মধু সংগ্রহ
ঠাকুরগাঁওয়ে সরিষার আবাদ বেশি হওয়ায় মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌয়ালরা
ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে সরিষা ফুলের হলুদ আভা। সে যেন অপরূপ দৃশ্য! চোখ মেললেই মন জুড়িয়ে যায় মাঠজুড়ে হলুদ গালিচায়।
সরিষার রূপ আর গন্ধে মাতোয়ারা চারিধার। মৌমাছি, প্রজাপতির অবিরাম খেলা গ্রামীণ জনপদকে আরও মুগ্ধ করে তুলেছে। এই সরিষা খেতগুলোতে যেমন রয়েছে চাষিদের পদচারণা, তেমনি মধু সংগ্রহে মেতে উঠেছেন মৌয়ালরা।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেলায় এবার সরিষার আবাদ হয়েছে ১৯ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর বেশি।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলায় সরিষার আবাদ বেড়েছে। বাজারে সরিষার তেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সরিষার আবাদ বেড়েছে।’
আরও পড়ুন: ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে ঝালকাঠিতে বেড়েছে সরিষা চাষ
রানিশংকৈল কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে রানিশংকৈল উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৮৯০ হেক্টর বেশি।
এখন অনেক জায়গায় চলছে মধু সংগ্রহ। সরেজমিনে দেখা গেছে, মৌচাষিরা সাধারণত পছন্দের একটি সরিষা খেতের পাশে খোলা জায়গায় চাক ভরা বাক্স ফেলে রাখেন। একেকটি বাক্সে ৮-১০টি মোম দিয়ে তৈরি মৌচাকের ফ্রেম রাখা হয়।
প্রতিটি বাক্সের ভেতরে রাখা হয় রানি মৌমাছি। ফুল থেকে মৌমাছিরা মধু এনে বাক্সের ভেতরের চাকে জমা করে। বাক্সে একটি রানি মৌমাছি রাখা হয় ৷ রানি মৌমাছির কারণে ওই বাক্সে মৌমাছিরা আসতে থাকে। চাকের বাক্সের মাঝখানের নিচে ছিদ্র করে রাখা হয়। সে পথ দিয়ে মৌমাছিরা আসা-যাওয়া করতে থাকে।
রানিশংকৈল উপজেলার গোগর এলাকার মৌচাষি নজরুল ইসলাম জানান, সরিষা খেতে মধু চাষ খুবই লাভজনক। এতে কৃষক ও মধু চাষি— দু’পক্ষই লাভবান হন৷ বাক্সের ভেতরের চাকগুলো মধুতে পরিপূর্ণ হতে সময় লাগে ছয় থেকে সাত দিন। এরপর মধু চাষিরা বাক্স খুলে চাকের ফ্রেম থেকে মেশিনের মাধ্যমে মধু বের করে নেন। ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে মৌমাছির ব্যাপক পরাগায়নে সরিষার বাড়তি ফলন পান কৃষক, আর মৌচাষিরা পান মধু।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে ১৫১.৩৮ কোটি টাকার সরিষার ফলনের প্রত্যাশা চাষিদের
৯ মাস আগে
সুন্দরবন বাঘের আক্রমণে মৌয়াল নিহত
সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের সময় বাঘের আক্রমণে এক মৌয়াল নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সাতক্ষীরা রেঞ্জের কাচিকাটা এলাকায় সকাল ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মৌয়াল সালাইমান শেখ (৫০) শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের গোদাড়া গ্রামের আনছার আলী শেখের ছেলে।
বনবিভাগ বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন অফিসার (এসও) নূরআলম জানান, সপ্তাহ খানেক আগে বুড়িগোয়ালিনী বন অফিস থেকে মধু সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে বনের ভেতরে যায় সোলাইমান শেখসহ তার কয়েকজন সঙ্গী। শুক্রবার সকালে কাচিকাটা এলাকায় তিনি বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) এম.এ হাসান জানান, সোলাইমান শেখকে তার মৌয়াল সহকর্মীরা উদ্ধার করেছে। তার লাশ লোকালয়ে না আনা পর্যন্ত কোন কম্পার্টমেন্টে মারা গেছেন তা বলতে পারছিনা। তবে, যেহেতু তিনি বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে বনে গিয়েছিলেন, বিধি অনুযায়ী তার পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবেন।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ২১ বছরে ৪০ বাঘের মৃত্যু
সুন্দরবনে মৃত বাঘ উদ্ধার
২ বছর আগে
মধু কি সত্যি অমৃত?
মৌমাছিরা তাদের এনজাইম ঘটিত ক্রিয়াকলাপ ও তরলের বাষ্পীভবনের মাধ্যমে উদ্ভিদের চিনিজাত নিঃসরণ থেকে মধু তৈরি করে। বিভিন্ন উদ্ভিদ থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা মোম ও রজন দিয়ে মৌচাক তৈরি করে তাতে মুধ সঞ্চয় করে। মৌয়ালরা সেই মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে বাজারজাত করে থাকে। এই আঠালো ও মিষ্টি স্বাদের খাবারটি রান্নাবান্নায় ও বাণিজ্যিক পানীয় তৈরিতে মিষ্টিবর্ধক হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। তাছাড়া অসামান্য পুষ্টিগুণের কারণে স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও এটি ব্যবহার করা হয়। মধুর গুণাগুণ ও উপকারিতা সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
বিভিন্ন ধরনের মধু
বাংলাদেশে হরেক রকমের মধু পাওয়া যায়। এর মধ্যে সুন্দরবন মধুর জন্য শ্রেষ্ঠ জায়গা। এখানকার মধুগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সেরা হানিপ্ল্যান্ট গাছের খলিসা ফুলের মধু বা পদ্ম মধু। খলিসা ফুল হয় সাদা আর এর মধুর রং বেশ গাঢ় এবং খুব কড়া ও মিষ্টি স্বাদযুক্ত। ফাল্গুমাস অর্থাৎ মার্চ থেকে এপ্রিলে এই মধু পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: নিপা ভাইরাস এড়িয়ে খেজুর রস খাওয়ার উপায়
এরপরেই চৈত্র মাসে আসে হালকা লালচে রঙের ও মিষ্টি পশুর ফুলের মধু। আষাঢ় মাসের বাইন মধু আবার খলিসা কিংবা পশুর মধুর মতো এতটা কড়া স্বাদের নয়।
সাদা রঙের কেওড়া মধুর মিষ্টি স্বাদের সঙ্গে একটু টক থাকে। এই মধু জ্যৈষ্ঠ মাসে পাওয়া যায়। শীতের সময় বেশি মেলে সরিষা ফুলের মধু। এই সাদাটে ও খুব ঘন মধুটি খুব তাড়াতাড়ি জমে যায়।
২ বছর আগে
সিরাজগঞ্জে মাঠে মাঠে হলুদের সমারোহ, মৌ চাষিরা মধু সংগ্রহে ব্যস্ত
সিরাজগঞ্জের মাঠে মাঠে এখন সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহ। মৌমাছির গুঞ্জনে প্রকৃতি যেন নতুন সাজে সেজেছে। এবার জেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করা হয়েছে। একই সঙ্গে মৌমাছির ফুলের বাগানে বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছে মধু চাষিরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলার ৯ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৫৪ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা সরিষা চাষাবাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন জাতের সরিষার মধ্যে রয়েছে বারি ০৯, ১৪, ১৫, ১৭, ১৮, বিনা ০৯, টোরি ০৭ ও স্থানীয় সরিষা। এর মধ্যে বারি ০৯ ও ১৪ বেশি চাষাবাদ করেছে কৃষকেরা।
আরও পড়ুন: মাগুরায় সরিষার বাম্পার ফলন
স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে কৃষকেরা এ লাভজনক সরিষা চাষাবাদ করেছে। তবে এই সরিষা চাষাবাদ জেলার তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, বেলকুচি ও কামারখন্দ উপজেলার কৃষকেরা সবচেয়ে বেশি করেছে।
জেলায় এবার ৬৬ হাজার ২১৫ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
২ বছর আগে