জয়নুল আবেদিন
নির্বাচন দিতে এত সংস্কারের প্রয়োজন নেই: ফারুক
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মর্যাদা সমুন্নত রেখে অনতিবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এই দাবি জানান। দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল এই নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করে।
ফারুক বলেন, ‘আবু সাঈদ ও মুগ্ধর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতার সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে হলে অনতিবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। সংস্কার চলবে, দিন-তারিখ দিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলবে। আমি অবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।’
বিরোধী দলের সাবেক এই চিফ হুইপ বলেন, সংস্কারের নামে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অহেতুক সময় নষ্ট করা উচিত হবে না।
স্বৈরাচারী শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছিলেন বলে স্মরণ করেন এই বিএনপি নেতা।
আরও পড়ুন: আগস্টের মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি
তিনি বলেন, ‘১৯৯১ সালের নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ছিল। সেটার মতো নির্বাচন দিতে হলে এত সংস্কারের প্রয়োজন নেই। যে সংস্কার দিয়ে জনগণ ৪০ টাকায় চাল কিনতে পারবে সেই সংস্কার দরকার।’
বিভিন্ন পণ্য ও সেবার ওপর নতুন করে ভ্যাট আরোপের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার বিপ্লবে আপনারা ক্ষমতায় এসেছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আপনারা সরকারে। তাহলে কেন আপনারা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের টিফিন বক্সের ওপরে ভ্যাট ধার্য করবেন? কেন আপনারা অনৈতিকভাবে সকল নিত্য পণ্যের ওপরে ভ্যাট বসিয়ে দেবেন?’
‘ভ্যাট বৃদ্ধিতে জনগণ দিশেহারা। যেখানে ১০ হাজার টাকায় তাদের মাস যেত, এখন ২৫ হাজার টাকায়ও দিন অতিবাহিত করা যায় না।’
বিভিন্ন খাতে এখনও সিন্ডিকেট রয়ে গেছে বলে অভিযোগ করে জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘হাসিনার আমলে সিন্ডিকেট করেছে, আপনার আমলেও সিন্ডিকেট করবে। একটা উদাহরণ দিচ্ছি, ওমরাহ পালনে যাবেন রোজার মাসে…আমি গতকাল একটি অনুষ্ঠানে শুনতে পেয়েছি, জেদ্দায় যেতে ৪০ হাজার টাকার টিকিট এখন ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
‘একশ-দুইশ টিকিট কিনে অফিসে রেখে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করছে। উপদেষ্টারা কী করেন, গোয়েন্দারা কী করেন? তাদের খবর রাখতে হবে। এই সিন্ডিকেট তো হাসিনার নাই, হাসিনা তো হিন্দুস্থানে। তাই এই সিন্ডিকেটকে ধরে গরীব মানুষরা যাতে ৪০ হাজার টাকায় টিকিট কিনতে পারেন তার ব্যবস্থার আমি দাবি জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: জামায়াতের কিছু বক্তব্যে কষ্ট লাগে: নজরুল ইসলাম খান
তিনি আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের ইশতেহারে শুধু জুলাই-আগস্ট নয়, বিগত আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপির ভূমিকাও লিখতে হবে। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের ইশতেহারকে আমরা সমর্থন করি। কিন্তু এই ইশতেহারে ১৯৪৭ সালের ইতিহাস, ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে খালেদা জিয়ার ভূমিকা ও ডা. মিলনের আত্মত্যাগ, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে পাঁচ বছর কারাগারে রেখেছিল ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা, গত ১৬ বছরের বিএনপির আত্মত্যাগ—এই কথাগুলোও ইশতেহারে লিখতে হবে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, কর্মজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন ও মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
৮৩ দিন আগে
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১০৭তম জন্মবার্ষিকী আজ
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১০৭তম জন্মবার্ষিকী আজ বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) পালন করা হচ্ছে।
১৯১৪ সালের আজকের এই দিনে সৃজনশীল প্রতিভার অধিকারি এ শিল্পী কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ এবং এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ফোক আর্ট মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠার পিছনে এ মানুষটির ভূমিকা ছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে কিংবদন্তি শিল্পীর ১০৭তম জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে।
বেলা ১১টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর।
আরও পড়ুন: লা গ্যালারিতে শুরু হলো ‘ক-সম্বন্ধীয়’ শীর্ষক একক চিত্র প্রদর্শনী
ঐতিহাসিকভাবে ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ নিয়ে আঁকা ছবিগুলোর জন্য তিনি বিখ্যাত। ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে কাটানো শৈশবে শিল্পের প্রতি অনুরাগী হয়ে উঠেন জয়নুল। ১৯৩৩ সালে কলকাতা গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুল থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন তিনি। ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার পর ১৯৪৭ সালে তিনি কলকাতা ছেড়ে স্থায়ীভাবে মাতৃভূমি বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ফিরে আসেন।
ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পেছনে জয়নুল সক্রিয়ভাবে কাজ করেছিলেন এবং ১৯৪৯ সালে এর অধ্যক্ষ হন। পরে এ ইনস্টিটিউট থেকেই আজকের চারুকলা অনুষদে হয়েছে।
ইনস্টিটিউট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চারুকলা অনুশীলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল এবং জয়নুলের শৈল্পিক নেতৃত্বে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো স্বাধীন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোতে শিল্পীরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল।
আরও পড়ুন: ঢাকায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক স্থাপত্য ও ভাস্কর্য
১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যান এবং ইনস্টিটিউট থেকে তাকে শিল্পাচার্য (চারুকলার গুরু) উপাধিতে ভূষিত হন।
১৯৭৩ সালে জয়নুল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব লেটার্স (ডি-লিট) পান। ১৯৭৫ সালে তাকে বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক ঘোষণা করা হয়। ২০০৯ সালে এ আইকনিক চিত্রশিল্পীর সম্মানে নাসা বুধ গ্রহের একটি গর্তর নাম রাখেন ‘আবেদীন ক্রেটার’।
ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৬ সালের ২৮ মে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মারা যান।
১১৯৮ দিন আগে