মাইকেল জোসেফ জ্যাকসন
মাইকেল শিরোনামে নির্মিত হবে ‘কিং অফ পপ’ মাইকেল জ্যাকসনের বায়োপিক
‘কিং অফ পপ’ মাইকেল জ্যাকসনের জীবনকে উপজীব্য করে নির্মিত হতে যাচ্ছে চলচ্চিত্র; শিরোনাম ‘মাইকেল’। গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিখ্যাত মুভি নির্মাণ ও সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান লায়ন্সগেটের প্রেসিডেন্ট জো ড্রেকের এই আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় এম জে (মাইকেল জ্যাকসন) ভক্তরা তাদের প্রিয় তারকাকে নতুন করে বড় পর্দায় দেখতে মুখিয়ে উঠলো। চার দশক ধরে পপ সঙ্গীতে আধিপত্য বিস্তার করা এই সেরা স্টেজ পারফর্মারকে নিয়ে ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে বেশ কিছু তথ্যচিত্র। চলুন, সবেমাত্র নির্মাণের প্ল্যাটফর্মে ওঠা মুভিটি নিয়ে কিছু কথা জেনে নেয়া যাক।
মাইকেল জ্যাকসন দ্যা কিং অফ পপ
পুরো নাম মাইকেল জোসেফ জ্যাকসন; জন্ম ১৯৫৮ সালের ২৯ আগস্ট আমেরিকার ইন্ডিয়ানা প্রদেশের গ্যারি শহরে। জোসেফ ওয়াল্টার জ্যাকসন ও মা ক্যাথরিন এসথার জ্যাকসনের দশ সন্তানের মধ্যে তিনি আট-তম। আফ্রো-আমেরিকান দরিদ্র জ্যাকসন পরিবারের বসতি ছিল জ্যাকসন স্ট্রীটে। ইউএস স্টীলের ক্রেন অপারেটর হিসেবে বাবার চাকরি আর সিয়ার্সে খণ্ডকালীন কর্মরত মায়ের উপার্জন দিয়ে চলতো সংসারের খরচ। বাবা অবশ্য সংসারের খরচে সামঞ্জস্য আনার জন্য ফ্যালকন্স নামের একটি লোকাল ব্যান্ডের সাথে গিটারও বাজাতেন।
পড়ুন: ‘মাসুদ রানা’র লেখক-প্রকাশক কাজী আনোয়ার হোসেন আর নেই
১৯৬৪ সালে বাবার সৃষ্টি করা ভাইদের নিয়ে জ্যাকসন ফাইভ ব্যান্ডের মাধ্যমে শুরু হয় মাইকেল জ্যাকসনের সঙ্গীত জীবনে পথ চলা। ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তাঁর পঞ্চম একক অ্যালবাম ‘অফ দ্য ওয়াল’ তাকে একক সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
মাইকেল জ্যাকসন সর্বকালের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া গানের এ্যালবামের শিল্পীদের একজন। সারা বিশ্বে তাঁর বিক্রিত গানের রেকর্ড সংখ্যা আনুমানিক প্রায় ৪০০ মিলিয়ন। তিনি একমাত্র পুরুষ শিল্পী হিসেবে ১৩ বার বিলবোর্ড হট হান্ড্রেডে শীর্ষস্থানে ছিলেন। এই তালিকায় প্রথম শিল্পী হিসেবে এককভাবে শীর্ষ দশ-এ ছিলেন গোটা পাঁচ দশক জুড়ে। তাঁর অর্জনের মধ্যে রয়েছে ১৫টি গ্র্যামি, ৬টি ব্রিট, একটি গোল্ডেন গ্লোব এবং সর্বকালের সবচেয়ে সফল এন্টারটেইনার সহ ৩৯টি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড। এছাড়াও রয়েছে দুইবার রক অ্যান্ড রোল হল অফ ফেম, ভোকাল গ্রুপ হল অফ ফেম, সং রাইটারস হল অফ ফেম, একমাত্র শিল্পী হিসেবে দ্যা ডান্স হল অফ ফেম, এবং রিদম অ্যান্ড ব্লুজ মিউজিক হল অফ ফেম।
আরও পড়ুন: মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণ কেন জরুরি?
মাইকেল জ্যাকসনকে নিয়ে নতুন সিনেমার চিত্রপট
মাইকেল সিনেমার গল্পে একজন জটিল মানসিকতার মানুষের একজন পপসম্রাট হয়ে ওঠার দিকটি গভীরভাবে চিত্রিত করা হবে। এর সাথে পরিবেশন করা হবে জ্যাকসনের সৃজনশীলতার অসামান্য ছাপের ফলে সৃষ্ট ইতিহাসকে।
২০১৯-এ ‘লিভিং নেভারল্যান্ড’ শিরোনামের এইচবিও তথ্যচিত্রে জ্যাকসন কিংবদন্তির একটি কালো অধ্যায়ের প্রতি দৃষ্টিপাত করা হয়। কোরিওগ্রাফার ওয়েড রবসন এবং প্রাক্তন শিশু অভিনেতা জেমস সেফচাকের শৈশব থেকে প্রয়াত গায়কের সাথে সম্পর্কের ঘটনা তুলে ধরা হয়। এখানে জ্যাকসনে বিরুদ্ধে আনা শিশু যৌন নির্যাতনের অভিযোগগুলো বিশদ আকারে উপস্থাপন করা হয়।
পড়ুন: নিউইয়র্ক সিটি ফ্যাশন উইকে ট্রান্স মডেল হিসেবে বাংলাদেশের তাসনুভা আনান শিশির
তাকে নিয়ে নির্মিত সম্প্রতি ‘মিউজিক্যাল এম জে’ নামের ব্রোডওয়ে শোটিতে আলোকপাত করা হয় ১৯৯২ সালের একটি সময়কে, যখন বিপজ্জনক ওয়ার্ল্ড ট্যুরের জন্য জ্যাকসন প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এটি ছিলো তাঁর বিরুদ্ধে আসা প্রথম শিশু যৌন নির্যাতনের অভিযোগের কিছু সময় আগে।
জ্যাকসন সেই অভিযোগটি অস্বীকার করেন এবং অভিযুক্তের দেওয়ানি মামলা নিষ্পত্তি করেন। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে তিনি আবারো শিশু শ্লীলতাহানির জন্য অভিযুক্ত হন এবং মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হন। ২০০৯ সালে ৫০ বছর বয়সে গায়ক মারা গেলেও কিংবদন্তিটির রেশ রয়ে যায় তাঁর নামের সাথে।
পড়ুন: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আফসান চৌধুরীসহ ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ৬ লেখক
‘মিউজিক্যাল এমজে’ শো’তে সঙ্গীত শিল্পীর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি থেকে সেই কালো অধ্যায়টি বাইরে রাখা হলেও মাইকেল সিনেমায় তার প্রভাব পড়বে কিনা সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়।
২ বছর আগে