বিদ্যুৎহীন
বন্যায় বিদ্যুৎহীন সিলেটের ১২ হাজার গ্রাহক
উজানের ঢল ও আর টানা বৃষ্টিতে সিলেট অঞ্চলে আগাম বন্যায় এখন পর্যন্ত ১০ থেকে ১২ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি যেকোনো পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার জন্য এই অঞ্চলের সব বিদ্যুৎ কর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
শুক্রবার (২১ জুন) বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেটে চলমান বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) সিলেট জোনের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, লাইন, ট্রান্সফরমার ও বৈদ্যুতিক পোলের ক্ষয়ক্ষতিতে গ্রাহকদের বিশেষ করে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ দুঃখ প্রকাশ করছে।
বিতরণ জোনের আওতাধীন সব এলাকাই কম-বেশি বন্যাকবলিত হওয়ায় বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা রোধে নিরাপত্তার স্বার্থে অনেক জায়গায় ট্রান্সফরমারের ফিউজ কেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়াও, অনেক বসতবাড়ি নিমজ্জিত হয়ে পানি বেড়ে মিটার পর্যন্ত চলে আসায় বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা রোধে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। এসব কারণে বিতরণ জোনের প্রায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে।
আরও পড়ুন: সিলেটের বন্যায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি
সূত্র বলছে, পিডিবির সিলেটের অধীনে ৩৩/১১ কেভি মোট ২১টি উপকেন্দ্রের মধ্যে সব উপকেন্দ্রই বর্তমানে চালু রয়েছে, যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রয়েছে। সিলেটে বিভিন্ন শ্রেণির মোট গ্রাহক সংখ্যা ৫ লাখ ৬১ হাজার ৬৯ জন, সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা ২২৫ মেগাওয়াট। এই এলাকার ৯টি ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। সিলেট বিভাগে চলমান বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার প্রভাবে ৩৩/১১ কেভি ২১টি উপকেন্দ্রের মধ্যে ৭টি উপকেন্দ্রের প্রাঙ্গণে পানি প্রবেশ করলেও নিরাপদ দূরত্বে থাকায় উপকেন্দ্রগুলো চালু রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে পিডিবির আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৯৪ লাখ টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিআরইবির মোট আর্থিক ক্ষতি পরিমাণ ৭৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরইবির বিতরণ ব্যবস্থার সিলেট অঞ্চলে সমিতির সংখ্যা ছয়টি (সিলেট-১, সিলেট-২, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও কিশোরগঞ্জ)। সমিতির মোট ৫৫টি খুঁটি নষ্ট হয়েছে, এরমধ্যে ঠিক করা হয়েছে ৩৭টি। ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে ৬০টি; এরমধ্যে ঠিক করা হয়েছে ৪২টি। স্প্যান (তার ছেঁড়া) ৭৫টি, এরমধ্যে ঠিক হয়েছে ৬৬টি। ইন্সুলেটর নষ্ট হয়েছে ২০টি, ঠিক করা হয়েছে ২০টি; মিটার নষ্ট হয়েছে ২৫টি, ঠিক হয়েছে ২৫টি।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
৫ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: সিলেটে বিদ্যুৎহীন সাড়ে ৩ লাখ গ্রাহক
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় সাড়ে ৩ লাখ গ্রাহক সোমবার রাত থেকে বিদ্যুৎহীন রয়েছেন। তবে মঙ্গলবার দুপুরে বৃষ্টি থামার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
এদিকে, বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কও ব্যাহত হচ্ছে। নেটওয়ার্ক না থাকায় জরুরি প্রয়োজনেও মোবাইলে কল করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ২ দিন ধরে বিদ্যুৎবিহীন মেহেরপুরের অনেক মানুষ
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এর আগে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৪৯ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। প্রবল বৃষ্টির কারণে নগরীর অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে পড়ারও খবর পাওয়া গেছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে সিলেট বিভাগে গ্রাহক আছেন প্রায় সাড়ে ৭ লাখ। এর মধ্যে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছেন প্রায় সাড়ে ৩ লাখ গ্রাহক।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বয়ে যাওয়া ঝড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের তার ও খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেগুলো মেরামতের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের গ্রাহকদের চাহিদা ছিল ১৯৫ মেগাওয়াট। এর মধ্যে বিদ্যুতের সরবরাহ ছিল ৭৫ মেগাওয়াট।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নিম্নচাপ সিলেটে অবস্থান করছিল। এ কারণে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল। তবে দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি কমেছে।
তবে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়া ও প্রবল বর্ষণের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে সিলেটের জনজীবন। মঙ্গলবার সকাল থেকে নগরীর সড়কগুলোতে যানবাহনের সংকট দেখা দেয়। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না মানুষজন। তবে চাকরিজীবীদের নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, স্কুল কলেজ খোলা থাকলেও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। তবে পরীক্ষা থাকায় অনেক শিক্ষার্থীকে প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও বিদ্যালয়ে যেতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব: শরীয়তপুরে বিদ্যুৎহীন সাড়ে ৩ লাখ মানুষ
ঘূর্ণিঝড় রিমালে বিদ্যুৎহীন ২ কোটি ২২ লাখ মানুষ
৬ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব: শরীয়তপুরে বিদ্যুৎহীন সাড়ে ৩ লাখ মানুষ
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে শরীয়তপুরের বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক তারের উপর গাছপালা ভেঙে পড়ে জেলার সাড়ে ৩ লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
এছাড়া গাছপালা ভেঙে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও কিছু কাঁচা ঘরের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে ফসল-ফসলি জমিরও।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বৃষ্টিতে কর্মজীবী-শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যাহত
মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জেলার বেশ কিছু এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছন্ন হয়ে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
সখিপুর এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, রবিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছি। সখিপুরের হাজী শরীয়তুল্লাহ কলেজ এলাকায় বৈদ্যুতিক তারের উপর গাছ ভেঙে পড়েছে। এখনো পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কোনো লোক এসে গাছগুলো সরিয়ে দেয়নি।
গোসাইরহাটের কুচাইপট্টি ইউনিয়নের মাইজারি গ্রামের বাসিন্দা শামিম আহমেদ বলেন, বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের তারের উপর গাছ পড়ে আছে। এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে আমাদের কারও মোবাইলে চার্জ নেই। যার কারণে দূরে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজখবরও নিতে পারছি না।
শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (তথ্য ও প্রযুক্তি) মো. নাজমুল হাসান বলেন, সকাল থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক ত্রুটিপূর্ণ। যার কারণে এখনো পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ তথ্য আমরা হাতে পাইনি।
তিনি আরও বলেন, যে তথ্য পেয়েছি, তাতে সাড়ে ৩ লাখের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। ৫০০ থেকে ৬০০ স্থানে বৈদ্যুতিক তার ও খুঁটির উপরে গাছ পড়ে রয়েছে। লোকবল সংকট থাকার কারণে দ্রুত এসব গাছ সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে আশা করছি দ্রুত লাইনগুলো ঠিক করে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে উপকূলীয় জেলাগুলোতে নিহত ৭
৬ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: বিদ্যুৎহীন ঝালকাঠি, গাছপালা-ফসলের ক্ষতি
ঝালকাঠিতে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় পাঁচ শতাধিক গাছ উপড়ে পড়েছে। এতে বিভিন্ন স্থানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। গাছ পড়ে তার ছিঁড়ে বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
এ ছাড়া ঝড়ে আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে বলেও জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। এদিকে ঝড়ো হাওয়ায় হেলে পড়েছে ধান খেত। বেড়িবাঁধ না থাকায় কাঁঠালিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিষখালী নদীর পানি উঠে তলিয়ে আছে শীতকালীন সবজির খেত।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার চরভাটারাকান্দার কৃষক আল আমিন হাওলাদার বলেন, আমার এক একর জমিতে আমন ধান লাগানো আছে। ঝড়ো হাওয়ায় বেশিরভাগ গাছই হেলে পড়েছে। নদীর পানি উঠে তলিয়ে আছে ধানখেত। এতে ধান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ধান নষ্ট হয়ে গেলে আমার সর্বনাশ।
নলছিটি উপজেলার সরই গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, নিলারভিটা এলাকায় বেশিরভাগ কৃষকের ধান চিটা হয়ে যেতে পারে। ধানখেত হেলে পড়েছে। টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের ফলে ক্ষেতে পানি জমে আছে। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না পারলে এ বছর সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: বরিশালে লঞ্চ চলাচল ফের শুরু
ঝালকাঠি শহরের কলাবাগ এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, শুক্রবার সকালে বিদ্যুৎ চলে গেছে শনিবার বিকাল পর্যন্ত আসেনি। বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কাঁঠালিয়া উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নাসির উদ্দিন বলেন, ঝড়ে কাঁঠালিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপড়ে পড়েছে। অনেক স্থানে বিদ্যুতের তারেও গাছ পড়েছে। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
ঝালকাঠি ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়। খুলনা ও বরিশাল থেকে টেকনিশিয়ান এনে ত্রুটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে, তা বলা যাচ্ছে না।
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে জেলার অনেক স্থানে আমন ধানের খেত হেলে পড়ার খবর পেয়েছি। কয়েক জায়গায় শীতকালীন শাক সবজির ক্ষতি হতে পারে। আমাদের মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তারা কাজ করছে। ধানের বেশি ক্ষতি হবে না বলে ধারণা করছি।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: পটুয়াখালীতে ঘরবাড়ি ও আমনের ক্ষতি
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে কোটি টাকার মাছ
১ বছর আগে
জাপানে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প, নিহত ৪
জাপানের উত্তরপূর্বাঞ্চলে বৃহস্পতিবার ৭ দশমিক ৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত চারজন মারা গেছে এবং ১০৭ জন আহত হয়েছে। ভূমিকম্পে বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং বিশাল এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে দেশটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিরোকাজু মাতসুনো গণমাধ্যমকে বলেছেন, ভূমিকম্পের সময় চারজন মারা গেছে এবং ১০৭ জন আহত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নিহতদের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
জাপানের কিয়োডো নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের সময় সোমা শহরে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি দ্রুত তার বাড়ি থেকে বের হতে গিয়ে দোতলা থেকে পড়ে মারা যান। এবং সত্তরোর্ধ্ব এক ব্যক্তি ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।
বৃহস্পতিবার ভোরে জাপানের আবহাওয়া সংস্থা ফুকুশিমা এবং মিয়াগি প্রিফেকচারের উপকূলে সুনামির ঝুঁকির কথা জানিয়েছে। রাজধানী টোকিও থেকে প্রায় ৩৯০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ইশিনোমাকিতে ৩০ সেন্টিমিটার উচ্চতার সুনামি ঢেউ উপকূলে আঘাত হানে।
আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের মাত্রা প্রাথমিক ৭ দশমিক ৪ থেকে ৭ দশমিক ৫ এবং সমুদ্রের নীচে এর বিস্তার ৬০ কিলোমিটার থেকে ৫৬ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন: জাপানে অগ্নিকাণ্ডে ২৭ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা
বৃহস্পতিবার দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী সোমা, আইতাতে ও ফুকুশিমার অন্যান্য উপকূলীয় শহরগুলোর বাসিন্দাদের কাছে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করেছে। কারণ ভূমিকম্পে এসব এলাকার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
‘ফুকুশিমা দাইচি পারমাণবিক প্ল্যান্ট’ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি হোল্ডিংস বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ভূমিকম্পের সময় সাইটের কর্মীরা তেজস্ক্রিয় জল আওতার বাইরে ছিল।
তোহোকু ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি জানায়, টোকিও অঞ্চলসহ ১৪টি প্রিফেকচারে ২২ লাখেরও বেশি বাড়ি সাময়িকভাবে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফুকুশিমা এবং মিয়াগি প্রিফেকচারের প্রায় ৩৭ হাজার বাড়িতে সকাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, ভূমিকম্পের কারণে ফুকুশিমা এবং মিয়াগির মধ্যে একটি তোহোকু শিনকানসেন এক্সপ্রেস ট্রেন আংশিকভাবে লাইনচ্যুত হয়েছিল, তবে কেউ হতাহত হয়নি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাতসুনো বলেছেন, ‘আমরা উদ্ধার তৎপরতায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এবং মানুষের জীবনকে প্রাধান্য দিচ্ছি।’
তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দাদের প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সম্ভাব্য বড় আফটার শকগুলোর জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১১ বছর আগে এই অঞ্চলেই ৯ মাত্রার ভূমিকম্প ও প্রলয়ংকারী সুনামির কারণে পারমাণবিক চুল্লি গলে যায়। ফলে ব্যাপক মাত্রায় বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে এখনও এই অঞ্চলের কিছু অংশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে আছে।
আরও পড়ুন: ওমিক্রন: বিদেশি পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করছে জাপান
জাপানে কাদার স্রোতে ২ মৃত্যু, নিখোঁজ ২০
২ বছর আগে