ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা
৩ পার্বত্য জেলা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, পর্যটন খাতে ধস
রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভ্রমণে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতে। পর্যটক ভ্রমণ না করায় প্রশাসনের দেওয়া সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ এবং হতাশা ব্যক্ত করেছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাঙ্গামাটিতে ছুটে আসেন পর্যটকরা। আর দুর্গাপূজাকে ঘিরে ৩ পার্বত্য জেলায় হোটেল মোটেলগুলোতে অনেক বুকিং পেয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতিতে বুকিং বাতিল হওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ব্যবসায়ীরা।
রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের বোট ঘাট ইজারাদার রমজান বলেন, ঝুলন্ত সেতুটি তলিয়ে যাওয়ায় পর্যটক আসছে না। এরপর প্রায় এক মাসের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা। এতে করে আমরা কীভাবে সংসার চালাব বুঝতে পারছি না।
আরও পড়ুন: সাজেক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়াল জেলা প্রশাসন
হোটেল স্কয়ার পার্কের ব্যবস্থাপক মো. সুলতান বলেন, সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাঙ্গামাটির সকল হোটেল মোটেল পর্যটকশূন্য।
তিনি আরও বলেন, যেসব বুকিং ছিল তাও বাতিল হয়ে গেছে। আমরা সরকারের কাছে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সুনজর দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও বিভিন্ন কারণে পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমেছে।
তিনি আরও বলেন, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে কোনো পর্যটক আসছে না। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় পর্যটন ব্যবসা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন।
আশাকরি প্রশাসন থেকে যদি নিশেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়, তাহলে আবারও এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব বলে জানান আলোক বিকাশ চাকমা।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, রাঙ্গামাটির সার্বিক পরিস্থিতি ও পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় পর্যটকদের ভ্রমণ না করার জন্য আমরা আহ্বান করেছি। এই সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে এবং পর্যটকরা জেলাগুলোতে ভ্রমণ করতে পারবেন।
৩ পার্বত্য জেলায় ভ্রমণে বিরত থাকার ব্যাপারে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটকদের ভ্রমণে বিরত থাকার যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা দ্রুত তুলে নেওয়া হবে। এবিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
এদিকে ৩ পার্বত্য জেলায় পর্যটকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার উদ্বেগ প্রকাশ এবং অবিলম্বে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও ৪ দফা দাবি জানিয়ে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ১০টি সংগঠন রাঙ্গামাটি রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, হাউজ বোর্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, আবাসিক হোটেল মালিক সমিতি, পর্যটন শিল্প সমবায় সমিতি লিমিটেড টোয়ার, পর্যটন ঘাট টুরিস্ট বোট মালিক সমিতি, রিজার্ভ বাজার ঘাট টুরিস্ট বোট মালিক সমিতি, সমতা ঘাট টুরিস্ট বোট মালিক সমিতি, রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি ও রাঙ্গামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় আমরা গভীরভাবে উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করছি। শারদীয় দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে পর্যটকরা যখন দেশব্যাপী ভ্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তখন এই ধরনের ঘোষণা ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের কাছে পার্বত্য জেলাগুলো ভ্রমণের বিষয়ে অত্যন্ত নেতিবাচক বার্তা বহন করছে। ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের গড়ে ওঠা পর্যটন খাতকে আবারও খাদের কিনারায় নিয়ে যাবে। এ কারণে আমরা পেশা ও বিনিয়োগ বিষয়ে গভীর অনিশ্চয়তায় ভুগছি।
তাই দ্রুত পর্যটকদের ভ্রমণ নিরবিচ্ছিন্ন রাখা ও স্থানীয় পর্যটন উদ্যোক্তা এবং এই খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বার্থ সুরক্ষার কথা বিবেচনায় আনা অত্যন্ত প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: রাজশাহীর পুঠিয়া মন্দির কমপ্লেক্স ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
দিনাজপুরের ঐতিহাসিক কান্তজীর মন্দির ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
১ মাস আগে
সাজেক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়াল জেলা প্রশাসন
পাহাড়ের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রাঙ্গামাটির সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত আরও তিনদিন পযর্টকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন।
রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জোবাইদা আক্তারের সই করা এক চিঠিতে বলা হয়, রাঙ্গামাটি জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন দিন সাজেক পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমনে পযর্টকদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ভ্রমণ না করার এ সময়সীমা আরও তিন দিন বাড়ানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অনুসারে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাজেক পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমনে পযর্টকদের নিরুৎসাহিত করা হয়।
আরও পড়ুন: সাজেক থেকে ফেরার পথে চালকসহ তিন পর্যটককে অপহরণের চেষ্টা
সম্প্রতি খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রদায়িক অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে রাঙ্গামাটির সাজেকে বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়া পর্যটকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনকে অনেক বেগ পেতে হয়। এখনও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দুই দফা সময়সীমা বাড়িয়ে পর্যটকদের সাজেক পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য, বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক পর্যটন এলাকায় বেড়াতে গিয়ে অবরোধের কারণে সাজেক ভ্যালিতে আটকা পড়ে প্রায় দেড় হাজার পর্যটক ও ৫০০ ড্রাইভার-কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা ও রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালির সৃষ্ট বিশৃঙ্খলায় ও পাহাড়ি ছাত্র-জনতার ডাকা ৭২ ঘণ্টার অবরোধের কারণে পর্যটক ও ড্রাইভারর-স্টাফরা এই সমস্যায় পড়েন। এ জন্য রিসোর্ট কটেজ মালিকদের পক্ষ থেকে তাদের থাকার জন্যে দেওয়া হয় ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট। এছাড়াও তিন দিনের অবরোধের কারণে পর্যটন এলাকায় দেখা দেয়, খাবার পানি, গ্যাস ও খাদ্য সংকট। তাই সাম্প্রদায়িক সংকটের সময়ে সার্বিক পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিবেচনা করে পর্যটকদের সেখানে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীর সহায়তায় খাগড়াছড়িতে ফিরলেন সাজেকে আটকে পড়া ১৪০০ পর্যটক
১ মাস আগে
বান্দরবানের ৪ উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ৮ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি
নিরাপত্তাজনিত কারণে বান্দরবানের ৪টি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ৮ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এনিয়ে চতুর্থ বারের মতো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলো।
শুক্রবার বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি স্বাক্ষরিত এক গণ বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে এ বিষয়টি জানানো হয়।
উপজেলাগুলো হলো- রুমা,রোয়াংছড়ি,আলীকদম ও থানচি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টহল কার্যক্রম পরিচালনা এবং গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে রোয়াংছড়ি, রুমা,আলীকদম ও থানছি উপজেলায় স্থানীয় এবং বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ৫ নভেম্বর থেকে ৮ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের আরও ২ উপজেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা
এর আগে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। পরে রুমা ও থানচিসহ ৪টি উপজেলায় গত ২৩ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর এবং ৩১ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য গত ১০ অক্টোবর থেকে পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হয়। এ পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ দেশিয় অস্ত্রসহ ৭ জঙ্গি এবং ৩ জন স্থানীয় সন্ত্রাসীকে ধরতে সক্ষম হয়েছে যৌথ বাহিনী। অভিযানের অংশ হিসেবে সন্দেহভাজনদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে ভ্রমণের ওপর প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে বান্দরবান। শহরের আবাসিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট গুলোর বেশির ভাগই ফাঁকা। পর্যটকবাহী গাড়ি গুলো নির্ধারিত স্থানে পড়ে আছে। শ্রমনির্ভর শহরের ৫০ শতাংশ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে বুনো হাতির আক্রমণে নিহত ২, আহত ১
বান্দরবানে ৪ উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বাড়ল
২ বছর আগে
ইউপি নির্বাচন: ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি সাজেক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা
সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন উপলক্ষে আগামী ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফুল ইসলাম বলেন, ৭ ফেব্রুয়ারি সাজেক ইউনিয়নের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ব্যতীত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এ সময়ে সাজেকে কোনো পর্যটক আসা-যাওয়াও সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি এই দুই দিন সাজেকের কটেজ-রিসোর্ট বন্ধ রাখতে রিসোর্ট মালিক সমিতিকে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটকে কেন্দ্র করে সব ধরনের ঝুঁকি এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এই বিষয় সাজেকের কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জেরী লুসাই জানান, তারা উপজেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশনা পেয়ছেন এবং সমিতির আওতাধীন মালিকদের ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি সব কটেজ-রিসোর্ট বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সপ্তম ধাপে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটির তিন উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে ভোট হবে।
আরও পড়ুন: সাজেক সড়কে পর্যটকদের গাড়িতে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের হামলা, আটক ৩
২ বছর আগে