পুরান ঢাকা
ঈদের একাল-সেকাল: প্রজন্মের ধারাবাহিকতায় ত্রিমাত্রিক উদযাপন ঢাকায়
আজ থেকে অর্ধশত বছর আগে রাজধানী ঢাকায় যেভাবে ঈদ উদযাপন হতো, সময়ের ব্যবধানে সেসব এখন সুদূর অতীত। ষাটের দশকের জেন-এক্স প্রজন্মের কাছে বর্তমান সময়ের জেন-জি প্রজন্মের ঈদ উদযাপন একেবারেই অচেনা। এর মাঝে পড়ে ঈদ নিয়ে বড় রকমের স্মৃতি কাতরতায় ভোগে নব্বইয়ের দশকের মিলেনিয়ালস প্রজন্ম।
পাকিস্তান আমলের আগে রাজধানী ঢাকার ঈদ উদযাপনের রূপ দেখতে চাইলে ইতিহাসের দ্বারস্থ হতে হবে। তবে পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের পর সত্তরের দশকের ঢাকার ঈদ উদযাপনের সঙ্গে বর্তমান ঈদের তেমন কোনো মিল নেই—বলছে জেন-এক্স প্রজন্ম।
বিশেষ করে একবিংশ শতাব্দীতে জন্ম নেওয়া জেন-জি প্রজন্মের সঙ্গে ১৯৬৫ সালের দিকে জন্ম নেওয়া মানুষের ঈদ উদযাপনের স্মৃতির তেমন কোনো মিল নেই বললেই চলে। যদিও জেন এক্স প্রজন্মের মানুষদের দাবি, তাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম, যারা ১৯৬৫ সালের আগে জন্ম নিয়েছেন, অর্থাৎ যাদের খাতা-কলমে ‘বেবি বুমার জেনারেশন’ বলা হয়, তাদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে বেশ মিল ছিল জেন এক্সদের।
স্মৃতির পাতায় পুরান ঢাকার ঈদ
পুরান ঢাকায় প্রায় চল্লিশ বছর ধরে যন্ত্রাংশের ব্যবসা করেন শাহ আলি মিয়া (৬২)। শৈশবের স্মৃতিচারণা করে রাজধানীর ঈদ উদযাপন নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে।
স্মৃতির পাতা খুলে তিনি বলেন, ‘ঢাকা তখনও এতটা বিস্তৃত হয়নি, অভিজাত হয়ে উঠেনি গুলশান-বনানী এলাকা। ঈদের আসল আনন্দ মানেই ছিল পুরান ঢাকার ঈদ উদযাপন।’
‘চাঁদ রাতের সবচেয়ে বড় উৎসব ছিল ইফতার শেষ করেই চাঁদ দেখতে সদরঘাট-সোয়ারিঘাটে বুড়িগঙ্গার পারে চলে যাওয়া। নদীর পাড়ে বসে স্বচ্ছ জলে চাঁদ দেখার যে চেষ্টা সেটি আজও ভোলার মতো না।’
‘আমাদের বাপ-দাদাদের থেকে শুনেছি সে সময়ের অভিজাতরা আগে থেকেই নৌকা ভাড়া করে রাখতেন। ইফতারের পর নৌকায় করে মাঝ নদীতে যেতেন বন্দুক হাতে চাঁদ দেখতে। নদীর স্বচ্ছ জলে চাঁদ দেখা গেলে বন্দুকে ফাঁকা আওয়াজ করে সবাইকে জানানো হতো আগামীকাল ঈদ। একবার ফাঁকা গুলি ছোড়া শুরু হলে বিভিন্ন নৌকা থেকে ঘণ্টাব্যাপী চলতো এই উদযাপন।’
ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলে চলেন শাহ আলি।
‘ঈদের দিন সকালে প্রথম যে মিষ্টান্ন খেয়ে সবাই নামাজে যেতাম, সেটির নাম ছিল শির খুরমা। সুপারি কাটার সর্তা দিয়ে পাতলা করে কাটা খেজুর আগের রাতে ঘন করে জ্বাল দেওয়া গরুর দুধে ভিজিয়ে রাখা হতো। সকালে এই পানীয় খেয়েই নামাজে রওনা হতাম আমরা।’
শৈশবে শির খুরমা পেয়েছিলেন ৩৫ বছর বয়সী সফিউল রহমানও। তবে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পায়েস আর সেমাই সেই জায়গাটি দখল করে নেয় নেয় বলে জানান এই করপোরেট চাকুরে।
বেচারাম দেউড়ি এলাকার এই বাসিন্দা বলেন, ‘বাপ-দাদাদের সময়েও যে সেমাইয়ের প্রচলন ছিল না, তা নয়। কিন্তু প্যাকেটজাত সেমাইয়ের কদর না থাকায় সে সময়ে চুটকি নামের এক মেশিনে আগের রাতে সেমাই প্রস্তুত করা হতো। নামাজ শেষে ঘরে ফিরলে সেমাই পরিবেশিত হতো।’
‘আশির দশক থেকেই প্যাকেটজাত সেমাইয়ের দৌরাত্ম্য বাড়ায় আমাদের ঘর থেকে চুটকি বিদায় নিল। আর শির খুরমার জায়গায় লাচ্ছা সেমাইয়ের সঙ্গে মিষ্টি বাকরখানি হয়ে উঠল ঈদের জনপ্রিয় খাবার।’
বর্তমান সময়ে এসেও মিলেনিয়ালস ও জেন-এক্সরা ঈদের দিন সেমাই কিংবা পায়েস খেতেই চান। তবে প্রজন্মের পরিবর্তনে জেন-জির রুচিতে এসেছে পরিবর্তন। তাদের মধ্যে পুডিং, ফালুদা, ফ্রুট কাস্টার্ডের মতো খাবারের কদর বেশি।
কলেজছাত্র সাইমুন (১৯) তো শির খুরমার নাম পর্যন্ত শোনেননি। ঈদের দিন সকালের ভোজ নিয়ে তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন সকালে বাসার সবাই পায়েস খায়। পায়েস ফ্রিজে রাখলে ভালো লাগে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে ডিম, ডাব কিংবা ভ্যানিলা পুডিং। সাত সকালে সেমাই-পায়েস খেতে ইচ্ছা করে না, তাই আম্মু আগের রাতেই পুডিং বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দেয়।’
চাঁদ রাতের ক্বাসিদার জায়গা নিয়েছে নেটফ্লিক্স
পুরান ঢাকায় প্রায় তিন দশক ধরে ছিলেন হোসেন সরদার (৬৭)। পরবর্তীতে বাড্ডায় বাড়ি করে বাস করছেন আরও দুই দশকের বেশি সময় ধরে।
চাঁদ রাত ও ঈদের রাতের আনন্দ নিয়ে হোসেন সরদার বলেন, ‘কৈশোরে সেহরির সময়ে ক্বাসিদা গাইতাম আমরা। এর জন্য আমাদের আলাদা একটি দলই ছিল। এক দলের সঙ্গে আরেক দলের ক্বাসিদা গাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতা হতো।’
‘চাঁদ রাতের দিন পুরান ঢাকার গলিতে গলিতে প্যান্ডেল টাঙিয়ে ঈদের দিনের কাওয়ালির প্রস্তুতি নিতো ক্বাসিদার দলগুলো। ঈদের রাতে চলত কাওয়ালি গানের আসর। গভীর রাত অবধি এসব আসরে ছেলেবুড়ো সবাই অংশ নিত।’
তবে বর্তমান সময়ে ঢাকার ঈদ আনন্দে কাওয়ালির স্থান একেবারেই নেই।
ঈদে নব্বইয়ের দশকের প্রজন্মের বিনোদনের বড় খোরাক ছিল ভিসিআরে সিনেমা দেখা। সেইসব দিনের স্মৃতিচারণ করেন ইয়াসমিন জাহান রুমকি (৩৮)।
তিনি বলেন, ‘পুরো ঢাকা শহরজুড়ে সিডির দোকানগুলোতে সিডি ও ভিসিআর ভাড়া দেওয়া হতো। ঈদের রাতে যাদের বাসায় টিভি আছে, তারা ভিসিআর ভাড়া আনত। আশপাশের সবাই জড়ো হতো সেসব বাসায়। রাতভর চলতো সিনেমা দেখা। অনেকে ঈদের দিন হলে গিয়ে নতুন মুক্তি পাওয়া সিনেমা দেখত। ঈদে সিনেমা দেখা ছিল ঈদ আনন্দের অবিচ্ছেদ্য এক অংশ।’
জেন-জি প্রজন্ম সিনেমা দেখলেও সেটি এখন আর হলকেন্দ্রিক নেই, হয়ে গেছে সিনেপ্লেক্স-কেন্দ্রিক।
পুরান ঢাকার অলি-গলিতে সাউন্ড বক্সে হিন্দি গান ছেড়ে অনেকে এখন ঈদ উদযাপন করে। একবিংশ শতাব্দীতে যারা জন্ম নিয়েছেন তাদের অনেকেরই পছন্দ, ঈদের রাতে বন্ধুদের সঙ্গে নেটফ্লিক্সে মুভি দেখা কিংবা গেমিং জোনে গেম খেলা।
স্কুলছাত্রী রুশনা (১৬) ঈদ উদযাপন নিয়ে বলে, ‘ঈদের রাতে বাসায় সব ভাইবোন মিলে নেটফ্লিক্সে সিনেমা দেখা কিংবা কার্ড খেলা একরকমের ট্রেডিশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্ধুদের অনেকে আবার প্লে-স্টেশনে সবাই মিলে টুর্নামেন্ট খেলে। এদিন পড়ালেখার চাপ থাকে না। তাই ঈদ উদযাপনও যে যার মতো করে করে।’
ঘোড়দৌড়ের মাঠ থেকে ঈদ আনন্দ ঢুকেছে রেস্তোরাঁয়
মুঘল আমলে সম্রাট-সুবেদাররা ঈদের নামাজ পড়তে যেতেন হাতির পিঠে চড়ে। জেন-এক্স হাতির বহর না দেখলেও ঘোড়ার স্মৃতি তাদের মানসপটে আজও অমলিন।
সিরাজুল হক (৬৯) বলেন, ‘আগে ঈদের দিন তৎকালীন রেসকোর্সে ঘোড়দৌড় ছিল এক রকমের ঐতিহ্য। স্বাধীনতার পর রেসকোর্স থেকে ঘোড়দৌড় তুলে দেওয়া হলেও ঢাকার প্রায় প্রতিটি মাঠে স্বল্পপরিসরে ঘোড়দৌড়ের ব্যবস্থা থাকত। ঘোড়দৌড়কে কেন্দ্র করে মাঠে এবং এর আশপাশে মেলা বসত। শিশুকালে এই মেলার রঙ-বেরঙয়ের হাতেগড়া খেলনাই ছিল আমাদের ঈদ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।’
নব্বইয়ের দশকেও ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে ঘোড়দৌড় ও নৌকাবাইচ ঈদ আনন্দে নতুন মাত্রা যোগ করতো। এছাড়া ঘোড়দৌড় কমে গেলেও ঈদ মেলা ছিল বহুকাল ধরে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
ব্যাংক কর্মকর্তা মঈনুল ইসলাম (৩২) বলেন, ‘আমি একেবারে যখন ছোট, বয়স পাঁচ-সাত হবে, তখন বাজারে এক ধরনের খেলনা আসল; নাম কাটিস পিস্তল। স্টিলের এই পিস্তলে বারুদের পাতা ভরে চাপ দিলেও ঠাস করে শব্দ হতো। ১৫ টাকা দামের সেই পিস্তল কেনার জন্য ছেলেরা বাবার কাছে বায়না ধরত। মেয়েদের আগ্রহ থাকত নানান রঙের বেলুন, পুতুল, বাঁশি আর হরেক রকমের লিপস্টিকের দিকে।’
একবিংশ শতাব্দীতে এসে ঈদ মেলা তার জৌলুশ হারিয়েছে। জেন-জি প্রজন্মের বড় অংশের পছন্দ ঈদের দিন দুপুরে কিংবা দুপুরের পড়ে বন্ধুদের নিয়ে রেস্তোরাঁয় আড্ডা দেওয়া। অনেকে আবার ঢাকার আশপাশের বিনোদনকেন্দ্রে ঘুরতে যাওয়াও পছন্দ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সাফওয়ান (২৩) বলেন, ‘বেশিরভাগ ঈদে গ্রামে যাওয়া পড়ে। কিন্তু ঢাকায় ঈদ করা মানেই দুপুরে কিংবা বিকালে সবাই মিলে রাজধানীর ভালো রেস্টুরেন্টে বসে আড্ডা দেওয়া, খাওয়া দাওয়া করা। ঈদের দিন ঢাকার রাস্তা ফাঁকা থাকে বলে অনেক সময়ে বাইকে করে ঢাকার নানা জায়গা ঘুরে বেড়ানোও হয়।’
ঢাকায় রেস্তোরাঁর আধিক্য প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক শোয়েব-উর-রহমান বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মের কাছে রাজধানীর ঈদ অনেকটাই রেস্টুরেন্ট-কেন্দ্রিক। সিঙ্গাপুরের শহরেও এত রেস্টুরেন্ট দেখা যায় না। পরিকল্পিত নগরায়নের ধার না ধেরে তরুণ প্রজন্মের আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে গড়ে উঠেছে হাজারের মতো রেস্টুরেন্ট। আর এসব রেস্টুরেন্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে রাজধানীতে উদযাপিত ঈদ আনন্দ।’
ঈদ সালামির রূপান্তর
ঈদ আনন্দের আরেকটি বড় অংশ সালামি দেওয়া। মধ্যপ্রাচ্যের আদলে বর্তমানে অনেকে এটিকে ঈদি বললেও সালামির বুৎপত্তিগত প্রচলনে আসেনি বড় কোনো পার্থক্য, শুধু বদলে গেছে সালামি দেওয়ার মাধ্যম।
ষাটোর্ধ্ব হুসনে আরা স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, ‘আমাদের সময়ে ধারণা ছিল, বাচ্চাদের হাতে টাকা দিলে তারা নষ্ট হয়ে যাবে। তাই একেবারে বাচ্চাদের টাকা না দিয়ে খেলনা বা খাবার জাতীয় উপহার দেওয়া হতো সালামি হিসেবে। যাদের বয়স ১২ পেরিয়ে গেছে—এমন বাচ্চাদের নতুন নোটে সালামি দেওয়া হতো।’
হুসনে আরার কথায় সায় দিয়ে নব্বইয়ের দশকে জন্ম নেওয়া রাওয়াতুন নবীও (২৯), ‘এখনও নতুন নোটে সালামি পেতে খুব ভালো লাগে। সালামির পাশপাশি আরেকটি সুন্দর উপহার ছিল ঈদ কার্ড। ৫ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা পর্যন্ত ছিল ঈদ কার্ডের দাম। অতি যত্নে নতুন টাকার নোট আর ঈদ কার্ড জমিয়ে রাখতাম আমরা।’
তবে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) আর ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের হাত ধরে বড় পরিবর্তন এসেছে চিরেচনা সালামি আর ঈদ শুভেচ্ছায়।
একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে শিক্ষানবিশ আদিবা আফরোজ লিলি (২৩) বলেন, ‘অনেক সময়ই সালামি দেওয়ার মতো নতুন নোট থাকে না হাতে। অনেক সময় যার কাছে সালামি চাচ্ছি সে আবার কাছে নেই। ডিজিটাল মাধ্যমে সালামি দিলে এসব কোনো ঝামেলাই না। ঈদ কার্ডের জনপ্রিয়তা এখনও আছে। তবে শুধু হাতে দেওয়া ঈদ কার্ডের বদলে এখন মোবাইলে মোবাইলে ডিজিটাল কার্ড পাঠানো হয়।’
উদযাপনেও হাতুড়ির ঘা
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ঢাকার মূল নগরী পুরান ঢাকায় ১ কোটি ২ লাখের বেশি মানুষ বাস করে। সেখানকার বেশিরভাগ পরিবারের সদস্য সংখ্যা চার জনের নিচে।
এমনিতেই জেন-জি প্রজন্মকে বলা হয় আত্মকেন্দ্রিক। তার মধ্যে যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবারের জয়জয়কারে ঈদের মতো এমন আনন্দ উৎসবও দিন দিন সীমিত হয়ে উঠছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘ঢাকার ঈদ এখন সীমিত ও সংকীর্ণ। যেসব মাঠে মেলা বসতো, পাড়া-মহল্লার ছেলেরা একসঙ্গে খেলাধুলা করে বন্ধু হয়ে উঠতো, উৎসবে-আনন্দে এক হয়ে উদযাপন করতো, সেসব মাঠই এখন বিলীন হয়ে গেছে। পরিবার ও সমাজের যৌথ কর্মকাণ্ড ভেঙে যাওয়ায় ঈদ আনন্দও ছকে বাধা গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে।
ঢাকার ঈদকে আবারও পুনরুজ্জীবিত করতে চাইলে সবার আগে নগরের এই গুমোট অবস্থায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর মাধ্যমে মানুষে মানুষে বন্ধন মজবুত হবে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের দূরত্ব ঘুচবে এবং উৎসবের আনন্দও ছড়িয়ে যাবে মানুষে মানুষে—এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
১৭ দিন আগে
ইসলামবাগের আগুন নিয়ন্ত্রণে
রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামবাগের কামালবাগ এলাকার একটি বাড়িতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টা ১৭ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়ার পর প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় তা নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট।
বিকাল ৪টা ২৭ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণ আসে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামান।
তিনি জানান, ভবনটির নিচতলায় প্লাস্টিক দ্রব্যের কারখানা এবং উপরে বাসা ছিল। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের তৎপরতার কারণেই আশপাশের ভবনগুলো আগুনে ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
আগুনের সূত্রপাত কোথা থেকে ও কীভাবে হলো—এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী নজমুজ্জামান বলেন, ‘সঠিক তথ্যের অভাবে আমরা এখনও আগুন লাগার সঠিক কারণ জানতে পারিনি। তবে (আগুন) পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলার পর তদন্তের মাধ্যমে এর কারণ জানতে পারব।’
আরও পড়ুন: রাজধানীর ইসলামবাগে ভবনে আগুন, আশপাশে ছড়িয়েছে আতঙ্ক
তবে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট কিংবা বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করেন তিনি।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, কতগুলো ঘর পুড়েছে, তাও এখনও নিশ্চিত নয়। তবে কাউকে এ পর্যন্ত নিহত বা আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়নি। ফলে হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে না।
এর আগে, আজ বিকালে আগুন লাগার খবরে ভবনটির আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
৬১ দিন আগে
পুরান ঢাকায় হরিজন উচ্ছেদ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন চুন্নু
পুরান ঢাকার হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষদের উচ্ছেদ না করে বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু।
বুধবার (১২ জুন) সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এই আহ্বান জানান।
চুন্নু বলেন, ' আমি সংসদ নেতাকে অনুরোধ করব, বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত মানবিক কারণে তাদের উচ্ছেদ না করতে।’
তিনি উল্লেখ করেন, হরিজন সম্প্রদায়ের লোকেরা কয়েক দশক ধরে ঢাকা শহরের কিছু এলাকায় বসবাস ও সেবা করে আসছে।
পুরান ঢাকার বংশালের আগা সাদেক রোডের কাছে মীরনজিলা কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের কথা উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, এখানে দীর্ঘদিন ধরে হরিজন সম্প্রদায়ের প্রায় তিন হাজার মানুষ বসবাস করছেন।
আরও পড়ুন: ব্যাংক সংকট সমাধানে সরকার ব্যর্থ : জিএম কাদের
তিনি বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন তাদের বসবাসের জায়গায় বাজার তৈরি করতে চায়।’
তিনি উল্লেখ করেন, এটি সত্য যে এই জায়গার মালিক নয় হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ নয়।
‘কিন্তু তারা যুগ যুগ ধরে সিটি করপোরেশনের এই জায়গায় আছে, তাদের উচ্ছেদের আগেই বিকল্প ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।’
তিনি বলেন, গতকাল উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলে হরিজন শিশুরা রাস্তায় শুয়ে পড়ে। ‘ফলে উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কমিশনার ওয়াহিদা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা প্রসঙ্গে চুন্নু বলেন, একজন কর কমিশনার গ্রামীণ ফোনসহ চারটি মোবাইল কোম্পানির ১৭০ কোটি টাকা মওকুফ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এনবিআর চেয়ারম্যান, অর্থসচিব ও অর্থমন্ত্রী কোথায়? দেশের স্বার্থে এটাকে যথাযথভাবে দেখতে হবে।’
আরও পড়ুন: সিন্দবাদের দৈত্যের মতো দেশ শাসন করছে আ.লীগ সরকার: জিএম কাদের
৩০৮ দিন আগে
ঈদের পরে পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদামের বিরুদ্ধে অভিযান: ডিএসসিসি মেয়র
ঈদুল ফিতরের পরে পুরান ঢাকার অবৈধ রাসায়নিক গুদামগুলোর বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) উদ্যোগে মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘পুরোনো ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যে যানজটের প্রভাব ও উত্তরণের উপায় চিহ্নিতকরণ’ শীর্ষক মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মেয়র তাপস বলেন, ‘পুরাতন ঢাকায় আমরা আর ঝুঁকিপূর্ণ রাখতে পারি না। কিছুদিন আগে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে ও এটা প্রতিনিয়ত ঘটছে। ইতোমধ্যে রাসায়নিক দ্রব্যাদি স্থানান্তরের জন্য যে গুদামঘর ও কারখানা প্রয়োজন তা শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে শ্যামপুরে শিল্পাঞ্চল করে দেওয়া হয়েছে। পুরান ঢাকায় যারা রাসায়নিক ব্যবসা করছেন তাদের প্রতি আমার নিবেদন এবং কঠোর হুঁশিয়ারি থাকবে। আপনারা আইন অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে সেখানে স্থানান্তরিত হোন। না হলে ঈদের পরে আমরা চিরুনি অভিযান করব।’
রাসায়নিক দ্রব্যাদির ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালিত হয় এমন ভবনগুলো সিলগালা করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন মেয়র তাপস। তিনি বলেন, সেখানে তালিকাভুক্ত ১৯২৪টি রাসায়নিক দ্রব্যাদির গুদাম ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ২০১৭ সালের পর থেকে সেসব প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মেয়র বলেন, ‘আপনারা বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে সেখানে ব্যবসা করছেন। আমরা ঈদের পরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে সবগুলো বন্ধ করে দিব। সেসব ভবনের উপরে অনেকেই আবাসন হিসেবে ব্যবহার করেন আবার নিচে গুদামঘর। এটি অত্যন্ত বিপদজনক। তাই প্রয়োজনে সেসব ভবন সিলগালা করে বিদ্যুৎ-পানি বন্ধ করে দেব। এতে পুরো ভবন বন্ধ হয়ে যাবে। তখন যে ভোগান্তি হবে সেজন্য আপনারা আমাদের দোষারোপ করতে পারবেন না।’
ডিসিসিআইর সভাপতি আশরাফ আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আক্তার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক মো. আব্দুল বাকী মিয়াসহ পুরান ঢাকা কেন্দ্রিক ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতারা।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন- করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, এফবিসিসিআই, ডিসিসিআইসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের ঊর্ধ্বতন নেতারা।
৩৭৯ দিন আগে
পুরান ঢাকায় ছাপাখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে
শুক্রবার রাতে পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলিতে একটি ছাপাখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের গুদাম পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, রাত ৯টা ৩৮ মিনিটে জিনাত প্রিন্টিং ওয়ার্কস লিমিটেডে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদস্যরাও।
আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি বলে জানান এই কর্মকর্তা। এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: উত্তরার কাঁচাবাজারের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে
বঙ্গবন্ধু টানেলের পরিত্যক্ত ওয়্যার হাউজে আগুন নিয়ন্ত্রণে
৩৯৭ দিন আগে
পুরান ঢাকার ইফতার বাজার: ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ বনাম ‘সব বাপের পোলায় খায়’
রমজানের শুরুতেই জমে উঠেছে পুরান ঢাকায় ইফতার বাজার। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যের সঙ্গে ভোজন রসিক শব্দের ঘনিষ্ঠতাও পুরোনো। বাহারি সব পদের ইফতার সামগ্রী থাকলে প্রকাশ্য লড়াই চলছে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ ও ‘সব বাপের পোলায় খায়’ ইফতারের মধ্যে। কে কাকে টেক্কা দেবে তা নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ইফতার বাজার সরগরম তাদের স্লোগানে। পুরান ঢাকার চকবাজার, ইসলামপুর, বাংলাবাজারসহ রাস্তার পাশের টং দোকানগুলোতে ঘুরে ব্যাপক আয়োজন দেখা গেছে।
ঢাকার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ইফতারের মার্কেট চকবাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন রকম ইফতারের জমকালো পরিবেশনা। সাধারণ ছোলা-মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, শরবতের পাশাপাশি দেখা গেছে ইফতারের নানারকম আইটেম। এছাড়া ইসলামপুর ও বাংলাবাজারেও দেখা গেছে বিভিন্ন রকমের ইফতারের আয়োজন।
বিভিন্ন ধরনের কাবাব রয়েছে। টেংরি কাবাব, সুতি কাবাব, শিক কাবাব, কাঠি কাবাবের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। এছাড়াও রয়েছে আস্ত মুরগির রোস্ট, কোয়েলের রোস্ট, খাসির আস্ত পা রোস্ট, গরুর হালিম। শুধু মাংসই নয় রয়েছে সবজি নান, দুধ নান, পরোটা, কিমা পরোটা, গরুর মাংসের বিরিয়ানিও। ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে তারা নানা রকম বিজ্ঞাপনী কথাবার্তাও বলে চলেছেন।
আরও পড়ুন: অগ্নি নিরাপত্তা: ঢাকার অভিজাত এলাকার রেস্টুরেন্টগুলো কতটা নিরাপদ?
৩৯৮ দিন আগে
পুরান ঢাকায় ককটেল নিক্ষেপে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আগুন
বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল চলাকালে পুরান ঢাকায় দুর্বৃত্তদের ছোড়া ককটেলে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আগুন ধরে যায়।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের (মিডিয়া সেল) স্টেশন অফিসার তালহা বিন জসিম জানান, আজ (১৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুরান ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোডের ওয়ান স্টার হোটেলের সামনে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: বিএনপি ও অন্যান্যদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল চলছে
তিনি বলেন, খবর পেয়ে সিদ্দিক বাজার ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
শুক্রবার সকালে দেশব্যাপী পঞ্চম দফা অবরোধ শেষ হওয়ার পর ১৫ নভেম্বর ঘোষিত তফসিল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলো ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেয়। যা আজ সকাল ৬টায় শুরু হয়ে মঙ্গলবার সকাল ৬টায় শেষ হবে।
আরও পড়ুন: নাটোরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে দুর্বৃত্তের আগুন
ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের কাছে ৩টি ককটেলের বিস্ফোরণ
৫১৫ দিন আগে
পুরান ঢাকার নাজিরাবাজারে দোকানের আগুন নিয়ন্ত্রণে
রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিরাবাজার এলাকায় দোকানে আগুন লেগেছিল। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: গাজীপুর হকার্স মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে, ৩৩টি দোকান পুড়ে ছাই
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের গুদাম পরিদর্শক (মিডিয়া সেল) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি আরও জানান, দোকান থেকে ১০ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জের বিসিক শিল্প এলাকায় পোশাক কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে
গাজীপুরে কারখানার গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণে
৫৯৪ দিন আগে
এক দফা আন্দোলন: গাবতলী থেকে পুরান ঢাকার দিকে বিএনপির পদযাত্রা শুরু
এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে গাবতলী থেকে পুরান ঢাকার দিকে পদযাত্রা শুরু করে বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঙ্গলবার সকাল ১১টা ২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে পদযাত্রা শুরু করেন। যা বিকাল ৪টায় রায় সাহেব বাজার মোড়ে এসে শেষ হবে।
সব মহানগর ও জেলা শহরে একই ধরনের কর্মসূচি পালনের কথা রয়েছে।
'আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ' এবং 'নিরপেক্ষ' সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিরোধী দলের এক দফা আন্দোলনের এটাই প্রথম কর্মসূচি।
আরও পড়ুন: আ. লীগের ভয় দেখানোর কৌশল আর চলবে না, জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে: ফখরুল
বিএনপির পাশাপাশি গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গণফোরাম, পিপলস পার্টি, লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট ও স্বাধীন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পদযাত্রা করবে।
এর আগে, ১২ জুলাই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিকভাবে 'এক দফা' আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
এক দফা দাবি আদায়ে প্রথম কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ১৮ ও ১৯ জুলাই দেশব্যাপী ২ দিনের পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।
১৯ জুলাই (বুধবার) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত পদযাত্রা করবে বিএনপি। অন্যান্য বিরোধী দল ও জোটও একই দিনে রাজধানীতে এই কর্মসূচি পালন করবে।
দলটির এই দাবির মধ্যে রয়েছে- বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, বিদ্যমান সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজনৈতিক বন্দির মুক্তি, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব ‘মিথ্যা’ ও ‘বানোয়াট’ মামলা প্রত্যাহার এবং সকল ‘মিথ্যা সাজা’ বাতিল।
আরও পড়ুন: হিরো আলমের ওপর হামলা গণতন্ত্রের নামে আ. লীগের তামাশা: ফখরুল
একদফা আন্দোলন: মঙ্গলবার দেশব্যাপী পদযাত্রা করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো
৬৩৯ দিন আগে
পুরান ঢাকায় পুকুর দখলে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ডিআইটির শতবর্ষের পুকুর দখল করে মার্কেট ও কাউন্সিল অফিস নির্মাণের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন হাইকোর্ট। এই আদেশের ফলে পুকুরটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থাকবে।
স্থিতাবস্থা জারির আদেশ কার্যকর করে বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রেক্ষিতে সোমবার (৫ জুন) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: রাজশাহী সিটির ৯৫২ পুকুর সংরক্ষণের নির্দেশ
রুলে পুকুরটি রক্ষা করতে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ গোষণা করা হবে না, সিএস ও আর এস রেকর্ড অনুযায়ী পুকুরটি সংরক্ষণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং পুকুরের মধ্যে যেসব স্থাপনা করা হয়েছে সেগুলো অপসারণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার সচিব, পরিবেশ সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব, রাজউক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
এর আগে গতকাল পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ডিআইটির শতবর্ষের পুকুর দখল করে মার্কেট, কাউন্সিল অফিস নির্মাণ বন্ধ করে পুকুরটি সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
রিটে পুকুর দখলের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এ রিট দায়ের করেন। রিটে গত ৩ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পুকুর দখল করে মার্কেট ও কাউন্সিলর অফিস’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় ১৯৬৩ সালে ১৩ দশমিক ৫৭ একর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এর মধ্যে দুই একরের একটি পুকুরও ছিল।
এলাকাবাসী খাওয়ার পানি সংগ্রহ থেকে ধোয়া-মোছাসহ নানাকাজে পুকুরের পানি ব্যবহার করতেন। পুকুর থেকে মাছও ধরতেন তারা। শত বছরের ঐতিহ্যবাহী সেই পুকুরটি ব্যক্তিমালিকানাধীন দাবি করে প্রায় ভরাট করে ফেলা হচ্ছে।
চারপাশে ছোট ছোট মার্কেট, দোকান ও রিকশার গ্যারেজও গড়ে তোলা হয়েছে। দখল নিশ্চিত করতে পুকুরের একটি অংশ ভরাট করে নির্মিত দোতলা ভবন স্থানীয় ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহানা আক্তারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পরিবেশ সংরক্ষণে টিলাকাটা ও পুকুর ভরাট বন্ধ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বছরের পর বছর ধরে দখল চললেও উচ্ছেদ না করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গত শুক্রবার পুকুর রক্ষার দাবিতে আয়োজিত পুকুর ঘেরাও কর্মসূচি ও মানববন্ধন পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। কর্মসূচি পালন না করে ফিরে গেছেন এলাকাবাসী ও পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা।
পুকুরটি রক্ষায় এলাকাবাসী সিটি করপোরেশন ও রাউজকে বিভিন্ন সময় চিঠি দিয়েছে। এতে পুকুরটি সংরক্ষণ করে সুপেয় পানি ও অগ্নিকাণ্ডে পানি সরবরাহ এবং অবৈধ অংশ উদ্ধার করে চারদিকে দেয়াল দিয়ে পুকুর রক্ষার দাবি জানানো হয়।
তবে এসব চিঠি কিংবা দাবি-দাওয়ায় টনক নড়েনি সংশ্লিষ্টদের।
এলাকাবাসী জানান, ২০০৪ সালেও রাজউকের পুকুরে গোসল করেছেন তারা। এরপর থেকেই মূলত পুকুরটি প্রভাবশালীদের দখলে চলে যেতে থাকে। দখলের শুরুতে পুকুরটিতে প্রচুর আবর্জনা ফেলা হয়।
গৃহস্থালি থেকে শুরু করে সব ধরনের বর্জ্যে পুকুরটি ভরে ওঠে। তারপর স্থানীয় প্রভাবশালীরা পুকুরপাড়ে টং দোকান ও রিকশার গ্যারেজ নির্মাণ করেন।
তখন পুকুরটির ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
গেন্ডারিয়া পুকুরের চারপাশ মার্কেট, কংক্রিটের দোকান ও রিকশার গ্যারেজে ঘেরা।
স্থানীয়রা মনে করেন, পুকুরের পাড় দখল করে দোকান তৈরি করা হলেও এখনো পুকুরের বড় অংশই দৃশ্যমান। ধীরে ধীরে ভেতরের অংশ দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা থেকেই চারপাশে মার্কেটের প্রাচীর দেওয়া হয়েছে।
কয়েকজন দোকানি বলেন, এখানে দেড়শ থেকে দুইশ দোকানের ভাড়া তোলেন বর্তমান কাউন্সিলরের বাবা ও সাবেক কাউন্সিলর সাইদুর রহমান সহিদ।
রাজউকের সম্পত্তি বিভাগ জানিয়েছে, পুকুরটি রাজউকেরই। এটি দখলে নেওয়ার জন্য প্রভাবশালীরা ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে একটি মামলা করেন। সেই মামলা এখনো চলছে।
তবে গেজেটভুক্ত সম্পত্তি হওয়ায় পুকুরটি দখলে নিতে পারছেন না দখলদাররা।
এছাড়া অবৈধ দখল উচ্ছেদে রাজউকের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে পুকুর থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সীমানা পিলার উদ্ধার
৬৮১ দিন আগে