পীরগাছা
রংপুরে জোর করে বিয়ে দিতে চাওয়ায় বাবাকে ছুরিকাঘাত, মেয়ে আটক
রংপুরের পীরগাছায় জোর করে বিয়ে দিতে চাওয়ায় পুলিশের এক উপপরিদর্শককে (এসআই) ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করেছে তার মেয়ে। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার তালুক ইশাত দরারপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত মেয়েকে আটক করেছে পুলিশ।
আহত ফজল মাহমুদ বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় ছুরিকাঘাতে গৃহবধূ নিহত, সৎ মেয়ে আটক
স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার এসআইয়ের মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ বিয়েতে রাজি ছিলেন না এইচএসসি পড়ুয়া মেয়ে। তাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেয়েটি তার ঘরে ডেকে হাতে থাকা অ্যান্টিকাটার ব্লেড দিয়ে বাবার গলায় ছুরিকাঘাত করে। এতে ওই কর্মকর্তা গুরুতর আহত হন। পরে মেয়ের বিয়ের গাড়িতে করে তাকে রমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মেয়েটিকে আটক করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-সি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, অভিযুক্ত মেয়েকে শুক্রবার রাতেই আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
আরও পড়ুন: স্বামীকে মোটরসাইকেল কিনে না দেয়ায় ব্লেড দিয়ে মাকে হত্যা, মেয়ে আটক
রাজশাহীতে ইয়াবাসহ মা-মেয়ে আটক
১ বছর আগে
মুক্তিপণ না পেয়ে শিশুকে হত্যা, দুই আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড
রংপুরের পীরগাছায় মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে রিয়া আক্তার (৭) নামে এক শিশুকে হত্যার দায়ে দুই আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) বেলা একটার দিকে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে -২ এর বিচারক মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের পরান গ্রামের আবুল কালামের ছেলে রাসেল মিয়া (১৯) এবং ওই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে সালাউদ্দিন তালুদ (২০)। এরমধ্যে রাসেল আদালতে উপস্থিত থাকলেও সালাউদ্দিন পলাতক।
এছাড়া এ মামলায় চার আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, পরান গ্রামের আব্দুর রহিমের শিশু কন্যা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। ঘটনার দিন ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে বাড়ির সামনে রাস্তায় প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলছিল। এ সময় সেখান থেকে তাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয়। এরপর
রিয়ার বাবার কাছে মুঠোফোনে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা!
এদিকে মেয়েকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রিয়ার বাবা আব্দুর রহিম। পরবর্তীতে ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন রিয়ার বাবা।
মামলার সূত্র ধরে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি রাসেলকে গ্রেপ্তারসহ তার কাছ থেকে একটি মুঠোফোন উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে রাসেলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তারসহ মুক্তিপণ চাওয়ার জন্য ব্যবহৃত মুঠোফোন ও জুসের বোতল উদ্ধার করা হয় এবং জনৈক রাসেল তালুকদারের বাড়ি সংলগ্ন আব্দুল হক মিস্ত্রীর টয়লেট থেকে রিয়ার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সালাউদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, অর্থের লোভে রিয়াকে অপহরণ করে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর শ্বাসরোধে হত্যার করে তার লাশ টয়লেটে গুম করা হয়।
তবে মামলার এজাহারে রাসেল মিয়া ও সালাউদ্দিনের নাম না থাকায় তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২২ জুন ওই দুজনসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাইদুর রহমান।
সাত বছরের বেশি সময় ধরে মামলার বিচারকাজ চলাকালে ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার এর রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
রায়ে এজাহারনামীয় আসামিদের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদের অব্যাহতি দিয়ে মিথ্যা মামলা দায়েরের জন্য বাদীকে ভর্ৎসনা করেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল -২ এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও বাদীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে খালাসপ্রাপ্তদের বিষয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানান।
আরও পড়ুন: রংপুরে মেয়েকে জবাই করে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি
২ বছর আগে