জায়েদ খান ও নিপুণ আক্তার
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন: চেম্বার কোর্টের আদেশ কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে বসার বিষয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারকের আদেশ কঠোরভাবে অনুসরণ করতে চলচ্চিত্র অভিনেতা জায়েদ খান ও নিপুণ আক্তারকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
নিপুণ আক্তারের বিরুদ্ধে জায়েদ খানের করা আদালত অবমাননার অভিযোগের ওপর আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত অবমাননার আবেদনটি চার সপ্তাহের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ড অভার) রাখা হয়েছে।
আদালত বলেছেন, এই সময়ের মধ্যে কেউ চাইলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত আপিল করতে পারেন।
জায়েদ খানের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট আহসানুল করীম ও নাহিদ সুলতানা যুথী। নিপুণ আক্তারের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট রোকনউদ্দিন মাহমুদ।
আদেশের পর জায়েদ খানের আইনজীবী আহসানুল করিম দাবি করেন, আপিল বিভাগের আদেশের ফলে জায়েদ খান সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসতে পারবেন।
আরও পড়ুন: চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি: নিপুণ-জায়েদের বিষয়ে শুনানি ২২ ফেব্রুয়ারি
এদিকে নিপুণের আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, নিপুণ সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসে আছেন। তিনিই বসবেন।
অভিনেতা জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের ঘোষণা এবং অভিনেত্রী নিপুণ আক্তারকে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করাকে 'অবৈধ' বলে হাইকোর্টের দেয়া রায় গত ৬ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারক চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। একই সঙ্গে জায়েদ ও নিপুণকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল থাকার বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন।
এছাড়া নিপুণকে লিভ টু আপিল করতে বলে ৪ এপ্রিল শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠান। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে নিপুণের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এ আদেশ দেন। পরে গত ৮ মার্চ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থার আদেশের পরেও সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসায় নিপুণ আক্তারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন জায়েদ খান।
গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনের প্রাথমিক ফলে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে, তার বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ করেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণ আক্তার। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই বিষয়টি ‘বেআইনি’ বলে দাবি করে আসছেন জায়েদ খান।
আরও পড়ুন: চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি: নিপুণ-জায়েদের দ্বন্দ্ব হাইকোর্টকে নিষ্পত্তির নির্দেশ
পরে ৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রাঙ্গণে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ আক্তারের নেতৃত্বে নতুন কমিটির একাংশ শপথগ্রহণ করে। পরে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে নিজ নিজ পদের চেয়ারে বসেন তারা। পরদিন ৭ ফেব্রুয়ারি জায়েদ খান হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করা শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আপিল বোর্ডের দেয়া সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জায়েদ খানই এই সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে থাকবেন বলে জানানো হয়।
২ বছর আগে