জনজীবন স্থবির
চাঁদপুরে মুষলধারে বৃষ্টি, জনজীবন স্থবির
চাঁদপুরে গত ২-৩দিন ধরেই থেমে থেমে বৃষ্টি ও বজ্রপাত অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সারাদিন মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে।
একই সঙ্গে ঝড়ো বাতাসের তীব্রতা এবং পদ্মা-মেঘনা নদীর স্রোত ও ঢেউ বেড়েছে।
জেলা শহরের রাস্তাঘাটের অসংখ্য গর্তে জমে আছে বৃষ্টিরপানি। শহরের ব্যস্ততম কুমিল্লা রোড, ট্রাক রোড ও পুরানবাজার-দোকানঘর রোডে লোকজন ও যানবাহন চলাচল একেবারেই কমে গেছে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ভোর থেকেই বৃষ্টি, বাতাসের মানেরও উন্নতি
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে টানা বৃষ্টির কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও সকাল ১০টার পরে খুলেছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে আবার তা বন্ধ করে ফেলে। অনেকটা ঘর বন্দি হয়ে পড়েছে লোকজন।
তবে উভয় সংকটে পড়েছেন দিনমজুররা। একদিকে আবহাওয়া বৈরী, অন্যদিকে রোজগার না করলে থাকতে হবে অভুক্ত।
সদরের অটোরিকশাচালক নুরুল ইসলাম (৩৫) বলেন, বৃষ্টির কারণে কোনো দিকে যেতে পারছি না। অনেক অটোরিকশাচালকই বৃষ্টির কারণে ঘর থেকেও বের হতে পারছে না।
সদরের বাগাদি ইউনিয়নের বাসিন্দা ও কলা বিক্রেতা আ. রহিম মিজি ও কাওসার খান বলেন, চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এলাকায় এর আগের টানা বৃষ্টিতে মারাত্মক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। কিছুদিন বৃষ্টি কম থাকায় পানি বাড়ি- ঘর থেকে নেমে যায়। এখন আবার আগের অবস্থা - মানে নতুন করে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। আগের বার ফসল ও মাছের খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পুরানবাজারে মেঘনা নদী পাড়ের বাসিন্দা সুখরঞ্জন দাস বলেন, ‘বৃষ্টির জন্য কামে যেতে পারিনি। টানা বৃষ্টি ও বাতাসের তীব্রতায় নদীতে ঢেউ বেড়েছে। আমরাও আতঙ্কিত। কখন যে নদীভাঙ্গন শুরু হয় ! মেঘনাও নদী উত্তাল। গত পরশু শেষ রাতে ৪০/৫০ বার ঠাটা (বজ্রপাত) পড়ে। সেই আতঙ্কে জেলেরা নদীতে নামেনি।’
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ঢাকার বাতাসের মান ‘ভালো’
শহরের ব্যস্ততম পুরান বাজার বাণিজ্যিক এলাকার ব্যবসায়ী মাইনুল ইসলাম ও বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি। দুপুর হলেও অনেকেই ঘর থেকে বের হতে পারছে না। টানা বৃষ্টিতে জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। সড়কও অনেকটা ফাঁকা। ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমেছে ধস।
চাঁদপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনে ও দূর পাল্লার বাসেও যাত্রী সংখ্যা খুবই কম বলে জানান বাসচালক ফারুক দেওয়ান।
একই কথা জানালেন বাস মালিক ফেরদাউস ও শফিক ভুইয়া ।
এদিকে, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চাঁদপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যয় শুরু হয়েছে। শহরে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬- ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। গভীর রাতেও নিয়মিত চলে লোডশেডিং।
ওদিকে চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. শোয়েব ইউএনবিকে বলেন, শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা থেকে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত চাঁদপুরে ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশজুড়ে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা: আবহাওয়া অধিদপ্তর
২ মাস আগে
বৃষ্টি-শীতে পঞ্চগড়ের জনজীবন স্থবির
শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ায় কাঁপছে পঞ্চগড়বাসী। জেলায় তাপমাত্রা বেড়ে গেলেও সকাল থেকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে শুক্রবার সকাল ৯টায় ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আর ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যাচ্ছে। এটি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
আরও পড়ুন: বজ্রসহ বৃষ্টিতে ভিজল দেশের বিভিন্ন জায়গা
ভোর থেকে কুয়াশা না থাকলেও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। সূর্য্যের মুখ দেখা যায়নি। হাটবাজার রাস্তাঘাটে মানুষজনের চলাচল কমে গেছে। যানবাহনের সংখ্যাও ছিল কম। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ ছাতা নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে বের হয়েছে। অনেককে রেইনকোর্ট নিয়ে বের হয়েছে।
জেলা শহরের মসজিদপাড়া এলাকার গৃহিনী সালমা বেগম জানান, একদিকে বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া অন্যদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। ঠিকমতো রান্না করতে পারছি না। পানির অভাবে কাজ করা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
জেলা শহরের নতুনবস্তি এলাকার রমজান আলী জানান, ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির ঘর থেকে বের হতে পারছি না। কাজকর্ম নেই। আয় উপার্জনও নেই। খুব সমস্যায় পড়েছি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ জানান, বৃষ্টিপাতের কারণে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় সকালে তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
আরও পড়ুন: আবারও দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে
২ বছর আগে