রূপপুর
কাজে ফেরেননি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঞ্চালন প্রকল্পের ভারতীয় কর্মকর্তারা
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে বিদ্যুৎ স্থানান্তর করতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রকল্পগুলোর দায়িত্ব পাওয়া ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখনও কাজে ফেরেননি, যা এই প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করছে।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘কেইসি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ও ট্রান্সরেল লাইটিং লিমিটেডের (টিটিএল) কয়েকজন কর্মী ফিরে এলেও লারসেন অ্যান্ড টুব্রো লিমিটেড (এল অ্যান্ড টি) বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কেউ এখনও ফিরে আসেননি।’
এই কর্মকর্তা আরও জানান, ফিরে আসা কর্মীদের বেশিরভাগই কেইসির স্থানীয়ভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অস্থায়ী কর্মী এবং মধ্যম স্তরের কর্মকর্তা কিন্তু এখনও কোনো সিনিয়র কর্মকর্তা সাইটে ফিরে আসেননি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে শুধু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই নয়, শান্তিপূর্ণ পরমাণু শিল্পও গড়ে তুলেছে রাশিয়া: পুতিন
তবে পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এল অ্যান্ড টির ভারতীয় কর্মীরা ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে প্রকল্পগুলোতে পুনরায় যোগ দেবেন বলে আশা করছেন তারা। তিনি বলেন, 'আমরা অপেক্ষা করছি তারা আবার কাজ শুরু করবে।’
গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতীয় কোম্পানিগুলোর সব কর্মী বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যায়। এখন তাদের ফিরিয়ে আনতে বিলম্ব হচ্ছে। যার ফলে ভারতীয় ঠিকাদারদের দায়িত্বে থাকা সঞ্চালন প্রকল্পগুলো স্থবির হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে, বাংলাদেশ জুড়ে ১৭টি সঞ্চালন প্রকল্পে দায়িত্বে রয়েছে ভারতীয় কোম্পানিগুলো। দায়িত্বপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে- এল অ্যান্ড টি, ট্রান্সরেল ও কেইসি। এই সঞ্চালন প্রকল্পগুলোর বেশ কয়েকটি চলতি বছরের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করতে যাওয়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের কর্মকর্তা বলেন, 'ভারতীয় ঠিকাদার কর্মীরা আকস্মিক চলে যাওয়ায় এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ভারতীয় অন্যতম শীর্ষ ঠিকাদার লারসেন অ্যান্ড টুব্রোকে পাবনার রূপপুরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ স্থানান্তরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য প্রধান প্রধান চুক্তিগুলো দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ৪০০ কেভি ও ২৩০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপনের দায়িত্ব পেয়েছে যেগুলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের গ্রিড সিংঙ্ক্রোনাইজেশন এবং টেস্টিং প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর কাজ ২০২৫ সালের প্রথম দিকে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
প্রাথমিকভাবে এক্সিম ব্যাংক থেকে ৮ হাজার ২১৯ কোটি টাকা, বাংলাদেশ সরকারের ১ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা এবং পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের ১ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা অর্থায়নে সঞ্চালন প্রকল্পটিতে আনুমানিক ১০ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসি জানায়, সঞ্চালন প্রকল্পে পাঁচটি বড় অংশ রয়েছে- ১৩ কিলোমিটার রিভার ক্রসিংসহ ৪৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন; ৭ কিলোমিটার রিভার ক্রসিংসহ ২০৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন; ৪০০ কেভি পাঁচটি বে এক্সটেনশন; ২৩০ কেভি চারটি বে এক্সটেনশন এবং ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্রিকোয়েন্সি ড্রপ সুরক্ষা, সুরক্ষা ব্যবস্থা, জরুরি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ব্যবস্থার গুণগত উন্নয়ন।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হতে লাগতে পারে আরও এক বছর
১ মাস আগে
রূপপুর দ্বিতীয় পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণে রোসাটমকে প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকা, ২ এপ্রিল (ইউএনবি)-রূপপুরে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার জন্য রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু সংস্থা রোসাটমকে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচোভ গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা রোসাটমকে বলেন, চলমান প্রকল্প শেষ হলে রূপপুরে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছে বর্তমান সরকার।
তিনি বলেন, নতুন দুটি ইউনিট স্থাপনের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে কারিগরি জরিপ করা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের জ্বালানি বর্জ্য রাশিয়ায় ফেরত নেওয়ার সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এডিবির আরও সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী
রোসাটমের মহাপরিচালক প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদিত পারমাণমিক জ্বালানি বর্জ্য রাশিয়ান ফেডারেশনকে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে রাশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সব আনুষ্ঠানিকতা যথাসময়ে সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দেন।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পারমাণবিক জ্বালানি বর্জ্য রাশিয়ায় ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ইতোমধ্যে ঢাকা ও মস্কোর মধ্যে একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় চুক্তি সই হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় বিশেষ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহায়তার জন্য রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল এবং তা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় রাশিয়ার সহায়তা এবং পরবর্তীতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে সহায়তার কথা স্মরণ করেন তিনি।
পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।
রোসাটমের মহাপরিচালক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে জানান।
তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ২০২৫ সালের মধ্যে উৎপাদনে যাবে এবং জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে।
তিনি আরও বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় নতুন দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট (ইউনিট-৩ ও ইউনিট-৪) নির্মাণের জন্য রুশ সরকারের কাছে প্রস্তাব করেন তিনি।
মহাপরিচালক বলেন, প্রথম দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ শেষ হলেই নতুন ইউনিট-৩ ও ইউনিট-৪ এর নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বিদ্যমান পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর সম্প্রসারণ আর্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে এবং কারিগরি ও পারমাণবিক নিরাপত্তার আলোকে অধিকতর লাভজনক ও যুক্তিসঙ্গত, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতও।
তিনি বলেন, প্রকল্পে বাংলাদেশ ও রাশিয়ানসহ প্রায় আড়াই হাজার কর্মী কাজ করছেন। একই সঙ্গে তারা দক্ষতাও অর্জন করেছেন।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যান্য পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে বাংলাদেশের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে রোসাটমের মহাপরিচালকের প্রতি আহ্বান জানান।
রোসাটমের মহাপরিচালক বলেন, মহামারি ও নিষেধাজ্ঞার কারণে কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকলেও কাজ স্বাভাবিক গতিতে চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তিগতভাবেই প্রতিবন্ধকতা এড়ানো হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
বর্তমানে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিটের (১২০০ x ২ = ২৪০০ মেগাওয়াট) নির্মাণকাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
চলতি বছরের ডিসেম্বরে প্রথম ইউনিট চালু হবে। ইউনিট-১ ও ইউনিট-২ থেকে ২০২৫ ও ২০২৬ সালে বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরও শক্তিশালী করতে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণদের প্রতি আহ্বান
৭ মাস আগে
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের 'গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি'তে রাশিয়ার রোসাটম থেকে ইউরেনিয়ামের নতুন ব্যাচ গ্রহণ
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) আগামী বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রোসাটমের কাছ থেকে ইউরেনিয়ামের নতুন ব্যাচ গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছে সরকারি সূত্র।
সূত্র জানায়, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ আনুষ্ঠানিকভাবে রূপপুর প্রকল্পে কর্তৃপক্ষের কাছে জ্বালানি হস্তান্তর করবেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেবেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন বলেন, গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান দেশে পৌঁছেছে
তিনি ইউএনবিকে বলেন, 'ঐতিহাসিক এই মুহূর্ত উপলক্ষে আমরা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’
এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের পারমাণবিক জ্বালানি ইউরেনিয়ামের প্রথম ব্যাচ বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়।
রাশিয়া থেকে একটি বিশেষ এয়ার কার্গোর মাধ্যমে ইউরেনিয়ামের চালানটি ঢাকায় এসে পৌঁছায় এবং পরদিন কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সড়কপথে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দে নিয়ে যাওয়া হয়।
রাশিয়ার একটি কারখানা থেকে একটি বিশেষ বিমানে করে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পারমাণবিক জ্বালানি আনা হয়।
রাশিয়ার নভোসিবির্স্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্ল্যান্টে (এনসিসিপি) এই জ্বালানি উৎপাদিত হয়। এটি রোসাটমের জ্বালানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তেভেলের সহায়ক প্রতিষ্ঠান।
দুই ইউনিট বিশিষ্ট ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রোসাটম।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লিটি ২০২১ সালের অক্টোবরে স্থাপন করা হয়েছিল এবং দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য রিয়্যাক্টরটি ২০২২ সালের অক্টোবরে স্থাপন করা হয়েছিল।
সরকার ২০০৯ সালে আরএনপিপি প্রকল্প স্থাপনের পরিকল্পনা করে এবং ২০০৯ সালের ১৩ মে রাশিয়ার সঙ্গে "পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার" বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে।
২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে নির্মাণকাজ সম্পাদনের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলারের রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণসংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়।
রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২০১৫ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের সাধারণ চুক্তি (জিসি) করে সরকার।
বাংলাদেশ ২০১৬ সালের জুলাই মাসে আরএনপিপির জন্য ১১ দশমিক ৩৮৫ বিলিয়ন ডলারের রাশিয়ান ঋণ পাওয়ার জন্য দেশটির সঙ্গে একটি ক্রেডিট চুক্তি সই করে। প্রকল্পের ব্যয়ের ৯০ শতাংশ এই ঋণ থেকে আসা।
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় রূপপুরে পৌঁছাল ইউরেনিয়াম
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিট এবং ২০২৫ সালের জুলাইয়ে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. এম শওকত আকবর বলেন, আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে আরএনপিপির প্রথম ইউনিট এবং ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হবে বলে আশা করছে সরকার।
রূপপুরে ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন আগামী বছর থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বিদ্যুৎ বিভাগ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এখনো বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্ভাব্য শুল্ক নিয়ে অন্ধকারে রয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্ভাব্য বিদ্যুতের দাম নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের (বিএইসি) সঙ্গে বিপিডিপির কর্মকর্তারা বেশ কয়েকবার বৈঠক করলেও তারা এ বিষয়ে স্পষ্ট চিত্র পাননি।
বিএইসি আরএনপিপি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে এবং বিপিডিবি একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় রাশিয়ার সহায়তায় প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ কিনবে।
তবে বিপিডিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বিএইসি'র সঙ্গে আলোচনা ও সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তারা প্রাথমিক হিসাব করেছেন এবং আরএনপিপির প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ১০ টাকার কম হবে না।
কিছু স্থানীয় বিশেষজ্ঞের গণনা অনুসারে আরএনপিপি প্রকল্পের বিদ্যুতের শুল্ক শূন্য দশমিক শূন্য ৮ থেকে শূন্য দশমিক ১০ ডলার (৮-১০ সেন্ট) অতিক্রম করবে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সাবেক সদস্য ও দেশের অন্যতম বিদ্যুৎ শুল্ক বিশেষজ্ঞ মিজানুর রহমান বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বিদ্যুতের দাম হবে ০.০৮৫ ডলারের (৮.৫ সেন্ট) বেশি।
আরও পড়ুন: বিশেষ নিরাপত্তায় রূপপুর যাচ্ছে ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান
১ বছর আগে
সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় রূপপুরে পৌঁছাল ইউরেনিয়াম
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান পৌঁছেছে পাবনার ঈশ্বরদীতে অবস্থিত রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে।
এর আগে সড়ক পথে আনার জন্য ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে শিথিল করা হয়। বন্ধ রাখা হয়েছে বাস চলাচল।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী।
আরও পড়ুন: বিশেষ নিরাপত্তায় রূপপুর যাচ্ছে ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান
পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার ভোরে ঢাকা থেকে সড়কপথে রওনা হয় ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িবহর। পথে গাজীপুরে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে কিছুক্ষণ থেমে থাকে। পরে সেখান থেকে ৭টার দিকে গাড়িবহর পাবনার দিকে রওনা দেয়।
এদিকে ইউরেনিয়াম নিয়ে আসার জন্য সড়কপথে ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা। ঢাকা থেকে রূপপুর পর্যন্ত সড়কে ফাঁকে ফাঁকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে পুলিশি তল্লাশি চৌকি বসানো হয়। পাবনা-ঢাকা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী জানান, যেহেতু পাবনা-ঢাকা রুটে অনেক সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। এজন্য যানজট নিয়ন্ত্রণে ও নিরাপত্তার স্বার্থে শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়। তবে আরিচা-কাজিরহাট হয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় যানচলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাশিয়া থেকে ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দরে আসে ইউরেনিয়ামের প্রথম এই চালান। শুক্রবার রূপপুরে ইউরেনিয়াম এসে পৌছালেও রূপপুর প্রকল্পের কর্তৃপক্ষের কাছে আগামী ৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে এই ইউরেনিয়াম জ্বালানি হস্তান্তর করবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের মহাপরিচালক রোসাটম আলেক্সি লিখাচেভ।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। রাশিয়া থেকে ঋণ সহায়তা পেয়েছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, ২০২৪ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুর। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে। দুটি ইউনিটে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে মোংলায় বিদেশি জাহাজ
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান দেশে পৌঁছেছে
১ বছর আগে
বিশেষ নিরাপত্তায় রূপপুর যাচ্ছে ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান
বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পারমাণবিক জ্বালানি ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান পাবনার রূপপুরে যাচ্ছে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে চালানটি বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা অতিক্রম করে।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান দেশে পৌঁছেছে
টাঙ্গাইল হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে সকাল থেকে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এসপি কায়সার বলেন, যান চলাচল বন্ধের কারণে নিয়মিত যাত্রীদের অসুবিধা সত্ত্বেও, তারা দীর্ঘ অসুবিধায় পড়েননি, কারণ বহরটি অতিক্রম করার পরে দ্রুত ট্র্যাফিক ব্যবস্থা পুনরায় স্বাভাবিক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সজাগ রয়েছেন।
আরও পড়ুন: রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে মোংলায় বিদেশি জাহাজ
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি আমদানিতে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ গ্যারান্টি: কর্মকর্তা
১ বছর আগে
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে মোংলায় বিদেশি জাহাজ
রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি নিয়ে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী ‘এমভি সাপোডিলা’ জাহাজ।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় বন্দরের আট নম্বর জেটিতে জাহাজটি নোঙর করে। এ জাহাজে রাশিয়া থেকে ৩ হাজার ৫৪৫ মেট্রিক টন মেশিনারিজ পণ্য আমদানি করা হয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর মালামাল নিয়ে বিদেশি জাহাজ
এম ভি সাপোডিলা জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ইন্টারপোর্ট শিপ এজেন্ট লিমিটেডের সিনিয়র ব্যবস্থাপক অসিম সাহা জানান, গত ১৬ জুলাই জাহাজটি রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বন্দর থেকে ৯৩৪ প্যাকেজের ৩ হাজার ৫৪৫ মেট্রিক টন মেশিনারিজ পণ্য নিয়ে ছেড়ে আসে।
তিনি আরও বলেন, দুপুরে বন্দর জেটিতে নোঙর করার পর জাহাজ থেকে শ্রমিকরা পণ্য খালাস শুরু করেন। চার দিনের মধ্যে এসব পণ্য সম্পূর্ণ খালাস করে সড়ক পথে তা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। সর্বশেষ গত ২৬ জুলাই রুশ জাহাজ ‘এমভি ইসানিয়া'য় ৪৪২ প্যাকেজের ১ হাজার ২৭০ মেট্রিকটন মেশিনারিজ পণ্য আসে।
আরও পড়ুন: রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেশিনারিজ নিয়ে মোংলায় বিদেশি জাহাজ
বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর মালামাল নিয়ে বিদেশি জাহাজ মোংলায়
১ বছর আগে
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হতে লাগতে পারে আরও এক বছর
২০২৪ সালের জুলাই মাসে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরএনপিপি) ১২০০ মেগাওয়াট প্রথম ইউনিটের কার্যক্রম শুরু করা কথা রয়েছে। এই সময়সীমা পূর্ণ হতে আর মাত্র ১০ মাস বাকি রয়েছে।
তবে বিদ্যুৎ খাতের কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় ট্রান্সমিশন অবকাঠামো-সম্পর্কিত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন অনেকটা বাকি থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
২৪০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের প্রথম ১২০০ ইউনিট চালুর মাত্র ১০ মাস আগে এসে কর্মকর্তারা এখন প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করার জন্য আরও এক বছর বা আরও কিছুটা বেশি সময় প্রয়োজন বলে মনে করছেন।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বিএইসি) এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) উভয় সূত্র জানিয়েছে, আগামী বছরের জুলাইয়ের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ শেষ হলেও প্ল্যান্টে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সারাদেশে গৃহস্থালি বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সঞ্চালন লাইনের অভাবে এটি কাজে লাগবে না।
বিএইসি-কে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, পিজিসিবি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ অপসারণ ও সঞ্চালনের কাজ করবে।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত
এই প্রথম তারা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের সঞ্চালনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে।
পিজিসিবি-র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউএনবিকে বলেছেন, ‘আরএনপিপি প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য আমাদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করতে আমরা তিনটি বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছি।’
তিনি যে তিনটি চ্যালেঞ্জের উল্লেখ করেছেন সেগুলো হলো- নদী ক্রসিংলাইন নির্মাণ, সাবস্টেশন স্থাপন ও ফ্রিকোয়েন্সি সমন্বয়।
ওই কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের জন্য দুটি নদী ক্রসিং প্রয়োজন—যমুনা নদীর ওপর দিয়ে ৯ কিলোমিটার এবং পদ্মার ওপর দিয়ে ৭ কিলোমিটার।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি পিজিসিবি এই বিষয়ে দুটি পৃথক প্রকল্প হাতে নিয়েছে এবং প্রকল্পগুলো শেষ করতে কমপক্ষে দুই বছর সময় লাগবে।’
তিনি আরও বলেন, আরএনপিপি থেকে বিদ্যুৎ ঢাকায় আসবে ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন ডাবল সার্কিট লাইনের মাধ্যমে। যা ধামরাইয়ে একটি নতুন ২৩০/১৩২ কেভি গ্রিড-সাবস্টেশনের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি একটি ফার্মকে ট্রান্সমিশন লাইন বসানোর চুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং এর কাজ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হতে প্রায় দুই বছর সময় লাগবে।
পিজিসিবি’র আরেকজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে ইউএনবিকে বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে আরএনপিপি প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালন সিস্টেমে ফ্রিকোয়েন্সি বজায় রাখা। কারণ এটি হবে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের বিদ্যুৎ, যেখানে সঞ্চালন ও সরবরাহ নেটওয়ার্কে সবসময় স্থিতিশীল চাহিদা থাকবে।’
তিনি বলেন, প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনা করে পিজিসিবি এ বিষয়ে কাজ করার জন্য রাশিয়া থেকে একজন পরামর্শক নিয়োগ করে। কিন্তু ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে ওই পরামর্শদাতা হঠাৎ কাউকে না জানিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান।
তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ের সমাধান খুঁজতে বর্তমানে একটি উচ্চ পর্যায়ের দল রাশিয়া সফর করার পরিকল্পনা করছে।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান আরএনপিপি থেকে সময়মতো বিদ্যুৎ অপসারণ ও সঞ্চালন শুরু করার বিষয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তার কথা স্বীকার করে ইউএনবিকে বলেছেন, প্রয়োজনীয় ট্রান্সমিশন অবকাঠামো ২০২৪ সালের জুলাই মাসের মধ্যে প্রস্তুত হবে কি না এ বিষয়ে তার মন্ত্রণালয় এখনও অন্ধকারে রয়েছে।
আরও পড়ুন: রূপপুর এনপিপির ইউনিট-২ এর প্রধান কুল্যান্ট পাইপলাইন ঝালাই শেষ: রোসাটম
পিজিসিবি-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া অফিসিয়াল তথ্যের মাধ্যমে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, আরএনপিপি থেকে বিদ্যুৎ অপসারণ নিশ্চিত করতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একীভূতকরণ ও নিরাপদ পরিচালনার জন্য এবং বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার গুণগত মানোন্নয়নের জন্য ১০ হাজার ৯৮১ দশমিক ৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফর পাওয়ার ইভাকুয়েশন ফ্যাসিলিটিস অব রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট’-শীর্ষক একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল।
এই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে-১৩ কিলোমিটার নদী ক্রসিংসহ একটি ৪৬৪ কিলোমিটার ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ এবং ৭ কিলোমিটার নদী ক্রসিংসহ একটি ২০৫ কিলোমিটার ২৩০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন, চারটি ৪০০ কেভি বে এক্সটেনশন এবং পাঁচটি ২৩০ কেভি বে এক্সটেনশন।
ফ্রিকোয়েন্সি কন্ট্রোল ও ফ্রিকোয়েন্সি ড্রপ প্রোটেকশন, প্রোটেকশন সিস্টেম, ইমার্জেন্সি কন্ট্রোল সিস্টেম এবং ‘কোয়ালিটেটিভ আপগ্রেডেশন অব বাংলাদেশ পাওয়ার সিস্টেম’ সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কাজগুলো বাস্তবায়ন করাও এই প্রকল্পের অংশ।
ওয়েবসাইটের একটি হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে পুরো প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এবং বরাদ্দ দেওয়া অর্থের ৪৮ শতাংশ বিতরণ করা হয়েছে।
পিজিসিবির একজন কর্মকর্তা জানান, ৪৬৪ কিলোমিটার ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইনের ১৩ কিলোমিটার নদী ক্রসিংয়ের মধ্যে- ১৫০ কিলোমিটার রূপপুর-ঢাকা, ১৫৪ কিলোমিটার রূপপুর-গোপালগঞ্জ, ৯০ কিলোমিটার রূপপুর-বগুড়া এবং ৫১ কিলোমিটার কালিয়াকৈর-আমিনবাজার সঞ্চালন লাইন নিয়ে গঠিত।
২০৫ কিলোমিটার ২৩০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইনের ৭ কিলোমিটার নদী ক্রসিংয়ের মধ্যে ১৫৮ কিলোমিটার রূপপুর-ঢাকা এবং ৮১ কিলোমিটার রূপপুর-বাঘাবাড়ি লাইনের অংশ রয়েছে।
পিজিসিবি কর্মকর্তারা জানান, জমির ওপর সঞ্চালন লাইন স্থাপনের অগ্রগতি প্রায় ৭০ শতাংশ হলেও সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং দিক নদী পারাপার নির্মাণের কাজও শুরু হয়নি।
আরও পড়ুন: রূপপুর পাওয়ার প্ল্যান্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন
১ বছর আগে
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত
রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১২০০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট আগামী বছর থেকে উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিপিডিবি বিদ্যুতের সম্ভাব্য শুল্ক নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয়।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিপি) কর্মকর্তারা প্ল্যান্টের সম্ভাব্য বিদ্যুৎ শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের (বিএইসি) সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠকে বসেন। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য পাননি।
বিএইসি ২৪০০ এমডব্লিউ আরএনপিপি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং বিপিডিবি একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় রাশিয়ার সহায়তায় নির্মাণ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনবে।
আরও পড়ুন: চলতি মাসে আরও ২০০ মেগাওয়াট ডিজেলচালিত বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করবে সরকার
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বিএইসির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা বিপিডিবির কিছু কর্মকর্তার বরাতে বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের তথ্য জানানোর ব্যাপারে আরএনপিপি কর্মকর্তাদের মধ্যে খুবই অনীহা দেখা যায়।
তিনি বলেন, ‘খরচের সঠিক তথ্য জানা না থাকলে কেন্দ্রের বিদ্যুতের শুল্ক গণনা করা সত্যিই কঠিন।’
তিনি আরও বলেন, বিএইসি কর্মকর্তারা প্ল্যান্টের প্রয়োজনীয় তথ্য ও খরচ সম্পর্কে জানাতে ইচ্ছুক নন।
‘ইস্যুটি খুবই সংবেদনশীল’ হওয়ায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিপিডিবি কর্মকর্তারা বিএইসিকে তাদের খরচের কিছু তথ্য যথাযথ নথিসহ জানাতে বলেছিলেন। বিশেষ করে বিদেশি ঋণ, সুদ, পরিশোধের সময়সূচি, জ্বালানি সরবরাহের খরচ, নির্দিষ্ট খরচ, পরিচালনা ব্যয় এবং আরএনপিপির প্রতিষ্ঠা খরচ।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিএইসি কর্মকর্তারা এই তথ্যগুলো বিপিডিবিকে জানায়নি।’
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেছেন, বিপিডিবি ও বিএইসি উভয়ই শুল্ক সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা করছে।
তিনি বলেন, আরএনপিপির প্রথম ইউনিটটি ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিক থেকে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি ইউএনবিকে বলেছেন, ‘সুতরাং, শুল্ক বিষয়ক সমাধানের জন্য এখনও যথেষ্ট সময় আছে এবং আমরা সেই সময়ের আগেই একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর ব্যাপারে আশাবাদী।’
বিপিডিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, তারা বিএইসির সঙ্গে আলোচনা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রাথমিক হিসাব করেছেন। সে হিসেবে আরএনপিপির প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের শুল্ক ১০ টাকার কম হবে না।’
ওই কর্মকর্তা বলেছেন, প্রথম থেকেই লেভেলাইজড ট্যারিফ বা বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের সম্ভাব্য উৎপাদন খরচ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে।
আরএনপিপি প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে এর কর্মকর্তারা বলেছিলেন, শুল্ক হবে প্রায় শূন্য দশমিক ০৪ ডলার বা ৪ সেন্ট। অর্থাৎ প্রতি কিলোওয়াট ঘন্টা ৩ টাকা ৫০ পয়সা, যখন মার্কিন ডলারের দাম ৮০ টাকার কম ছিল।
আরএনপিপি কর্মকর্তাদের পাঠানো কাগজপত্রে রাশিয়ান বিশেষজ্ঞরা আরও কম শুল্কের কথা বলেছিলেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে এক মাস ধরে বিদ্যুৎবিহীন ৮ হাজার গ্রাহক
তারা জানিয়েছিলেন, শুল্ক প্রায় শূন্য দশমিক ০৩১৯ বা ৩ দশমিক ২ সেন্ট হতে পারে।
আরএনপিপির প্রকল্প পরিচালক এবং নবগঠিত নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (এনপিসিবিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহাম্মদ শওকত আকবর এর আগে ইউএনবির সঙ্গে কথা বলার সময় ধারণা দিয়েছিলেন যে শুল্ক শূন্য দশমিক ০৪ ডলারের মধ্যে হবে।
তিনি বলেন, ৫০ বছরের স্থিতিশীল জ্বালানির দাম, ৫০ বছর পরিচালনার মেয়াদ এবং মূলধন বিনিয়োগ ব্যয়ের উপর ভিত্তি করে আরএনপিপির হিসাব করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের ডিসকাউন্ট রেট কম থাকলে শুল্ক কম হয়। এছাড়া, প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর বা প্ল্যান্টের গড় বিদ্যুৎ পরিবহনের সঙ্গে তার নির্ধারিত সক্ষমতার অনুপাত ৯৩ শতাংশ গণনা শুল্ক কম হওয়ার আরেকটি কারণ।
কিন্তু স্থানীয় বিদ্যুতের শুল্ক বিশেষজ্ঞরা এই হিসাবের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন এবং বলেছেন, এই অনুমানের চেয়ে শুল্ক অনেক বেশি হবে।
কিছু স্থানীয় বিশেষজ্ঞের হিসাব অনুযায়ী আরএনপিপি প্রকল্পের বিদ্যুতের শুল্ক শূন্য দশমিক ০৮ ডলার থেকে শূন্য দশমিক ১০ ডলারের (৮-১০ মার্কিন সেন্ট) বেশি হবে।
দেশের বিশিষ্ট বিদ্যুৎ শুল্ক বিশেষজ্ঞদের একজন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সাবেক সদস্য মিজানুর রহমান বলেছেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের শুল্ক হবে শূন্য দশমিক ০৮৫ ডলারের (৮ দশমিক ৫ সেন্ট) বেশি।
বিপিডিবির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মিজানুর রহমান মনে করেন, শুল্ক আরএনপিপির হিসাবের দ্বিগুণেরও বেশি হবে।
নির্মাণ ব্যয় ১৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার (১২ দশমিক ৬৫ ডলার এবং ৫০০ মিলিয়ন সম্ভাব্যতা অধ্যয়ন ব্যয়), ৫০ বছরের জ্বালানির মূল্যসহ ৫০ বছরের অপারেশন ও ডিকমিশনিং এবং ব্যয়িত জ্বালানি রাশিয়ায় পাঠানোর ব্যয়ের ভিত্তিতে তার নিজের করা হিসাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি মার্কিন ডলারের দাম ১০৯ টাকা হারে ধরা হয়, তবে শুল্ক হবে প্রায় শূন্য দশমিক ০৮৫ ডলার বা প্রতি ইউনিট ৯-১০ টাকার মধ্যে।
আরও পড়ুন: ১৬ দিন পর ফের উৎপাদন শুরু রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে
তিনি আরও বলেন, ‘আর ডলারের দর আরও বাড়লে, শুল্ক প্রতি ইউনিট ১০ টাকার বেশি হবে।’
তিনি বলেন, ঋণ পরিশোধের সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ হবে ১২-১৩ সেন্ট এবং তারপর তা কমে ৫-৬ সেন্টে নেমে আসবে।
তিনি বলেন, যতদিন না বাংলাদেশ পারমাণবিক বর্জ্য মোকাবিলায় কিছু দক্ষতা অর্জন করে ততদিন রূপপুরের মতো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবহৃত জ্বালানির বর্জ্য রাশিয়ান ফেডারেশনে পাঠানো হবে। পারমাণবিক শক্তি নিষ্ক্রিয় করা একটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বিদ্যুতের দাম নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘সঠিকভাবে না জেনে শুল্ক সম্পর্কে মন্তব্য করা বুদ্ধিমানের কাজ না।’
শুল্ক হিসাবের সময় বিপিডিবি কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশ ২০২৭ সালের মার্চ থেকে ঋণ পরিশোধ শুরু করবে। বার্ষিক ১ দশমিক ৩৬০ বিলিয়ন ডলার হারে পরবর্তী ২০ বছরে ৪০টি কিস্তিতে সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আসল ও সুদসহ গড়ে প্রায় ৬৮ কোটি টাকা পরিশোধ করা হবে।’
সরকার ২০০৯ সালে আরএনপিপি প্রকল্প স্থাপনের পরিকল্পনা করে এবং ২০০৯ সালের ১৩ মে রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে 'পারমাণবিক জ্বালানির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার'- বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে।
২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রস্তুতি পর্যায়ের নির্মাণ কাজের জন্য ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়।
রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য সরকার ২০১৫ সালে রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সাধারণ চুক্তি (জিসি) সই করে।
চুক্তি অনুসারে প্রতিটি ইউনিট ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।
বাংলাদেশ ২০১৬ সালের জুলাই মাসে আরএনপিপি’র জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে ১১ দশমিক ৩৮৫ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার জন্য একটি ঋণচুক্তি সই করে। প্রকল্পের ব্যয়ের ৯০ শতাংশই এই অর্থের মাধ্যমে নির্বাহ করা হবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জানিয়েছে, প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিটটি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২০১৫ সালের জুলাই মাসে চালু হতে পারে।
আরও পড়ুন: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা নিয়ে আসা জাহাজের বিরুদ্ধে মামলা
চলতি বছর দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩০ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করবে
১ বছর আগে
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেশিনারিজ নিয়ে মোংলায় বিদেশি জাহাজ
পাবনার ঈশ্বরদিতে চলমান রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৪৮২ দশমিক ৮৮২ মেট্রিক টন মেশিনারি নিয়ে বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে ভিড়েছে রাশিয়ান পতাকাবাহী জাহাজ এমভি মার্গারেট।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বিকালে বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে ভিড়েছে জাহাজটি। সন্ধ্যা থেকে জাহাজের পণ্য খালাস কাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি জাহাজে ২ ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু!
৪৮ ঘন্টার মধ্যে সকল পণ্য খালাস শেষ হবে বলে জানিয়েছেন জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট কনভেয়ার শিপিং লাইন্সের খুলনার ম্যানেজার সাধন কুমার চক্রবর্তী।
এর আগে গেল ৬ জুন রাশিয়ার নভোরোসিয়েস্ক বন্দর থেকে মোংলার উদ্দেশে ছেড়ে আসে জাহাজটি। জাহাজটিতে বিভিন্ন ধরণের ইলেক্ট্রিক্যাল ও মেশিনারি রয়েছে।
শিপিং এজেন্ট কনভেয়ার শিপিং লাইন্সের খুলনার ম্যানেজার সাধন কুমার চক্রবর্তী বলেন, খালাস শেষে মেশিনারিগুলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে নেওয়া হবে। খালাস শেষে জাহাজটি মোংলা ত্যাগ করবে।
এর আগে, ২ জুলাই রাশিয়া থেকে সরাসরি একই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে মোংলায় এসেছিল এমভি লিবার্টি হারভেস্ট।
তারও আগে ২৯ মে এমভি আনকা স্কাই, ৬ মে এমভি আনকা সান ও ২৫ এপ্রিল এমভি ইয়ামাল অরলান সরাসরি রাশিয়া থেকে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল এনেছিল।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার সাত কোম্পানির ৬৯টি জাহাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা জাহাজগুলো রাশিয়া থেকে রূপপুরের পণ্য নিয়ে সরাসরি মোংলা বন্দরে আসছে।
আর নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা জাহাজগুলো রাশিয়া থেকে পণ্য নিয়ে ভারত হয়ে এ বন্দরে পাঠাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর মালামাল নিয়ে বিদেশি জাহাজ মোংলায়
মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর মালামাল নিয়ে বিদেশি জাহাজ
১ বছর আগে
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১১৩৭ টন মালামাল মোংলায় পৌঁছেছে
পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ১ হাজার ১৩৭ দশমিক ৪৪৯ মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে পানামা পতাকাবাহী জাহাজ এমভি লিবার্টি হারভেস্ট। রবিবার (২ জুলাই) দুপুরে বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে ভিড়ে জাহাজটি।
এর আগে গত ৩ মে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বন্দর থেকে সরাসরি মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে জাহাজটি।
জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এইচএসআর ওসান ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক বিপ্লব খান বলেন, জাহাজটিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ হাজার ১৩৭ দশমিক ৪৪৯ মেট্রিক টন মেশিনারি রয়েছে। জাহাজ থেকে এ সব পণ্য খালাস করে জেটির সেডে রাখা হচ্ছে।
খালাস শেষে এসব মেশিনারিজ সড়ক পথে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে ২৯ মে রাশিয়া থেকে সরাসরি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে মোংলা বন্দরে ভিড়েছিল এমভি আনকা স্কাই।
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে জাহাজ মোংলা বন্দরে
তারও আগে গত ৬ মে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে রাশিয়া থেকে সরাসরি মোংলা বন্দরে এসেছিল বিদেশি জাহাজ এমভি আনকা সান।
এছাড়া ২৫ এপ্রিল রাশিয়া থেকে রূপপুরের মালামাল নিয়ে সরাসরি মোংলা বন্দরে এসেছিল এমভি ইয়ামাল অরলান। আর ইয়ামাল অরলানের আগে এসেছিল এমভি ড্রাগনবল ও এমভি কামিল্লা।
সাম্প্রতিককালে সাতটি জাহাজ কোম্পানির ৬৯টি জাহাজে রূপপুরের পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যার ফলে নিষেধাজ্ঞার বাহিরে থাকা জাহাজগুলো রাশিয়া থেকে রূপপুরের পণ্য নিয়ে সরাসরি মোংলা বন্দরে আসছে।
আর নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা জাহাজগুলো রাশিয়া থেকে পণ্য নিয়ে ভারত ট্রানজিট হয়ে আসছে মোংলা বন্দরে।
আরও পড়ুন: রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে ভারত হয়ে মোংলায় এসেছে এমভি সেজুতি
মোংলা বন্দরে বঙ্গবন্ধু রেলসেতু ও রূপপুরের মেশিনারি পণ্যবাহী ৩ জাহাজ
১ বছর আগে