আকাশসীমা
দেশের আকাশসীমায় ১০টিরও বেশি মার্কিন বেলুন উড়েছে: চীন
চীন বলেছে, গত এক বছরে ১০টিরও বেশি মার্কিন হাই-অ্যালটিটিউড বেলুন বিনা অনুমতিতে তাদের দেশের আকাশসীমায় উড়েছে। বেইজিং বিশ্বজুড়ে নজরদারি বেলুনগুলোর একটি বহর পরিচালনা করছে বলে ওয়াশিংটনের এমন অভিযোগের পরই চীন এ দাবি করলো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গুলি করে একটি সন্দেহভাজন চীনা গুপ্তচর বেলুন ধ্বংস করার পরে চীনের পক্ষ থেকে এ দাবি করা হলো।
সন্দেহভাজন চীনা গুপ্তচর বেলুনটি আলাস্কা থেকে দক্ষিণ ক্যারোলিনা অতিক্রম করেছিল। এ ঘটনার মধ্যদিয়ে কয়েক দশকের মধ্যে এই দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে।
সোমবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন অভিযুক্ত মার্কিন বেলুনগুলো সম্পর্কে জানালেও, এগুলো সম্পর্কে কোনও বিশদ বিবরণ দেননি। এমনকি কীভাবে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছিল বা এগুলোর সঙ্গে মার্কিন সরকারের বা সামরিক বাহিনীর কোনও সম্পর্ক ছিল কিনা তাও জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: বেলুন ইস্যুতে ব্লিঙ্কেনের চীন সফর বাতিল
ওয়াং তার প্রাত্যাহিক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘মার্কিন বেলুনগুলো অন্য দেশের আকাশসীমায় অবৈধভাবে প্রবেশ করা সাধারণ ব্যাপার।’
তিনি বলেন, গত বছর থেকে, মার্কিন গোয়েন্দা বেলুনগুলো চীনের কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ১০ বারের বেশি অবৈধভাবে চীনের আকাশসীমার ওপর দিয়ে উড়েছে।’
ওয়াং বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ‘প্রথমে নিজের কর্মকাণ্ডের বিচার করা এবং সংঘাত সৃষ্টি না করে মনোভাব পরিবর্তন করা।’
চীন বলেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধ্বংস করা বেলুনটি ছিল আবহাওয়া গবেষণার জন্য তৈরি একটি মনুষ্যবিহীন বিমান।
তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এটিকে গুলি করে অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়া দেখানোর অভিযোগ করেছে এবং এই প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দিয়েছে।
ঘটনার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তার বেইজিং সফর বাতিল করেছেন।
এ ঘটনার আগে অনেকেই আশা করেছিলেন যে তাইওয়ান, বাণিজ্য, মানবাধিকার এবং বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা পদক্ষেপের হুমকির বিষয়ে সম্পর্কের তীব্র অবনতি এবার কিছুটা কমবে।
এছাড়াও, সোমবার ফিলিপাইন একটি চীনা উপকূলরক্ষী জাহাজকে একটি সামরিক-গ্রেড লেজার দিয়ে ফিলিপাইনের উপকূলরক্ষী জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করা এবং দক্ষিণ চীন সাগরে কয়েকজন ফিলিপিনো ক্রুকে সাময়িকভাবে অন্ধ করে দেয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে।
ফিলিপাইন এটিকে ম্যানিলার সার্বভৌম অধিকারের ‘স্পষ্ট’ লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।
ওয়াং বলেন, ফিলিপাইনের একটি উপকূলরক্ষী জাহাজ ৬ ফেব্রুয়ারি অনুমতি ছাড়াই চীনা জলসীমায় অনুপ্রবেশ করেছিল এবং চীনা উপকূলরক্ষী জাহাজগুলো ‘পেশাদারভাবে ও সংযমের সঙ্গে’ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
চীন মৌখিকভাবে তার আশেপাশের সমস্ত কৌশলগত জলপথের মালিকানা দাবি করছে এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যে তার সামুদ্রিক বাহিনী ও দ্বীপ ফাঁড়ি গড়ে তুলছে।
ওয়াং বলেছেন, ‘চীন ও ফিলিপাইন এই বিষয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখছে।’
তবে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ ঘটনা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রশ্নের জবাব দেয়নি।
অন্যদিকে, উত্তেজনা আরও বাড়াতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে রবিবার একটি মার্কিন যুদ্ধবিমান লেক হুরনের ওপর একটি ‘অজ্ঞাত বস্তু’কে লক্ষ্য করে গুলি করে।’
গত বৃহস্পতিবার বাইডেন প্রশাসন আমেরিকান ইউ-২ গুপ্তচর বিমানের ছবির কথা উদ্ধৃত করে বলে, তাদের ধ্বংস করা চীনা বেলুনটি ৪০টিরও বেশি দেশকে লক্ষ্যবস্তু করে গোয়েন্দা সংকেত শনাক্ত এবং তথ্য সংগ্রহ করছিল।
বেলুনকাণ্ডের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছয়টি চীনা সংস্থার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ইউএস হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসও সর্বসম্মতভাবে চীনকে মার্কিন সার্বভৌমত্ব ‘লঙ্ঘন’ এবং ‘গোয়েন্দা অভিযান সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রতারিত করার চেষ্টা করা’র জন্য অভিযুক্ত করেছে।
চীনের মুখপাত্র ওয়াং এই অভিযোগকে ফের প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ‘বস্তুগুলোকে গুলি করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘন ঘন উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিশ্রম ও অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো।’
আরও পড়ুন: চীনের বেলুন গোয়েন্দা সংকেত সংগ্রহ করতে সক্ষম: যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র সমুদ্রের উপর চীনা বেলুন ধ্বংস করল, ধ্বংসাবশেষ পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ
১ বছর আগে
লাতিন আমেরিকার উপর দিয়ে উড়ছে আরেকটি চীনা গুপ্তচর বেলুন: পেন্টাগন
লাতিন আমেরিকার উপর দিয়ে আরেকটি চীনা গুপ্তচর বেলুন উড়তে দেখা গেছে বলে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় জানিয়েছে পেন্টাগন। এর একদিন আগে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমা অতিক্রম করে যাওয়া একই ধরনের নজরদারি বেলুনের ওপর নজর রাখছেন।
প্রেস সেক্রেটারি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার সিএনএনকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা ল্যাটিন আমেরিকায় একটি বেলুনের ট্রানজিট (অতিক্রম) হওয়ার খবর পাচ্ছি। আমরা এখন মূল্যায়ন করছি যে এটি আরেকটি চীনা নজরদারি বেলুন।’
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই উল্লেখ করেছে যে লাতিন আমেরিকার ওপর দিয়ে বেলুনটি ঠিক কোথায় ছিল তা স্পষ্ট না হলেও একজন মার্কিন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, এটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।
এদিকে ইনসাইড পেপারের পোস্ট করা একটি টুইটার ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে মন্টানার বিলিংসে বিস্ফোরণ ঘটেছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে চীনা গুপ্তচর বেলুনের সন্ধান মিলেছে: পেন্টাগন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপরে ভাসমান বেলুনটি যদি ভূপাতিত করা হয় তবে ধ্বংসাবশেষ ক্ষেত্রটি কী হবে তা নির্ধারণের জন্য মার্কিন নর্দার্ন কমান্ড নাসার সঙ্গে সমন্বয় করছে, এমনটাই জানিয়েছেন এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ভ্রমণ করা সন্দেহভাজন চীনা গুপ্তচর বেলুনটি এখনও ট্র্যাক করা হচ্ছে। পেন্টাগন বলেছে যে এটি বর্তমানে কোনো হুমকি নয় এবং আশা করা হচ্ছে যে এটি আগামী কয়েক দিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই সপ্তাহান্তে তার চীন সফর স্থগিত করেছেন, চলমান ঘটনাকে তিনি ‘আমাদের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে সমস্যা সমাধানের জন্য যোগাযোগের মাধ্যম খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘গুপ্তচরবৃত্তির’ অভিযোগে ১২ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করল যুক্তরাষ্ট্র
১ বছর আগে
ইউরোপীয় ইউনিয়নের আকাশসীমায় রাশিয়ার বিমান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা
ইউরোপীয় ইউনিয়নের আকাশসীমায় রাশিয়ার সব ধরনের বিমান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেছেন, ‘আমরা রাশিয়ান মালিকানাধীন, রাশিয়াতে নিবন্ধিত এবং রাশিয়া দ্বারা নিয়ন্ত্রিত যেকোন ধরনের বিমানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের আকাশসীমা নিষিদ্ধ ঘোষণা করছি।’
এই ঘোষণার পর বহু যাত্রীবাহী আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন থেকে এমন সকল বিমান, এমনকি ধনীদের ব্যক্তি মালিকানাধীন জেট ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ভুক্ত কোন দেশে অবতরণ করতে পারবে না, উড্ডয়ন করতে পারবে না এবং সেদেশ দেশগুলোর আকাশসীমার উপর থেকে উড়েও যেতে পারবে না।
যুক্তরাজ্য থেকেও একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর ইউরোপীয় অনেক দেশ রাশিয়ার জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করছে। জার্মানি তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ান বিমানগুলোকে অনেক ঘুরে যাতায়াত করতে হবে এবং তাতে ফ্লাইটের সময় অনেক বেশি লাগবে।
বাণিজ্যিক বিমানগুলো ইতোমধ্যেই ইউক্রেন, মলদোভা এবং বেলারুশের আকাশসীমা এড়িয়ে চলছে।
প্রতিশোধমূলক সিদ্ধান্ত হিসেবে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় বিমানসংস্থা এরোফ্লোট বলেছে, তারাও ইউরোপগামী সকল ফ্লাইট বাতিল করবে। পরবর্তী নোটিশ না দেয়া পর্যন্ত এসব ফ্লাইট বন্ধ থাকবে।
ব্রিটিশ বিমানের উপরেও একই ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে রাশিয়া।
আরও পড়ুন: পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে উচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ পুতিনের, বাড়ছে উত্তেজনা
এদিকে, ইউক্রেনে আগ্রাসনের চতুর্থ দিনে রবিবার পারমাণবিক অস্ত্র বহনকারী বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ জাতীয় পদক্ষেপ পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে উত্তেজনা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ন্যাটো জোটের শীর্ষ নেতাদের ‘আগ্রাসী বিবৃতি’ এবং কঠোর আর্থিক নিষেধাজ্ঞার উদ্ধৃতি দিয়ে পুতিন রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র বহনকারী বাহিনীকে উচ্চ সতর্ক থাকার এ নির্দেশনা জারি করেন।
অপরদিকে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের বৈঠক বেলারুশ সীমান্তে হবে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কার্যালয় টেলিগ্রাম ম্যাসেজিং অ্যাপে জানিয়েছে, বেলারুশ সীমান্তের একটি অজ্ঞাত স্থানে সাক্ষাৎ করবে দুই পক্ষ। তবে বৈঠকের কোনো নির্দিষ্ট সময় জানানো হয়নি।
পড়ুন: বেলারুশ সীমান্তে হবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার বৈঠক
২ বছর আগে