অভ্যাস
সচেতনতা ও আইনের কঠোর প্রয়োগে হর্ন বাজানোর অভ্যাস পরিবর্তন করা হবে: উপদেষ্টা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, হর্ন বাজানো মানুষের দীর্ঘদিনের অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য প্রথমে সচেতন করা হবে। এরপর আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হবে।
তিনি বলেন, প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে, পরে পুরো ঢাকা শহর এবং ধীরে ধীরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও শব্দদূষণ বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে। কাজটি শুরু করাই সফলতা।
আরও পড়ুন: ১ নভেম্বর থেকে পলিথিন উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
মঙ্গলবার (১ অক্টবর) ঢাকার কুর্মিটোলায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও এর আশপাশের ৩ কিলোমিটার এলাকাকে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করা হয় এবং ১ অক্টোবর থেকে যানবাহনে হর্ন বাজানো বন্ধ করার কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমার গাড়িতে হর্ন বাজানো হয় না। আশা করি, সবাই চালকদের হর্ন না বাজাতে উৎসাহিত করবেন। লাইসেন্স নবায়নের শর্ত হিসেবে হর্ন বাজানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে। প্রথমবার আইন ভঙ্গ করলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ভুলগুলো বিশ্লেষণ করে, ডিসেম্বর থেকে জরিমানা কার্যকর করা হবে।
আরও পড়ুন: ১ অক্টোবর থেকে সুপারমার্কেট, ১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ: পরিবেশ উপদেষ্টা
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। এটি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও স্নায়ুরোগ সৃষ্টি করতে পারে।
ঢাকায় যানবাহনের হর্নের কারণে মানুষের শ্রবণশক্তি কমছে। তাই ‘নীরব এলাকা’ কর্মসূচি শব্দদূষণ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই উদ্যোগ সফল করতে যারা অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানান।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ ধরনের কর্মসূচি দেশের অন্য এলাকাতেও বাস্তবায়িত হবে।
এসময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাস, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নদী রক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
২ মাস আগে
দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যে অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরি
উন্নত জীবন ধারণের জন্য প্রথমেই যে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হয় তা হচ্ছে দেশের বাইরে পড়তে যাওয়া। প্রতিটি মানুষের জীবনে একটি উল্লেখযোগ্য সময় কাটে শিক্ষাজীবনে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার বাকি জীবনের সার্বিক অবস্থা ঠিক করে দেয় এই গুরুত্বপূর্ণ সময়টি। বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই যে কোন পরিবেশে মানিয়ে নেয়ার ব্যাপারটি মুখ্য হয়ে দাড়ায়। ব্যক্তি বিশেষে প্রকৃতিগত দিক থেকে মানুষে মানুষে বৈচিত্র্য থাকার কারণে প্রয়োজন পরে কিছু অভ্যাস গড়ে তোলার। আজকের ফিচারটিতে এমনি কিছু অভ্যাসের কথা বলা হবে যেগুলো দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার জন্য অতীব জরুরি।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু অভ্যাস
নতুন কিছু শিখে নেয়া
নতুন দেশে পড়াশোনার পাশাপাশি জীবন যাত্রার নিত্য চলাফেরায় এমন অনেক কর্মকাণ্ড থাকে যেগুলোর সাথে এ দেশের সচরাচর জীবন যাত্রার মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রায় ক্ষেত্রে নতুন ব্যাপারগুলোর সাথে মানিয়ে নেয়ার বাধ্য-বাধকতা চলে আসে। যে কোন পরিস্থিতিতে নতুন কিছু শিখে নেয়ার অভ্যাস থাকলে এ অবস্থায় বড় ধাক্কা সামলে ওঠা যায়। স্কুল থেকে কলেজে এবং কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেয়ে নতুন বিষয়গুলো চর্চার ফলে ইতোমধ্যে সবার ভেতরেই এই দক্ষতার বীজটি রয়ে যায়। এরপরেও ব্যক্তি বিশেষে এই দক্ষতার প্রয়োগ দেখা যায় কারো কম কারো বেশি।
পড়ুন: বিদেশি ভাষা শিক্ষা: যে ভাষাগুলো উন্নত ক্যারিয়ারে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে
তাছাড়া সম্পূর্ণ নতুন একটি দেশের ভাষা, সংস্কৃতি, যোগাযোগ, পরিবহণ ও আবাসন ব্যবস্থার খুটিনাটি প্রত্যেকের ভেতরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু প্রশ্নের দাবি রাখে। নতুন কিছু দ্রুত রপ্ত করে নিতে পারা শিক্ষার্থীদের ভেতর এই প্রতিক্রিয়াটি স্বত্বঃস্ফূর্তভাবে কাজ করে।
নিজের কাজ নিজে করা
এই দক্ষতাটি সবার জানা থাকা সত্ত্বেও এ দেশের তথাকথিত দৃষ্টিভঙ্গির কারণে জনসাধারণের ভেতর থেকে নিজের কাজ নিজে করার প্রবণতাটা আসে না। পাশাপাশি জন্মগতভাবে একটি নির্দিষ্ট অভ্যাসে নিজেকে নিয়োজিত রাখার বিষয়টিও কাজ করে। ফলশ্রুতিতে নিমেষেই বাধা পড়ে যেতে হয় চিরায়ত চক্রে। কিন্তু দেশের বাইরে প্রতিটি কাজের জন্য আত্মনির্ভরশীল হওয়া অনস্বীকার্য। যারা সেই চক্র থেকে বেরতে পারেননি তাদেরকে বেশ বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় এরকম পরিবেশে। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যারা এ দেশেই নিজের কাজটি খুব ভালোবেসে করেন।
পড়ুন: বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
বিশেষ করে রান্নার ক্ষেত্রে অনেকে আছেন যারা নিজের বানানো খাবার ছাড়া বাইরের বা অন্যের রান্না একদমি খেতে পারেন না। এদের জন্য দেশের বাইরে টিকে থাকাটা খুবই সহজ। ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে শুরু করে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিটি কাজ যারা নিজে নিজেই করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য পৃথিবীর কোথাও মানিয়ে নিতে বেগ পেতে হবে না।
নিয়মানুবর্তিতা
এ দেশে স্কুল থেকে নিয়মানুবর্তিতার প্রশিক্ষণ থাকলেও ব্যক্তি জীবনে প্রত্যেকে সেই প্রশিক্ষণের রেশ ধরে রাখতে পারেন না। যারা দেশের ভেতরে ক্যারিয়ার গড়েন তাদের জীবনেই নিয়মানুবর্তিতা বজায় না রাখার নেতিবাচক প্রভাব পরে। আর দেশের বাইরের ক্ষেত্রে এর প্রতিক্রিয়া আরো বিপজ্জনক হতে পারে। এই নিয়ম মেনে চলা বলতে শুধুমাত্র কোন একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা দেশের সরকারের প্রণীত বিধান মেনে চলা নয়। এটি মুলত প্রতি দিন প্রতিটি কাজের জন্য তাদের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে প্রাসঙ্গিকভাবে একটি নির্দিষ্ট সময় মেনে কাজগুলো সম্পন্ন করা। আগামীকাল ঘুম থেকে উঠে কি কি কাজ করা হবে তার কোন হদিস না থাকা বিশৃঙ্খল জীবন যাপনের লক্ষণ। দেশের বাইরে পড়াশোনার ক্ষেত্রে নিয়মানুবর্তিতার অভ্যাস গড়ে তোলা বাঞ্ছনীয়।
পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যেতে প্রস্তুতির ধাপগুলো জেনে নিন
সামাজিকতা
গল্প ও আড্ডাপ্রিয় বাংলাদেশিদের এই দক্ষতা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তবে বাইরের দেশে নেটওয়ার্ক তৈরি ও বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কিছু শিষ্টাচার মেনে চলা দরকার। খেয়াল রাখতে হবে যে, নতুন দেশটির কারো সাথে কথা বলার সময় প্রত্যেকেই বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাই কথা দেয়া বা নেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে নিজের ভুল স্বীকার করা একটা বড় গুণ। আর উন্নত বিশ্বে ব্যাপক ভাবে এর চর্চা করা হয়। ‘আপনি তো আমাকে এটা আগে বলেননি’ এর জায়গায় ‘দুঃখিত! আপনার নির্দেশিত এই বিষয়টি হয়ত কোনভাবে আমার দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে।’ কথাটি উত্তম।
এছাড়া কথোপকথনের সময় কারো ব্যবহার নিয়ে বিচার করা যাবে না। এ ধরনের বিষয়ের বদলে সেই দেশের সংস্কৃতি ও সভ্যতা সম্পর্কিত এমন অনেক কিছু আছে যেগুলো নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা করা যায়। অবাঞ্ছিত প্রশ্ন জিজ্ঞাসা না করে এমন ভাবে কোন কিছু জানতে চাওয়া, যেন শুনে মনে হয়- এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে মোটামুটি কিছু জানা আছে। এর জন্য আগেই অজানা বিষয়টি নিয়ে গুগলে গবেষণা করে নেয়া যেতে পারে।
পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
পরিপাটি থাকা
প্রতিটি কাজ গুছিয়ে করলে ২৪ ঘন্টার ভেতর অনেক কাজ সমাধা করার সুযোগ পাওয়া যায়। বাসার পড়ার টেবিলটা যখন অযত্নে অগোছালো হয়ে পড়ে থাকে, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোন কাগজ খুঁজতে যেয়ে নষ্ট হতে পারে অমূল্য কিছু সময়। তাছাড়া আগে থেকে প্রতিটি জিনিসের জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে না রাখলে দেশের বাইরে যাওয়ার প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। কেননা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন থেকে শুরু করে বিমানে ওঠা পর্যন্ত অনেক কাগজপত্রের কারবার থাকে। এগুলোর সযত্নে ব্যবস্থাপনার জন্যে প্রয়োজন প্রতিটি জিনিস পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে নির্দিষ্ট জায়গায় গুছিয়ে রাখা। তাছাড়া দেশে এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতা পাওয়ার অবকাশ থাকলেও দেশের বাইরে বাসা ভাড়া, ইউটিলিটি, ইনস্যুরেন্স, খাওয়া ও পড়াশোনার খরচ সব গুলিয়ে যেতে পারে।
পরিশেষে
সৃষ্টি জগতে যে কোন প্রাণী অপেক্ষা মানুষের অভিযোজন ক্ষমতা বেশি। এতক্ষণ ধরে যে অভ্যাসগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো সেগুলো মানুষের অভিযোজন ক্ষমতারই অংশ। কিন্তু পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে অনেকের ক্ষেত্রে এগুলোর ঘাটতি দেখা যায়। তাই দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে এই অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরি।
পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
২ বছর আগে