ছিনিমিনি
ভোটাধিকার নিয়ে কেউ যাতে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
ভোটাধিকার নিয়ে যাতে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে এবং গণতান্ত্রিক ধারা যেন ব্যাহত করতে না পারে সেজন্য জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘জনগণ ভোট দিলে এখানে (সরকারি দলে) থাকব, না দিলে ওইদিকে (বিরোধী দলে) যাব, কোনো অসুবিধা নেই। জনগণের ওপর আমরা সব ছেড়ে দিচ্ছি।’
বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদের ২৪তম অধিবেশনে সমাপনী ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও মুদ্রাস্ফীতির মধ্যেও তার সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কোনো চক্রান্তের কাছে বাংলাদেশের জনগণ মাথানত করেনি আর করবেও না।’
তিনি আরও বলেন, ‘অক্টোবর মাসে আরেকটা অধিবেশন বসবে। সেটাই হবে এই সংসদের শেষ অধিবেশন। এর পরে নির্বাচন হবে। টানা তিন মেয়াদে সরকারের ধারাবাহিকতা ছিল বলেই আমরা দেশের এতো উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য দেশের মানুষের কাছে আহ্বান জানাই।’
আরও পড়ুন: মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ করুন: জনপ্রতিনিধিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে এখন সোচ্চার বিদেশি দেশগুলোর সমালোচনা করে প্রশ্ন তোলেন, ১৯৭৭ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ ১৯৭৯, ১৯৮১, ১৯৮৬ এবং ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের সময় তাদের চেতনা কোথায় ছিল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে এ পর্যন্ত যতগুলো নির্বাচন হয়েছে- উপ-নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন, প্রতিটি নির্বাচন স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। এর থেকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কবে হয়েছে বাংলদেশে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যখন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন আমরা করছি তখনই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করা, এর অর্থটা কী? আজ দেশ যখন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তখন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন কেন?’
জাতীয় সংসদের পদ্মা গ্যালারিতে বসে তার বক্তব্য শোনেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
আরও পড়ুন: লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের ধ্বংসযজ্ঞ: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর গভীর শোকপ্রকাশ
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যাবেন প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে
দেশ বিরোধী সক্রিয় অপশক্তিগুলোর ব্যাপারে সজাগ থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে কেউ যাতে ছিনিমিনি খেলতে না পারে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অসামান্য যাত্রা বন্ধ করতে পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি বলেন,‘মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ যাতে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেদিকে আমাদের সকলকে সজাগদৃষ্টি রাখতে হবে। আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দেয়া যাবে না।’
শুক্রবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত তার বর্তমান সরকারের তৃতীয় বার্ষিকী এবং বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের চার বছরে পদার্পণ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার একযোগে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রচার করে।
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তার দল আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ের পর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়ক বেয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা অনেকেরই সহ্য হবে না বা হচ্ছে না। দেশ-বিদেশে বসে বাংলাদেশ বিরোধী শক্তি, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তাই নানা ষড়যন্ত্র করছে এই অগ্রযাত্রাকে রুখে দেওয়ার জন্য।’
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে আরও বলেন, ‘মিথ্যা-বানোয়াট-কাল্পনিক তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বিদেশে আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণই ক্ষমতার উৎস। আমরা জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি। তাই জনগণের সঙ্গেই আমাদের অবস্থান।’
দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি। দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক আর যত শক্তিশালীই হোক, তাদের ছাড় দেয়া হচ্ছে না এবং হবে না। এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে। তবে এই ব্যাধি দূর করতে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা কঠোর হস্তে জঙ্গিবাদের উত্থানকে প্রতিহত করেছি। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ পারস্পরিক সহনশীলতা বজায় রেখে বসবাস করে আসছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন।’
আরও পড়ুন: নৌবাহিনীতে আরও আধুনিক যুদ্ধজাহাজ সংযোজন করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
অর্থনৈতিক অগ্রগতি
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিগত ১৩ বছরে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, মাতৃমৃত্যু-শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ নানা আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে।
জনগণ তার ওপর আস্থা রাখায় এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের উপর আস্থা রাখার ফলে। পর পর তিনবার রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দিয়ে আপনারা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করেছেন। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে আমরা একটি কল্যাণকামী, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি যাতে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোর কাতারে সামিল হতে পারে। এজন্য অতীতে যেমন আপনারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন, ভবিষ্যতে আমাদের সঙ্গে থাকবেন, এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমাদের বর্তমান এবং আগামী দিনের সকল কার্যক্রমের লক্ষ্য হচ্ছে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যত বিনির্মাণ। অফুরন্ত জীবনীশক্তিতে বলীয়ান তরুণ প্রজন্মই পারে সকল কূপমণ্ডুকতা এবং প্রতিবন্ধকতা দূর করে একটি প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন। তারুণ্যের শক্তিই পারবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম এগিয়ে যাবে মাথা উঁচু করে ভবিষ্যতের পানে।’
আরও পড়ুন: জনগণের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে