হিজাব বিতর্ক
নওগাঁয় হিজাব বিতর্ক: অজ্ঞাত ১৫০ জনের নামে থানায় জিডি
নওগাঁর মহাদেবপুরের দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্কুলে হিজাব পরায় শিক্ষার্থীদের মারধরের গুজবের জেরে স্কুলের সম্পত্তি ভাঙচুরের অভিযোগে অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, গুজবের জেরে বিদ্যালয়ের সম্পত্তি ভাঙচুরের ঘটনার তিনদিন পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বাদী হয়ে মহাদেবপুর থানায় জিডি করেন।
জিডিতে ওই শিক্ষক লেখেন, ‘৭ এপ্রিল স্কুলে একটি তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে স্কুলে হামলা করা হয়। স্কুলের আশ-পাশের গ্রামের অনেক লোক হামলা চালিয়ে স্কুলের চেয়ার ও টেবিল ভাঙচুর করেছে।’
আরও পড়ুন: হিজাব পরা ইসলামে অপরিহার্য নয়: কর্নাটক হাইকোর্ট
অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং দাউল বারবাকপুর এলাকায় কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য ঘটনার পর থেকে নজরদারি চলছে বলে জানান ওসি আজম উদ্দিন।
এর আগে ৬ এপ্রিল স্কুলের ইউনিফর্ম না পরার জন্য স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা আমোদিনী পাল সকাল ১১টার দিকে স্কুলের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির ১৬ থেকে ১৮ জন শিক্ষার্থীকে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠে।
পরে তা ‘হিজাব’ বিতর্ক নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: কর্ণাটকে হিজাব বিতর্ক: বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের অভিমত আদালতের
২ বছর আগে
কর্ণাটকে হিজাব বিতর্ক: বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের অভিমত আদালতের
ভারতের কর্ণাটকে হিজাব নিয়ে বিতর্কের জেরে রাজ্যের সব স্কুল ও কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরা নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সহিংসতায় পরিণত হওয়ার পর দেশটির রাজ্য সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ বিষয়ে রাজ্যের উচ্চ আদালতের নির্দেশনা চেয়ে কয়েকজন মুসলিম নারীর পক্ষে আবেদন করা হয়। পরে বুধবার রাজ্যের হাইকোর্ট প্রধান বিচারপতিকে বিষয়টি বিবেচনা করতে একটি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের অনুরোধ করেন।
কর্ণাটকের উডুপি জেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে হিজাব পরায় ছয় শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে ঢুকতে না দেয়ার প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন এবং পরে তা অন্যান্য কলেজে ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: কর্ণাটকে হিজাব দ্বন্দ্ব যেভাবে বৃহত্তর আন্দোলনে রূপ নিলো
মান্ডিয়া জেলার একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, বোরকা পরা এক নারী শিক্ষার্থীর দিকে জাফরান শাল পরা একদল জনতা ধেয়ে আসছেন। আর তারা বারংবার ‘জয় শ্রী রাম’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন। এরপর ওই নারী শিক্ষার্থীও ‘আল্লাহু আকবর’ বলে স্লোগান দেন। এরপর কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে নিয়ে যায়।
পরে জানা যায়, ওই ছাত্রীর নাম মুসকান। তিনি বলেন, তার কলেজের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন তিনি তাকে সহায়তা করবেন।
মুসকান বলেন, ‘একইভাবে আরও কয়েকজন মুসলিম মেয়েকে হয়রানি করা হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ বা অধ্যক্ষ আমাদের বোরকা পরতে নিষেধ করেননি। তাহলে আমি কেন বহিরাগতদের কথা শুনবো?’
মঙ্গলবার নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই ভারতে ‘মুসলিম নারীদের প্রান্তিকীকরণ বন্ধ করতে’ দেশটির নেতাদের কিছু করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘হিজাব পরে মেয়েদের স্কুলে না যেতে দেয়া ভয়াবহ।’
আরও পড়ুন: ভারতে একদিনে ৭১ হাজারের বেশি করোনা শনাক্ত
পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, এগুলো ছোট ঘটনা এবং পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
জাফরান স্কার্ফ ও হিজাব দুটোই ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা উচিত, কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন মতামতকে সমর্থন করেছেন কর্ণাটকের শিক্ষামন্ত্রী নাগেশ বিসি।
ভারতের পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার রাজনৈতিক শাখা এই অঞ্চলে আকর্ষণ লাভের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এসব করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি মূলত রাজনীতি। এই সব ঘটছে। কারণ আগামী বছর রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা।’
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ এস বোমাই ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিক্ষার্থী ও অন্যদের ‘শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে আন্দোলনকারীদের পক্ষে আদালতে দুটি আবেদন করা হয়েছে।
এক আবেদনে যুক্তি দেখানো হয়েছে, একজন মানুষ কী পরবে সেটা বেছে নেয়া তার মৌলিক অধিকার এবং তা ভারতের সংবিধানে নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া অন্য আবেদনে সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব ও হেডস্কার্ফ নিষিদ্ধ করে রাজ্য সরকারের ড্রেসকোট আদেশের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
বিচারপতি কৃষ্ণ দীক্ষিত আবেদন দুটির শুনানি করেছেন। বুধবার তিনি বলেন, বিষয়টি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানো উচিত।
তিনি বলেন, ‘আদালতের বিবেচিত অভিমত এ বিষয়ে একটি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা যেতে পারে কি না তা সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য নথিগুলো প্রধান বিচারপতির হাতে রাখা উচিত।’
আরও পড়ুন: তুষারধসে চীন সীমান্তের কাছে ৭ ভারতীয় সেনার মৃত্যু
২ বছর আগে