বাসায় ফিরেছেন
বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
লিভার সিরোসিসসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ৮১ দিন থাকার পর মঙ্গলবার রাতে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
তার প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কারণে চিকিৎসকরা ম্যাডামকে (খালেদা) সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুলশানের বাসায় পৌঁছান।
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড জানায়, তার অবস্থা স্থিতিশীল, তবে তিনি এখনও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘তিনি ক্লিনিক্যালি স্থিতিশীল, কিন্তু নিরাময় এবং রোগমুক্ত নয়... করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকায় তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আমরা তাকে আপাতত বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এরপর যদি কোনো সংকট দেখা দেয়, আমরা তাকে আবার হাসপাতালে নিতে প্রস্তুত।’
তিনি জানান, তারা হাসপাতালের চিকিৎসক ও অন্যান্য হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের সম্ভাব্য সব ধরনের চিকিৎসা নিশ্চিত করেছেন।
ডা. শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আমরা যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ার বিশেষজ্ঞসহ বিদেশের পরামর্শকদের সঙ্গে কথা বলেছি। সকলেরই একই মতামত, চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘খালেদার রোগের শেষ চিকিৎসা হলো লিভার প্রতিস্থাপন, কিন্তু তিনি এখন সেই অবস্থানে নেই।’
মেডিকেল বোর্ডের আরেক সদস্য ডা. এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বন্ধ রয়েছে, তবে তার অসুস্থতার জন্য তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া যাচ্ছে না। তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল। আমরা লক্ষ্য করছি যে সারা দেশে করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই এই হাসপাতালের ৩৮০ জনেরও বেশি স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে, মেডিকেল বোর্ড তাকে ছেড়ে দেয়ার এবং আমাদের তত্ত্বাবধানে বাড়িতে তার চিকিত্সা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণের উৎস বন্ধ হয়েছে। তিনি এখন ব্যাপক রক্তক্ষরণে ভুগছেন না। কিন্তু কেউ নিশ্চয়তা দিতে পারে না যে আবার তার বেশি রক্তপাত হবে না।
আরও পড়ুন: ‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে প্রয়োজনে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হবে’
প্রসঙ্গত, ৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বলেছেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ায় তাকে অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হবে।
বিএনপি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন ও আহ্বান জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তবে কয়েকজন মন্ত্রী বলছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন কারাগারে ফিরে নতুন আবেদন না করা পর্যন্ত তার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকে ‘হত্যা মামলার আসামি’ করার হুঁশিয়ারি বিএনপির
২ বছর আগে