জার্মান রাষ্ট্রদূত
সমঝোতার জন্য আমাদের ‘দুঃখিত ও ক্ষমা চাই’ শব্দগুলো শুনতে হবে: জার্মান রাষ্ট্রদূত
সমঝোতা প্রচেষ্টার জন্য মনের পরিবর্তন এবং রক্তাক্ত ও প্রতিশোধপরায়ণ অতীতের স্মৃতি মুছে ফেলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার।
জার্মান ঐক্য দিবস উপলক্ষে সোমবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দূতাবাসে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘সমঝোতার জন্য আমাদের দুঃখিত শব্দটি শুনতে হবে। যে অপরাধ ও ভুল করা হয়েছে তার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। আমারও ভুল হতে পারে, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এখন পর্যন্ত আমি এটি এখানে শুনিনি।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, তদন্ত ও সত্য স্বীকার করা ছাড়া সমঝোতা সম্ভব নয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত ট্রস্টার সম্প্রতি বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত, অভিজ্ঞ ও চিন্তাশীল রাজনীতিবিদ, যিনি এই দেশের শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যত সম্পর্কে যা বলেছেন তা 'অত্যন্ত মর্মস্পর্শী' এবং 'প্রত্যয়ী' বলে মনে করেন। তাকে তিনি শ্রদ্ধাও করেন বলেও জানান।
রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এটি এমন একটি ধারণা যা সাম্প্রতিক অতীতে দক্ষিণ আফ্রিকা বা রুয়ান্ডার মতো দেশগুলোতে ভাল কাজ করেছে, তবে ইউরোপেও সমানভাবে কাজ করেছে। বাংলাদেশে এমনটি না হওয়ার এবং উন্নত সাম্প্রদায়িকতায় অবদান রাখার কোনো কারণ আমি দেখি না।’
ট্রস্টার উল্লেখ করেন যে, তারা সবাই এমন একটি ভবনে দাঁড়িয়ে ছিলেন যা দুটি দেশের যৌথ মালিকানাধীন, যারা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে শত্রু ছিল।
‘ফ্রান্স ও জার্মানি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, পুনর্মিলনই হচ্ছে আমাদের জনগণের শান্তিপূর্ণ অস্তিত্বের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ এবং একটি মুক্ত, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ইউরোপের জন্য তাদের আকাঙ্ক্ষার একটি প্রয়োজনীয় পূর্বশর্ত।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, 'আমি মনে করি ফ্রান্স ও জার্মানি, পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক্ষেত্রে সাফল্যের সাক্ষ্য।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জেনেভায় মানবাধিকার বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধির কার্যালয়ের সহায়তায় ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের ঘটনাবলীর যথাযথ তদন্ত শুরু করে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের বাইরের অনেক মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করছে। জার্মান সরকার ওএইচসিএইচআরের এই কার্যক্রমে ৫০ হাজার ইউরো দিয়েছে।
জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, 'আমি আস্থাবান যে, চ্যালেঞ্জিং সময়েও বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সুসম্পর্ক বিকশিত ও প্রস্ফুটিত হওয়ার ধারা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, জার্মানি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ ও মিশনকে সমর্থন করে এবং অতীতের মতো এবারও সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে জার্মান ফেডারেল চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে লেখা চিঠিতে বলেন, 'আপনার দেশের উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আপনি দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। আমি আপনাকে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সামনের কাজগুলোর জন্য দুর্দান্ত শক্তি এবং সাফল্য কামনা করি।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, জার্মানি গত ৫২ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রশংসনীয় উন্নয়নে একটি প্রমাণিত অংশীদার এবং এর সাফল্যে অবদান রাখতে পেরে আমরা গর্বিত।
সর্বশেষ সরকারি আলোচনার সময়, জার্মানি প্রধানত নবায়ণযোগ্য জ্বালানি, শক্তি দক্ষতা এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার জন্য অতিরিক্ত ১৭৬ মিলিয়ন ইউরো দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ ও দ. কোরিয়ায় শ্রমিক নিয়োগ করুন: রাষ্ট্রদূতকে অধ্যাপক ইউনূস
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে উদারভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে, বাংলাদেশের ওপর যে ভারী বোঝা চাপানো হচ্ছে তা জার্মানি খুব ভালো করেই বুঝতে পারে।
জার্মানি নিজেই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বহু মানুষকে আশ্রয় ও সুরক্ষা দিয়েছে৷ জার্মানি বর্তমানে তার সীমান্তের মধ্যে ৩১ লাখেরও বেশি শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের যত্ন নিচ্ছে।
জার্মানি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। ২০১৭ সাল থেকে শরণার্থী শিবিরের আশেপাশে মানবিক কার্যক্রমে ৩০৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছে দেশটি।
রাষ্ট্রদূত ট্রস্টার বলেন, অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও জার্মানির সম্পর্ক আগের মতোই অব্যাহত রয়েছে। জার্মানি বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস পণ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ। অন্যান্য প্রতিশ্রুতিশীল খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণের অনেক সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।
জার্মান সরকার দেশে দ্রুত নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে এবং যে সংস্কার শুরু হয়েছে তা স্বীকার করেছে। মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ব্যাংকিং খাত।
দূতাবাসের পক্ষ থেকে জার্মান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং তারা সবাই বাংলাদেশের প্রতি অব্যাহত আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, 'বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার এজেন্ডার সাফল্যকে সাধুবাদ জানাবেন তারা। এর ফলে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের ব্যবসা জোরদার ও সম্প্রসারিত করতে পারবেন।’
জার্মান সরকার ধরে নিয়েছিল যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে সহযোগিতার সাধারণ ভিত্তি - দ্বিপক্ষীয়ভাবে পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে তার সহযোগিতার কাঠামোটি বিস্তৃত হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও বিশ্বাসের অংশীদার এবং তারা যৌথভাবে এর সর্বোত্তম ব্যবহার করতে আশাবাদী, বাংলাদেশের জনগণের সুবিধার জন্য, স্বাধীনতা, অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র এবং সকলের জন্য আরও সমৃদ্ধির জন্য হঠাৎ করে যে সুযোগ এসেছে তা গ্রহণ করতে।
ট্রস্টার বলেন, 'গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমরা এই মূল্যবোধে বিশ্বাস করি এবং আমরা দেখেছি যে বাংলাদেশের সমাজের একটি বড় অংশ এই আকাঙ্ক্ষার জন্য চূড়ান্ত পর্যন্ত প্রচুর ব্যক্তিগত ত্যাগ স্বীকার করতে ইচ্ছুক ছিল। ‘
তিনি বলেন, ‘আমরা এই দুঃখজনক ক্ষতির জন্য শোক করছি এবং তাদের এবং তাদের অসামান্য সাহসকে আমাদের স্মৃতিতে রাখব।’
জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অনেক নাগরিক মনে করেন, তাদের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার সুযোগ রয়েছে: জার্মান রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১ মাস আগে
বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার সুযোগ রয়েছে: জার্মান রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গত এক দশকে বাংলাদেশের বিস্ময়কর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার।
বিশেষ করে বাংলাদেশকে ঐতিহাসিকভাবে উপস্থাপনের পরিবর্তে বর্তমানে যে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে, তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার(২৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত এই মন্তব্য করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি বাংলাদেশের শক্তিশালী ও স্পন্দনশীল আধুনিক আর্থ-সামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সংযুক্ত রয়েছি। জার্মানিতে নতুন বাংলাদেশের অর্জন জোরালোভাবে তুলে ধরার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন আচিম ট্রস্টার।
আরও পড়ুন: স্পিকারের সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা সান হাইয়ানের সাক্ষাৎ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, নতুন বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই দেশব্যাপী বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের মাধ্যমে বিনিয়োগের চমৎকার সুযোগ করে দিচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় ড.হাসানকে অভিনন্দন জানান তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া জার্মান ফেডারেল মিনিস্টার আনালেনা বেয়ারবকের অভিনন্দন বার্তা হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রদূত ট্রস্টার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখা জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের শুভেচ্ছা বার্তার হার্ড কপিও হস্তান্তর করেন জার্মান রাষ্ট্রদূত।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দু'দেশের সম্পর্ককে ঐতিহাসিক আখ্যায়িত করে বলেন, আজকের প্রাণবন্ত বাংলাদেশ-জার্মান সম্পর্কের শিকড় রয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে।
আরও পড়ুন: মর্যাদাপূর্ণ ‘পদ্মশ্রী’ সম্মাননা পাচ্ছেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
তিনি অসংখ্য যুদ্ধ-শিশুকে পালক পিতামাতা হিসাবে দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে জার্মানি ও এর নাগরিকদের উল্লেখযোগ্য সহায়তার কথা স্মরণ করেন। স্বাধীনতার পরে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের জার্মান চিকিৎসা সহায়তার প্রশংসাও করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্মৃতিচারণের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান জার্মান রাষ্ট্রদূত। ১৯৭২ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সৌহার্দ্যের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন আচিম ট্রস্টার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জার্মান রাষ্ট্রদূত জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জার্মান রাষ্ট্রদূত ইউক্রেন, গাজা ও লোহিত সাগরসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধ ও সংঘাত এবং এর ফলে দুই দেশের অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে আরও কৌশলগত সহযোগিতা-অংশীদারিত্ব চায় ফ্রান্স
১০ মাস আগে
বিএনপি নেতা আমীর খসরুর সঙ্গে জার্মান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন।
রবিবার বিকাল ৩টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ৪৫ মিনিটের এ বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে আমীর খসরু সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: উস্কানি মামলায় বিএনপি নেতা আমীর খসরুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল
তিনি বলেন, ‘জার্মান রাষ্ট্রদূত এবং তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে কথা বলতে এখানে আমাদের অফিসে এসেছিলেন। তবে আমরা কী আলোচনা করেছি তা প্রকাশ করতে চাই না, কারণ এটি একটি ব্যক্তিগত বৈঠক ছিল।’
তিনি বলেন, বিদেশি কূটনীতিকদের দায়িত্ব তাদের সদর দপ্তরে তাদের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে রিপোর্ট করা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সেই দায়িত্বের অংশ হিসেবে জার্মান রাষ্ট্রদূত আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বৈঠকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর ৩০ হাজার কোটি টাকা কোথায়, প্রশ্ন আমীর খসরুর
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে আ’লীগ: আমীর খসরু
২ বছর আগে
বিদেশিদের সঙ্গেও বিএনপির মিথ্যাচারের প্রমাণ জার্মান রাষ্ট্রদূতের ক্ষোভ: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি প্রায় সময় বিদেশিদের উদ্ধৃতি দিয়ে নানা ধরনের বক্তব্য দেয়, যার বেশিরভাগই মিথ্যা এবং বানোয়াট। বিএনপি যে বিদেশিদের সঙ্গেও মিথ্যাচার ও অপরাজনীতি করে সেটির প্রমাণ হচ্ছে সম্প্রতি তাদের বক্তব্যে জার্মান রাষ্ট্রদূতের ক্ষোভ প্রকাশ।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটের আর বি কনভেনশন সেন্টারে তথ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দাদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে যোগদানের আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
একজন রাষ্ট্রদূত প্রকাশ্যে একটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন -এমন ঘটনা আমাদের দেশে আগে কখনও আমরা দেখি নাই উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, 'জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির যে বৈঠক ছিল সেই বৈঠকে রাষ্ট্রদূত যা বলেছেন, বিএনপি সেটিকে বিকৃতভাবে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করেছে। তিনি যা বলেননি সেটি তারা মিডিয়ার সামনে বলেছেন। সে কারণে জার্মানির মত একটি দেশের রাষ্ট্রদূত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।'
তিনি বলেন, 'বিএনপির রাজনীতি তো জনগণের সঙ্গে নয়, তারা ক্ষণে ক্ষণে বিদেশিদের কাছে দৌড়ে যায়, বিদেশিদের কাছে চিঠি লেখে বাংলাদেশকে সাহায্য বন্ধ করার জন্য। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব নিজের স্বাক্ষরে আমেরিকার কংগ্রেসম্যানদের কাছে চিঠি লিখেছিলেন বাংলাদেশকে সাহায্য বন্ধ করার জন্য।'
বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য 'ঢাকা নিউমার্কেটের ঘটনায় ছাত্রলীগ যুক্ত' এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'মির্জা ফখরুল সাহেব মিথ্যাচারে চ্যাম্পিয়ন এবং যে কোনো গন্ডগোলকে আশ্রয় করে বিএনপি যে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চায়, নিউমার্কেটের ঘটনাটা সেটির একটি প্রমাণ। পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই আসামিদের গ্রেপ্তার করছে এবং এখন নিজেদের মুখোশ উম্মোচিত হয়েছে বিধায় বিএনপি নেতারা নানা ধরনের কথা বলছেন।’
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতারা আবোল-তাবোল বলছেন: তথ্যমন্ত্রী
মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকার চাকুরে ছিলেন জিয়াউর রহমান: তথ্যমন্ত্রী
২ বছর আগে
জার্মান রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য প্রত্যাখান বিএনপির
বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে গত মাসে বৈঠকের পর বিএনপি নেতারা জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টারকে উদ্ধৃত করে বক্তব্য দিয়েছে বলে তিনি যে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তা প্রত্যাখান করেছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, রাষ্ট্রদূত সঠিক বলেননি। ওই বৈঠকের পর আমাদের নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জার্মান রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে কিছু বলেননি।
ফখরুল বলেন, বৈঠকের বিষয়ে আমীর খসরু সাধারণভাবে যা বলেছিলেন তাতে রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করা হয়েছে বলে তিনি মনে করেছেন।
তিনি বলেন, তাদের নেতাদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে জার্মান দূত যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেখানে ‘মিসকোট’ বা ভুলভাবে উদ্ধৃত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বৈঠক নিয়ে বিএনপির বক্তব্যে অসন্তোষ জার্মান রাষ্ট্রদূতের
বৃহস্পতিবার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নতুন আংশিক কমিটির নেতারাসহ জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
এর আগে বুধবার, জার্মান রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে বিএনপি তাকে উদ্ধৃতি দিয়ে যা বলেছিলেন তাতে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) টক অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি পড়েছি যে আমি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। এটা সত্য নয়। আমি ভুল উদ্ধৃতির বিষয়ে অসন্তুষ্ট।’
আরও পড়ুন: নিউমার্কেটের সংঘর্ষই প্রমাণ করে দেশে কোনো সরকার নেই: ফখরুল
এর আগে গত ১৭ মার্চ বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুর সঙ্গে রাষ্ট্রদূত বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং বাংলাদেশে আইনের শাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছি।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূত কী বলেছেন জানতে চাইলে খসরু বলেন, ‘তারা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন।’
২ বছর আগে
ফখরুলের সঙ্গে জার্মান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ, নির্বাচন নিয়ে আলোচনা
বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দুই ঘণ্টার 'রুদ্ধদ্বার' বৈঠক করেছেন। এ সময় তারা আগামী জাতীয় নির্বাচন, আইনের শাসন এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
আরও পড়ুন: ইসি’র সংলাপ একটি নির্ভেজাল নাটক: বিএনপি
তিনি বলেন, আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং বাংলাদেশে আইনের শাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছি।
বিএনপি নেতা জানান, জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তাদের দেশ বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন।
এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, তারা বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন নিয়েও কথা বলেছেন। কারণ এই নির্বাচনের দিকে সারা বিশ্ব তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছে।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্য নিয়ে জনগণের সঙ্গে ‘তামাশা’ করছেন মন্ত্রীরা: বিএনপি
খসরু বলেন, জার্মান রাষ্ট্রদূত তাদের কাছে আগামী নির্বাচন ও দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। ‘তারা জানতে চেয়েছিল বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনে কী হতে যাচ্ছে? এ বিষয়ে তাদের পর্যবেক্ষণও রয়েছে।’
তিনি বলেন, অচিম ট্রস্টার তাদের কাছে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।
২ বছর আগে