ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল
বাংলাদেশে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল শিল্পের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগে প্রতিটি শিল্পই রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আগামীতে পুরোনো প্রযুক্তির পাওয়ার ক্যাবল বা টেলিকম ক্যাবলের চাহিদা কমবে এবং নতুন প্রযুক্তির ক্যাবলের চাহিদা বাড়বে।
তিনি বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকালে খুলনার শিরোমনি এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ ক্যাবল শিল্প লিমিটেড (বাকেশি) পরিদর্শন শেষে প্রতিষ্ঠানটির সম্মেলনকক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ক্যাবল শিল্প লিমিটেড বিভিন্ন প্রজন্মের ক্যাবল উৎপাদন করে। এখানে ক্রমাগত পুরোনো প্রযুক্তির বদলে নতুন প্রযুক্তি প্রয়োগের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। একই সঙ্গে কার্যকর প্ল্যানিং, মার্কেটিং পলিসি গ্রহণ এবং ফাস্ট ডিস্ট্রিবিউটশন ও প্রঅ্যাক্টিভ মার্কেটিং নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তৈয়্যব বলেন, কমিউনিকেশনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্র বিবেচনায় নিলে দেশে পাঁচ লাখ কিলোমিটার ফাইবার অপটিক ক্যাবল নেটওয়ার্ক থাকার প্রয়োজন। কিন্তু দেশে কেবল দেড় লাখ কিলোমিটার ফাইবার নেটওয়ার্ক রয়েছে। আবার বিদ্যমান নেটওয়ার্কের ৭৫ শতাংশই ওভারহেড নেটওয়ার্ক, যা টেলিযোগাযোগ গ্রেডের নয় এবং বিভিন্ন দুর্যোগের সময় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে। যোগাযোগ নেটওয়ার্ককে মানসম্মত ও কম ঝুঁকিপূর্ণ রাখতে সংযোগগুলোকে মাটির নিচে দিয়ে নেওয়া দরকার। আবার সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেবাখাতের পুরাতন ক্যাবল নেটওয়ার্ককে কমন ডাক্ট’র অধীনে আনাসহ চার সরকারি ফাইবার কোম্পানির ফাইবার সমূহের রুটগুলো আন্তঃসংযুক্ত ফাইবার অপটিক ক্যাবল নেটওয়ার্কের (ফাইবার ব্যাংক) অধীনে আনা এখন সময়ের দাবি।
পড়ুন: রোহিঙ্গা সমস্যাকে আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনার কেন্দ্রে নিতে প্রচেষ্টা জোরদার সরকারের
তিনি বলেন, বাসাবাড়িতে একক ফাইবারের মাধ্যমে টিভি ও ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে বর্তমানের ওভারহেড ও আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল অপব্যবস্থার স্থায়ী অবসান দরকার। সবমিলিয়ে বাংলাদেশে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল শিল্পের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও বলেন, খুলনায় অবস্থিত পাওয়ার ও অপটিক ফাইবার ক্যাবল ফ্যাক্টরিটি একটি পরিবেশবন্ধব ও দূষণমুক্ত সবুজ কারখানা। ফলে এর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সার্টিফিকেশন অতি দ্রুত গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলে এখানকার উৎপাদিত পণ্যগুলোর ব্রান্ডভ্যালু বাড়বে। একইসঙ্গে এখানে উৎপাদিত পণ্যের নতুন ও সম্ভাবনাময় বাজার ও ক্রেতা খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ও সার্বিক সহযোগিতা করবে।
এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন প্রয়োজন ও দাবীগুলোর বিষয়ে সরকার ওয়াকিবহাল আছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুত নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, খুলনার শিরোমনি এলাকায় বাকেশি ১৯৭২ সাল থেকে টেলিকম কপার ক্যাবল উৎপাদন করে আসছে। এছাড়াও ২০১০ সাল থেকে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল, ২০১৬ সাল থেকে এইচডিপিই টেলিকম ডাক্ট এবং ২০১৯ সাল থেকে ওভারহেড কন্ডাক্টার পাওয়ার ক্যাবল সহ বর্তমানে সুপার এনামেল উৎপাদন শুরু হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির বাৎসরিক ৫০ হাজার কন্ডাক্টর কিলোমিটার টেলিকম ক্যাবল, ২৫ হাজার কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল, ছয় হাজার পাঁচশত কিলোমিটার এইচডিপিই টেলিকম ডাক্ট এবং ছয়শত মেট্রিকটন ওভারহেড কন্ডাক্টার ও পাওয়ার ক্যাবল উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি ২৮ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করেছে।
মতবিনিময়কালে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম আমিরুল ইসলাম, বাকেশির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ, বাকেশির কর্মকর্তাসহ সিবিএ নেতৃরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী টেলিটক বাংলাদেশ এর খুলনা বিভাগীয় অফিস, পোস্টমাস্টার জেনারেলের কার্যালয় দক্ষিণাঞ্চল ও বিটিসিএল’র বিভাগীয় অফিস পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি দপ্তরগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সেবাপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
তিনি বাংলাদেশ ক্যাবল শিল্প লিমিটেড এবং পোস্টমাস্টার জেনারেলের কার্যালয় দক্ষিণাঞ্চল প্রাঙ্গণে আমের চারা রোপণ করেন।
১০৬ দিন আগে
২০২৫ সালের মধ্যে প্রতিটি গ্রাম ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবলে যুক্ত করা হবে
আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি গ্রামকে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবলে সংযুক্ত করে উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন।
তিনি বলেন, ইন্টারনেটকে সহজ ও সুলভ করার পাশাপাশি এর সচেতনতার ওপরও গুরুত্বারোপও করে ইন্টারনেট সেবাকে পঞ্চম মৌলিক সেবা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে আইএসপিএবিসহ আইসিটি পরিবারকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ই-কমার্সে আস্থা ফেরাতে ফেব্রুয়ারিতে চালু হচ্ছে ইউবিআইডি: পলক
সোমবার আগারগাঁওস্থ আইসিটি টাওয়ারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সভা কক্ষে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ইএসপিএবি পরিচালক জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, আইএসপিএবি’র সভাপতি মো. এমদাদুল হক, আইএসপিএবি’র মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঁইয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক, সহ সভাপাতি আনোয়ারুল আজিম, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, আব্দুল কাইয়্যুম রাশেদ, কোষাধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান, পরিচালক সাকিফ আহমেদ প্রমুখ।
গ্রামকে শহরে পরিণত করতে ‘ডিজিটাল ইকোনমির লাইফ লাইন’ ইন্টারনেট উল্লেখ করে পলক বলেন, বিদ্যুত যে ভাবে ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে, সেভাবে প্রতিটি ঘরে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে চাই। এই লাস্টলাইন সল্যুশনটি আইএসপিএবি’র সদস্যদের মাধ্যমে পৌঁছে দিতে আজ আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজাউল মকছুদ জাহেদীকে প্রধান করে একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। এই কমিটিতে সমন্বয়ক হিসেবে থাকবেন আইএসপিএবি সভাপতি।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্টের সিইওসহ ৪ গ্রেপ্তার
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সকলের কাছে সুলভে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ইন্টারনেট সেবাদাতারা। তাই উদ্ভাবনী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা এক পরিবার হয়ে কাজ করবো। অল্পদিনের মধ্যেই পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলসের অধীনে ২০২৪ সালের মধ্যে গ্রামে গ্রামে ফাইবার অপটিক ক্যাবল পৌঁছে দিতে আইএসপিএবি’র সদস্যদের মাধ্যমে এক লাখ ৯ হাজার এবং ২০২৫ সালের মধ্যে ২০ লাখ কানেক্টিভিটি স্থাপন করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্টারনেট সেবাদাতা সংগঠন আইএসপিএবি’র নবনির্বাচিত কমিটির চারটি প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন।
১৪০৪ দিন আগে