাম) রবিবার ইউএনবিকে বলেন, তারা ১১৫ টাকায়ও ডলার কিনতে পারেন না, তাহলে ১১২-১১৩ টাকায় ডলার বিক্রি করা কীভাবে সম্ভব?
ডলারের সরবরাহ সংকটের কারণে রবিবার অন্যান্য অনেক মানি এক্সচেঞ্জ হাউস এবং মার্কিন ডলারের ভাসমান ব্যবসায়ীদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।
রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে গিয়ে এই হতাশাজনক চিত্র যায়।
আমাদের সংবাদদাতা গুলশান, বনানী, মহাখালী ও ফার্মগেটের মতো অন্যান্য এলাকায় অনুসন্ধান করেও একই চিত্র দেখেছেন।
গত ১২ বছর ধরে ডলার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আয়নাল বলেন, ‘মানি চেঞ্জাররা একজনের কাছ থেকে কিনে আরেকজনের কাছে বিক্রি করে। বর্তমান দামে ডলার বিক্রি করতে মানি চেঞ্জারদের ডলার কিনতে হচ্ছে ১১০ টাকায়। কেউ যদি ১১২ টাকার নিচে ডলার বিক্রি না করে তাহলে মানি চেঞ্জাররা কিভাবে ডলার পাবে? ব্যবসায়ীরা ডলার না পেলে বিক্রি করতে পারবে না, মানি চেঞ্জাররা এ কথা বলছেন।’
গত ৬ সেপ্টেম্বর থাইল্যান্ড যাওয়ার কথা থাকায় ডলার কিনতে মতিঝিলে আসেন ওমর ফারুক। খরচের জন্য ডলার কিনতে বিভিন্ন ব্যাংকে গিয়েও পাননি তিনি।
ওমর বলেন, ‘এখন মানি চেঞ্জারের কাছে এসেছি, এখানেও ডলার নেই। আমি গুলশানে এক পরিচিতকে ফোন করেছি ৪০০ ডলার ম্যানেজ করার জন্য। যেখানে প্রতি ডলার হয়ত ১২০ টাকা হতে পারে।’
কেন তিনি এত বেশি দামে কিনতে রাজি হবেন জানতে চাইলে ওমর বলেন, ‘দাম যাই হোক না কেন, ডলার ছাড়া আমি কীভাবে বিদেশে যাব?’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংক রেট ক্যাপসহ 'বাজারভিত্তিক' ডলারের বিনিময় হার চালু করেছে
২০২৩’ অর্থবছরে ২১.৬১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে, এ যাবৎকালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ
১ বছর আগে
মালদ্বীপ প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার বলেছেন, মালদ্বীপে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যা সমাধানে বিশেষ করে বিমান যোগাযোগ এবং দেশে সরাসরি অর্থ পাঠানোর বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নেবে।
২৪ ডিসেম্বর (শুক্রবার) মালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া কমিউনিটি সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রবাসী কল্যাণ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আপনাদের সাথে কথা বলেছেন এবং আপনাদের সমস্ত সমস্যা জেনেছেন। তারা আমাকে এসব বিষয়ে অবহিত করেছেন। আমি দেশে ফেরার পর এ বিষয়ে যা করা দরকার করব।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে অর্থ বিনিময়ের ব্যবস্থা করে মালদ্বীপ থেকে অর্থ পাঠাতে বাংলাদেশিদের সমস্যা সমাধান করবে সরকার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশীদার হতে মালদ্বীপের উদ্যোক্তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
দেশে সরাসরি টাকা পাঠাতে মালদ্বীপ প্রবাসীদের ডলার কিনতে লোকসানের মুখে পড়তে হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি টাকা বিনিময়ের ব্যবস্থা করার ব্যবস্থা নেব।
তিনি বলেন, প্রবাসীরা যাতে বাংলাদেশি প্রবাসীদের কল্যাণে সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে মালদ্বীপ থেকে অর্থ পাঠাতে পারে সেজন্য সরকার পদক্ষেপ নেবে।
‘আমি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বলব যাতে বাংলাদেশ ব্যাংক মানি এক্সচেঞ্জের জন্য এজেন্ট নিয়োগ করে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিমান যোগাযোগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স মালদ্বীপের সঙ্গে ফ্লাইট চালু করবে। আমাদের একটি লক্ষ্য রয়েছে যাতে আমাদের সরকারি এয়ারলাইন্স মালদ্বীপের সাথে তার ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে।’
আরও পড়ুন: মালদ্বীপের সঙ্গে ফ্লাইট পরিচালনা করবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
মালদ্বীপে প্রায় এক লাখ বাংলাদেশি রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অনথিভুক্ত বাংলাদেশিদের বিষয়টিও মালদ্বীপ সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর সাথে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে যাতে অনথিভুক্ত বাংলাদেশিদের বৈধ করে মালদ্বীপে থাকতে কোনো সমস্যা না হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকা-মালদ্বীপের ৩টি চুক্তি স্বাক্ষর
২ বছর আগে