অনন্যা
‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৮’ পেলেন রঞ্জনা বিশ্বাস
‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৮’-এ ভূষিত হলেন প্রাবন্ধিক-গবেষক রঞ্জনা বিশ্বাস। মঙ্গলবার বিকাল ৪.৩০মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক-প্রাবন্ধিক আকিমুন রহমান এবং সভাপতিত্ব করেন অনন্যা-সম্পাদক তাসমিমা হোসেন।অনুষ্ঠানের শুরুতে রঞ্জনা বিশ্বাসের ওপর লেখক-নির্মাতা ও সাংবাদিক তাপস কুমার দত্ত নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানটি শেষ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের পরিবেশনা দিয়ে। আলোচক আকিমুন রহমান বলেন, বেদেরাও আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের আত্মত্যাগের কাহিনির শেষ নেই। কিন্তু আমরা সেটা মানি না। রঞ্জনার গবেষণায় আমরা বেদেদের কথা জানতে পারি। মুক্তিযুদ্ধে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অবদান ও আত্মত্যাগের কথা জানতে পারি। বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকিবাহীদের জীবন ও অনালোচিত সেই ইতিহাসও আমাদের সামনে তুলে ধরেন তিনি। তিনি লোকগীতি, লোকসঙ্গীতের কথাগুলোও তুলে ধরেছেন।তিনি আরও বলেন, রঞ্জনা শুধু গবেষক না, সৃজনশীল লেখকও। তিনি একাধারে কবি ও ঔপন্যাসিক। তার কবিতা ও উপন্যাস পড়ার সময় আমি অভিভূত হয়ে যাই। তিনি এক্ষেত্রে আলাদা করে পুরস্কৃত হওয়ার যোগ্য।সভাপ্রধানের ভাষণে তাসমিমা হোসেন জানান, রঞ্জনা বিশ্বাস নতুন প্রজন্মের লেখক। তার দেখার দৃষ্টিও অনন্য। তিনি বাংলাদেশের অবহেলিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটিয়ে দিচ্ছেন। একবিংশ শতকে এসে মানুষ হিসেবে সমাজের এই শ্রেণিভেদ ভেঙে দিতে চাই আমরা। রঞ্জনা লোকধর্ম ও লোকায়াত জীবন নিয়ে কাজ করে সেই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন আমাদের কাছে। অনন্যা কখনো বয়স দিয়ে মানুষের যোগ্যতা বিচার করে না। রঞ্জনাকে তাই পুরস্কৃত করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছে অনন্যা।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে দু’দিনব্যাপী শাহ আব্দুল করিম লোক উৎসব শুরু
২ বছর আগে
অনন্যার শীর্ষদশ সম্মাননা পেলেন ১০ নারী
বাংলাদেশের বহুল আলোচিত ও ঐহিত্যবাহী পাক্ষিক নারী বিষয়ক ম্যাগাজিন অনন্যা শীর্ষদশ সম্মাননা ২০২০ পেয়েছেন ১০ জন নারী।
এ বছর রাজনীতিবিদ, উদ্যোক্তা, প্রযুক্তি, কৃষি, নাট্যনির্মাণ, কর্পোরেট পেশা, বিজ্ঞান, অধিকার কর্মী, ক্রীড়া ও লোক-ঐতিহ্য এ দশটি শাখায় পুরস্কার প্রদান করা হয়।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ (কেআইবি) অডিটেরিয়ামে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। প্রতি বছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সমাজে আলোচিত ও আলোকিত নারীদের মধ্য থেকে ১০ জন নারীকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেন দেশের সংগ্রামী নারীদের খুঁজে খুঁজে নিয়ে আসছেন। আজকে প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। এর পেছনে সব থেকে বড় ভূমিকা রাখছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা সরকারের নানা নিয়ম-নীতির জন্যই মেয়েরা নিজ নিজ অঙ্গনে সফলতা অর্জনের সুযোগ পাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশের মেয়েরা অসাধারণ সব সাফল্য অর্জন করেছেন। ফুটবল ও ক্রিকেটসহ সকল খেলাধুলায়ও মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার পেছনে অনন্যার সম্মাননা অনেক বেশি অনুপ্রেরণা যোগাবে। তাই অনন্যা আমার কাছে অনন্য।
আরও পড়ুন: নারী নির্যাতন বন্ধে আইনের পাশাপাশি প্রয়োজন সচেতনতা: আইনমন্ত্রী
পাক্ষিক অনন্যা ও দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, করোনার সময়ের পরে আমাদের জীবনযাপন পাল্টে যাচ্ছে। ভার্চুয়াল জগতের বাইরে এসে এভাবে সশরীরে অনুষ্ঠান করতে পারব, সেটা ভাবতে পারিনি। তবে অনন্যার সঙ্গে যুক্ত যুবকদের প্রচেষ্টায় আমরা সশরীরে অনুষ্ঠানটি করতে পারছি। দেশে নারী ব্যক্তিত্ব যাঁদের এখন সমাজে নানা ভূমিকা রাখতে দেখা যায়, তাঁদের প্রায় বেশিরভাগ নারীকে স্বীকৃতি দিয়েছে অনন্যা। গত ২৮ বছরে ২৮০ জন নারী এ সম্মাননায় ভূষিত হলেন।
তিনি আরও বলেন, আগে অনন্যা সম্মাননা প্রদানের জন্য দেশের ১০ জন সংগ্রামী নারীকে খুঁজে পেতে কষ্ট হতো। তবে এখন অনন্যা সম্মাননার জন্য ৫০ জনেরও বেশি সংগ্রামী নারীকে আমরা প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করি। এটা অনন্যার জন্য খুব গর্বের জায়গা। এতে বোঝা যায়, দেশের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা আর অবহেলিত থাকতে চান না।
অনন্যা শীর্ষদশ জয়ীরা বলেন, এই পুরস্কার আমাদের জন্য সম্মানের। এটা আমাদের চলার পথকে আরও অনুপ্রাণিত করবে।
অনন্যা শীর্ষদশ সম্মাননা-২০২০ প্রাপ্তরা হলেন: কামরুন্নাহার জাফর (রাজনীতি ক্যাটাগরিতে), শাহীদা বেগম (উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে), লাফিফা জামাল (প্রযুক্তিতে), অল্পনা রানী (কৃষিতে), চয়নিকা চৌধুরী (নাট্যনির্মাণে), স্বপ্না ভৌমিক (কর্পোরেট পেশায়), সেঁজুতি সাহা (বিজ্ঞানে), তাসনুভা আনান (অধিকারকর্মী বিভাগে), জাহানারা আলম (ক্রীড়ায়), রূপন্তী চৌধুরী (লোক-ঐতিহ্যে )।
আরও পড়ুন: ৭১-এ নারীর ভূমিকা নিয়ে ইউএনবিতে পডকাস্ট
অনুষ্ঠানে সম্মাননাজয়ীদের ওপর নির্মাতা লেখক তাপস কুমার দত্তের নির্মাণে তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। সংগীত পরিবেশন করে ভৈরব।
উল্লেখ্য, অনন্যা শীর্ষদশ সম্মাননা ১৯৯৩ সাল থেকে প্রদান করা হচ্ছে। প্রতিবছর নিজ নিজ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের ১০ জন বিশিষ্ট নারীকে এই সম্মাননা দেয়া হয়।
২ বছর আগে