জাফর ইকবাল
নতুন পাঠ্যপুস্তকে চুরির অভিযোগ স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ জাফর ইকবালের
প্রখ্যাত লেখক ও শিক্ষাবিদ মো. জাফর ইকবাল এবং অধ্যাপক হাসিনা খান নিজেদের সম্পাদিত ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে চুরির বিষয়বস্তু পাওয়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বইটির সম্পাদনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লেখকরাও তাদের দায়িত্ব স্বীকার করেছেন।
এ বছর থেকে নতুন পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তক 'অনুসন্ধানী পথ' হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাপিয়ে বিতরণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধে, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক শিক্ষামূলক সাইট থেকে এই বইটির কিছু অংশ অনুলিপি করার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: পাঠ্যবইয়ে ভুল থাকলে সংশোধন করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী
তারা বিবৃতিতে বলেছে, ‘বইয়ের এই বিশেষ অংশ এবং ওয়েবসাইটের একই লেখার তুলনা করলে আমাদের কাছে অভিযোগটি সত্য বলে মনে হচ্ছে।
‘যদিও আমরা অধ্যায়ের সেই অংশটি লেখার জন্য দায়ী নই, আমরা স্বীকার করি যে দায়িত্বটি সম্পাদক হিসাবে আমাদের ওপর রয়েছে।’
একটি পাঠ্যপুস্তক লেখার সঙ্গে অনেক লেখক জড়িত যাদের কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার ফলে বইটি প্রকাশিত হয়। বিশেষ করে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে এসব লেখকের কাছ থেকে এক ধরনের দায়িত্ব প্রত্যাশা করা হয় বলে জানান শিক্ষকরা।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে প্রথমবারের মতো ২৭ শিক্ষার্থী পাচ্ছে ডিনস অ্যাওয়ার্ড
‘যে কোনো লেখকের কাজ সম্পর্কে যদি এই ধরনের অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হয় তবে এটি আমাদের পুরো দলের জন্য হতাশা ও হতাশার বিষয়।’
শিক্ষকরা আশ্বস্ত করেছেন যে আগামী সংস্করণে অবশ্যই বইটির প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে।
বইটির একটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ এই বছর প্রকাশিত হয়েছে এবং আসছে শিক্ষাবর্ষ থেকে যথেষ্ট পরিমার্জন ও সম্পাদনার সুযোগ রয়েছে।
বইটির সম্পাদক বলেছেন, ‘উল্লিখিত অভিযোগের পাশে যেকোনো যুক্তিসঙ্গত মতামতকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে এবং পাঠ্যপুস্তকের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বা পরিমার্জন করা হবে।’
আরও পড়ুন: এখন থেকে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা হবে না
১ বছর আগে
গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’ ইতিহাসের এক অসাধারণ দলিল: জাফর ইকবাল
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের আলোকে প্রকাশিত গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’কে ইতিহাসের এক ‘অসাধারল’ দলিল হিসেবে বর্ণনা করেছেন লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
শনিবার অমর একুশে বইমেলায় গ্রাফিক নভেল মুজিবের শেষ দুই খণ্ডের (নবম ও দশম) মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় জাফর ইকবাল বলেন, ‘মুজিব’ গ্রাফিক নভেল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে খুবই অসাধারণ একটি দলিল হয়েছে; এটি শুধু ছোট বাচ্চারা পড়বে তাই নয়, বড় মানুষরা এটা তাদের বাসায় সাজিয়ে রাখতে পারবে।
আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন’ (সিআরআই) প্রকাশিত এ গ্রাফিক নভেলকে একটি বড় ‘পরিকল্পনা’ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, ছোট বাচ্চারা বড় বই পড়তে শেখেনি, কিন্তু ওদের ছবি দেখতে অনেক ভালো লাগে। আমি যখন ছোট ছিলাম, আমারও কমিক পড়তে অনেক ভালো লাগত। আমি মনে করি, এখন বাচ্চারা কমিক পড়তে খুবই পছন্দ করে। কাজেই তাদেরকে টার্গেট করে এই মুজিব কমিকটা প্ল্যান করা হয়েছে। এটা একটা বড় প্ল্যান।
শনিবার বইমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সিআরআইয়ের স্টলের সামনে শেষ দুই পর্বের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ছিলেন লেখক আনিসুল হক, গ্রাফিক নভেলের শিল্পী সৈয়দ রাশাদ ইমাম তন্ময়, কাহিনী বিন্যাস ও সংলাপ লেখক সিদ্দিক আহমেদসহ সহযোগী শিল্পীরা।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে গ্রাফিক নভেল হলেও বাংলাদেশে এটিই ছিল এ ধরনের প্রথম উদ্যোগ। ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ গ্রাফিক নভেল মুজিবের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হয়। এরপর সিআরআই’র উদ্যোগে এর বিভিন্ন পর্ব প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়েছে নবম ও দশম খণ্ড, যার মাধ্যমে শেষ হল এ ধারাবাহিক প্রকাশনার।
এর দশটি খণ্ড একত্রে বই আকারে প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, সাত বছর সময় লেগেছে, ওরা ধৈর্য্য হারায়নি। কাজগুলো খুবই সুন্দর হয়েছে। আমি দেখেছি, প্রথম দিকে ছবিগুলো যেমন হয়েছে, আস্তে আস্তে ছবিগুলো কিন্তু অনেক সুন্দর হয়েছে। আমি অনুরোধ করব, সবগুলো পর্ব একটা বই আকারে বের করতে এবং যে ছবিগুলো ‘রিটাচ’ করা দরকার, সেগুলো যাতে এডিট করা হয়।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে একুশে পদক পাবেন ২৪ বিশিষ্ট নাগরিক
২ বছর আগে
শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে যা বললেন জাফর ইকবাল
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে, তখন শিক্ষকদের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত ছিল যে, খবরদার! তোমরা এটা করতে পারবা না। একজন শিক্ষকও সেটা করেননি। একজন শিক্ষকের এরকম মেরুদণ্ডহীন হওয়ার কোনো কারণ নাই।’
আরও পড়ুন: অনশন ভাঙলেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরাশিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, ‘সারা বাংলাদেশের সমস্ত তরুণ প্রজন্ম তোমাদের পেছনে। সমস্ত মানুষজন তোমাদের পেছনে। তোমরা সুস্থ হও। উদাহরণ তৈরি করো। যে উদাহরণ বাংলাদেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনুসরণ করবে।’শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে ‘দানব’ বলেছেন। সেই ‘দানবের’ কাছে আপনারা শিক্ষার্থীদের রেখে যাচ্ছেন। এই বিষয়টাকে কিভাবে দেখছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, ‘শুনেন, ছাত্রদেরকে আন্ডারএস্টিমেট করবেন না। কে, কাকে, কার কাছে রেখে যাচ্ছি, সেটা সময়েই বলে দেবে।’উপাচার্যের অপসারণ সংক্রান্ত দাবির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার যখন দাবিদাওয়া মেনে নেবেন বলেছেন, তখন দাবির মধ্যে এই দাবিটাও তো পড়ে। কিন্তু সরকারেরও তো নিজস্ব টেকনিক্যাল ব্যাপার থাকে, রাজনৈতিক ব্যাপার থাকে, সেটার জন্য তাদের হয়তো একটা প্রসেস থাকে। গোপালগঞ্জের ভাইস চ্যান্সেলরকে তারা একভাবে সরিয়েছে, অন্য ভাইস চ্যান্সেলরকে অন্যভাবে সরিয়েছে। কাজেই সেটা তাদের ব্যাপার। আমার প্রাইমারি কনসার্ন ছিল, ওদেরকে অনশন থেকে বের করতে পারি কিনা।’আন্দোলনে বহিরাগতদের কোনো ইন্ধন ছিল বা আছে কিনা, এরকম এক প্রশ্নের জবাবে জাফর ইকবাল বলেন, আমি দেখেছি যে, এরা সাধারণ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে কোনো উচ্চভিলাষ নাই। পুলিশ ওদের গায়ে এরকম নির্মমভাবে হাত তুলেছে, কাজেই ওদের মনের ভেতর একটা ক্ষোভ হয়েছে, সংঘত কারণেই। সেজন্যই তারা এই আন্দোলনটা করছে। এর মধ্যে বিন্দুমাত্র বাড়াবাড়ি নাই, অহেতুক কোনো দাবি নাই। ওদের দাবি শতভাগ যৌক্তিক দাবি।’
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি: আন্দোলনরতদের দেখতে ক্যাম্পাসে এমপিউপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি তিন বছর আগে যখন নাকি অবসরে চলে যাই, তখন একটা চিঠি লিখে উনাকে দিয়ে যাই। সেই চিঠিতে আমি বলে দিয়েছিলাম অনেকগুলো। আমি সেখানে লিখেছিলাম স্পষ্ট করে, আপনি যদি এগুলো না করেন, ছাত্রদের এখন যে ক্ষোভ আছে, তা বিক্ষোভে রূপ নেবে। একদম অক্ষরে অক্ষরে আমার কথাটা ফলেছে।’‘মুক্তবুদ্ধির চর্চা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে’ অভিহিত করে শিক্ষার্থীরা একে ‘তালেবানি সিদ্ধান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন। এ বিষয়ে জাফর ইকবাল বলেন, ‘এটা তো অবিশ্বাস্য একটা ব্যাপার যে, একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কাজগুলো বন্ধ হবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্রেংথ ছিল, আমাদের এমন কোনো সংগঠন নাই যেটা নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল না। সেটা যখন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, তখনই বোঝা গেছে, এই মানুষটা আর যাই হোক, উনি একাডেমি বুঝেন না।’শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে ঢাকা থেকে বুধবার ভোর চারটায় ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছান অধ্যাপক জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হক।গত ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। এরপর থেকে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে টানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।এর অংশ হিসেবে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) অনশন শুরু করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ওপর ‘পুলিশি হামলা’র প্রতিবাদে রাবি শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি
২ বছর আগে