মার্কিন আইনপ্রণেতা
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে আগ্রহী মার্কিন আইনপ্রণেতারা
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও জোরদার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ (রিপাবলিকান-টেক্সাস) এবং কংগ্রেসম্যান স্টিভ শ্যাবোট (রিপাবলিকান-ওহিও)।
জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান এমপির নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তারা এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন নুরুল ইসলাম নাহিদ, নাহিম রাজ্জাক এবং কাজী নাবিল আহমেদ।
বুধবার (১৮ মে) ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানের নিজ নিজ কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ সহিদুল ইসলাম এবং দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে সংসদীয় প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের অবহিত করেন। তারা বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দক্ষ কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার আরও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের আইনপ্রণেতারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মার্কিন মানবিক ও রাজনৈতিক সহায়তার কথা উল্লেখ করেন এবং তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে মিয়ানমারকে সম্ভাব্য সব উপায় রাজি করাতে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের অনুরোধ জানান।
মার্কিন আইনপ্রণেতারা এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতার ভূয়সি প্রশংসা করেন এবং বলেন যে তারা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
সংসদীয় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশকে ৬৪ মিলিয়ন ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন অনুদানের জন্য মার্কিন সরকারের প্রশংসা করেন।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা
সংসদীয় প্রতিনিধিদল ব্যবসা-বান্ধব বাংলাদেশের বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় খাতে আরও মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের কাছে পৌঁছে দেন। বাংলাদেশের শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাইলফলক অর্জনের কথা উল্লেখ করে ফারুক খান এক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য টেক্সাস-ভিত্তিক মার্কিন জ্বালানি কোম্পানিগুলোর প্রশংসা করেন।
উভয় পক্ষই আগামী দিনে দুদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার আরও সম্প্রসারণ এবং বহুমুখী অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সিনেট কমিটির পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক সদস্য সিনেটর টেড ক্রুজ দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর জোর দেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে টেক্সাস রাজ্য, জ্বালানি খাতে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের সাথে আরও সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী।
পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র: রাষ্ট্রদূত হাস
২ বছর আগে
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এর কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের উপায় খুঁজে বের করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে সরকারের ইচ্ছার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এছাড়া এ ব্যাপারে তিনি মার্কিন কংগ্রেসের সহযোগিতা চেয়েছেন।
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, জাতিসংঘে অফিসিয়াল মিটিংয়ে যোগ দিতে ২৩ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কে যান ড. মোমেন।
এই সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২৮ ফেব্রুয়ারি মার্কিন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং ও ১ মার্চ টমাস ল্যান্টোস মানবাধিকার কমিশনের সহসভাপতি কংগ্রেসম্যান জেমস পি ম্যাকগভার্নের সঙ্গে বৈঠক করেন।
কোভিড-সম্পর্কিত প্রোটোকলের কারণে উভয় মিটিং ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়।
র্যাব এবং এর সাত বর্তমান ও সাবেক জৈষ্ঠ কর্মকর্তাদের ওপর সাম্প্রতিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ড. মোমেন জানান, র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ মোকাবিলা বাংলাদেশ সব সময় প্রস্তুত আছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে, র্যাব বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশে সবচেয়ে দক্ষ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হয়ে উঠেছে। এটি সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা, মাদক ও মানব পাচার এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অপরাধ মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
ড. মোমেন রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় এবং কোভিড ভ্যাকসিন পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী মানবিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা কৃতজ্ঞতার সাথে স্বীকার করেন।
পড়ুন: সব দায় র্যাবের ঘাড়ে চাপানো অবিচার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
এছাড়াও তিনি রাখাইন রাজ্যে একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি এবং বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে অবস্থানরত সব রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে নিতে সম্ভাব্য সব উপায়ে মিয়ানমারকে রাজি করাতে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের অনুরোধ জানান।
মার্কিন আইনপ্রণেতারা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেন। তারা এ বিষয়ে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন বলে আশ্বাস দেন।
ড. মোমেন বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত করার এবং আগামী দিনে চমৎকার অংশীদারিত্ব আরও গভীর করার ওপর জোর দেন।
তিনি দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করতে কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলসহ উভয় আইন প্রণেতাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
পড়ুন: জলবায়ু অর্থ চুক্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে ভূরাজনীতি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২ বছর আগে