যুদ্ধ
বাংলাদেশ যুদ্ধের বিপক্ষে, রক্ষা করা হবে সার্বভৌমত্ব: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারও সঙ্গে যুদ্ধে না জড়ানোর ব্যাপারে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তবে তিনি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়াব না। কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক 'টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট, ১৯৭৪' প্রণয়নের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
আরও পড়ুন: মাতৃভাষা শিক্ষার মাধ্যম হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে সরকার ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আমাদের যা যা প্রয়োজন আমরা তাই করব। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।’
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ২৯ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজা উপত্যকায় ২৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানান, এটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক সহিংসতার আরেকটি ভয়াবহ মাইলফলক।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে ‘পুরোপুরি বিজয়’ অর্জন না হওয়া পর্যন্ত আক্রমণ অব্যাহত থাকবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সৈন্যরা শিগগিরই মিশরীয় সীমান্তের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় চলে যাবে। সেখানে গাজার অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ২৩ লাখ লোক আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ১৩ জনের মৃত্যু; রাফাহ অভিযান নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৭টি লাশ হাসপাতালে আনা হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ নিয়ে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৯২ জনে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিহতদের মধ্যে কতজন বেসামরিক ও কতজন সৈনিক তার হিসাব দিতে পারেনি। তবে নিহতদের দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু বলে জানায়। এ যুদ্ধে ৬৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
গাজায় হামাস পরিচালিত সরকারের অংশ হলেও হতাহতের বিস্তারিত রেকর্ড রাখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর হিসাব গাজায় আগের যুদ্ধগুলোর পরিসংখ্যান জাতিসংঘের সংস্থা, স্বাধীন বিশেষজ্ঞ ও ইসরাইলের নিজস্ব পরিসংখ্যানের সঙ্গে অনেকাংশে মিলে গেছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন শসস্ত্র বাহিনী গাজা থেকে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে।
ইসরায়েলের হাতে বন্দি ২৪০ ফিলিস্তিনির বিনিময়ে নভেম্বরে সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতিতে শতাধিক বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। হামাসের কাছে এখনও প্রায় ১৩০ জন জিম্মি রয়েছে, যাদের এক চতুর্থাংশ নিহত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০০৭ সাল থেকে হামাস শাসিত অবরুদ্ধ ভুখণ্ডে সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ও ধ্বংসাত্মক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।
ইসরায়েল বলছে, তারা কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ১০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি জঙ্গিকে হত্যা করেছে। সামরিক বাহিনী বলছে, তারা বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি এড়ানোর চেষ্টা করে। এত বেশি মৃত্যুর জন্য হামাসকে দায়ী তারা। কারণ এই গোষ্ঠী ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় হামলা করে। সামরিক বাহিনী জানায়, অক্টোবরের শেষ দিকে স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত তাদের ২৩৬ সেনা নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের মতে, যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গাজার প্রায় ৮০ শতাংশ ফিলিস্তিনিকে তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করেছে এবং জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ অনাহারে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যা বন্ধ করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
নেতানিয়াহুর তিন সদস্যবিশিষ্ট যুদ্ধ-মন্ত্রিসভার সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল বেনি গান্টজ রবিবার হুঁশিয়ারি করেন, মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া হলে এই আক্রমণ রাফা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাসের পবিত্র মাসটি প্রায়ই এই অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধির একটি সময়। আগামী ১০ মার্চ থেকে রোজা শুরু হওয়ার সম্ভানা রয়েছে।
ইসরায়েল বলেছে যে, তারা রাফাহ থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে বিধ্বস্ত অঞ্চলের কোথায় তারা যাবে তা পরিষ্কার নয়, যার বিশাল অঞ্চল সমতল হয়ে গেছে। মিশর সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে এবং সতর্ক করে দিয়েছে যে ফিলিস্তিনিদের যেকোনো গণ অনুপ্রবেশ ইসরায়েলের সঙ্গে কয়েক দশকের পুরোনো শান্তি চুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
ইসরাইলের শীর্ষ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা এখনো আরেকটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তির মধ্যস্থতা করতে মিসর ও কাতারের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সেই প্রচেষ্টা থমকে গেছে বলে মনে হচ্ছে।
নেতানিয়াহু হামাসের 'বিভ্রান্তিকর' দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। হামাস বলছে, ইসরাইল যুদ্ধ শেষ না করা পর্যন্ত এবং গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেবে না। সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের সদস্যসহ শত শত ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তিও দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজার রাফায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়াল
মিয়ানমারে বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান: আইনমন্ত্রী
মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সাম্প্রতিক বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও আধাসামরিক সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ধৈর্য ধরার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের অনুপস্থিতিতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: সাগর-রুনি হত্যার বিচার হারিয়ে যাবে না: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, আজ (সোমবার) মিয়ানমার বর্ডার পুলিশের প্রায় ৭৮ জন সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, তাদের মধ্যে কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এসব বিজিপি সদস্যকে সেখানকার একটি স্কুলে রাখা হয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মিথ্যা মামলা দিয়ে ড. ইউনূসকে হয়রানি করছে না সরকার: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে তাদের ফেরত পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তাদের ফেরত পাঠাতে না পারলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের বিষয়ে সরকার জানে এবং মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় স্কুল বন্ধ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কর্মকর্তাদের কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ আইনমন্ত্রীর
গাজায় মানবিক যুদ্ধ বিরতির জাতিসংঘের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো
গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির দাবিতে স্থানীয় সময় শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের উত্থাপিত প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
১৫ সদস্যের কাউন্সিলে ১৩ সদস্য পক্ষে এবং একমাত্র যুক্তরাষ্ট্র বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। যুক্তরাজ্য ভোটদানে বিরত ছিল।
এতে গাজায় ইসরায়েলের মাসব্যাপী বোমাবর্ষণ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচ্ছিন্ন অবস্থান এবং তার কিছু ঘনিষ্ঠ মিত্রের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান ফাটল লক্ষ করা যায়।
যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থনকারীদের মধ্যে ফ্রান্স ও জাপানও ছিল।
প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সনদের ৯৯ অনুচ্ছেদ বলে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছেন সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
এই অনুচ্ছেদে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি সংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপনের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে জাতিসংঘ প্রধানকে।
গুতেরেস গাজায় সৃষ্ট ‘মানবিক বিপর্যয়’ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে মার্কিন ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর রবার্ট উড বলেছেন, সামরিক অভিযান বন্ধ করা হলে হামাসকে গাজা শাসন চালিয়ে যেতে এবং ‘পরবর্তী যুদ্ধের বীজ রোপণ করার সুযোগ দেবে’।
ভোটের আগে উড বলেছিলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি শান্তি এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান চায় না হামাস। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে চায়, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা উভয়েই যাতে শান্তিতে ও নিরাপদে বসবাস করতে পারে। তাই আমরা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করি না।’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উপত্যকায় ১৭ হাজার ৪০০ জনের বেশি নিহত এবং ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বেসামরিক নাগরিক ও সামরিক সদস্যদের মৃত্যুর আলাদা করে কোনো হিসাব দেয়নি।
তবে তারা জানায়, নিহতদের ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু।
অন্যদিকে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলি পক্ষের প্রায় ১২০০ জন মারা গেছে।
যুদ্ধ বন্ধ করে অস্ত্র কেনার অর্থ শিশুদের কল্যাণে সঞ্চয় করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববাসীর কল্যাণের স্বার্থে চলমান যুদ্ধ ও অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধে এগিয়ে আসতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মঙ্গলবার(১৭ অক্টোবর) ফিলিস্তিনের একটি হাসপাতালে বোমা হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা জনগণের কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।
বুধবার(১৮ অক্টোবর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ এর উদ্বোধনী ও শেখ রাসেল পদক-২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন: প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মাত্র ১০ বছর বয়সে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ট্র্যাজেডির অন্যতম শহীদ ছিলেন রাসেল।
শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছে শিশু ও নারীরা। ইসরায়েল এখন ফিলিস্তিনের ওপর হামলা শুরু করেছে। মঙ্গলবার একটি হাসপাতালে বোমা হামলায় অনেক শিশু নিহত হয়েছে। সেখানে শিশুদের রক্তাক্ত ছবি দেখা গেছে। ইসরায়েলেও শিশুদের হত্যা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তারা যুদ্ধে বাবা-মা ও সন্তানদের হারানো মানুষের বেদনা ও কষ্ট বুঝতে পারেন। কারণ ১৯৭৫ সালের রক্তপাতের পর বিদেশে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করতে হয়েছে দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাই আমরা যুদ্ধ চাই না। আমি আহ্বান জানাচ্ছি যুদ্ধ বন্ধের।’
তিনি আরও বলেন, অস্ত্র উৎপাদন ও প্রতিযোগিতার জন্য যে অর্থ ব্যয় করা হয় তা খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা এবং বিশ্বের শিশুদের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ব্যবহার করতে হবে। ‘এটা আমাদের দাবি। আমিও এই দাবি করছি।’
বাংলাদেশ সবসময় শান্তির জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা শান্তি চাই। কারণ, শান্তি উন্নয়ন নিয়ে আসে এবং যুদ্ধ ধ্বংস ডেকে আনে। আমরা ধ্বংস চাই না, বরং উন্নয়ন ও শান্তি চাই।’
শিশুদের কল্যাণ ও সাফল্যে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, শিশুদের উন্নয়নে তারা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সুতরাং শিশু মৃত্যুহার ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসের পাশাপাশি তাদের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শিশুরা যাতে শৈশব থেকেই শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চায় সম্পৃক্ত হয়ে সঠিকভাবে গড়ে উঠতে পারে সেজন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমি বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলেছি। আমরা দেশের শান্তি ও অগ্রগতি চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাবা-মা ও প্রিয়জনদের অনুগত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, 'শিক্ষাই একজন মানুষের প্রধান শক্তি।’
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ও তার ছোট বোন রেহানা তাদের সন্তানদের বলেছিলেন যে তারা তাদের জন্য অর্থ ও সম্পদের মতো কিছুই রেখে যেতে পারবেন না এবং তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বলেছিলেন। তারা (তাদের সন্তানরা) প্রকৃতপক্ষে শিক্ষা গ্রহণ করেছে এবং বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, এখন তাদের সন্তানরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, অটিস্টিক শিশুদের উন্নয়ন ও সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির মতো দেশের উন্নয়নে পর্দার আড়ালে থেকে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘ওরা সামনে আসে না। তারা নেপথ্যে থেকে দেশ ও দেশের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। তারা দেশের কল্যাণে আমাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: জন্মদিনে শেখ রাসেলকে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক থেকে দূরে থেকে নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে দেশকে এগিয়ে নিতে শিশুদের উচ্চ আকাঙ্ক্ষী হতে আহ্বান জানান।
২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তার সরকারের ভিশনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশু-কিশোররা স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক হবে এবং সে সময় দেশকে নেতৃত্ব দেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি স্কুলে একটি করে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শামসুল আরেফিন, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, মহাসচিব কে এম শহীদুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদউদ্দিন আহমেদ রতন, শিশু বক্তা আমিরা নায়ের চৌধুরী বক্তব্য দেন।
পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শেখ রাসেলের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা ভারতীয় কর্নেল (অব.) অশোক কুমার তারার একটি ভিডিও বার্তা, শেখ রাসেলের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি এবং শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ উপলক্ষে একটি ‘থিম সং’ পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট কার্ড বিনিময়ের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং আইসিটি বিভাগের আরও কয়েকটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেন।
রাসেলের শৈশব নিয়ে লেখা 'শ্রাবণের আবরণ শেখ রাসেল' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
'শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পালিত হচ্ছে শেখ রাসেল দিবস-২০২৩।
রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ রাসেল পদক-২০২৩ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ পদক-২০২৩ প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন চিত্রাঙ্কন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সমাপনী পুরস্কার বিতরণ করেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন (বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে) এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ঢাকা, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ পদক-২০২৩ গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধ করুন, নারী ও শিশুদের বাঁচান: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যুদ্ধে নিহতদের লাশ সাধারণত স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে না: রেডক্রস ও ডব্লিউএইচও
দুর্যোগ ও যুদ্ধে নিহতদের লাশ সম্পর্কে প্রায়ই ভিত্তিহীন ভয় ও ভুল ধারণা থাকে। তাই এসব ঘটনায় নিহতদের লাশ নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে সমাহিত করার জন্য সমাজের মানুষের মাঝে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও তথ্য নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য রেডক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি), ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রস (আইসিআরসি) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) যুদ্ধ ও দুর্যোগে বেঁচে যাওয়া মানুষদের সাহায্য করার অংশ হিসেবে এ আহ্বান জানিয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সশস্ত্র সংঘর্ষে যখন অনেক মানুষ মারা যায়, তখন এই লাশের উপস্থিতি ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের জন্য কষ্টকর।
কেউ কেউ দ্রুত এসব লাশ দাফনের জন্য এগিয়ে আসে। দুর্দশা কমানোর জন্য অনেকে গণকবর দেয়। কারণ ধারণা করা হয়, এই লাশগুলো স্থানীয় জনসাধারণের স্বাস্থ্যগত হুমকির কারণ হতে পারে।
তবে এই সংস্থাগুলো বলেছে, এই ধরনের কাজ কিছু মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও জনগণ যদিও লাশগুলো দ্রুত কবর দেওয়ার জন্য প্রচুর চাপের মধ্যে থাকে, তবে লাশ অব্যবস্থাপনার ফলে নিহতের পরিবারের সদস্যেরা দীর্ঘস্থায়ী মানসিক কষ্টের পাশাপাশি সামাজিক ও আইনি সমস্যায় পড়ে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের হারের উর্ধ্বগতি, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান ডব্লিউএইচও’র
সু-পরিচালিত কবরস্থান বলতে যেখানে সহজে শনাক্তযোগ্য এবং সঠিকভাবে নথিভুক্ত কবরকে বোঝায়।
সংস্থাগুলোর তৈরি নির্দেশিকা অনুযায়ী, বিশেষ করে আইসিআরসি/আইএফআরসি/ডব্লিউএইচও ম্যানুয়াল ফর দ্য ডেড অব দ্য ডিজাস্টারস আফটার ম্যানেজমেন্ট অনুযায়ী প্রতিটি লাশের সঠিক অবস্থান এবং সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নিশ্চিত করা উচিত।
লাশ সঠিকভাবে শনাক্ত করার আগে সমাহিত বা দাহ করা উচিত নয়।
লাশের আরও ভালো ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করার জন্য সংস্থাগুলো স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সরঞ্জাম সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দেয়, যাতে তারা প্রয়োজনে (যখন একসঙ্গে অনেক লাশ দাহ বা সমাহিত করতে হয়) লাশ কবর দেওয়ার মতো কাজ করতে সহায়তা করতে পারে।
লিবিয়ায় রেডক্রস ও ডব্লিইএইচও টিম সরাসরি কর্তৃপক্ষ, সম্প্রদায় ও লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সঙ্গে কাজ করছে। তাদের নির্দেশিকা, উপকরণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করছে।
আইসিআরসি ও ডব্লিইএইচও উভয়ই লাশের মর্যাদাপূর্ণ ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করার জন্য লিবিয়ায় বডি ব্যাগ বিতরণ করছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সশস্ত্র সংঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে মারা যাওয়া মানুষদের লাশ প্রায় কখনোই স্থানীয় জনগণের জন্য স্বাস্থ্যগত বিপদ ডেকে আনে না।
এর কারণ হলো ট্রমা, ডুবে বা আগুনে মারা যাওয়া মানুষেরা সাধারণত এমন রোগ সৃষ্টিকারী কোনো জীবাণু বহন করে না।
ব্যতিক্রম হলো- যখন ইবোলা বা মারবার্গ রোগ বা কলেরার মতো সংক্রামক রোগ থেকে মৃত্যু ঘটে বা যখন এই সংক্রামক রোগগুলোর জন্য স্থানীয় অঞ্চলে বিপর্যয় ঘটে।
আরও পড়ুন: সাপের কামড়ের চিকিৎসা বিষয়ে ডব্লিউএইচও-এর প্রথম নির্দেশিকা প্রকাশ
তবে, যেকোনো পরিস্থিতিতে লাশ পানির উৎসের কাছাকাছি বা পাশে থাকলে স্বাস্থ্যগত উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
কারণ লাশ থেকে বের হওয়া মল পানির উৎসকে দূষিত করতে পারে। যা ডায়রিয়া বা অন্যান্য রোগের ঝুঁকি তৈরি করে।
তাই পানীয় জলের উৎসের সংস্পর্শে লাশ ফেলে রাখা উচিত নয়।
আইসিআরসির ফরেনসিক ইউনিটের প্রধান পিয়েরে গাইয়োমার্চ বলেন, ‘লাশ মহামারি সৃষ্টি করবে এই ধারণার কোনো প্রমাণ নেই। আমরা এমন অনেক ঘটনা দেখতে পাই যেখানে মিডিয়া রিপোর্ট এবং এমনকি কিছু চিকিৎসা পেশাজীবীরাও এই সমস্যাটি সমাধানের ক্ষেত্রে ভুল করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘যারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো ঘটনা থেকে বেঁচে থাকে, লাশের চেয়ে তাদের রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি।’
ডব্লিউএইচও-এর জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে জৈব নিরাপত্তা ও জৈব নিরাপত্তা বিষয়ক মেডিকেল অফিসার ডা. কাজুনোবু কোজিমা বলেছেন, ‘আমরা ট্র্যাজেডির মুখে পড়া এলাকার কর্তৃপক্ষকে গণদাফন বা গণদাহ করার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো না করার জন্য অনুরোধ করছি। লাশের মর্যাদাপূর্ণ ব্যবস্থাপনা পরিবার ও সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং যুদ্ধের ক্ষেত্রে প্রায়ই লড়াইয়ের দ্রুত সমাপ্তি আনার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।’
আইএফআরসি-এর জরুরি পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং মরক্কো আর্থকোয়েক রেসপন্সের জরুরি অপারেশনের প্রধান গওয়েন ইমার বলেন, ‘দুর্যোগ বা যুদ্ধে নিহতদের লাশ সমাহিত করার জন্য অপ্রয়োজনীয় তাড়াহুড়ো করলে পরিবারগুলোকে তাদের প্রিয়জনদের শনাক্ত করার এবং শোক করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে। মর্যাদাপূর্ণ ব্যাবস্থাপনার জন্য লাশ শনাক্তকরণ এবং স্থানীয় সাংস্কৃতিক ও সামাজিক নিয়ম অনুসারে শোক ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য উপযুক্ত সময় প্রয়োজন।’
আইসিআরসি, আইএফআরসি ও ডব্লিউএইচও কর্তৃপক্ষ ও সম্প্রদায়কে নিম্নলিখিতগুলো মনে করিয়ে দিতে চায়:
লাশ দেখাটা দুঃখজনক হলেও, সম্প্রদায়ের নেতা বা কর্তৃপক্ষের তাড়াহুড়ো করে গণকবরে লাশ সমাহিত করা বা গণদাহ করা উচিত নয়। দাফন বা দাহ করার পদ্ধতি অবশ্যই সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও পারিবারিক উদ্বেগের কথা মাথায় রাখতে হবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সশস্ত্র সংঘর্ষে যারা মারা যায়, তাদের লাশ সাধারণত রোগের উৎস নয়।
আরও পড়ুন: প্রতি ৭ সেকেন্ডে একজন গর্ভবতী নারী বা নবজাতক মারা যায়: ডব্লিউএইচও
মৃত ব্যক্তি একটি অত্যন্ত সংক্রামক রোগে মারা না গেলে, জনসাধারণের জন্য ঝুঁকি খুব কম থাকে। তবে লাশের মল মিশ্রিত হয়ে দূষিত হওয়া পানি পান করলে ডায়রিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে। পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধের জন্য পানীয় জলের নিয়মিত জীবাণুমুক্তকরণ যথেষ্ট।
দ্রুত, অসম্মানজনক গণদাফন বা শ্মশান লাশ শনাক্তকরণ ও পরিবার শনাক্ত করা আরও কঠিন এবং কখনো কখনো অসম্ভব করে তোলে।
শুধুমাত্র লাশ তখনই মহামারির স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করে, যখন নির্দিষ্ট কিছু সংক্রামক রোগে মৃত্যু ঘটে।
চুনের গুঁড়ায় দ্রুত পচন ধরে না। যেহেতু বিপর্যয় বা যুদ্ধে নিহতদের লাশে সাধারণত সংক্রামক ঝুঁকি নেই, তাই লাশগুলো জীবাণুমুক্ত করা প্রয়োজন হয় না।
তবে, নিহত ব্যক্তির লাশ স্পর্শ করার পর সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। অথবা দৃশ্যমান ময়লা না থাকলে অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
আইসিআরসি, আইএফআরসি ও ডব্লিউএইচও সকল পক্ষকে যুদ্ধ ও দুর্যোগে নিহতদের লাশ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সমাজের সকলের মঙ্গলের জন্য প্রতিষ্ঠিত নীতি অনুসরণ করার আহ্বান জানায়।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে বাংলাদেশে সারের দাম ১০৫ শতাংশ বেড়েছে: সমীক্ষা
আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা একশনএইড এর পরিচালিত একটি নতুন সমীক্ষা অনুসারে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ফলে বিশ্বের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্য, জ্বালানি এবং সারের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর ফলে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট দেয়া দিয়েছে।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেকগুলো প্যারামিটারে বেড়েছে, যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে সারের দাম বেড়েছে ১০৫ শতাংশ, চিনির দাম ৬০ শতাংশ, পেট্রোলের দাম ৪৭ শতাংশ এবং স্যানিটারি প্যাডের দাম ২৩ শতাংশ।
ফলস্বরূপ, দেশের জনগণ একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। বিশেষ করে নারী, মেয়ে ও শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে তাদের শিক্ষা, পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে আপোস করতে হচ্ছে।
এশিয়া, আফ্রিকা এবং ক্যারিবিয়ান জুড়ে মোট ১৪ টি দেশে এক হাজারের বেশি মানুষের ওপর পরিচালিত এই সমীক্ষায় দেখা গেছে যে নিরীক্ষণের সময় সারের দাম ১১৫ শতাংশ এর বেশি বেড়েছে, পেট্রোল ও স্যানিটারি প্যাডের দাম ৮০ শতাংশ বা তার বেশি বেড়েছে।
একই সঙ্গে বাল্যবিবাহের হার বৃদ্ধি, নারী স্বাস্থ্যের অবনতি এবং মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেছে।
একশনএইড-এর গ্লোবাল পলিসি অ্যানালিস্ট আলবার্টা গুয়েরা বলেন, ‘এই সমীক্ষা থেকে দেখায় যে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে প্রান্তিক মানুষরা আকাশ ছোঁয়া খাদ্য, জ্বালানি ও সারের দামের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বিশেষ করে নারী ও কন্যাশিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা এই সময়ে নানান সংকট দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে যা তাদের খাদ্যগ্রহণ, শিক্ষা, বাল্যবিবাহ থেকে মুক্ত থাকার অধিকার এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতাকে প্রভাবিত করেছে।’
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে ১.৮০ লাখ টন সার আমদানির চুক্তি সই
বাংলাদেশসহ ১৪ টি দেশের মধ্যে ১০ টি দেশে মেয়ে ও ছেলে উভয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার হার বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক চাপও বাল্যবিবাহের হার বাড়িয়ে দিয়েছে।
এবিষয়ে বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার একজন বলেন, ‘বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের নিরাপত্তার চেয়ে শিক্ষা অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ। ছেলেদেরকে বাংলাদেশে পাথর কোয়ারিতে বা যাদুকাটা নদীতে প্রতিদিন ৩০০ টাকায় বালু উত্তোলনের কাজ করতে হয়। এ কারণে তারা স্কুলে যেতে পারে না।’
সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয় যে বাংলাদেশ জলবায়ু বিপর্যয়, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, কোভিড-১৯, ঋণের চাপ এবং মুদ্রার অবমূল্যায়ন থেকে শুরু করে একাধিক সংকটে রয়েছে। এই কারণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল জলবায়ু বিপর্যয়, কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।
একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘জ্বালানির দামের অস্থিরতা সব ক্ষেত্রেই সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে খাদ্যের ওপর, যা নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বেশি মাত্রায় প্রভাবিত করে। আমাদের জাতীয় প্রতিবেদন (বাংলাদেশ ব্যাংক) নির্দেশ করে যে আমাদের মূল্যস্ফীতি ৯.৫ শতাংশ। যদি আমরা বাস্তব দৃষ্টিতে দেখি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এখন চাল ও ডিমের মতো প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর জন্য আগের দামের প্রায় দ্বিগুণ মূল্য দিতে হচ্ছে।
যার ফলে খাদ্যগ্রহণে মারাত্মক হ্রাস ঘটেছে, যা মানুষের পুষ্টির ভারসাম্যকে প্রভাবিত করেছে। অন্যদিকে, আমাদের এনার্জি খাত অত্যন্ত জ্বালানি-নির্ভর এবং তাই জ্বালানির অতিরিক্ত দাম আমাদের বৈদেশিক রিজার্ভ এবং জাতীয় ব্যয়ের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে’।
আরও পড়ুন: সারের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়ল
তিনি বলেন, ‘একশনএইড একটি সমন্বিত ব্যবস্থা এবং পর্যাপ্ত তহবিলের পক্ষে জোর দাবি জানাচ্ছে যা জলবায়ু পরিবর্তন, ঋণের চাপ এবং ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসনের গভীর প্রতিক্রিয়াসহ মূল্য সংকটকে বাড়িয়ে তোলা সমস্ত আন্তঃসংযুক্ত সংকট মোকাবিলা করতে সক্ষম’।
ফারাহ্ কবির আরও বলেন, ‘পরিবর্তিত বাস্তবতা এবং মানুষের বর্তমান চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য করার জন্য সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলোকে জরুরিভাবে সামঞ্জস্য করা দরকার। শিশুসহ পরিবারগুলোকে তাদের শিক্ষা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করতে হবে। চাষাবাদে অধিক বিনিয়োগের মাধ্যমে খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতে হবে। নবায়নযোগ্য শক্তি এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এগ্রোইকোলোজিক্যাল চাষ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনয়ন এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন’।
১৪ টি দেশের মোট ১০১০ জন মানুষের মধ্যে ১লা মার্চ থেকে ২৩শে এপ্রিলের মধ্যে এই সমীক্ষা পরিচালিত হয়। উত্তরদাতাদের ৬৩ শতাংশ ছিলেন নারী। অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে সমীক্ষার দিনে গমের পণ্য, রান্নার তেল, পেট্রোল, রান্নার জন্য গ্যাস, সার ও স্যানিটারি প্যাডের দাম কত ছিল এবং এই পণ্যগুলো মূল্য ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের আগের মূল্যের সাথে তুলনা করা হয়েছিল (যখন রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল)।
অংশগ্রহণকারীদের তাদের জীবন জীবিকার ওপর এই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সম্পর্কেও প্রশ্ন করা হয়েছিল এবং সম্ভাব্য উত্তরগুলোর একটি সিরিজ থেকে কমপক্ষে একটি প্রতিক্রিয়া নির্বাচন করতে উৎসাহিত করা হয়।
জরিপে অংশ নেওয়া ১৪টি দেশ হলো- আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (ডিআরসি), ইথিওপিয়া, হাইতি, কেনিয়া, মালাউই, মিয়ানমার, নেপাল, নাইজেরিয়া, সিয়েরা লিওন, সোমালিল্যান্ড, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে।
আরও পড়ুন: আগামী বছরগুলোতে দেশে সারের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
যুদ্ধকবলিত সুদান থেকে ১৩৫ বাংলাদেশি জেদ্দা পৌঁছেছে
যুদ্ধকবলিত সুদান থেকে সৌদি সামরিক বাহিনীর একটি উড়োজাহাজে সৌদি আরবের জেদ্দা শহরে পৌঁছেছে ১৩৫ বাংলাদেশি।
এ সময় এসকল বাংলাদেশিদের স্বাগত জানান সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এ সময় জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হক ও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সুদানে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের জেদ্দা হয়ে ফিরিয়ে আনা হবে: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
সুদান থেকে প্রত্যাগত বাংলাদেশি এ সকল নাগরিকদের রবিবার রাত একটার ফ্লাইটে জেদ্দা এয়ারপোর্ট থেকে বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিবে।
সুদান থেকে প্রথম দফায় নারী, শিশু ও অসুস্থ যাত্রীদের অগ্রাধিকার দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
এ সকল বাংলাদেশিদের বিশ্রামের জন্য জেদ্দা বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইংরেজি সেকশনে বিশ্রাম, খাবার ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সুদানে প্রায় এক হাজার পাঁচশত বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করেন, এরমধ্যে যারা দেশে আসার জন্য নিবন্ধন করেছেন পর্যায়ক্রমে সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট এ ব্যপারে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন: ওআইসি’র সভায় সুদানে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং শান্তির আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ
সংকটাপন্ন সুদান ছাড়তে পোর্ট সুদানে পৌঁছেছেন ৬৭৫ বাংলাদেশি
ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিশেষ যুদ্ধ প্রশিক্ষণ জার্মানিতে শুরু করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী
ইউক্রেনের নতুন সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণ বাড়িয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।প্রায় ৫০০ সৈন্যের ব্যাটালিয়নকে যুদ্ধক্ষেত্রে ফেরাতে এই প্রশিক্ষণ শুরু করা হয়েছে। যারা আগামী আগামী পাঁচ থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
রবিবার জার্মানিতে এই সামরিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি।
আরও পড়ুন: ‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
মিলি সোমবার গ্রাফেনউয়ার প্রশিক্ষণ এলাকা পরিদর্শন করার পরিকল্পনা করছেন। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যোগ দিতে সৈন্যরা কয়েকদিন আগে ইউক্রেন ছেড়ে গেছে। জার্মানিতে তাদের ব্যবহারের জন্য অস্ত্র ও সরঞ্জামের একটি সম্পূর্ণ ব্যবস্থা রয়েছে।
তবে কখন থেকে সেই প্রশিক্ষণ শুরু হবে তা বললে অস্বীকৃতি জানিয়েছে পেন্টাগন।
তথাকথিত সম্মিলিত অস্ত্র প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ইউক্রেনীয় বাহিনীর দক্ষতাকে বাড়ানো যাতে তারা আক্রমণ চালাতে বা রুশ আক্রমণের যেকোনও ঊর্ধ্বগতি মোকাবিলায় আরও ভালোভাবে প্রস্তুত থাকে। তারা সম্মিলিত আর্টিলারি, বর্ম এবং স্থল বাহিনী ব্যবহার
করে যুদ্ধে তাদের কোম্পানি- এবং ব্যাটালিয়ন-আকারের ইউনিটগুলোকে আরও ভালভাবে সরানো এবং সমন্বয় করতে শিখবে।
রবিবার তার সঙ্গে ইউরোপে ভ্রমণরত দুই সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলার সময়, মিলি বলেছিলেন সমন্বিত এই জটিল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইউক্রেনীয়রা নতুন অস্ত্র, আর্টিলারি, ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে ইউক্রেনীয়রা তাদের অঞ্চলগুলো পুররুদ্ধার করবে, যা রুশ বাহিনী ১১ মাসের যুদ্ধের মাধ্যমে দখল করে নিয়েছে।
মিলি বলেছিলেন, ‘এই সমর্থন ইউক্রেনের পক্ষে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হওয়ার জন্য সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ,’ ‘এবং আমরা আশা করছি এখানে অল্প সময়ে এটি একসঙ্গে টানতে সক্ষম হব।’
তিনি বলেন, লক্ষ্য হলো সমস্ত আগত অস্ত্র এবং সরঞ্জাম ইউক্রেনে সরবরাহ করা যাতে নতুন প্রশিক্ষিত বাহিনী এটি ব্যবহার করতে সক্ষম হয় ‘বসন্তের বৃষ্টিপাতের কিছুটা আগে। সেটা হবে আদর্শ।’
রাশিয়া কিয়েভ, উত্তর-পূর্ব শহর খারকিভ এবং দক্ষিণ-পূর্ব শহর ডিনিপ্রো সহ বিস্তৃত এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যেখানে একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০ এ পৌঁছেছে।
মিলি বলেছিলেন যে তিনি নিশ্চিত করতে চান যে প্রশিক্ষণটি সঠিক ধারায় রয়েছে এবং অন্য কিছুর প্রয়োজন আছে কিনা এবং এটি নিশ্চিত করতে চান যে এটি সরঞ্জাম সরবরাহের সঙ্গে ভালভাবে চালিত হবে।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটিতে শ্রেণিক্ষে পাঠদান এবং মাঠের অনুশীলন অন্তর্ভুক্ত থাকবে যা ছোট স্কোয়াড দিয়ে শুরু হবে। এবং ধীরে ধীরে বড় ইউনিটে রূপান্তরিত হবে। এটি জটিল যুদ্ধ অনুশীলনের মাধ্যমে শেষ হবে এবং একটি সম্পূর্ণ ব্যাটালিয়ন ও একটি সদর দপ্তর ইউনিটকে একত্রিত করবে।
এখন অবধি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্ব হলো ইউক্রেনীয় বাহিনীকে আরও তাৎক্ষণিক যুদ্ধক্ষেত্রে সরঞ্জাম সরবরাহের দিকে, বিশেষ করে কীভাবে দেশে মার্কিন অস্ত্র ব্যবস্থার বিস্তৃত অ্যারে ব্যবহার করা যায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই তিন হাজার ১০০ টিরও বেশি ইউক্রেনীয় সৈন্যকে নির্দিষ্ট অস্ত্র এবং অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। যার মধ্যে হাউইজার, সাঁজোয়া যান এবং হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম রয়েছে, যা এইচআইএমএআরএস নামে পরিচিত। অন্যান্য দেশগুলোও তাদের সরবরাহ করা অস্ত্রের প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছে।
গত মাসে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে গিয়ে পেন্টাগন প্রেস সেক্রেটারি বিমান বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার বলেন, ধারণাটি হলো ‘তাদেরকে এই উন্নত স্তরের সম্মিলিত প্রশিক্ষণ দিয়ে সক্ষম করে তোলা যা তাদেরকে কার্যকর সম্মিলিত অস্ত্র পরিচালনা এবং যুদ্ধক্ষেত্রে কৌশল অবলম্বন করতে সক্ষম করে তুলবে।’
মিলি বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসনের আগে যুক্তরাষ্ট্র এই ধরনের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হলে ইউক্রেনের অভ্যন্তরে মার্কিন ন্যাশনাল গার্ড এবং বিশেষ অভিযানিক বাহিনী যারা প্রশিক্ষণ দিচ্চিল তারা সবাই দেশ ছেড়ে চলে যায়। এই নতুন প্রচেষ্টাটি মার্কিন সেনাবাহিনী ইউরোপ ও আফ্রিকার সপ্তম আর্মি ট্রেনিং কমান্ড দ্বারা করা হচ্ছে। এটি আক্রমণের আগে তারা যা করে আসছিল তার ধারাবাহিকতা হবে। অন্যান্য ইউরোপীয় মিত্ররাও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: পশ্চিম তীরে অভিযানের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে ৩ ফিলিস্তিনির মৃত্যু
সিরিয়ায় হামলায় নিহত ১০, কুর্দি বাহিনীর হাতে ৫২ জঙ্গি গ্রেপ্তার
যুদ্ধ ও মহামারি সত্ত্বেও মানুষের কষ্ট লাঘবে যা দরকার আ.লীগ তা করবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত অর্থনৈতিক মন্দার কারণে জনগণের দুর্ভোগ কমাতে আওয়ামী লীগ সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য যা যা করা দরকার আওয়ামী লীগ সরকার তা করবে।’
শনিবার আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম যৌথসভায় সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার, দল ও তার নেতাকর্মীরা সব সময় দুস্থ মানুষের পাশে আছে।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন: জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এই দেশের মানুষের জন্য একটি উন্নত জীবন নিশ্চিত করা। আমরা সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করব।’
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ও এর নেতাকর্মীরা এজন্য অঙ্গীকারবদ্ধ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত মানুষের জন্য খাদ্য নিশ্চিত করতে পেরেছি। আমরা গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য বাড়ি দিচ্ছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশে কেউ গৃহহীন, ভূমিহীন ও ঠিকানাহীন থাকবে না।’
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পুরো বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দায় নিমজ্জিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তবে সর্বশক্তিমানের কৃপায় আমরা এখন পর্যন্ত দেশে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পেরেছি।’
তিনি দেশের সার্বিক অগ্রগতির পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি নিশ্চিত করার জন্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন।
আরও পড়ুন: গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ পেতে উৎপাদন খরচ পরিশোধ করুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের কারণে সরকারকে ভোজ্যতেল, জ্বালানি, চিনি, মসুর ডাল, গম ও ভুট্টার মতো বিভিন্ন জিনিস বেশি দামে কিনতে হচ্ছে; যাতে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষদের এগুলো ন্যায্যমূল্যে সরবরাহ করা যায়।
তিনি আরও বলেছেন যে সরকার সারাদেশে জনগণের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করছে।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে এসব জিনিসের দাম যাই হোক না কেন, সাধারণ মানুষের বোঝা কমাতে আমরা এ বিষয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছি।
তিনি আবারও সকলকে পরিমাণ যাই হোক না কেন, নিজেদের আবাদি জমি ব্যবহার করে কিছু না কিছু উৎপাদন করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘অনেক দেশ খাদ্য সংকটে ভুগছে, অনেক দেশ আমাদের কাছ থেকে খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করতে চায়। আমাদের জমির সঠিক ব্যবহার করতে পারলে, আমরাও খাদ্য সরবরাহ করতে পারব।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশে খাদ্য উৎপাদনের জন্য সব ধরনের ঋণ সহায়তা দেবে।
গত ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত ২২তম জাতীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনা টানা দশম মেয়াদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ওবায়দুল কাদের তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
আরও পড়ুন: স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সরকার মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি চায়: প্রধানমন্ত্রী