ফিলিস্তিনি
বাংলাদেশ সবসময় ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, বাংলাদেশ সবসময় ফিলিস্তিনের নিপীড়িত ও নির্যাতিত জনগণের পাশে আছে। তাদের ন্যায্য দাবিকে বাংলাদেশ সবসময় সমর্থন করে আসছে। আমরা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে।
সোমবার বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তরে তার সঙ্গে সাক্ষাতে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান। এসময় ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানিয়ে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: সীমান্তে কোনো শিথিলতা দেখানো যাবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বৈঠকে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের ভিসা ইস্যুকরণের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ, ভিসা সহজীকরণ, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি বৈশ্বিক সমর্থনসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ফিলিস্তিন বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। তাদের প্রতি আমাদের সমর্থন সবসময় অব্যাহত থাকবে।
উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৯৭৪ সাল থেকে ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য আসা-যাওয়া করছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ১২টি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০৭ জন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশে আরও বেশি ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করুক। কিন্তু তা যেন হয় দূতাবাসের মাধ্যমে যথাযথ নিয়ম ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে।
এবিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন উপদেষ্টা।
বৈঠকে আরও ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান ও সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. ফিরোজ সরকারসহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
২ সপ্তাহ আগে
গাজায় এক বছরের যুদ্ধে ৪৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত
গাজায় এক বছর ধরে চলা যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৪৩ হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত দুই দিনে গাজার হাসপাতালে আসা ৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তবে ইসরায়েলি সেনারা গাজার উত্তরাঞ্চলে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। চলমান যুদ্ধে এক সপ্তাহের মধ্যে একটি হাসপাতালেও অভিযান চালিয়েছে সেনারা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার বেইত লাহিয়ার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ১০০ সন্দেহভাজন হামাস সদস্যকে আটক করেছেন তারা।
আরও পড়ুন: গাজার স্কুলে ইসরায়েলি বোমা হামলায় ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অভিযোগ করেছে, হাসপাতালের ৪৪ জন পুরুষ কর্মীকে আটক করেছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি মেডিকেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযানে প্রায় ২০০ রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হাসপাতালটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এক বছর ধরে চলা যুদ্ধে ইসরায়েল গাজার বেশ কয়েকটি হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে বলেছে যে হামাস এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী সামরিক উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহার করে।
ফিলিস্তিনি চিকিৎসা কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, তারা (ইসরায়েলি বাহিনী) বেসামরিক নাগরিকদের বেপরোয়াভাবে বিপদে ফেলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কামাল আদওয়ান হাসপাতালের আশপাশে প্রচণ্ড লড়াই চলছিল, যদিও হাসপাতালের ভেতরে ছিল না এবং হাসপাতালের ভেতরে অস্ত্র পাওয়া গেছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, কয়েকজন হামাস সদস্য চিকিৎসকের ছদ্মবেশে থাকায় স্বাস্থ্যকর্মীকে আটক ও তল্লাশি করা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তার মতে, সামরিক বাহিনী অভিযানের আগের সপ্তাহগুলোতে ৮৮ জন রোগী ও চিকিৎসা কর্মীকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সহায়তা করেছে। চিকিৎসা সুবিধা চালু রাখতে অভিযানের সময়ই সেনারা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ৩০ হাজার লিটার জ্বালানি ও চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে এসেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজা খালি করার আহ্বান জানিয়েছে। তারা তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বড় ধরনের আক্রমণ চালাচ্ছে ওই এলাকাটিতে। গাজার উত্তরাঞ্চলীয় শহর জাবালিয়ায় অভিযান 'আরও কয়েক সপ্তাহ' চলবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
চলতি মাসের শুরুর দিকে জাতিসংঘ জানিয়ে, গাজার উত্তরাঞ্চলে এখনও অন্তত চার লাখ মানুষ অবস্থান করছে এবং গত এক মাসে উত্তরাঞ্চলে মানবিক ত্রাণ পৌঁছানোর পরিমাণ কমে যাওয়ায় খাদ্য সংকটে পড়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৪৩ হাজার ২০ জন নিহত ও ১ লাখ ১ হাজার ১১০ জন আহত হয়েছেন। হতাহতদেরকে যোদ্ধা ও বেসামরিক নাগরিক হিসেবে পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধাদের অভিযানে ১ হাজার ২০০ মানুষের মৃত্যু হয় এবং ২৫০ জনকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যায়। এরপরই ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় ৭৩ ফিলিস্তিনির মৃত্যু
৩ সপ্তাহ আগে
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা করছে জাতিসংঘ
গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে আগামী এক বছরের মধ্যে ইসরায়েলের 'অবৈধ উপস্থিতি' বন্ধ এবং দেশটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও অস্ত্র সরবরাহে নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব দিয়েছে ফিলিস্তিন। এই প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
বুধবার এই প্রস্তাব ১৯৩ সদস্যের এসেম্বলিতে ভোটের জন্য উত্থাপন করা হবে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া যুদ্ধের প্রথম বার্ষিকী নিকটে আসতে থাকায় এবং পশ্চিম তীরে সহিংসতার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় দ্রুত এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় গুরুত্ব দিচ্ছে জাতিসংঘ।
এদিকে সদস্য দেশগুলোকে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেছেন, এটি 'কূটনৈতিক সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে ইসরায়েলকে ধ্বংস করার চেষ্টা' ছাড়া আর কিছু নয়। এই প্রস্তাব 'সত্যকে উপেক্ষা করে, ঘটনাকে বিকৃত করে এবং বাস্তবতার বদলে কল্পকাহিনী তুলে ধরেছে।’
ড্যানন আরও বলেন, ‘হামাস ৭ অক্টোবর যে ধর্ষণ ও গণহত্যা চালিয়েছে তার নিন্দা জানিয়ে একটি প্রস্তাবের পরিবর্তে, আমরা এখানে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনিদের সার্কাস দেখতে জড়ো হয়েছি- যে সার্কাসে মন্দকে ন্যায়সঙ্গত, যুদ্ধকে শান্তি, হত্যাকারীকে নির্দোষ এবং সন্ত্রাসের প্রশংসা করা হয়।’
আরও পড়ুন: ১ জুলাই-১৫ আগস্ট পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য জমা দেওয়ার আহ্বান জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দলের
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এই প্রস্তাব এ অঞ্চলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে না, বরং পেছনের দিকে টেনে নিয়ে যাবে। শান্তি ও অগ্রগতির আশাকে বিলম্বিত করবে।
সাধারণ পরিষদে গৃহীত হলেও প্রস্তাবটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক হবে না। তবে এর সমর্থন বিশ্ববাসী কি চায় সেই জনমত প্রকাশ করবে। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের মতো এই পরিষদে কোনো ভেটো নেই।
এর আগে গত জুলাইয়ে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত এক রায়ে বলেন, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের উপস্থিতি অবৈধ এবং অবশ্যই এর অবসান ঘটাতে হবে।
১৯৬৭ সালে যুদ্ধের সময় দখল করা জমির ওপর ইসরায়েলের শাসনের ব্যাপক নিন্দা জানিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত বলেন, এই এলাকাগুলোর ওপর ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বের কোনো অধিকার নেই। বলপূর্বক জমি অধিগ্রহণ করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনিরা 'অস্তিত্বের হুমকির' মুখোমুখি উল্লেখ করে সাধারণ পরিষদের বৈঠকের শুরুতে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেন, ইসরায়েল তাদের 'শেকলে' বদ্ধ করে রেখেছে। ইসরায়েলের দখলদারিত্বের অবসান এবং ফিলিস্তিনিদের 'মর্যাদা, শান্তি ও নিরাপত্তার' সঙ্গে নিজেদের পূর্বপুরুষের ভূমিতে ফিরে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, 'যারা মনে করে ফিলিস্তিনি জনগণ দাসত্বের জীবন, বর্ণবাদের জীবন মেনে নেবে, তারাই বাস্তববাদী নয়। ফিলিস্তিন সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধান ছাড়া আমাদের অঞ্চলে শান্তি সম্ভব বলে যারা দাবি করে, তারা বাস্তববাদী নয়।’
প্রস্তাবে ইসরাইলকে তার সেনা প্রত্যাহার, অবিলম্বে নতুন সব বসতি নির্মাণ বন্ধ এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে সব বসতি স্থাপনকারীদের সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মিশরের সঙ্গে গাজা সীমান্তের উন্মুক্ত নিয়ন্ত্রণ চান নেতানিয়াহু
এছাড়াও ইসরায়েলকে তার দখলদারিত্বের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির জন্য ফিলিস্তিনিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বাণিজ্য বা বিনিয়োগ বন্ধে পদক্ষেপ নিতে এবং 'বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতাসহ' অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবটি প্রসঙ্গে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস বলেন, প্রস্তাবে বেশকিছু অসঙ্গতি রয়েছে৷ এটি আইসিজের নিয়মনীতির সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি করছে। এছাড়াও গাজার নিয়ন্ত্রণে থাকা 'হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন' এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের বিষয়টি এই প্রস্তাবে তুলে ধরা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, 'এই প্রস্তাব ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য বাস্তব সুফল বয়ে আনবে না বলে আমরা মনে করছি। এটি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। সংঘাত অবসানে যেসব চেষ্টা চলছে সেগুলো জটিল করে তুলতে পারে। দুই রাষ্ট্রের মধ্যে সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে আমি মনে করি।’
রিয়াদ মনসুর বলেন, প্রাথমিক খসড়ায় ছয় মাসের মধ্যে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের অবসান ঘটানোর দাবি জানানো হলেও কিছু দেশের উদ্বেগের কারণে সময় বাড়িয়ে এক বছরের কথা বলা হয়েছে।
মনসুর আরও বলেন, এই প্রস্তাবটির লক্ষ্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রায় পাওয়া যদিও তা আইনত বাধ্যতামূলক নয়।
ইসরায়েল এই প্রস্তাবে গুরুত্ব নাও দিতে পারে মনে করছেন মনসুর। তিনি বলেন, সেক্ষেত্রে ফিলিস্তিনিরা তখন আরেকটি প্রস্তাব জমা দেবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকা দখল করে নেয় ইসরায়েল। ফিলিস্তিনিরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য এই তিনটি ভূমিই চায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই তিনটি এলাকাকেই দখলকৃত ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে থাকে।
আরও পড়ুন: উত্তরাঞ্চলের বাস্তুচ্যুত ইসরায়েলিদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্য ইসরায়েলের
২ মাস আগে
গাজার একটি স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৫ ফিলিস্তিনির মৃত্যু
গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের একটি স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
নিরাপত্তা সূত্রগুলোর বরাতে সিনহুয়া জানায়, খান ইউনিসের পূর্বে আবাসান আল-কাবিরা শহরে শত শত বাস্তুচ্যুত মানুষের আবাসস্থল আল-আওদা স্কুলের গেট লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান মিসাইল হামলা চালিয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজার বৃহত্তম ফুটবল স্টেডিয়াম এখন বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়স্থল
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্টদের শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা গেছে, রক্তাক্ত অনেক লাশ মাটিতে পড়ে আছে।
এছাড়াও মেডিকেল সূত্রগুলো জানায়, ইসরায়েলি বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ২৫ জন নিহত ও আহত হয়েছে অর্ধশত মানুষ।
সিনহুয়ার প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, ওই এলাকায় বাস্তুচ্যুত মানুষের উপচে পড়া ভিড়ের কারণে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলা যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য হুমকিস্বরূপ: হামাস
৪ মাস আগে
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৩৮ হাজার ছাড়িয়েছে: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে প্রায় ৯ মাস ধরে চলা যুদ্ধে ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ৩৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) এই তথ্য জানিয়েছে গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৮ জনের লাশ হাসপাতালে আনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ১১ জনে।
চলমান এই যুদ্ধে আরও ৮৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
হতাহতদের মধ্যে কতজন সামরিক ও বেসামরিক তা স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি মন্ত্রণালয়। তবে নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে জানা গেছে।
এদিকে গাজায় পর্যায়ক্রমে যুদ্ধবিরতির জন্য মার্কিন সমর্থিত প্রস্তাবের সর্বশেষ প্রতিক্রিয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা বৈঠক করার কথা ছিল। কারণ, ৯ মাসের যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এক সপ্তাহের বিরতির পর আবারও শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলের ‘যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা’ হামাসের প্রত্যাখ্যান
অন্যদিকে, ইসরায়েল ও লেবাননের হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধ আরও বেড়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে তারা আগের দিন ইসরায়েলি বিমান হামলায় একজন সিনিয়র কমান্ডার হত্যার প্রতিশোধ নিতে উত্তর ইসরায়েলে ২০০টিরও বেশি রকেট ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
তুলনামূলকভাবে সংঘাত কম হলেও সীমান্তে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। যা মধ্যপ্রাচ্যকে আরও ভয়ংকর যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ বলেছে, মিত্র হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হলে তারা হামলা বন্ধ করবে।
দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের বিনিময়ে হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের সবাইকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিশ্বের সমর্থন পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই তা পুরোপুরি মেনে নেয়নি।
হামাস গত মাসে যুদ্ধবিরতির শর্ত ‘সংশোধনের’ প্রস্তাব করেছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না করে কয়েকটি বিষয়কে অকার্যকর বলেছে। মূল প্রস্তাবটি ইসরায়েলের ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে এটি যুদ্ধ সমাপ্ত করবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। যা হামাসের দাবিগুলোর মধ্যে একটি প্রধান দাবি।
আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী মিশর ও কাতারকে আরেকটি বার্তা পাঠিয়েছে বলে বুধবার নিশ্চিত করেছে হামাস। যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বাইডেন প্রশাসন প্রতিক্রিয়াটি পরীক্ষা করে দেখছে, এটিকে গঠনমূলক বলে অভিহিত করেছে তবে আরও কাজ করা দরকার বলে জানিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ গাজায় রাতভর ইসরায়েলি হামলায় ৯ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আলোচনাকে ঘিরে সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে আলোচনার জন্য নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক আহ্বান করবেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা এ কথা বলেন। সংশোধিত প্রস্তাবের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ইসরায়েল সম্ভবত আরও পরামর্শ করবে।
হামাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা বাসেম নাঈম বলেছেন, তারা আমেরিকার প্রস্তাব গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করেনি এবং দু'পক্ষের মধ্যকার ব্যবধান কমানোর জন্য কিছু ধারণা দিয়ে সাড়া দিয়েছে। হামাসের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া মিশরীয়, কাতার ও তুর্কি কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ বিনিময় করেছেন বলে বুধবার রাতে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে মধ্যস্থতাকারী গ্রুপটি।
গত ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের একাধিক সেনা ঘাঁটি ও কৃষক সম্প্রদায়ের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। এসময় আরও ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। যাদের মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে নভেম্বরে সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি দেওয়া হয়েছে। হামাসের হাতে এখনও প্রায় ৮০ জন জিম্মি এবং ৪০ জনের লাশ রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় ৩৭ হাজর ৯০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই যুদ্ধের ফলে গোটা অঞ্চল জুড়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েল। ফলে গাজার ২৩ লাখ জনসংখ্যার বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বাসিন্দারা ব্যাপক ক্ষুধা ও সংকটের মধ্যে পড়েছেন। যা চরম দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।
আরও পড়ুন: অবিস্ফোরিত বোমা গাজাবাসীর জন্য বড় হুমকি: জাতিসংঘ
৪ মাস আগে
গাজায় আবারও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ বন্ধ করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী
গাজায় ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ আবারও বন্ধ করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। ত্রাণ বিতরণকারী স্বেচ্ছাসেবীদের সুরক্ষার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত তারা এ কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
বেশ কয়েকবার বন্ধের পর ২৩০ মিলিয়ন ডলারের ত্রাণ বিতরণ আবার শুরু করেছিল। মার্কিন সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার এটি পরিদর্শনের জন্য সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। এবারই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম তাদের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে গাজায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রথম চালু হওয়া প্রকল্পটি সমুদ্র উত্তাল থাকার কারণে সাম্প্রতিক বিরতির পরে গত সপ্তাহে আবার কাজ শুরু করে।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইসরায়েল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: নেতানিয়াহু
মঙ্গলবার সাংবাদিকরা দেখছিলেন, মেশিনগান নিয়ে মার্কিন সেনারা জেটির অপারেশন পরিচালনা করছিলেন। মানবিক ত্রাণ বোঝাই ট্রাক বহনকারী মার্কিন জাহাজগুলো জেটিতে নোঙর করেছে।
ইসরায়েলি ও সাইপ্রিয়ট চালকরা ট্রাকগুলোকে জাহাজ থেকে নামিয়ে ৪০০ মিটার (৪৩৭ গজ) বাঁধ দিয়ে সৈকতে নিয়ে যায়, যেখানে তারা ত্রাণ খালাস করে।
এরপর ট্রাকগুলো বড় পণ্যবাহী জাহাজে করে পারাপারের জন্য আবারও জাহাজে ফিরে আসে। পণ্যবাহী জাহাজগুলো সাইপ্রাস থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়।
ইউএস আর্মি সেভেন্থ ট্রান্সপোর্টেশন ব্রিগেডের যৌথ টাস্ক ফোর্সের কমান্ডার কর্নেল স্যামুয়েল মিলার বলেন, জাহাজগুলো দিনে অন্তত পাঁচবার ঘাটে ত্রাণ নিয়ে যেতে পারে।
জেটিতে ঢেউ আছড়ে পড়ার সময় তিনি চিৎকার করে বলেন, 'এখানে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একটি বড় জাহাজ থেকে ওই ভাসমান জেটিতে মানবিক সহায়তা গ্রহণ করা। সময়ের সাথে সাথে আমরা সংগঠিত করার কাজ শিখছি এবং আমরা আরও ভালো করেছি।’
উত্তাল সমুদ্র ও বাতাসের কারণে সামরিক বাহিনী গাজার সৈকত থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর ১৯ জুন ভাসমান জেটিটি গাজার উপকূলে নোঙর করা হয়। একইভাবে মে মাসে জেটি ভেঙে যাওয়ায় এবং চারটি মার্কিন সেনাবাহিনীর জাহাজ আছড়ে পড়ার পর তাদের কার্যক্রমে দুই সপ্তাহের বিরতি দিতে বাধ্য হয়েছিল, এতে তিন স্বেচ্ছাসেবী আহত হয়েছিলেন এবং একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল।
মিলার বলেন, লাইনে ফিরে আসার পর থেকে জেটিটি তীরে প্রতিদিন শত শত প্যালেট ত্রাণ সরবরাহ করছে।
জেটি থেকে, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাংবাদিকরা প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংসের পটভূমিতে ত্রাণের স্তূপ দেখতে পেয়েছিলেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গাড়িগুলো ধীরে ধীরে উপকূলের বিধ্বস্ত ভবনগুলোর মধ্যে দিয়ে যেতে থাকে। দূরে সৈকতে তাঁবু খাটানো ছিল।
আরও পড়ুন: গাজায় ‘খুব শিগগির’ অভিযান বন্ধের ঘোষণা দিয়ে লেবাননে যুদ্ধ শুরুর ইঙ্গিত ইসরায়েলের
মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এ পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার ২০০ মেট্রিক টন (৬ হাজার ৮০০ টন) ত্রাণ গাজার উপকূলে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
জেটি থেকে ত্রাণ সৈকতে পৌঁছালেও গাজায় ফিলিস্তিনিদের কাছে তা পৌঁছানো এখনো কঠিন। ৮ জুন জিম্মিদের উদ্ধারে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ওই এলাকা ব্যবহার করার পর নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে জেটি থেকে ত্রাণ সরবরাহ স্থগিত করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। জেটির চারপাশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরা ত্রাণ বিতরণ এলাকার দিকে গিয়ে ট্রাক থেকে ত্রাণ জব্দ ছিনিয়ে নেওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র গাজায় ত্রাণ আনার জন্য এই প্রকল্প চালু করেছে, যেখানে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক আক্রমণের কারণে এই অঞ্চলের ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং একটি মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক কর্মকর্তারা বলছেন, লাখ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ত্রাণ কর্মকর্তারা জেটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেছেন, এর কার্যকারিতা সীমিত এবং এটি এই অঞ্চলে ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল অতিক্রমের বিকল্প নয়।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার এপিকে বলেছেন, মানবিক ত্রাণ কর্মীদের আরও ভালোভাবে সুরক্ষার পদক্ষেপ না নেওয়া হলে তারা গাজাজুড়ে সমস্ত ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত করার কথা বিবেচনা করছেন। যা গাজাকে আরও গভীর মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে।
মে মাসের গোড়ার দিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় ইসরায়েলের আক্রমণের পর থেকে গাজার ফিলিস্তিনিরা জাতিসংঘের সহায়তার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। অধিকাংশ এলাকায় যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে এবং ত্রাণ সরবরাহ ধীর করে দিয়েছে। তা সত্ত্বেও মঙ্গলবার জেটি পরিচালনাকারী সেনারা আশাবাদী ছিলেন।
মার্কিন নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন জোয়েল স্টুয়ার্ট বলেন, 'আমি প্রতিদিন আমার নাবিকদের সঙ্গে কথা বলি। তারা বুঝতে পেরেছে যে গাজার জনগণের জন্য আমাদের সহায়তা প্রয়োজন, যারা যুদ্ধের পরিস্থিতিতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: গাজায় বারবার যুদ্ধ আইন লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েলি বাহিনী: জাতিসংঘ
৪ মাস আগে
ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাবিতে নিয়মিত ২০ আসন বরাদ্দ
ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতক ও স্নাতক পর্যায়ে ২০টি আসন বরাদ্দ দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
শনিবার (৪ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদানের এক বৈঠকের পর এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
সাক্ষাৎকালে তারা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ভর্তির বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. এ এস এম মাকসুদ কামাল ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী বিশেষ করে ছাত্রীদের ভর্তির অনুমতি, বৃত্তি প্রদান ও আবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: চলমান তাপপ্রবাহে অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে ঢাবি
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেন।
তিনি আরও বলেন, তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
রাষ্ট্রদূতের প্রস্তাবের ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রতিবছর কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি মেধাবী শিক্ষার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং তাদের জন্য বৃত্তি ও আবাসন সুবিধা প্রদানের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপাচার্য বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েলের বর্বর হামলা ও হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানান।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. এ এস এম মাকসুদ কামাল ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদানের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনি ছাত্র ভর্তির আগ্রহ প্রকাশ করায় তাকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. জিল্লুর রহমান, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসের পরিচালক অধ্যাপক ড. শামসাদ মর্তুজা ও জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক মাহমুদ আলম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঢাবির সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
৬ মাস আগে
উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের হত্যার নিন্দা জাতিসংঘ প্রধানের
উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানান জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক।
উত্তর গাজায় হামলার নিন্দা জানিয়ে দুজারিক বলেন, ‘গাজার উত্তরাঞ্চলের হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন মহাসচিব, যেখানে জীবন রক্ষা করার জন্য সাহায্য চাইতে গিয়ে ১০০ জনেরও বেশি লোক নিহত বা আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গাজার আহত বেসামরিক নাগরিকদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন, যার মধ্যে অবরুদ্ধ উত্তরাঞ্চলের লোকজনও রয়েছে। সেখানে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ত্রাণ সরবরাহ করতে পারেনি জাতিসংঘ।’
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকার পশ্চিমে সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ১০৪ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়। আহত হয় ৭৬০ জনেরও বেশি।
আরও পড়ুন: উপহার-অনুগ্রহ নয়, রাষ্ট্রকে একটি আন্তর্জাতিক আইনি অধিকার মনে করে ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলি বাহিনীর এক মুখপাত্র দাবি করেন, ভোরে গাজা উপত্যকায় প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ট্রাকগুলোতে আক্রমণ করে লুটপাট চালায় গাজাবাসীরা। এ সময় আত্মরক্ষা করতে গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
জাতিসংঘের কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না জানিয়ে দুজারিক বলেন, ঘটনার তদন্ত করে জবাবদিহির ব্যবস্থা করা হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি এবং সমস্ত জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, গুতেরেস আবারও জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যাতে গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহায়তা গাজায় সবার কাছে পৌঁছাতে পারে।
গাজা সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারেরও বেশি মৃত্যু এবং ৭০ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। মৃত্যুর এই মর্মান্তিক সংখ্যা দেখে গুতেরেস আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানান দুজারিক। এছাড়াও ধ্বংসস্তূপের নিচেও অনেকে আটকে আছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭০
৮ মাস আগে
ন্যাম সম্মেলন: ফিলিস্তিনিদের সমর্থন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং বিশ্বব্যাপী শান্তির সংস্কৃতি সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) উগান্ডার কাম্পালায় ১৯তম ন্যাম সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
১৯তম ন্যাম সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান: ইইউ রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে ন্যাম সম্মেলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্যের কথা উল্লেখ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কাজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
মাহমুদ ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অকুণ্ঠ সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং তাদের বিচার দাবি করেন।
তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর ও সমর্থন করতে সব ধরনের চেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ন্যাম ও সাউথ সামিটে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে উগান্ডায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দ্বিগুণ প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান।
শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তুলতে গঠনমূলক ও সংঘাতহীন সংলাপ পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
শুক্রবার উগান্ডার রাষ্ট্রপতি ইয়োয়েরি মুসেভেনি আন্দোলনের নতুন সভাপতি হিসেবে শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। দুই দিন আলোচনার পর 'কাম্পালা ঘোষণা' ও ফিলিস্তিনের বিষয়ে একটি ঘোষণা গৃহীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ন্যাম সম্মেলনের ফাঁকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।
তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: ন্যাম সামিট: বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও জাতিসংঘে দেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে সম্মেলন ও বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন।
১০ মাস আগে
ফিলিস্তিনি শিশুদের রক্ষায় জাতিসংঘ মহাসচিবকে সুপ্রিম কোর্টের চাইল্ড রাইটস কমিটির চিঠি
ফিলিস্তিনি শিশুদের রক্ষায় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে চিঠি পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের চাইল্ড রাইটস কমিটি।
কমিটির সভাপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের স্বাক্ষরে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: নিম্ন আদালতে কালো কোট-গাউন পরার আবশ্যকতা নেই: সুপ্রিম কোর্ট
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় শিশুদের নিরাপত্তা প্রদানে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ১৪ জানুয়ারি জাতিসংঘ মহাসচিবকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট চাইল্ড রাইটস কমিটি চিঠি পাঠিয়েছে। প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা অনুযায়ী এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, চিঠিতে ফিলিস্তিনের গাজার সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে জাতিসংঘের শিশু অধিকার কনভেনশনের (ইউএনসিআরসি) অনুচ্ছেদ ৩৮ (১) ও (৪) এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের ফলে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট চাইল্ড রাইটস কমিটি।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধের রায় কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ
শিশুদের জীবন ও সামগ্রিক কল্যাণের জন্য, শিশুদের বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতার অবসান, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকর কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের সূচনা, শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রদান এবং যথাযথ আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা প্রয়োগসহ দ্রুত ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছে।
বিশ্বের সব শিশুর আনন্দ ও সমৃদ্ধি নিশ্চিতকরণে যেহেতু আমাদের সমষ্টিগত নৈতিক দায়বদ্ধতা রয়েছে, সেহেতু বিশ্বের শিশুদের প্রতিপালন ও উন্নতি বিধানকল্পে জাতিসংঘের সব উদ্যোগে সমর্থন ও অবদান রাখতে সুপ্রিম কোর্টের চাইল্ড রাইটস কমিটি বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর: ২৫ আইনজীবীর আগাম জামিন
সুপ্রিম কোর্ট চাইল্ড রাইটস কমিটির সদস্য বিচারপতিরা হলেন— বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী।
১০ মাস আগে